Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

পদ্মা সেতুর উদ্ধোধন : স্বাধীনতা আজ সার্থক হলো - OMAR KHALED RUMI

 

মনে করতে পারবে শুধু তারা সেদিন যারা বেঁচেছিলো। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে একটা নিরীহ জনগোষ্ঠীর উপর হামলে পড়লো একদল হায়েনা। নির্বিচারে হত্যা করলো অসহায় মানুষগুলোকে। তাদের অপরাধ একটাই। ১৯৭০ সালে যে নির্বাচন হয়েছিলো তাতে তারা জিতে গিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা কিন্তু তারা তা মানতে পারছে না। অতঃপর বেছে নিলো বিকল্প। মার্কিন প্রশাসন বিশেষ করে কিসিঞ্জারের প্রত্যক্ষ মদদে সেদিন পাকিস্তানী সামরিক জান্তা উম্মাদের মতো ঝাপিয়ে পড়েছিলো। তারপর নয় মাস চললো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের জন্ম হলো।

এসব কথা আজ সবারই জানা। আরও জানা যে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল সময়কালটাতে আমাদের এই ভূখন্ডে লুকিয়ে থাকা কালসাপ কতোটা অস্থিরতা তৈরী করেছিলো। দুঃসময় আরও প্রকট আকার ধারণ করেছিলো বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। সেদিন যে হিংসা, দলাদলি, রেষারেষি, দুর্র্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুট তরাজে মেতে ওঠার ঘৃণ্য পরিবেশ তৈরী করা হয়েছিলো তাতে মহান মানুষ জাতির জনক শেখ মুজিবের অসহায় আর বিব্রত হওয়া ছাড়া কোনো গত্যন্তর ছিলো না। অবশেষে ষড়যন্ত্রের ষোলকলা পূর্ণ করতে শেষমেষ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে সপরিবারে হত্যা করা হলো সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানকে। একটা মহান অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হয়েছিলো এভাবে। অবশ্য শেষ যে আশাটুকু বেঁচে থাকতে পারতো তাও সমাপ্ত হয়ে গেলো জেলখানায় জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে।
তারপর ঘোর অমানিশা। রাহু কাল চললো ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। সামরিক স্বৈরাচারদের বিদায়ের পর এলো গণতান্ত্রিক ধারা। কিন্তু যারা নির্বাচিত হলো তারা সেই একই বীজ থেকে গজানো বৃক্ষ। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে এক নব্য ধারার রাজাকারের উত্থানের পথ তৈরীর সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হলো। কিন্তু সেই চেষ্টা কিছুটা হলেও ব্যর্থ হলো ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো সরকার গঠনের মাধ্যমে। শুরু হলো যুদ্ধপরাধীদের বিচার। শুরু হলো বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার। কলংক আর পাপমুক্ত হওয়ার এই প্রক্রিয়ায় আমরা আলোর মুখ দেখলাম। তারপর শুরু হলো উন্নয়নের পথে যাত্রা।
সেই যাত্রাও শুরুতেই থেমে গেলো। ২০০১ সালে আবারও বিএনপি নির্বাচিত হলো। তারা এবার তৈরী করলো লুটপাটের নতুন রেকর্ড। ক্রাউন প্রিন্স গং বাংলাদেশকে নিজস্ব সম্পত্তিতে পরিণত করলো। তাদের মদদ দিচ্ছিলো সেই পুরনো বিদেশী বন্ধুরা। (তারা অবশ্য আজও সক্রিয়।) উত্থান হলো উগ্র মৌলবাদীদের। হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি ইত্যাদি সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম হলো। শেষ পর্যন্ত যা করা হলো তা যে কতোটা জঘন্য তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আওয়ামী লীগকে সমূলে বিনাশ করার চেষ্টা। ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশবাসীকে নাড়া দিলো। এই ঘৃণ্য হামলায় নিহত হলেন অজ¯্র নেতাকর্মী। আইভি রহমানের মতো শীর্ষস্থানীয় নেত্রীর দেহ নিথর হয়ে গেলো হামলায়। সেই করুণ দৃশ্য সমস্ত বর্বরতাকে হার মানায়।
তারপরও সংকট এলো। ২০০৭-এ বিএনপি সরে দাঁড়লো বটে কিন্তু তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আড়ালে সামরিক সরকার গঠনের একটা বিরাট ষড়যন্ত্র চললো ২০০৮ সালের শেষ সময়টা পর্যন্ত। যা হোক সকল আধার সরিয়ে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা মাথা তুলে দাঁড়ালেন। চারিদিকে অন্ধকারের বুক চিরে একটি প্রদীপ অবশেষে মাথা তুলে দাঁড়ালো।
ষড়যন্ত্র তারপরও হয়েছে। আজও হচ্ছে। কিন্তু ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দু’দুবার সরকার গঠন করে ফেলেছেন। আর তার এই সময়কালটাতে বাংলাদেশকে তিনি নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। এই সময়কালটাতে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের রহস্যজনকভাবে সরে যাওয়া ছিলো সবচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা। অবশ্য তা আমাদের জন্যে নয় বরং তাদের জন্যে। কারণ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তার নিজস্ব অর্থায়নেই প্রকল্পটি সফলভাবে সমাধা করেছে। আগামী কাল ২৫শে জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
আজ ২৪শে জুন ২০২২ এই চমৎকার দিনটিতে এসে মনে হচ্ছে আমাদের মহান স্বাধীনতা এতোদিনে এসে আজই যেন সার্থক হলো।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak