বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ বাঙালির ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত বিষয়গুলোর একটি। আমরা কেন পৃথিবীর কোন জাতিই প্রত্যাশা করে না যে এরকম কোন কালোরাত্রি তাদের জীবনে আসুক। যার হাত ধরে একটি জাতি-রাষ্ট্র জন্ম নিলো, যিনি দিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের সন্ধান, যিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন শোষক আর শোষিতের মধ্যে সত্যিকারের তফাৎটা কোথায়, যিনি তাঁর ভরাট গলায় জানিয়ে দিলেন তিনি শোষিতের পক্ষে, যিনি বললেন, বাঙালির মুক্তির জন্যে তিনি জীবন দিতে তৈরী - সেই বাঙালিই তাকে সপরিবারে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেওয়ার সব আয়োজন করলো। কি নির্দয়, কি নির্মম কিন্তু নিয়তি সেদিন অলক্ষ্যে হেসেছিলো। আর সৃষ্টিকর্তারও ছিলো ভিন্ন এক পরিকল্পনা। তাইতো আল্লাহ্র হুকুমে বেঁচে গেলেন দুই বোন - শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বিদেশে থাকলেও সেখানে যে তারা পুরোপুরি নিরাপদ ছিলেন তা কিন্তু নয়। একটা কথা মনে রাখতে হবে একটা রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থা যদি সাধারণ নিয়মেও বদলায় তাতেই সর্বত্রই একটা পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। আর এরকম একটা মর্মন্তুদ ঘটনার মাধ্যমে সেদিন যে পরিবর্তন এসেছিলো তার কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা সেই আলোচনাও এ প্রবন্ধে করবো না।
তাহলে এবার আসা যাক তৎকালীন পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার পর কিভাবে তিনি সামনে আগালেন। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে। শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেন। বড় কঠিন সময়। তখন তার দু’জন সন্তান। দু’জনেরই তখন শৈশব চলছে। কারণ আমরা জানি শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম ২৭শে জুলাই ১৯৭১। আর তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্ম ৯ই ডিসেম্বর ১৯৭২। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে ১৯৮১ সালে তাদের বয়স আর কতটুকুই বা হবে। মূলত তখনও তিনি একজন মমতাময়ী মা ও একজন উত্তম গৃহিনী। তবু দেশ মাতৃকার টান। তাই তাকে ফিরতে হয় সকল ঝুঁকি সঙ্গে নিয়েই।
দেশে তো ফিরলেন কিন্তু পরিবারের কেউ তো আর বেঁচে নেই। মমতাময়ী মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ভাই- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল (ইতিহাসের সেরা সোনালী ছেলে), সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল- তার দুই ভ্রাতৃবধু, আরও কতো আপনজন- কারণ ১৫ই আগস্ট রাতে একযোগে হামলা হয়েছিলো ধানমন্ডি-৩২ নম্বর, শেখ ফজলুল হক মণির বাড়ি এবং আব্দুর রব সেরনিয়াবত (বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি) এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বাড়িতে এবং নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিলো প্রতিটি পরিবারের সকল সদস্যদের- এর সাথে সাথে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক যে ঘটনাটিও ঘটেছিলো তাহলো ইতিহাসের মহানায়ক, রাজনীতির মহাকবি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালির জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও সেদিন ঘাতকরা বিদায় করে দিয়েছিলো। পৃথিবীর ইতিহাস মুহুর্তের জন্যে হলেও থেমে গিয়েছিলো।
এই হৃদয় বিদারক ঘটনাবলীর যে দীর্ঘ বর্ণনা তাও আমরা এই ছোট্ট প্রবন্ধে আলোচনা করবো না। আমরা শুধু এটুকুতেই আলোকপাত করবো যে আমাদের মহান নেত্রী “দেশরতœ” শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে কিভাবে সামনে আগালেন।
তিনি তো ফিরলেন কিন্তু বিপদ ওঁৎ পেতে ছিলো তার প্রতি পদে পদে। ভুলে গেলে চলবে না ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনার পর মূলতঃ আওয়ামী লীগের সাংগঠিক কার্যকলাপ এতোটাই সীমিত হয়ে যায় যে, দেখে বোঝার উপায় ছিলো না যে এই দলটিই এই জনপদের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ ২৩টি বছর আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনার পাশাপাশি ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে তিনি সপরিবারে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির ক্ষমতায় আসীন ছিলো। সময় বদলালে সবই বদলায়। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরার পরই শুরু হলো পরিবর্তনের বাতাস। মানুষ ফিরে পেল আশা। আশায় বাঁধল বুক। ক্ষমতায় বসে থাকা জিয়াউর রহমান এক সামরিক ক্যু-তে নিহত হলেন ১৯৮১ সালের ৩০শে মে।
কিন্তু তাতে কী? পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হলো না। ক্ষমতায় এলেন তারই অনুগত জেনারেল লে. জে. হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। শেখ হাসিনার জীবনেও শুরু হলো আর এক নতুন অধ্যায়। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম। তিনি হাঁটলেন সাংবিধানিক পথে। প্রথাগত পদ্ধতিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেই সামনে আগাতে লাগলেন। বঙ্গবন্ধুও এমনটাই ছিলেন। নিয়মের বাইরে গিয়ে কখনও কিছু প্রত্যাশা বা বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেননি। তবে সেই পথ অতোটা সহজ ছিলো না যতোটা সহজে বলা যায়। বন্ধুর সেই পথে নেত্রী হাঁটলেন দৃঢ়পথে। তার লক্ষ্যে তিনি রইলেন অবিচল। কত বাধা, কত বিপত্তি, কত হুমকি, জীবন বিনাশকারী আক্রমণের মুখেও তিনি রইলেন শক্ত দেয়ালের মতো দন্ডায়মান। বঙ্গবন্ধুর পর পৃথিবী আরও একটা হিমালয় দেখলো।
লিখে প্রকাশ করতে পারবো না সেই কঠিন দিনগুলোর কথা। চট্টগ্রামের লাল দীঘির ময়দানের জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্যে যখন তিনি তার নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সাথে নিয়ে সামনে আগাচ্ছিলেন তখনই এলো ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। বিশ জনেরও অধিক মানুষ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারালো। শেখ হাসিনা আল্লাহ্র রহমতে প্রাণে বাঁচলেন। এখানে বলে রাখতে চাই এ পর্যন্ত ২০টিরও অধিক প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে তার উপর কিন্তু তিনি রক্ষা পেয়েছেন প্রতিবার আল্লাহ্র অশেষ করুণায়। হয়তো আল্লাহ্ তার হাত দিয়েই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করাবেন বলেই তিনি প্রতিবার রক্ষা পেয়েছেন।
আমরা যে প্রসঙ্গে ছিলাম। এরশাদ আমলের নয়টি বছর তাকে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে পার করতে হয়েছে। একদিকে সাংবিধানিক রাজনীতি, অন্যদিকে জনগণকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনা - এ দুটোর পাশাপাশি নিজ সংগঠন আওয়ামী লীগকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা - এতগুলো কঠিন কাজ তাকে করতে হয়েছে এক হাতে। এর পাশাপাশি এটাও ভুলে গেলে চলবে না তার ঘর-সংসার ছিলো। তিনি এই সব অসম্ভব কর্মকে সম্ভব করেই নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনকে সফল করলেন।
হায়রে নিয়তি! বিধি বাম। এরশাদ সরকারের পতনের পর যে নির্বাচন হলো তাতে তিনি সরকার গঠন করতে পারলেন না। বরং এমন একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটলো যা একই সথে বাঙালি জাতির জন্যে লজ্জা ও কলঙ্কের। বিএনপি সরকার গঠন করলো স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামীকে সাথে নিয়ে। যারা এদেশের স্বাধীনতাকে চায়নি তাদের গাড়ীতে উড়লো লাল-সবুজের পতাকা। এই কষ্টও তাকে সহ্য করতে হলো। এখানে একটা কষ্টের কথা বলে রাখতে চাই এই মানসিকতা যে শুধু তখনই ছিলো তাও নয়। আজও অনেক মানুষ আছে যারা এদেশের মাটিতেই পুষ্টি লাভ করছে কিন্তু তারা বাংলাদেশের অস্তিত্বের কথাই স্বীকার করে না। আর এদের গোপন আঁতাত, ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র, নগ্ন ইচ্ছের কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে সা¤্রাজ্যবাদী এক মুরব্বী রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। কারণ স্বাধীনতার পক্ষের দেশপ্রেমিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হওয়া দুষ্কর।
এটা কোন ভালো লক্ষণ তো নয়ই বরং বাংলাদেশ তথা বিশ্বরাজনীতির জন্যে এক অশণি সংকেত। তাইতো আমাদের উচিত হবে দেশের জন্যে শক্ত দেওয়ালের মতো মজবুত হওয়া যাতে কোন বিদেশী শক্তি আমাদের চোখ রাঙাতে না পারে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পর এই নিয়ে পরপর তিনবার সরকার গঠন করলো আওয়ামী লীগ যার নেতৃত্বে আমাদের মহান নেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ গত এক যুগে নিজেকে পুরো বিশ্বের দ্রæত বর্ধণশীল অর্থনীতির একটিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। অবিশ্বাস্য উন্নতি করেছে প্রতিটি সূচকে। এসবের কিছুই ভালো লাগছে না তথাকথিত মুরুব্বীদের। হায়রে পৃথিবী। সর্বত্র বলা হয় এ পৃথিবীকে বদলে দেবো, সব সম্মেলণেই শপথ করা হয় আগামীর সুন্দর পৃথিবীর, কিন্তু যখনই কেউ তার দেশকে বদলে দেয় তখনই তথাকথিত মোড়লদের তা ভালো লাগে না। সেই দেশ, সেই নেতা বা নেত্রী হয়ে ওঠে মোড়লদের চক্ষুশূল। পৃথিবীর ইতিহাসে এই বৈচিত্র্য বা বৈপরীত্য যে নতুন কিছু তা অবশ্য বলবো না কিন্তু এটা ভেবে কষ্ট হচ্ছে যে বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বের বহু দেশ তথা বহু তথাকথিত বিকৃত মনমানসিকতার অধিকারী রাষ্ট্রনেতাদের মাথাব্যাথার কারণ। বলতে দ্বিধা নেই বাংলাদেশ আজ সাক্ষাৎ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাকে প্রতি পদে পদে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ আর কিছু নয়। তা হাত না পাতা অবস্থা। তার হার না মানা স্বভাব।
মনে রাখতে হবে ১৯৭১ সালে আমরা লড়েছিলাম বঙ্গবন্ধুকে সাথে নিয়ে। এবারও সব ধরণের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো তারই ঔরসজাত কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তার কাছ থকে গত এক যুগ ধরে যে শিক্ষা আমরা লাভ করেছি যে আপোষহীন মানসিকতা আমরা অর্জন করেছি। অন্যায় ভয় ভীতিকে উপেক্ষা করার যে দুর্দমণীয় এক ব্রত আমাদের ভেতরে তিনি জড়িয়ে তুলেছেন তার ছায়ায় দাঁড়িয়ে আমরা এক একজন এই দেশ ও এই মাটির জন্যে এক একটা শক্ত খুঁটি হবো। এবারের ১৬ই ডিসেম্বরে তিনি যে শপথ পাঠ করেছেন তা-ই হবে আমাদের সকলের শপথ।
মূলত আমরা বলতে চেয়েছিলাম যে বিগত এক যুগে আমাদের মহান নেত্রী আমাদের দেশকে সেখান থেকে তুলে এনে সেখানে স্থাপন করেছেন তা যে সোনালি ইতিহাস রচনা করেছে তার কৃতিত্ব মূলতঃ দেশরতœ শেখ হসিনার। বাঙালি জাতির জন্য যে সোনালী অধ্যায়ের সূচিত হয়েছে তার সবটুকু কৃতিত্বই বলতে গেলে তারই। উন্নয়ন, ন্যায় বিচার, অবকাঠামো নির্মাণ. জীবন যাত্রার বদলে যাওয়া প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বের দরবারে আজ আমাদের যে সম্মানের জায়গাটায় নিয়ে এসেছেন তার জন্য আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তার প্রতিটি সাহসী পদক্ষেপই আজকের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
সমালোচনা কম হয়নি। অনেক বুদ্ধিজীবিকেও দেখেছি না বুঝে শুনে রাস্তায় নেমে আসতে। হুট করে এটা-ওটা বলে বসতে। আর বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা তো বরাবরই ছিলো শুধু দোষ-ত্রæটি খুঁজে বের করার জন্যে। তবুও সকল বাধা পেরিয়ে, সকল কাঁটা ধন্য করে মাননীয় নেত্রী আমাদেরকে ইতোমধ্যেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন।
শত্রæরা যে উধাও হয়ে গেছে এমনটা ভাববার কোন কারণ তো নেই-ই বরং তারা ঘাপটি মেরে থেকে শক্তি সঞ্চয় করে ভেতর ও বাহির উভয় দিক থেকে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই সাথে তাদের মিত্র পরশক্তিগুলো তো থাকছেই। অতএব চ্যালেঞ্জটা হাল্কা কিছু নয়। বরং সম্মিলিতভাবেই একে মোকাবেলা করতে হবে। আর একমাত্র দেশপ্রেমই পারে আমাদের একটা বিন্দুতে একত্র করতে। এই দেশ, এই মাটি, এই মানুষকে যারা ভালোবাসি - এর জল, হাওয়া, কাঁদা যাদের শরীর ও মনকে পুষ্ট করে - তাদের মনে রাখা উচিত এটা আমাদের পবিত্র ঈমানী দায়িত্ব। ভালোবাসা আর তার ভাষা যারা বোঝে না তাদেরকে হাজারবার দুগ্ধ ¯œান করালেও লাভ হবে না জানি তবু এদেশ, এর মাটি আর এর মানুষকে রক্ষা করার জন্য আমরা অগ্নি¯œানের শপথ নেবো - হয় জিতবো না হয় মরবো তবু মাথা নেয়াবো না।
মনে রাখতে হবে, সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ১৯৭১ সালে অনেক বিশ্ব মোড়লদের না চাওয়া সত্তে¡ও আমরা শেষ পর্যন্ত স্বাধীন হয়েছিলাম। এই বাঙালি, এই সেই বীরের জাতি যারা ইতিহাস ভোলে না, মাথা নত করে না, মা-মাটি-মানুষের সাথে বেঈমানি করে না। আর মনে রাখতে হবে এই মাটিতে মিশে আছে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত, এর ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে দু’লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত। এর অপমান মানে তাদের অপমান।
যে প্রসঙ্গে ছিলাম। একজন মহান নারী, যিনি তার পুরো জীবনটা উৎসর্গ করে দিলেন আমাদের একটু ভালো রাখার জন্যে, তার এই মহান আত্মত্যাগের কথা মাথায় রেখেই এগিয়ে যেতে হবে সামনে। পরিবার-পরিজন হারানো একজন দুঃখী মানুষের ব্যথার সমব্যাথী যদি নাও হতে পারি এর চেয়ে লজ্জার আর কিইবা থাকতে পারে। মানব জন্মের তবে কি কোন সার্থকতা থাকে।
সবচেয়ে বড় কথা তিনি তো নিজের জন্যে কিছু চাননি। তার সব চাওয়া-পাওয়া গরীব দুঃখী অসহায় দেশবাসীর জন্যে। যদিও একথা গ্যু যে এখনও যেতে হবে অনেক দূর তবে ইতোমধ্যে তিনি যে ভিত্তিমূল গড়ে দিয়েছেন তার উপর দাঁড়িয়ে আমরা কি তার মুখে হাসি ফোটাতে বাকী কাজটুকুও করতে পারবো না। সুন্দর ও সফল হোক আমাদের আগামীর পথ চলা।
আমাদের মহান নেত্রী হোক সুদীর্ঘ জীবনের অধিকারী।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment