Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

2006 - 2009 : রাজনীতিবিদদের ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভবিষ্যত কি - OMAR KHALED RUMI

 সময়টা ২০০৬ সালের শেষের দিকের। খালেদা জিয়ার সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রায় শেষ। উনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালেন ঠিকই কিন্তু একটা দারুণ ভুল করে বসলেন। নিজ দলেরই রাষ্ট্রপতি ইয়াজুদ্দীন আহম্মেদকে বানালেন তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রধান। এমন একটা ভুল যা পরবর্তীকালের রাজনীতির গতিপথটাকেই বদলেই দিলো। সে কথায় পরে আসবো।

২০০৬ সালের ২৯শে অক্টোবর এই বিশ্রী ঘটনাটা ঘটলো। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছিলো। ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ২০০৭ সালের ২২শে জানুয়ারীর নির্বাচনে তার দল অংশ নেবে না। তিনি লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিলেন।
 
পরিস্থিতি খারাপ দেখে জানুয়ারী মাসের ১৫ তারিখে ইয়াজুদ্দিন জরুরী অবস্থা জারী করে তত্ত¡াবধায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। ১২ই জানুয়ারী তত্ত¡াবধায়কের প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ফখরুদ্দীন আহমেদ। তিনি এবং তৎকালীন সামরিক বাহিনীর প্রধান মঈন ইউ আহমেদ মিলে একটা অলিখিত জোট করে একটা নীল নকশা প্রণয়ন করলেন। শুরু হলো গণতান্ত্রিক ধারা থেকে সরে যাওয়ার পালা যার বহিঃপ্রকাশ ঘটলো তথাকথিত মাইনাস টু ফর্মুলার প্রয়োগের মাধ্যমে। রাজনীতি থেকে দুটো বৃহৎ গণতান্ত্রিক দলের দ্ইু নেত্রীকে সরিয়ে দিয়ে একটা তৃতীয় ধারা তৈরী করার অপচেষ্টা। রাজনীতিবিদদেরকে কলংকিত করে সংস্কারপন্থী নাম দিয়ে তাদের দ্বারা নতুন করে দল গঠন করে একটা কিছু বাস্তবায়নের চেষ্টা। অনেকটা পাকিস্তানী কায়দায় সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নেতাদেরকে অকার্যকর করে নতুন রাজনীতিবিদদের ক্ষমতায় নিয়ে আসা। এ যেন দিন দুপুরে জনগণের চোখকে ধুলো দেওয়ার একটা নগ্ন কৌশল। আর জনগণকে ভোলানোর জন্যে, তাদের মন জয় করার জন্যে সাজানো হলো দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের নাটক। জনগণ সাময়িকভাবে বাহবা দিচ্ছিলো বটে এবং সত্যি কথা বলতে কি রাজনীতিবিদদের উপর তাদের জমাট বাধা ক্ষোভের কারণে সাময়িকভাবে এটাকেই একটা সমাধান ভাবছিলো বটে কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তারাও টের পেলো এটা কোন সমাধান নয়। বরং এতোদিনের গণতান্তিক অর্জনের কবর রচনার প্রাথমিক ধাপ।
 
২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই শেখ হাসিনাকে গৃহবন্দী করা হলো। তার বাসভবনটিকে অস্থায়ী জেলখানা হিসেবে ঘোষণা করা হলো এবং দুর্নীতির দায়ে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হলো। তবে ৩০শে জুলাই তিনি জামিন পেলেন। অবশ্য ইতোমধ্যে ১১ই এপ্রিল ২০০৭ তারিখে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন চলাকালে বিরোধী দলীয় কর্মীর হত্যাকান্ডের দায় চাপিয়ে একটা পুলিশ কেস কর হয়। কিন্তু সেই মামলা খুব একটা জোরালো হয়নি দেখে ২রা সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে ১৯৯৭ সালে একটা পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের বরাদ্দের সময় ৩০ মিলিয়ন ঘুষের বিনিময়ে কাজটি সর্বনি¤œ দরদাতাকে না দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই একই দিনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
 
১৩ই জানুয়ারী ২০০৮ সালে হাসিনাকে বিরোধী দলীয় কর্মী হত্যার জন্যে দায়ী করা হয়। তার সাথে তার বোন শেখ রেহানা এবং তার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমকে দায়ী করা হয়। অবশ্য ৬ই ফেব্রæয়ারী ২০০৮ সালে হাইকোর্ট প্রচলিত জরুরী আইনের অধীনে জরুরী আইনের পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত অপরাধের মামলা চালানো অযৌক্তিক বলে ঘোষণা করে। ১১ই জুন ২০০৮ সালে তাকে চিকিৎসার জন্যে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে এটা অবশ্য আরও এক মাস বাড়ানো হয়।
 
ইতোমধ্যে ১৩টি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় যার মধ্যে আওয়ামী লীগ বারোটিতে জয়লাভ করে। ২০০৮ সালের ৬ই নভেম্বর শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। ২০০৮ সালেরই ২৯ শে ডিসেম্বরের নির্বাচনের জন্যে তার দল আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সাথে জোট গঠন করে। ১১ই ডিসেম্বর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরের প্রতিশ্রæতি দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার অধীন মহাজোট ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২৩০টি আসন লাভ করে। বিএনপি কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন প্রত্যাখান করে। ৬ই জানুয়ারী ২০০৯ তারিখে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদের জন্যে প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ করেন।
 
এই পুরো সময়টা এমন একটা অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে কেটে যায় যে কেউই বুঝে উঠতে পারেনি বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যতে কি হতে যাচ্ছে? শ্যামও অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়েছে। তার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়েছে তথাকথিত সংস্কারপন্থীরাই হয়তো ঠিক আছে। আবার মাঝে মাঝে এমনটাও মনে হয়েছে যে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীন যে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চলছে তাই হয়তো দেশকে একটা কাঙিক্ষত জায়গায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। তারা একথাও ভেবেছে যে, রাজনীতিবিদদের ছাড়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভবিষ্যত কি।
 
এই সময়টায় আরও একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে তত্ত¡াবধায়ক সরকার কিন্তু রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্যে কোন পদক্ষেপই হাতে নিতে পারেনি। কারণ আর কিছু নয়। তারা কোন জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত সরকার ছিল না। তারা নানা ধরনের টালবাহানা করে সময় ক্ষেপন করেছিলো। জনগণ শেষমেষ এটা বুঝে ফেলে এবং তারা আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হতে থাকে।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak