রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মতিহারের সবুজ চত্বরে বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে শহরে ফেরার জন্য উঠলাম। অবশ্য ইচ্ছে ছিলো আরও কিছুটা সময় বসব কিন্তু আকাশ যেভাবে ভারী হয়ে আসছে তাতে আর না বসাই যৌক্তিক মনে হলো। রিকশার দিকে আগালাম। দু’জন রিক্সাওয়ালা। একজন সোজা সাপ্টা বলে দিলো, যাবো না। অন্যজন রাজী হলো। তবে ভাড়া একটু বেশী লাগবে। রাজী হলাম। দুটো পয়সা বেশী পেলেও পাবে তো গরীব রিকশাওয়ালাই।
রিকশাওয়ালা বয়স্ক মানুষ। তার চেহারা মলিন। পোশাক-আশাক জীর্ণ শীর্ণ। কিন্তু ভেতরে দেবব্রত সিংহের সেই তেজ কবিতার তেজী মেয়ে সাজলীর মতো তেজোদীপ্ত একটা ব্যাপার যে আছে তা টের পেলাম তার কথাবার্তা শুনেই। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দেখিয়ে সে বলল, আইয়ুব খানের করা। এরপর আর কেউ এ রকম বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়েছে।
তবে একথা সত্য দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি পাকিস্তান আমলেই বানানো। সে আরও যোগ করল রাজশাহী মেডিকেলও তো ঐ সময় বানানো। এ সব কথা কেউ মনে রাখে না। রাজাকার তাহলে কারা? আমি শুধু শুনে যাচ্ছিলাম। তাই সে নিজেই প্রশ্ন করে নিজেই তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলো। এদেশকে যারা স্বাধীন করার নামে মূল দেশ থেকে আলাদা করেছে তারাই। মূল দেশ হলো পাকিস্তান। এখন মনে হচ্ছে স্বাধীন হয়ে ভালো হয়েছে। কিন্তু আরও সময় গড়াক তখন বোঝা যাবে ভুল হয়েছে না ঠিক হয়েছে। দিল্লীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বাধীন হয়েছিলো মুর্শিদ কুলি খাঁ, সুজাউদ্দোলা, আলীবর্দী খাঁ। খুব একটা লাভ হয়নি। লাভ যে হয়নি সেটা বোঝা গেল পরে। পড়ল ইংরেজদের খপ্পরে। কালে কালে বাংলার ভুলের কারণে পুরো উপমহাদেশ রসাতলে গেলো। পাপী মরে দশঘর নিয়ে। বাংলার ভুলের মাশুল পুরো উপমহাদেশ দিয়েছিলো।
সে আরও যোগ করলো রাস্তাঘাট যেখানে যেটা জরুরী সেটা না করে এমন সবগুলো করা হচ্ছে যাতে ঐসব এলাকায় জমির দাম বাড়ে। যাদের স্বার্থ জড়িত তারা যেন লাভবান হতে পারে। এসব কিছুই এক ধরনের ধোকা। উন্নয়নের নামে ধোকা। একটা বিশেষ দল ও তার লোকজনকে সুবিধা দেওয়ার সুযোগ তৈরী করা।
সে ভীষণ অস্থির হয়ে উঠছে ক্রমশঃ। তার অস্থিরতা সহজেই বোঝা যায়। সে একটা মতবাদের সমর্থন করে। রিকশা চালায় বলে তার জ্ঞান যে কোন অংশে কম তেমনটা মনে হলো না।
এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য এটা নয় যা আপাতদৃষ্টে মনে হলো। যে কেউ যে কোন মতবাদ ধারণ করতে পারে। যে কারো যে কোন পন্থা ভালো লাগতে পারে। ভালো জিনিসই যে ভালো লাগবে তাও কিন্তু নয়। জগৎ সংসারে তাহলে মদ, গাঁজা, মাংস - এতো চলত না। আসল কথা হলো যার হৃদয় যা চায়। যার মগজে যে মতবাদ বাসা বেঁধেছে। সৃষ্টিকর্তার অনুসারী যেমন আছে শয়তানের অনুসারীও তো তেমন কম নেই। এদের মধ্যে অনেক বড় বড় জ্ঞাণীও তো আছে। বরং সংখ্যায় তাদের বেশীই বলতে হবে। আমি বলতে চাচ্ছিলাম মতবাদের প্রতি মানুষের দুর্বলতার কথা। এর তীব্রতা, এর দৃঢ়তা, এর প্রতি আনুগত্য এবং নিবেদন আর উৎসর্গ - এতোটাই বেশী যে সে তার জীবন ও মাল দুটোই কোরবানী করতে রাজী।
রিকশাওয়ালার মতামতটাও অনেকটাই তাই। এটা সে স্পষ্ট জানিয়েও দিলো “মত বদলাতে পারলে অনেক কিছুই করতে পারতাম কিন্তু সে ইচ্ছে নাই” তার অবস্থান পরিষ্কার। যত দুর্দশাই আসুক না কেন আর কিছু হোক বা না হোক - সে তার অবস্থান থেকে নড়তে নারাজ। একেই বলে আনুগত্য। আপনি যদি আপনার বিরোধী মতবাদের মানুষদের ঘর-বাড়ী সোনা দিয়েও মুড়িয়ে দেন তারপরও তারা তাদের মতবাদ থেকে সরবে বলে মনে হয় না। মনোবিজ্ঞান, দর্শন আর ইতিহাস তো তাই বলে।
মানুষ তাঁর সবকিছু বিসর্জন দিতে পারে। তবু সে তার মতবাদ আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। অন্য কোন মত গ্রহণ করা তো দূরে থাক সামান্য আপোষ করতেও সে রাজী নয়।
এ জন্যেই রাজনীতিতে সাফল্যের জন্যে ভুল হোক আর ঠিক হোক অনুগত মানুষের জন্ম দিতে হয়। হোক না ভুল মতবাদ তবু যদি তা জনপ্রিয় হয় তবে তার চর্চা ও সাফল্যের সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
আমাদের দেশে ভারত বিদ্বেষ একটা দারুণ জণপ্রিয় মতবাদ তেমনি পাকিস্তানের কাছ থেকে আলাদা হওয়াটা ঠিক হয়নি এটাও একটা ভুল ধারণা। আর এ সব ধারণাকে বুকে পুষে রেখে একটা দলের অনুসারী পশ্চাদপদ মানুষেরা সুন্দর আগামীর কথা ভাবতেই পারে না। তারা ভুলে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পৃথিবীতে কারও খপ্পরে যাওয়ার অর্থ সম্পূর্ণ আলাদা। এটা সেই ১৭৫৭ সালের ইংরেজদের দখলদারিত্বে চলে যাওয়া নয়। এটা অন্যরকম পরাধীনতা। ভিন্ন এক দাসত্ব। বর্তমানের সাথে তাল মেলাতে না পারা জনগোষ্ঠীগুলো এমনি এমনিই দাস হয়ে যাবে। তা সে স্বাধীন কোন দেশই হোক আর কোন স্বাধীন দেশের অন্তর্গত কোন প্রদেশই হোক। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশই এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ।
বর্তমানে টিকে থাকতে গেলে, মাথা তুলে দাঁড়াতে হলে একটা জনগোষ্ঠীর সবাইকে সচেতন হতে হবে। সামনে আগাতে হবে, শীক্ষা-দীক্ষা, কারিগরি যোগ্যতা আর চিন্তা চেতনায় অগ্রসর হতে হবে। নতুবা বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাই তাকে গ্রাস করে ফেলবে। আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা স্বাধীন হতে পেরেছিলাম। এটা আমাদের জন্যে বেঁচে থাকার একটা সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। এখন এটাকে কাজে লাগাতে হবে।
কিন্তু এই সব ভাবনা ভাববার সময় কই? আমরা তাকিয়ে আছি অতীতের দিকে। আমাদের তথাকথিত অভিভাবকদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ক্ষত আমাদের হৃদয়ে যে চিরন্তন বিচ্ছিন্নতাবোধের জন্ম দিয়েছে তার থেকে কে আমাদের মুক্তি দেবে?
সামনে এগিয়ে পরিবর্তিত বিশ্বে টিকে থাকার জন্যে নিজেকে যোগ্য করে তোলার মানসিকতা আমাদের একদম নাই। আমাদের আজও বনের বাঘে যতোটা না খাচ্ছে তার চেয়ে বেশী খাচ্ছে মনের বাঘে। এই মতবাদের মানুষগুলো কিভাবে এগিয়ে গিয়ে বিশ্ব মঞ্চে জায়গা করে নিতে পারে তার কোন ভাবনা কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আমাদের অনেকেরই যাত্রা অতীতমুখী।
ধর্মের নামে আমাদের ভুল দর্শন আমাদের অনেক চালাক মানুষদের জন্যে অনেক ভালো পুঁজি হয়েছে। ধর্মভীরুতা নয় আমাদের ধর্মান্ধতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে এটা করলে ধর্ম যাবে, ওটা করলে ধর্ম যাবে। কেউ বলছে না যে ধর্মে যা বলা হয়েছে তার বাস্তবায়নই মানবতা। এই জনপদের মানুষগুলোকে কল্যাণকর জীবন দানের চেষ্টাই তো ধর্মের বাস্তবায়ন।
ইকবালকে ধরা হয় সময়ের শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের একজন। ইকবাল বলেছেন, ইসলামের সাথে অন্য ধর্মের সবচেয়ে বড় পার্থক্য এটা অন্য যে কোন ধর্মের চাইতে জীবন ঘনিষ্ঠ। অন্য ধর্ম যেখানে শুধু পরকালের ভয় দেখিয়েই ক্ষান্ত ইসলাম সেখানে শুধু পরকালের ভাবনায় ডুবে থেকে তার সংস্থানের জন্যে কিছু আচার অনুষ্ঠানের নাম নয়। এটি একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। আর এজন্যেই মুসলমানদের দুনিয়ায় যেভাবে জাগতিক জীবন মূর্ত হয় তা অন্য কোথাও দেখা যায় না। ইসলামের এই অগ্রগামীতাকে বুঝতে না পেরে তথাকথিত একটা সম্প্রদায়, সর্বক্ষণ তাত্তি¡ক ভাবনায় রত থেকে ইসলামী পুনর্জাগরণের যে মহান ঐতিহ্যের উদাহরণ মুসলিম দুনিয়া স্থাপন করেছে তাকে পেছনে ফেলে বরং আমাদের অনেকেই মধ্যযুগে যাত্রা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর সবচেয়ে দুঃখজনক হলো এরা এসব বিষয়ে জানলো না। পড়াশোনা, জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা কিংবা পরিষ্কার কোন দর্শন না থাকায় এরা দিনে দিনে একটা জগদ্দল পাথরে পরিণত হচ্ছে।
আজ থেকে চৌদ্দশ বছর আগে ইসলাম যে মহান ব্রত নিয়ে ধরাধামে আবির্ভূত হয়েছিলো এবং পৃথিবীর সবচেয়ে স্মার্ট মানুষ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যে উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন তার তিরোধানের পর তার অনুসারী হিসেবে আমাদের সেটা আরও বিস্তৃত ও ব্যাপক করতে পারার কথা ছিলো কিন্তু আমাদের কূপমন্ডুক চিন্তা ভাবনার কারণে এবং ইসলামকে সঠিক ও যথার্থভাবে উপলব্ধি না করতে পারার কারণে আমরা ইসলামের মহান আদর্শ থেকেই দূরে সরে যাচ্ছি।
আমাদের বিবেক একবারও এটা প্রশ্ন করে না কেন নবী (সাঃ) মক্কা বিজয় করে সেটাকে মুসলমানদের অধীনস্ত করলেন। মক্কার এই যে স্বাধীন হওয়ার ঘটনা আমাদের কি শিক্ষা দেয়? মক্কার অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠার জন্যে এর স্বাধীনতার প্রয়োজন ছিলো। এটা এমন একটা জনগোষ্ঠীর অধীন ছিলো যারা মূলতঃ জালিম। নবী (সাঃ) এটা মুসলমানদের জন্যে মুক্ত করলেন এবং সেখানে সততা, ন্যায়নিষ্ঠা, সাম্য, মৈত্রী আর সমৃদ্ধির একটা চমৎকার পরিবেশ তৈরী করলেন।
তিনি তার দীর্ঘ ২৩ বছরের জীবনে আল্লাহ্র পাঠানো ঐশী বাণীকে অনুসরণ করে মুসলমানদের জাগতিক জীবনকে সৌন্দর্য ভরিয়ে দিয়েছিলেন যা তার পরকালের সুন্দর জীবনকে নিশ্চিত করবে। কিন্তু আজ হচ্ছে তার উল্টোটা। আমরা আফসোস করছি জালিমদের কাছ থেকে কেন আলাদা হলাম! হায়রে কপাল! মানুষের এই পশ্চাদপদ দার্শনিক ভাবনাই এখন পর্যন্ত যতো সংঘাতের মূল।
যে প্রসঙ্গে এই লেখা শুরু করেছিলাম। যে হৃদয় ঘটিত সংকটে সেই রিকশাওয়ালাটি পতিত। যে মতবাদ তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে রেখেছে তা যে শুধু তার মতো একজন সাধারণ রিকশাওয়ালারই সংকট তা কিন্তু নয়। এই ধরণের মানষিক বিকৃতির সংকট, মতবাদের প্রতি অন্ধ ঝোঁক একটা বিরাট জনগোষ্ঠীকে আজও আচ্ছন্ন করে রেখেছে। বিপরীত মানসিকতার এই মানুষগুলোর তাদের মতবাদ বাস্তবায়নের জন্য পিছনে যেতেও আপত্তি নেই। একটা তাত্তি¡ক ঘোর তাদের পেয়ে বসেছে। সেই ঘোর কাটুক এটাও তারা চায় না। তাদের চোখে পড়ে না যে তাদের মতবাদের প্রবক্তারা পরকালের কথা বলে অতীতেও তাদের নিজেদের ইহকাল গোছানোর কাজে ব্যস্ত ছিলো। জনগণের সুখ শান্তি যা সত্যিকারের ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য তার ধারে কাছেও তারা ছিলো না। তাদের তৎপরতা ছিলো মানুষের এইসব চাওয়া পাওয়ার একটা আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কোথায় কি বললে কোথায় কি লিখলে একটা বিরাট জনগোষ্ঠী মানবিক সান্তনা লাভ করবে সেটা তারা ভালই বুঝতো। কিন্তু সত্যিকার অর্থে কি কাজ করলে, কি স্বার্থ ত্যাগ করলে, কি উন্নয়ন করলে জনগণের সত্যিকারের কল্যাণ হবে তার ধারে কাছেও তারা ছিলো না।
মতবাদের বাস্তবায়ন মূলত অন্য কোন কারণে তারাও আশা করে না। তারাও খুব ভাল করে জানে তাদের মতবাদের ধারক ও বাহকরা ক্ষমতায় এলে তাদের জন্যেই ফায়দা। এটা তাদের চলার ও টিকে থাকার পথকে সুগম করবে। এর মধ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণ কতোটুকু তা নিয়ে তাদেরও মাথা ব্যাথা নেই। স্বার্থপর মানুষের দর্শন তাই ধর্ম কিংবা কর্ম কোনটাই নয়। এক ধরনের অন্ধ মানসিকতা যা তাদের নিজস্ব পৃথিবীর চারপাশে ঘুরপাক খায়।
সত্যিকারের আলোর ঝলকানি তাদের চোখে ধাঁধাঁ লাগিয়ে দেয়। উন্নয়ন ও তার যে মহাপরিকল্পনা সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখাচ্ছে তার দিকে পিছন ফিরে থেকে অন্ধকারের পথে যাত্রার এই আগ্রহ আমাদের অতীতের বিরোধী আর পশ্চাদপদ মানুষদের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এরাই বার বার একটা ভূ-খন্ডের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে।
একটা কথা না বলে পারছি না। ন্যায় নীতি নয়, ধর্মের পবিত্র বোধ নয় বরং এক ধরনের গোড়ামী দ্বারাই আমরা এদেরকে তাড়িত হতে দেখি। কিভাবে এই রাষ্ট্রকে কিভাবে এর জনগণকে নিয়ে সামনে আগানো যায় সুন্দর আগামীর পৃথিবী গড়ার জন্যে তা না ভেবে বরং কিছু অন্ধবিশ্বাস পোষণকারী মানুষের কুসংস্কার আর সংকীর্ণ মানসিকতাকে পুঁজি করে তাদেরকে প্রগতির বিপরীতে রাজনীতির মাঠে দাঁড় করিয়ে দিয়ে ফায়দা হাসিলের এই যে ব্যর্থ চেষ্টা সত্যিকারের বিবেকবান মানুষ কখনোই এটা মানবে না। এ লড়াই তাই এগিয়ে যাওয়ার লড়াই।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment