Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

তথ্য প্রযুক্তিই পরাশক্তি আমেরিকার জন্য কাল হলো - ওমর খালেদ রুমি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১১৯১৯) এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-১৯৪৫) এই বিশ্বযুদ্ধ ওয়ার্ল্ড অর্ডারে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে পরিবর্তন এনেছিলো তা হলো পরাশক্তি হিসেবে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের উত্থান। অবশ্য এই সময়কালটাতে আরও যে উল্লেখযোগ্য ঘটনাটা ঘটে গেলো তা হলো সমাজতন্ত্রের উত্থান এবং বিশ্বব্যাপী এর প্রচার ও প্রসার।


একটা মজার কথা পুঁজিবাদের প্রচারের জন্য কিন্তু এতোটা পাঠ্যপুস্তক বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়েনি। মানুষ আপনা আপনিই তা রপ্ত করার পাশাপাশি আপনও করে নিয়েছিলো। সমাজ বদলের একটা মোক্ষম মতবাদকে প্রচারের জন্যে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বকে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হলো। কারণ মানুষ বরাবরই তার সৌভাগ্য আর সমৃদ্ধিকে নিজের কব্জায় রাখতে আগ্রহী এটা ভাগাভাগি করে নিতে তার চেয়ে বেশী অনাগ্রহী। সময় যতো গড়াচ্ছিল নানা প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার প্রসার হচ্ছিলো বটে তবে যুক্তরাষ্ট্র আগাচ্ছিল তার চেয়ে অনেক বেশী গতিতে। সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধি, দক্ষ জনবল, মূল্যবান খনিজ সম্পদের পর্যাপ্ততা - সবকিছু আমেরিকাকে দিন দিন অপ্রতিদ্ব›দ্বী করে তুললো। একটা সময় মানুষের ধারণা হতে লাগল যে হয়তো সমাজতন্ত্র তার প্রতিদ্ব›দ্বী হয়ে উঠবে কিন্তু দিনে দিনে উল্টো দেখা গেল সমাজতান্ত্রিক পৃথিবীরই বরং দৈন্য দশা, পূর্ব ইউরোপ, রাশিয়া, চীন ইত্যাদি।


প্রধান প্রধান সমাজতান্ত্রিক অঞ্চলগুলোতে সমৃদ্ধির কোন লক্ষণ দেখা গেল না। অবশেষে ১৯৯০ এর শেষে এসে সমাজতান্ত্রিক বøকের হারের মধ্য দিয়েই ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান হলো। আমেরিকা আবারও ইউনিপোলার পৃথিবীর একমেব অদ্বিতীয় সুপার পাওয়ার হিসেবে স্বীকৃত হলো। কিন্তু পট পরিবর্তন হতে লাগলো ধীরে ধীরে। ততোদিন ধরে আমেরিকার হাতে যা ছিলো তা অন্য কারো ছিলো না। সবদিক দিয়েই সে ছিলো এগিয়ে। বিশেষ করে খাদ্য সামগ্রী আর তেল-এর উপর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সে জাতি, রাষ্ট্র আর তার মানুষগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছিলো। এই অবস্থার হঠাৎ পরিবর্তন হবে এমনটাও মনে হচ্ছিলো না। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে শুরু হওয়া তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব ধীরে ধীরে হিসাব পাল্টে দিতে লাগলো। যারা এতোদিন নিঃস্ব ছিলো তাদের হাতেও এই অবাধ ব্যবহার যোগ্য প্রযুক্তিটি এসে যেতে লাগলো বানের জলের মতো সুড় সুড় করে।


এর সর্বোচ্চ ব্যবহার পৃথিবীতে ধণী গরীবের পার্থক্য যেমন কমিয়ে আনতে লাগল তেমনি বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রথমে ভারসাম্য আনয়নের পাশাপাশি আস্তে আস্তে তা যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে অন্যদের পাল্লা ভারী করে দিতে লাগলো। উৎপাদন প্রক্রিয়া এটা রাতারাতি যে পরিবর্তন আনলো তা অন্যদের যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীলতা তো কমালোই পাশাপাশি মাথা তুলে দাঁড়াতেও সাহায্য করলো। চীন-রাশিয়া সহ অনেকগুলো দেশ মাথা তুলে দাঁড়ালো। পাশাপাশি বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে লাগলো ইরান আর তুরস্ক। এদের উত্থান সমীকরণটাই বদলে দিতে লাগলো। বিশ্ব রাজনীতির নিয়ামক বা নিয়ন্ত্রক রাষ্ট্র না হলেও ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের মতো একটা ছোট দেশও পরাশক্তিগুলোর মধ্যে রশি টানাটানির বিষয় হয়ে দাঁড়ালো।


সবচেয়ে আশার আলো যে বিষয়টা পৃথিবীর ইতিহাস আমরা যেটুকু জানি তাতে দেখা গেছে পরিবর্তনগুলো হয়েছে খুবই ধীরে ধীরে। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তিই হলো একমাত্র বিষয় বা উপাদান যা এত দ্রæত পৃথিবীকে যেমন বদলে দিয়েছে তেমনি পার্থক্যকেও ঘুঁচিয়ে দিয়েছে খুবই দ্রæত। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এটা এমন একটা লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড তৈরী করেছে যা ছোট বড় সবাইকে বলতে গেলে অনেকটাই এক কাতারে নামিয়ে এনেছে। অতীতের অনেক তত্ত¡, তথ্য, মেকানিজম বা আপ্ত কৌশলকে ব্যর্থ প্রমান করে এটা এমটা একটা দিগন্ত উন্মোচন করেছে যেখানে মানুষ এবং সমাজ তার কাজের ফলাফলকে সচক্ষে সরাসরি দেখতেও যেমন পারছে তেমনি উপলব্ধিও করতে পারছে তার অগ্রগতি। আমার মনে হয় এটাই এমন একটা বিষয় যা এই প্রথম পৃথিবীকে সবচেয়ে বড় চমকটা দেখালো। আজ তাই ইরানকে বলতে শোনা যায় “আমেরিকা একটা ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। তাদের ভয়ে আমরা কোন কার্যক্রমই বন্ধ রাখবো না।”


Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের...

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখ...

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomer...