এই
ইতিহাস কিভাবে শুরু করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। অবশেষে ঘাঁটতে ঘাঁটতে একটা
যোগসূত্র খুঁজে পেলাম। সত্তর ও আশির দশকে আমাদের এখানটায় অর্থাৎ স্বাধীন
বাংলাদেশে পর পর দু’জন তথাকথিত জেনারেল ক্ষমতায় ছিলেন। কিভাবে তারা
মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভ করা গণতন্ত্রের চর্চাকারী একিিট দেশে এভাবে
ঝেঁকে বসেছিলেন। বাতাস তাদের অনুকূলে বইছিল। এই বাতাস আসছিল সুদূর
আটলান্টিকের ওপার থেকে। একে তো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে
পাকিস্তান-চীন-আমেরিকার অক্ষশক্তি কূটনৈতিক ও সামরিক - উভয়ভাবেই হেরে
গিয়েছিলো। সেই সাথে বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিলো তাদের এদেশীয় দোসররা। কিন্তু
বেকায়দায় তাদের বেশীদিন থাকতে হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে সপরিবারে
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তারা তাদের প্রাথমিক সাফল্যের মুখ দেখে।
পরবর্তীতে কোন দিক থেকেই কোন ধরনের শক্ত বা দুর্বল - কোন প্রকারেরই
প্রতিরোধের মুখোমুখি না হওয়ায় তাদের সামনে আগানোর পথ প্রশস্ত হয়। তাদের
ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। এই সময় তারা আন্তর্জাতিক বাতাসকেও তাদের পক্ষে পায়।
দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র আমেরিকা বিশ্বব্যাপী তার স্বার্থেই অস্ত্র বিক্রি বাড়াতে
দেশে দেশে সামরিক শাসক বসানোর কাজ করছিল। প্রতিদ্ব›িদ্ব রাশিয়ার বিপরীতে
এটা তাকে ভালো ফলাফল এনে দেবে এটাই ছিলো তাদের প্রত্যাশা। তাই গণতন্ত্রের
বীজমন্ত্র উচ্চারণকারী মুরুব্বী রাষ্ট্রটি আড়ালে আড়ালে তার এই নোংরা খেলা
শুরু করেছিলো।
বরাবরই সামরিক শক্তির উপর নির্ভরশীল এই রাষ্ট্রটি
বিশ্বব্যাপী সামরিক সরঞ্জামাদি বিক্রি করেই তার বাজেটের বিরাট অংশ আহরন
করে। তাই তার মিত্র রাষ্ট্রগুলোতে যদি সামরিক শাসক থাকে অথবা অন্যান্য
রাষ্ট্রগুলোতেও যদি নতুন নতুন সামরিক শাসক বসানো যায় তাহলে সুবিধা মূলতঃ
তারই। তার এই কাজে তাকে সহযোগিতা করছিলো সিআইএ।
এখানে আরও একটু বলে
রাখতে চাই যে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়কালটাতে ঘটে যাওয়া বেশীরভাগ
ঘটনাগুলোকেই দেখানোর চেষ্টা করা হয় সময়ের প্রয়োজনে ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক
ঘটনাপ্রবাহ হিসেবে। কিন্তু আদতে ব্যাপারটা তা ছিলো না। এগুলো ছিলো সাজানো
ঘটনাপ্রবাহ যা এর নেপথ্যের কারিগররা সিরিজ আকারে একটার পর একটা উপস্থাপন
করেছিলেন। বলতে বাধা নেই এত সূ²ভাবে এবং প্রয়োজনীয় আবেগ (ধর্মীয়!) মিশিয়ে
এটা করা হয়েছিলো যে ভিলেনদের মৃত্যুতেও মানুষ হাউমাউ করে কেঁদেছিলো। তাই এ
কথাও বলে রাখব যে পুরো ঘটনাপ্রবাহ যারা পরিচালনা করেছিলেন তাদের কৃতিত্ব
দিতেই হবে। পাশাপাশি একথা তো বলতেই হবে যে, স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি তাদের
অর্জনকে ধরে রাখার ব্যাপারে যতটা না সজাগ আর সতর্ক ছিলো তার চাইতে হাজার
গুণ বেশী সক্রিয় আর সচেতন ছিলো এর বিরোধীতাকারীরা।
তাদের এই
অপচেষ্টায় কাজও হয়েছিলো। চার বছর পার হওয়ার আগেই অর্জিত বিজয় নষ্ট হয়েছিলো।
জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিলো সপরিবারে। অতঃপর বাহিরে মোস্তাক আর ভেতরে
জিয়ার যে কম্বো দেখা গেল তা পরবর্তীর জন্য উর্বর ক্ষেত্র তৈরী করেছিলো।
ইতিহাসে মোশতাককে বলা হয় কালপ্রিট। কথাটা অস্বীকার করবো না। কিন্তু মোশতাক
তো ছিলো হাতের পুতুল। মূল খেলা যারা খেলেছিলো তারা কিন্তু ধীরে ধীরে
উজ্জ্বল আলোতে চলে এসেছিলো। মাথা গরম নির্বোধ খুনীরা দেশ ছাড়ল মাত্র কিছু
দিনের মাথায়। যাবার আগে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করল ঠান্ডা মাথায়। বাম দিক
থেকে আক্রমণ করা তাহেরকে আরও বামের গহীন অন্ধকার কবরে ঠেলে দিলেন জিয়া।
মাঠে তখন আর কেউ নেই।
সবচেয়ে আজব ব্যাপার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্য
তারা অনুতপ্ত না হলেও এই অজুহাতেই আবার অনেকেরই সরেও যেতে হলো। সামরিক
বাহিনীর প্রধান কে এম শফিউল্লাহ সাইড লাইনে চলে গেলেন। সবচেয়ে চমক লাগানোর
ব্যাপার হলো জিয়া এন্ড কোম্পানী দেশ বিদেশ থেকে খুঁজে খুঁজে
পাকিস্তানপন্থীদের জড়ো করলেন। এতে দেশের কি লাভ হলো জানা নেই তবে এটা
নিশ্চিত হতে পারা গেল যে স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে সংস্থানের একটা
বন্দোবস্ত হয়ে গেলো। এতো কাল ধরে মহীরূহ আওয়ামী লীগের ছায়ায় যারা বাড়তে
পারছিলো না এইসব একনেতা দুইনেতা সর্বস্ব দলগুলো আর তার কান্ডারীরা পথ খুঁজে
পেল। এদের সবারই যন্ত্রনাটা মূলতঃ একই ধরনের ছিলো।
পাকিস্তানী
শাসনামলের তেইশ বছরের শোষণ আর নির্যাতন এদের কাছে তিক্ততার কিছু ছিলো না।
কারণ এটা এসেছিলো তাদের ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে। প্রিয়তম বা প্রিয়তমার
দেওয়া বেদনা যেমন মহৎ আর মধুর তেমনি পশ্চিম দিক থেকে আসা যে কোন আঘাত আর
অপমান তাদেরকে মর্মাহত করেনি। এ আঘাত তো বিধ্বস্ত করেছিলো তাদেরই যারা এই
বাংলার মাটি আর মানুষকে বরাবরই তাদের মা-এর মত দেখেছে।
নিয়তির কি
নির্মম পরিহাস? একটা জাতির নৈতিক অবক্ষয় এতোটা কর্কশ হতে পারে না দেখলে
বোঝা যেতো না। ধরেই নিলাম মতপার্থক্য ছিলো। থাকতেই পারে। সেটা হতে পারতো
দেশকে গড়া জন্যে দেশের ভেতরেরই দুটো দেশপ্রেমিক দলের মধ্যে কিন্তু তা না
হয়ে তা হলো আমরা আর সেই পুরনো ফেলে আসা শত্রæ পাকিস্তানের মধ্যেই। এ কথা
কেমন করে ভোলা যায়?
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর থেকে ৩০শে মে ১৯৮১
সালে জিয়ার নিহত হওয়ার সময়কাল পর্যন্ত সময়টাতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের
শক্তিকে ধ্বংস করার জন্যে যত নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হয়েছে তার ইতিহাস পরলে
গা শিউরে উঠবে। অনেকেই বলেন মুজিব হত্যা পরবর্তী নাজুক বাস্তবতায় জিয়ার
আগমন এবং তার হাল ধরা ছিলো এক ক্রান্তিকালের উত্তরণের ইতিহাস। কিন্তু আদতে
কি ব্যাপারটা তা-ই ছিলো। নাকি ইচ্ছে করেই এই ক্রান্তিকাল সৃষ্টি করা
হয়েছিলো। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতাকে বিবেচনা না করে যে সমস্ত
খামখেয়ালীপূর্ণ আচরণ করা হয়েছিলো সবার পক্ষ থেকে তাতে নাজুক একটি সময় আসা
কঠিন কিছু ছিলো না।
সর্বোপরি প্রাকৃতিক বিপর্যয়, জাতীয় ও
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও অসহযোগিতা এবং চির উন্নত শির মুজিবের মাথাকে নত
করার যে ঘৃণ্য ও হীন চেষ্টা, তার সম্মিলিত ফলাফল একটা অমানিশার ঘোর অন্ধকার
নামিয়ে এনেছিলো। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। সাময়িক ভালো কিন্তু ভালো নয়।
প্রথমে জিয়া, তারপর এরশাদ, তারপর খালেদা জিয়া এবং সাথে যুক্ত হওয়া জামায়াতে
ইসলামী ভুল রাজনীতির পাল্লায় পরে যে চোরাগলিতে পথ হারিয়েছে তা থেকে বেরিয়ে
আসা সত্যিই কঠিন। আর এর বহিঃপ্রকাশ দেখি সাম্প্রতিক সময়ের তাদের আচরণে।
আজও তারা তাদের তথাকথিত অভিভাবক আমেরিকার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে যদি সে
দু’এক ফোঁটা জল মুখে ঢেলে দেয়। ঘৃণা লাগে এসব দেখে যে বাংলার মানুষ বা
মাটি নয়, তাদের উদ্ধারকারী হলো আটলান্টিকের ওপারের একটি পরাশক্তি। এরাও
আবার দেশপ্রেমের বুলি আওড়ায়।
দেশপ্রেমের জ্বলন্ত উদাহরণ, আজীবনের
মথা উচু শের, বাংলার কাঁদামাটির শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিবের পর্বতপ্রমান
ব্যক্তিত্ব তাকে কারোরই গোলামে পরিণত করেনি। তাইতো শেষ পর্যন্ত তাকে
বিশ্বাসঘাতক বাঙালির হাতে মরতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট যে শিক্ষা
আমাদের জন্যে রেখে গেছে তা নত হতে শেখায় না। আপোষ করতে শেখায় না, হারতে
শেখায় না। প্রশ্ন করো বাংলার মাটিকে, কে তার আপন? জবাব আসবে একটাই। প্রেম
আর দ্রোহে যে মুজিবকে তোমরা মৃত প্রমাণ করতে চাও তার অস্মিস্ফুলিঙ্গ
প্রতিনিয়ত আরও উজ্জ্বল আর দীপ্তিময় হচ্ছে প্রতিদিন।
একটু আবেগ প্রবণ
হয়ে পড়েছিলাম। আর তা-ই সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো মূল আলোচনা থেকে। বলছিলাম ১৫ই
আগস্ট পরবর্তী ঘটনাবলীর ধারাবাহিকতা কি চিহ্ন রেখে গেছে তা কি আমরা জানি,
তা কি জানে এই নতুন প্রজন্ম। জানে না। জানলে শিরায়-শিরায় রক্তের প্রবাহের
চাপ বাড়ত। তপ্ত হত লহু। ২৩ বছর পশ্চিম পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে লড়ে যে
স্বাধীনতার মহাকাব্য লেখা হয়েছিলো তাকে বিভ্রান্ত করার জন্যে হেন চেষ্টা
নাই যা করা হয়নি। সেদিন যারা দেশপ্রেমিক এদেশের মাটিতে তারা তাদের লজ্জা
কোথায় লুকোবে তা বুঝে উঠতে পারছিলো না। কত জীবন যে অপশক্তির খেয়ালের বলি
হয়েছে তা বলে বোঝানো যাবে না। মুক্তিযোদ্ধা হওয়াটাই যেন অপরাধ ছিলো। দুঃখ
শুধু একটাই। খারাপ মানুষগুলো তাদের খারাপ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্যে একজোট
হতে পারলো, কিন্তু দেশপ্রেমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করতে পারল না।
তারা বিচ্ছিন্ন থাকল, মার খেল এবং মরলো।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিলো ৩রা
নভেম্বর খালেদ মোশাররফের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে যাতে পানি ঢেলে সব মাটি করে
দিলো জাসদের বাস্তবতাবর্জিত তথাকথিত মহান বিপ্লবী কর্ণেল তাহের। তার মাথায়
একবারও আসল না যে রাঘব-বোয়ালরা সব সময়ই চুনোপুঁটিদের গিলে খায় তাতে সেই
পুটি যতই সফেদ শফরি হোক আর যতই লাফালাফি করুক। বলার কিছু নেই। তাহেরের
ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা ইতিহাস জানে। সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা হলো এটাই, তাকে
বাঁচাতে যেসব আইনজীবীরা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছিলো তারাও ছিলো জিয়ারই লোক।
বিদ্রোহের শুরুতেই বিতর্কিত সামরিক সদস্যরা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে
হত্যা করলো। কারণ এরা বেঁচে থাকলে সমস্যা। আবার হয়তো জনগণ এদের পিছনে জড়ো
হবে।
ক্ষমতা বরাবরই লোভনীয়। লাল গালিচায় মোড়া আমাদের প্রজাতন্ত্রের
অফিসগুলোর নরম কোমল মেঝেতে যারই পা পরেছে সেই খেই হারিয়েছে। জিয়ারও তাই
হলো। তিনি সামরিক বাহিনীর লোক। তার উপরে আবার গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করার
অভিজ্ঞতাও ছিলো। সমস্ত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি সামরিক বহিনীর
ছত্রছায়ায় লালন-পালনযোগ্য একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি গঠন করতে সক্ষম হলেন।
সেখানে তার পেছনে তার সমমনারাই জুটল। জমে উঠল রাজনৈতিক খেলা। বলা হয় তিনি
বহুদলীয় গণতন্ত্রেও প্রবর্তক। কিন্তু তার ধরণ, অন্তর্গত রহস্য, তার
রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ কেমন তা কি কোনদিন আমরা জানতে চেয়েছি। আওয়ামী লীগ যখন
রাজনীতি করার অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন করলো তাতে একটিমাত্র জায়গায়
“বঙ্গবন্ধু” কথাটা থাকার কারণে তাদের কাগজপত্র সংশোধন করার জন্যে বলা হলো।
বাদ দিতে বলা হলো “বঙ্গবন্ধু” কথাটিকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের জন্যে এটা ছিলো
সত্যি কথা বলতে গেলে অস্তিত্বের প্রশ্ন। তারা তাই সংশোধন না করে পুণরায়
নতুন কাগজপত্র জমা দিলো যার কোথাও “বঙ্গবন্ধু” কথাটি তারা ইচ্ছা করেই
লেখেনি। এই হলো তথাকথিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বরূপ। কি বলবো? স্বাধীন
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে হবে বঙ্গবন্ধু কথাটা বাদ দিয়ে। এবার
তাহলে বলতেই হয়- এ দেশ কি তাহলে কারো বাপের? থাক সে কথা। এইভাবে জনগণের
ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে খেলা করে (যদিও তারা নিজেরাই সত্যিকার অর্থে ধার্মিক
ছিলো না বা এদেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র বানানোর কোন সদিচ্ছা তাদের কারোরই
ছিলো না), মিথ্যে দেশপ্রেমের বুলি আউড়িয়ে, মায়া কান্না করে তারা যে আবহ
তৈরী করেছিলো তাতে সব ধরণের মসলা মিশিয়ে রঙ চড়িয়ে আরও মজাদার, রসালো আর
হাস্যকর বানিয়েছিলেন এরশাদ। তার কবিতা এবং রোমান্স - দুটোই কড়া বিনোদনের
খোরাক হয়েছিলো। জিনাত মোশাররফ, নাশিদ কামাল, নীলা চৌধুরী - আরও কতো নাম?
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের পর থেকে ১৯৮১ সালের ৩০ শে মে পর্যন্ত জিয়ার
সময়কালের এবং ১৯৮১ সালের ৩০শে মের পর থেকে এরশাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার
তারিখটি অর্থাৎ ৬ই ডিসেম্বর ১৯৯০ পর্যন্ত এরশাদের সময়কালটায় যে নাটকীয়
সময়কাল আমরা পার করেছি তাতে এটাই সত্য যে, মিজানুর রহমান চৌধুরী, কাজী
জাফর, মওদুদ আহমদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম ওবায়দুর রহমান, আনোয়ার
জাহিদ, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মত অজ¯্র ঝানু রাজনীতিবিদের কান্ড কারখানা
দেখে তাদের সময়কালেই অনেক বেহায়া রাজনীতিবিদও লজ্জা পেয়েছিলো। তারা গুছিয়ে
নিতে পেরেছিলো। কারণ শুধু একটাই যারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক তারা গুছিয়ে
উঠতে পারেন নি।
সময় ফুরিয়ে যায় নি। এখনও ভাববার আছে অনেক কিছুই।
শত্রæ এখনও নিস্তেজ বা নিষ্প্রাণ হয়নি। তারা দেশে এবং দেশের বাইরে বসে
ষড়যন্ত্র করছে। মুরুব্বী খুঁজছে। যদি কোন সুযোগ আসে । সাধু তাই সাবধান।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment