১২০২
সালে এসেছিলেন মোহাম্মদ ঘুরী। বিজয়ীর বেশে। অবশ্য প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছিল
আরও অনেক আগেই। তবে এই আসাটা যদিও সরাসরি বাংলায় নয় তবু তা তাৎপর্যপূর্ণ এ
কারণে যে তারই অনুগত বখতিয়ার ঠিক ঠিক এসে পড়লেন ১২০৬-এ। আমাদের কাছে অজানা
নয় তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার কথা। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। একটা সময় বৌদ্ধরা
প্রভাবশালী হয়েছিলো বটে তবে তা হারিয়ে যায় কালের গর্বে। বিশেষ করে
শংকরাচার্য বৌদ্ধ আর জৈনদের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দেন। (আজকের দিনে
জাকির নায়েক হতে পারেন পৌত্তলিকদের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দেওয়ার মহান
কারিগর)
মুসলমানদের এই আগমন কুসংস্কারচ্ছন্ন বাংলায় রাতারাতি বিপ্লব
এনে দিলো। গোমূত্র পান করা নি¤œশ্রেনীর হিন্দুদের নোংরা সাংস্কৃতিক চর্চা
বদলে যেতে লাগল দিন দিন। যে নি¤œবর্ণ হিন্দুরা ভুলবশত কিংবা অজ্ঞানতাবশতঃ
গো কে মাতা হিসেবে দেখে তার মাংস খাওয়া থেকে বিরত থেকে নিজেদের এক কথায় না
বুঝে না শুনে বঞ্চিত করছিলো ইসলাম গ্রহণের পর এরাই সপাটে গো ভক্ষন করে
বিধাতার দেয়া তাদের কর্তন দাঁতগুলোর প্রতি সুবিচার করতে লাগলো। (মূলতঃ তো
আমরা মাংসাসী।) যে যাই হোক সমাজ এবং সময় দুটো বদলাতে লাগলো। মূর্তি
পুজারীরা একবারে উধাও হয়ে যায়নি। তাই তাওহীদ পন্থীরা মুখোমুখি হয়ে পড়লো
মূর্তি পূজারীদের। সমাজ জীবনের পাশপাশি রাজনৈতিক জীবনেও। বলার অপেক্ষা রাখে
না মুসলিম ¯্রােতের বিপরীতে না হলেও পাশাপাশি যদিও বলি মূর্তি পূজারীদের
সমাজেও অজ¯্র সাড়া জাগানো মানুষের আবির্ভাব হলো। শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল
চন্দ্র, চৈতেন্যদেব, বিবেকানন্দ, রাম মোহন রায়, কবীর, সাঁই বাবা ইত্যাদি
ইত্যাদি। এদের মধ্যে কবীর স্মরণীয় হয়ে আছেন তার সর্ববাদী চিন্তার কারণে।
দুটো
ধারা পাশাপাশিই চলছিলো। ইংরেজরা এসে সবকিছু তালগোল পাকিয়ে দিলো। দুটো
ধারাকেই তাদের শ্রেষ্ঠত্বের কাছে অচ্ছ্যুতের পর্যায়ে ফেলে দিলো। তাদের
অগ্রসারমানতা ধর্মীয় পরিচয়কে তুচ্ছ করে দিয়ে সমাজে উচু নীচুর ধারণাটাকেই
বরং প্রবল করে তুললো।
আর তখন অস্তিত্বের সংকটে পড়লো উভয় ধর্মগোষ্ঠী
কিংবা জনগোষ্ঠী যাই বলি না কেন। তবে ১৯০ বছর পর যখন মুক্তি মিললো তখন তথৈবচ
অবস্থা। উভয় জনগোষ্ঠীই তীব্র সংকটের মুখে। বিশেষ করে হিন্দুরা হলো সবচেয়ে
বেশী বিভ্রান্ত। আর মুসলমানরাও প্রকৃত ইসলামী চর্চা থেকে সরে গেলেও
পুরোপুরি আধুনিকও হতে পারলো না।
পাকিস্তানী শাসনামলের দীর্ঘ ২৩ বছরে
আমরা আরও মিশ্র একটা অবস্থার মধ্যে পড়ে গেলাম। একটা জগাখিচুড়ী ধরনের
অর্থহীন মানসিকতা তৈরী হলো আমাদের ভেতরে। আমাদের ভূমির প্রতি আকর্ষণ ক্ষয়ে
যেতে যেতে আমরা নিজ বাসভূমিতেই এক ধরনের উদ্ধাস্তুতে পরিণত হলাম। এই
অবস্থার রেশটা আজও চলছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে অবস্থার উন্নতি
হওয়া তো দূরে থাক পশ্চাৎপদতা আরও তীব্র হলো। তথাকথিত ভন্ড ধর্ম ব্যবসায়ীরা
পরকালের ভয়কে পূজি করে ধর্ম ব্যবসার নামে যে বিভ্রান্তি পুরো সমাজে ছড়ালো
তা নিদারুন ক্ষতি করলো ধর্ম ও উন্নত জীবনের অঙ্গিকারের। মানুষজন প্রগতির
বিরুদ্ধের বিরূপ প্রচারণায় এতোটাই বিভ্রান্ত হলো যে দুজন সামরিক
স্বৈরাচারের তাদের নিজস্ব স্বপ্নের বাস্তবায়নের সারথির সাথে ধর্মীয় অনুভূতি
জুড়ে দিয়ে ফায়দা লোটার ধোকা থেকে জনগণ বাঁচতে পারলো না। অবশ্য এরাও যে
দেশে ইসলামিক শাসন চায় তাও কিন্তু নয়। তবু এই মিশ্র আচরণ। দ্বৈত প্রবৃত্তি।
কারণ আর কিছু নয়। অশিক্ষিত, কুসংস্কারাচ্ছন্ন জনগণের দুর্বলতার ফায়দা
লোটা। (বর্তমানেও এ ধরনের চেষ্টা চলছে। তবে তা সফল হচ্ছে না। কারণ ক্বারী
ইব্রাহিম, শিশু বক্তা মাদানী, আমির হামজা সবাই জেলের মেহমান হয়েছেন।)
ধর্মের
নামে এই সব হিরো আলম, ভূবন বাদ্যকর আর রাণু মন্ডল মার্কা বক্তারা ¯্রফে
ভাঁড়ামী ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। এদিকে দেশের অন্যতম ভুল রাজনৈতিক
প্ল্যাটফর্ম বিএনপি ইতোমধ্যেই অজ¯্র ব্যর্থতার কারণে রাজনৈতিক দলের মর্যাদা
হারিয়ে এখন রাতারাতি দেউলিয়া। তাদের অবস্থা এখন এতোটা তলানীতে আর তারা
এতোটাই সিদ্ধান্তহীনতায় যে তারা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ
পেয়েও যেতে পারছে না লজ্জা আর ইগোর কারণে।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment