Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

 হুমায়ুন আহমেদ (HUMAYUN AHMED) ভীড়ের মাঝেও নিঃসঙ্গ একজন - ওমর খালেম রুমি

হুমায়ুন আহমেদ কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। তিনি নিজ গুণেই পরিচিত। তার সাহিত্য কর্ম নিয়ে সবচেয়ে বড় যে তর্ক এবং বিতর্ক (মূলতঃ কুতর্ক) তাহলো তিনি খুব পাতলা একজন লেখক। লেখার আবেদন সাময়িক। তার মৃত্যুর পর এসব কেউ পড়বে না। এগুলোর কোন দিনও ক্ল্যাসিক সাহিত্যের মর্যাদা লাভের সম্ভাবনা নেই। ইত্যাদি। ইত্যাদি।

অভিযোগগুলো নিয়ে হুমায়ুন স্যার নিজে বিব্রত বোধ করতেন কিনা জানি না তবে আমি মনে করি এসব নিয়ে তার বিব্রত হওয়ার কিছু নেই। তিনি তার সময়কে তার নিজ হাতের মুঠোয় নিতে পেরেছিলেন। এটা তার প্রথম এবং প্রধান সাফল্য। এই লেখায় যদিও তার ব্যক্তিজীবন, তার স্বভাবগত দিক এবং তার মনোজাগতিক বিষয়ের কিছুটা হলেও আলোচনা করতে চাই তবুু তার সাহিত্যিক ভাবনা এবং তার লেখার সাহিত্যমান সম্বন্ধেও কিছু কথা হয়তো প্রসঙ্গক্রমে চলে আসবে।

হুমায়ুন আহমেদ কেমন ছিলেন? যারা তার “আমার ছেলেবেলা” পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও জানেন। যারা (সে সব সৌভাগ্যবান) তাকে কাছ দেখে দেখার এবং জানার সৌভাগ্য লাভ করেছেন তারাও তাদের মতো করে তাকে বোঝার এবং মূল্যায়ন করার অবকাশ পেয়েছেন। আমি তাকে দেখেছি যথেষ্ট দূর থেকে। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ¯œাতক শ্রেণীর ছাত্র। স্যার তখন শহীদুল্লাহ হলের হাউস টিউটর। থাকতেন শহীদুল্লাহ হলের গেট সংলগ্ন দোতলার একটা বাসায়। স্যারকে প্রায়ই দেখতাম বাসা থেকে বের হচ্ছেন অথবা বাসায় ফিরছেন। অত্যন্ত সাদামাটা ও সাদাসিধা একজন মানুষ। নিপাট ভদ্রলোক যাকে বলে। মাঝে মাঝে মুখোমুখি হয়ে গেলে সালাম দিতাম। উনি জবাব দিতেন অত্যন্ত মার্জিত ও সাবলীল ভাষায়। তবে উচ্চারণ আর আওয়াজের ভেতর একটা দারুণ সৌন্দর্য ছিলো। তাকে সত্যিই যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতাম।

তাকে কাছ থেকে দেখার এবং জানার সৌভাগ্য আমার হয়নি। ইচ্ছে করলে হয়তো বাসায় যেতে পারতাম। কিন্তু কেন জানি নিভৃতচারী এই মানুষটাকে বিরক্ত করার ইচ্ছে কখনও জাগেনি। স্যারের মেয়েরা (সম্ভবতঃ মেজ মেয়ে শীলা এবং ছোট মেয়ে বিদিশা শহীদুল্লাহ হল ও ফজলুল হক হলের মাঝখানের পুকুরটার এক কোণায় (শহীদুল্লাহ হলের পুরাতন ভবনের গেট সংলগ্ন) ধুলো-বালি নিয়ে শিশুসুলভ খেলাধুলায় মেতে থাকত। মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখতাম। বোঝাই যেত তাদের জীবন খুব সহজ সরল। স্যারকেও যতদিন দেখেছি সবসময়ই বলতে গেলে হাফহাতা শার্ট (ইন করার তো প্রশ্নই ওঠে না) পায়ে মার্জিত এক জোড়া চামড়ার স্যান্ডেল এবং অত্যন্ত ভদ্রলোকী রংয়ের একটা প্যান্ট পড়া অবস্থায়। মানুষটার মুখটাতে মেশানো থাকত একটা নিবিড় অরণ্যের সমস্ত নীরবতা। তার বুকটাতে যেন আমাজনের গহীন অরণ্যের সমস্ত নির্জনতা। সেটা কী করে বোঝা যেত? তার চেহারায় এটা ফুটে উঠত।

সঠিক সময় মনে করতে পারছি না। তবে সময়কালটা সম্ভবতঃ ১৯৯৩-১৯৯৫ এর মধ্যবর্তী সময়টাতে হবে। আমার ভুলও হতে পারে।

যাই হোক মহান এই লেখককে কাছ থেকে দেখার, জানার ও বোঝার মতো কোন ঘটনা কাকতালীয়ভাবে হলেও আমার জীবনে ঘটেনি। তবে তাকে যতটুকু জেনেছি তার মাধ্যম তার লেখনি ও অন্যান্য সৃষ্টি। তিনি অজ¯্র সাহিত্য কর্ম সৃষ্টি করেছেন। অজ¯্র চমৎকার নাটকের ¯্রষ্টা তিনি। দারুণ দারুণ সব ছবি বানিয়েছেন।

তাঁর সৃষ্টিকর্মের বিষয় নির্বাচন ছিলো অত্যন্ত সাধারণ বিষয়কেন্দ্রিক। বিশেষ করে গরীব ও মধ্যবিত্তের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, খুঁটিনাটি-খুঁনসুটি, কাচা আবেগ। কিন্তু তা সমস্ত পরিবেশটাই ঘিরে রাখে। এমনি অনেক আত্মঘাতী অনুভব যা কখনও কখনও তীব্রতার কারণে দারুণ মর্মবেদনা ও মর্মযাতনারও কারণ হয়।

তিনি কতোটা শক্তিশালী লেখক তা নিয়ে তর্কের শেষ নেই। তিনি আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস, শওকত আলী, শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, আল মাহমুদ বা আরও যতো ক্ল্যাসিক লেখক আছে তাদের সমকক্ষ এমনকি কাছাকাছিও কিনা তা নিয়েও বিতর্কের শেষ নেই। তার অনেক লেখায় বিদেশী লেখার অনুবাদের ছায়া ইত্যাদি ইত্যাদি নানা বিষয়ের অবতারণা প্রায়ই করতে দেখা যায়। কেউ কেউ বলেন তিনি একটা বিশেষ শ্রেণী এই যেমন ধরুন আবেগপ্রবণ তরুণ-তরুণীদের জন্য লেখেন। এসব লেখা ভারী কিছু নয়।

আমাদের সাহিত্য জগৎ কিংবা অন্যান্য সাহিত্যিকরা তাকে একঘরে করে রাখতেন নাকি তিনি নিজেই এই পবিত্র নিঃসঙ্গতা পছন্দ করতেন তা আমার জানা সম্ভব হয়নি। কথাটা তার মুখ থেকে শুনতে পারলে হয়তো মন্তব্য করতে পারতাম।

তার জীবদ্দশায় এবং পরবর্তীতে মিসেস শাওনের মুখ থেকে তার সম্পর্কে যতটুকু জানতে পেরেছি (কারণ বাকীদের কখনও তার সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলতে শুনিনি) তাতে কিছুটা হলেও বুঝতে পারা যায় আপোষহীন এবং নীতিবান আর স্পষ্টভাষী হওয়ার কারণে তিনি খুব বেশী কাছের মানুষের প্রিয়পাত্র ছিলেন না। বরং এক তীব্র নিঃসঙ্গতা এবং নিদারুণ একাকীত্ব তাকে মাকড়সার জালের মতো সদা সর্বদা জড়িয়ে থাকত। আর এ কারণেই হয়তো তার অনাড়ম্বর জীবনের গহীন অন্ধকারে এক ধরনের ঐশ্বরিক বেদনা বোধের পাশাপাশি একটা দারুণ ফ্যান্টাসিরও জন্ম হয়েছিলো। মিসির আলী আর হিমু কি তবে কল্পনার জগতের হুমায়ুন আহমেদ নিজেই। লেখা তাকে আবেগপ্রবণ করে। নিজেই লেখার চরিত্রটা হয়ে যান একথা তিনি বলেছেন। তাই এটা বিচিত্র কিছু নয় তার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে তিনি নিজেকেই খুঁজে নিয়েছেন।

হুমায়ুন আহমেদের সাহিত্য কর্মের মান কেমন? আহমদ ছফা লিখেছেন, দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেলের প্রথম জীবনের স্বপ্ন ছিলো অনেক অনেক সন্তান উৎপাদন করা। এই জৈব কর্মটিকে তিনি তার জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য বলে জানতেন। একজন মহান দার্শনিকের ক্ষেত্রে এহেন জাগতিক চিন্তা কিছুটা বেখাপ্পাই মনে হয়। কিন্তু রাসেল যে জীবনের এতোটা কাছাকাছি ছিলেন সেজন্যই হয়তো তিনি এতা বড় দার্শনিক হতে পেরেছিলেন যার নাম পৃথিবীর সবগুলো মহাদেশের মানুষের মুখে উচ্চারিত হয়। তার কথায় প্রতিনিয়ত মুখরিত হয় কতো শত সাহিত্য সমাবেশ, শিল্প সমাবেশ, জনসভা, আলোচনা সভা, আরও কত কি? আমাদের জাতির জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তার একজন গুণমুগ্ধ পাঠক ও ভক্ত ছিলেন। সেই মুগ্ধতার পরিমাণ এতোটা ছিলো যে তিনি তার কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রেখেছিলেন রাসেল।

হুমায়ুন আহমেদ দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। তার নাম শাওন। তার বয়স একটু কম ছিলো। এসব কথা সবারই জানা। কেউ বলেন, মেয়ের বয়সী। কেউ বলেন, মেয়ের বান্ধবী তো মেয়ের মতোই। ওনার মতো মানুষের এটা করা ঠিক হয়নি। আসলে, কি ঠিক? একজন বৃদ্ধা মহিলাকে বিয়ে করলে কি সেটা ঠিক হতো? প্রেম হৃদয়ঘটিত ব্যাপার। কাকে কার ভালা লাগবে তার কোন ব্যাখ্যা কারও কাছে নেই। সে শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী মানুষ। তাই লোকলজ্জার ধার না ধরে নিজের ভালোলাগাকে মূল্য দিয়েছিলেন। তাছাড়া শরিয়ত বিরোধী কিছু তো উনি করেননি? তাহলে এ নিয়ে এতো কথা কেন?

আমাদের দেশে অনেক কিছুই হচ্ছে। হুমায়ুন আহমেদ যে বয়সে শাওনকে বিয়ে করেছেন তার চেয়ে বেশী বয়সী এমনকি অশীতিপর বৃদ্ধরাও শাওনের চেয়ে কম বয়সী মেয়েদের ভালোবাসা, ভালোলাগা এমনকি সম্মতির বাইরেও অনেকটা জোর করে বিয়ে করছে। আমাদের সেদিকে কোন ভ্রæক্ষেপ নাই। হুমায়ুন আহমেদের একটু সুখ দেখলেই আমাদের চোখ টাটায়।

ঈর্ষা! দারুণ ঈর্ষাকাতর আমরা। আর এ কারণেই আমাদের বাঙলা সাহিত্যের দুই দিকপাল রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের মধ্যে নজরুলকে এরকম দুর্ভাগ্য বরণ করতে হয়েছিলো। এতো এতো মহান সাহিত্যের ¯্রষ্টা নজরুলকে কি নিদারুণ অর্থকষ্টে জীবন পার করতে হয়েছিলো। শোনা যায় পরিবার নিয়ে একবার তার স্ত্রী গোয়ালঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এপার বাংলা ওপার বাংলায় সরকার কিংবা অন্য কোন হৃদয়বান ও সামর্থ্যবান এমন কেউ কি ছিলো না যে নজরুলের মতো একজন মহান সাহিত্য ¯্রষ্টার জন্যে একটু আশ্রয় আর দুটো অন্ন বস্ত্রের ব্যবস্থা করে দিতে পারতো। ভাবতে অবাক যেমন লাগে তেমনি মানুষ হিসেবে লজ্জাও হয়।

হুমায়ুন আহমেদের নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলছিলাম। তার প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদ। তিনি বহু গুণে গুণান্বিত, শ্রদ্ধেয়া রমণী। যে কোন কারণেই হোক তাদের দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিলো। আর এই সুযোগেই তার নিঃসঙ্গ এবং কিছুটা দুর্বিসহ জীবনের অলিগলিতে শাওন নামক চমৎকার এবং প্রাণ চব্জল একটা মানুষ যার গুণ কদর করার মতো এবং আমরা সেটা করছিও ঢুকে পড়েন। যতোটা না ভালোবাসার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তার চেয়ে বেশী (আমি মনে করি এবং শাওনও কিছুটা এ রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন তার কথাবার্তায়) একজন নিঃসঙ্গ ও দুঃখী মহান শিল্প ¯্রষ্টার হৃদয় যাতনা লাঘবের জন্যে। আমার ভাল লাগছে অন্তত এতোটুকু ভেবে যে মহান এই শিল্পীর জীবনের শেষ দিনগুলোতে অন্তত তার একজন প্রিয় মানুষ তার কাছে ছিলেন।

এবার একটু আসতে চাই হুমায়ুন আহমেদের লেখা টিকবে কি না এ বিষয়ে? ইতিহাস বলে যে শিল্পকর্ম ঐ শিল্প ¯্রষ্টার জীবনে বিখ্যাত কিংবা জনপ্রিয় হয়নি তার টিকে থাকার ঘটনা বিরল। এ ব্যাপারে জ্ঞানীরাও একমত। তবে কিছু ব্যতিক্রম সবক্ষেত্রেই থাকে। হুমায়ুন আহমেদের সাহিত্য কর্ম অলরেডী বিখ্যাত এবং টিকেও গেছে। বাংলা গদ্য রচনায় তার যে মুন্সীয়ানা তিনি দেখিয়েছেন, মানুষের হৃদয়কে যেভাবে নাড়া দিয়েছেন, যেভাবে আবেগতাড়িত ও আবেগমথিত করেছেন,  যেভাবে হাসিয়েছেন তুচ্ছ সব কথায় আবার যেভাবে কাঁদিয়েছেন অতি সাধারণ সব দুঃখ-বেদনার বর্ণনায় তাতে হুমায়ুন আহমেদের তুলনা হুমায়ুন আহমেদ নিজেই। আর ভারী শব্দচারণ। ক্ল্যাসিক হওয়ার জন্যে এটা জরুরী মানছি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ যে একথাও বলেছেন,

“সহজ কথা লিখতে তুমি কহ যে
সহজ কথা যায় না লেখা সহজে।”

এই সহজ কথাগুলোই সহজে বলার মহান কারিগরের নাম হুমায়ুন আহমেদ। তার মতো এতো সাবলীল গদ্য নির্মাণ বাংলা সাহিত্যে আর কারো পক্ষে সম্ভব হয়নি। নিজেকে জাহির করার কেতাবী পান্ডিত্য নয়, বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভাষা-আশা, ভাব-ভালোবাসা, মান-অভিমান, আবেগ-উদ্বেগ, কামনা-বাসনা, যাতনা-বেদনা, হাসি-তামাশা, রহস্য-উত্তেজনা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, লোকায়ত ও কুসংস্কার ইত্যাদির সহজ সরল ও নান্দনিক চিত্রায়ন তার সাহিত্য কর্মকে অমরত্ব দিয়েছে।

তার নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, আগুনের পরশমনি, শ্রাবণ মেঘের দিন, কৃষ্ণপক্ষ ইত্যাদি একই সাথে সাহিত্য মান ও চলচ্চিত্র হিসেবে কালোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

হুমায়ুন আহমেদ একজনই। মধ্যবিত্ত পরিবারের সুখ-দুঃখ-হাসি-কান্না-ব্যথা-বে

দনার মধ্য দিয়ে অনেকেই বেড়ে ওঠে কিন্তু এই দুঃখ-কষ্টকে সবাই মূল্যবান হীরায় রূপান্তরিত করতে পারে না। পারে শুধু তার মতো জহুরীরাই। তিনি তাই বাংলা সাহিত্যের ক্ষণজন্মা শিল্প ¯্রষ্ঠা।

হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে তথাকথিত ভার ভারিক্কি, আত্মস্বীকৃত গুণীজনদের খুব একটা উচ্ছাস দেখা যায় না। এর কারণ বহুবিধ। তবে সবচেয়ে বড় কারণ হুমায়ুন আহমেদ নিজেকে যে ঈর্ষনীয় জায়গায়টায় নিয়ে যেতে পেরেছেন সেখানে অন্য কেউ নিজেকে তার ছায়ার কাছেও পৌঁছাতে সক্ষম হননি। এ কষ্ট বড়ই মর্মবেদনার। তাদের অবস্থা আকবরের আমলের মোল্লা কাদের বদায়ুণীর মতো। রাজার নেক নজর সবার কপালে হয় না।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak