বাংলা হচ্ছে
এমন একটা জনপদ যার পূর্ব-পশ্চিম বিভাজন নিয়ে অনেক ইতিহাস। সত্যি কথা বলতে
কি যতোটা না বিচ্ছেদ আর বিচ্ছিন্নতার অস্তিত্ব ছিলো তার চেয়ে বেশী জন্ম
দেওয়া হলো। কল্পনার উপর ভর করেই বলবো। রাজনৈতিক প্রয়োজনও ছিলো। ছিলো
সামাজিক বিবর্তনের উপজাত হিসেবে জন্ম নেওয়া নানা ঘটনাবলী। দুঃখ তাই এই
জনপদের বিভক্ত হওয়া দুটো অংশের মানুষের আজীবনের সঙ্গী হলো। একবারও কেউ
ভাবলো না এই যে বিদ্বেষের বীজ, এই যে কাঁটাতারের বেড়া, এই যে রাষ্ট্রীয়
সীমানার কৃত্রিম বিচ্ছিন্নতাবোধ - এটা যে বাংলার হৃদয়কেই ক্ষত-বিক্ষত করবে
তা কি বলার অপেক্ষা রাখে। হিন্দুরা তাদের অস্তিত্ব নিয়ে শংকিত হলো।
মুসলমানরা বঞ্চিত হয়েছিলো সেই কষ্টও তাদের অন্তরে দহন যন্ত্রনার প্রদাহ
তৈরি করলো। কেন একসাথে থাকার চিন্তা করা গেলো না। ভারত রাষ্ট্রে পশ্চিমবঙ্গ
কি অতোটা ভালো আছে যতোটা ভালো থাকতো দুই বাংলা একত্রে থাকলে।
বাংলাদেশ
স্বাধীন হয়েছে পঞ্চাশ বছর। আজ তাহলে এসব কথা কেন লিখছি। ধর্মের ভিত্তিতে
জনগোষ্ঠীগুলোর সংকীর্ণ ভাবনা বাংলাকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ করেছে বাংলার সংস্কৃতিকে। বাঙালির না বিহারীদের সাথে যায়, না
উড়িয়াদের সাথে। তবুও তারা নিজেদের মধ্যে হিন্দু মুসলমান ভিত্তিতে বিভক্ত
হলো। এটাকে কোন শুভবুদ্ধির উদয় বলা যায় না। বিচ্ছেদের মধ্যে অনেক তিক্ততা
খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু মিলনের মধ্যে থাকে সমৃদ্ধি। দুই বাংলা একত্রে থাকলে
একটা ভালো সমগ্র হতে পারতো। আজ হয়েছে খন্ডিত টুকরো।
দেশভাগের সময়
পূর্বাঞ্চলকে যথাসম্ভব ছোট করে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা ভেবেছে যেটুকুই
যাচ্ছে যাচ্ছে পাকিস্তানের ভাগেই। কিন্তু মাত্র ২৩ বছরের মাথায় যখন এটি
পাকিস্তান থেকে আলাদা হলো তার মানচিত্রের সেই খুঁত তো আর ঘোঁচাবার নয়।
প্রাকৃতিক সম্পদ আর সৌন্দর্য, পাহাড়, নদী, অরণ্য সবই তো পশ্চিমবঙ্গের ভেতর।
বাকীটা আসাম, ত্রিপুরা আর বার্মার ভেতরে।
বাঙালিরা একত্রে থেকে
গৌরব, আভিজাত্যের, সম্মান, সমৃদ্ধি নিয়ে উপমহাদেশের বুকে মাথা উঁচু করে
বাঁচতে পারে। এ ধরনের দুরদর্শীতা নিয়ে যে সব জাতি বা জনগোষ্ঠী সামনে আগাতে
পেরেছে তারাই পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পেরেছে। আমেরিকার মতো
ভাড়াটে জনগোষ্ঠীর দ্বারা সৃষ্ট একটি রাষ্ট্র তার ঐক্য, সমৃদ্ধি, শক্তি আর
অহংকে ধরে রাখতে পেরেছে এই জন্যে যে তারা মনে করে তাদের এই দেশটাই পৃথিবীর
শ্রেষ্ঠ দেশ। শ্রেষ্ঠত্বের এই বোধ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া
অজ¯্র জনগোষ্ঠীর মানুষকে একই সুত্রে গেঁথে ফেলেছে। ছোটখাট সংকট যে নেই তাও
নয়। তবে তা বৃহৎ ভাবনা বা বোধের কাছে অদৃশ্য হয়ে গেছে।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment