Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

 বাংলাদেশ কি সত্যিই বিষমুক্ত (IS BANGLADESH OUT OF DANGER?)- ওমর খালেদ রুমি

সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে সময় কিছুটা হলেও বদলেছে। কিছুটা বললাম এই জন্যে যে, যা কিছু দেখছি তা তো চেখের দেখা। আপাতঃ দৃষ্টে দেখাই বলতে হবে। উপরের উপরের এই দেখায় আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কিছু নেই। বরং সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সতর্ক থাকাই ভালো। মনে হতে পারে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেছে। এই মনে হওয়াটাই সবচেয়ে বড় ভ্রম। আজ শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন। সবাই খোলস বদলে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে। অনেকেই গায়ে চড়িয়েছে কালো কোট। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না এদেশই একমাত্র দেশ যা সব সময় উল্টো ¯্রােতে গা ভাসায়। পৃথিবী বদলাচ্ছে। সামনে আগাচ্ছে। আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। উন্নয়নের দিক দিয়ে নয়। মানসিকতার দিক দিয়ে। আওয়ামী লীগের ঘাম ঝরানো উন্নয়নের সুফল ভোগ করার পাশাপাশি মোনাফেকী আচরণ করা সত্যিকারের ধর্মভীরু নয় কিন্তু তথাকথিত ইসলামী ভাবাদর্শের লোক দেখানো নোংরা মানসিকতার অধিকারী বিকৃত মানুষের অভাব আজও নেই। তারা ঘাপটি মেরে আছে অফিস, আদালত, কলখারখানা, গ্রামে গঞ্জে। এমনকি রাজপথেও তাদের অভাব নেই। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সুযোগ পেলেই মিছিলের সাথে মিশে যাওয়ার অপেক্ষায় তারা। আজও দেখা যায় জাতীয়তা, দেশপ্রেম আর সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে আপোষহীন মানুষগুলো অনেকেরই চক্ষুশুল। আমি বুঝি এদের কোথায় লাগে। মানুষের শরীরের ময়লা ধুইলে যায় কিন্তু হৃদয়ের ময়লা এতোটা সহজে যায় না।

অতীতের দিকে তাকালে কি দেখতে পাই? ক্ষমতায় থাকার ব্যাপারে যারা বিপরীত মেরুর তারাই বেশী এগিয়ে। এর কারণ কি? ঐ যে বললাম ভিতরে লালন করা বিষ। তবে হ্যাঁ, আজকের তরুণ সমাজ বেশ সচেতন। তারা এগিয়ে এসেছে। ভিন্নভাবে ভাবছে। তাদের এই সচেতনতাকে কাজে লাগাতে হবে। সজাগ রাখতে হবে স্বাজাত্যবোধকে। অতন্দ্র প্রহরী করে তৈরি করতে হবে তাদের। তাদেরকে শোনাতে হবে আমাদের পূর্ব পুরুষদের সাফল্যের গল্প গাঁথা। ইংরেজদের বিরুদ্ধে আমাদের সুদীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস, কালা পানিতে সাজা খাঁটতে খাঁটতে জীবন শেষ করে দেওয়া আমাদের বিপ্লবীদের কথা, ফাঁসীর মঞ্চে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে যাওয়া আমাদের জ্বলন্ত বারুদের মত বিদ্রোহীরা যাদেরকে বলা হয় অগ্নিযুগের অগ্নি সন্তান, তাদের কথা তাদেরকে জানাতে হবে। বলতে হবে ক্ষুদিরামের কথা, বাঘা যতিনের বীরত্ব গাঁথা, এই বাংলায় যারা বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়েছিলো সেই ফকির মজনু শাহ, সৈয়দ আহমদ শহীদ, হাজি শরীয়তুল্লাহ, হাজী দানেশ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, মাষ্টারদা সূর্যসেন সহ আরও কতো নাম। তাদের জানা উচিত মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আর আমাদের মাথার তাজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কথা। অকৃজ্ঞ মানুষও যে কম নেই সে কথাও বলা উচিত। তারা তাহলে চিনতে পারবে তাদের জাত শত্রুদের।

৫৬,০০০ বর্গমাইলের এই বাংলা যাদের হাত ধরে আমাদের হলো তাদের কথা ভুলে গিয়েই ক্ষান্ত হয়নি কেউ কেউ। তাদের নাম-নিশানা মিটিয়ে দিতেও বরং তৎপর অনেকে। জামায়াতের ঘাঁটি বলে পরিচিত অনেক এলাকায় এখনও আওয়ামী লীগের নাম নিলে বিপদে পড়তে হয়। এ অবস্থা নতুন কিছু নয়। ঘাপটি মেরে থাকা অপশক্তি সুযোগ খুঁজে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অপেক্ষা শুধু সময়ের। হলফ করে বলতে পারি আওয়ামী লীগ যদি পুরো বাংলাদেশকে সোনা দিয়ে মুড়িয়েও দেয় তবু এদের হৃদয় ভরবে না। এদের জান্নাতে যাওয়ার ভীষণ ইচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাথে থাকলে যদি জান্নাতের টিকিট হারিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়টাতে তাই স্ত্রী-কন্যাকেও পাক বাহিনীর হতে তুলে দেওয়ার মতো ঘৃণ্য ঘটনা তাই তাদের কাছে আপত্তিকর মনে হয় না। ভেতরে কলুষ থাকলে বাইরে যতই পরিচ্ছন্ন কাপড়-চোপড় পরা হোক তা কোন অর্থ বহন করে না। অন্তরটা পরিষ্কার হওয়া বড় দরকার।

বাঙালির শুদ্ধি হয়েছিলো বহুবার। একটা সময় পুরো উপমহাদেশ জুড়ে ছিলো হিন্দু অর্থাৎ মূর্তি পূজারীদের দাপট। তারপর অনেকটা বিপ্লবী কায়দায় এসে পড়ল বৌদ্ধ ও জৈনধর্ম। গৌতম বুদ্ধ আর মহাবীর মিলে চালালেন এক অদ্ভুত শুদ্ধি অভিযান। তারপর তাদেরকে ছাপিয়ে শংকরাচার্য আবারো ফিরিয়ে আনলেন ব্রাহ্মণ্য ধর্মের আধিপত্য। আমি তাকে সত্যিকার অর্থেই একজন চ্যাম্পিয়ন বলি এই জন্যে যে, বিতর্কে অংশগ্রহণের যে অগ্নিগর্ভ ঝুঁকি তিনি নিয়েছিলেন অর্থাৎ পাশে তেলের কড়াইয়ে গরম তেল ফুটবে আর তিনি যদি পরাজিত হন তাহলে তিনি ঐ তেলে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবেন আর যদি প্রতিপক্ষ পরাজিত হয় তাহলে তাদেরও ঐ একই দশা মেনে নিতে হবে। যতদূর শোনা যায়, শংকরাচার্য কখনও তর্কে হারেননি। আর তাই প্রতিপক্ষেরই বরং নিপাত হয়ে যেতে হয়েছিলো। এরকম বীরকে কি বলে সম্বোধন করা যায়, কি বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায়।

তারপর ইসলাম এলো। দুঃখ শুধু এটুকুই আমরা ইসলামকে গ্রহণ করলাম ঠিকই কিন্তু একে বোঝার চেষ্টা করলাম না মোটেই। এটা যে অন্যান্য ধর্মের মতো উপাসনা কেন্দ্রিক নয় বরং বাস্তব জীবনে প্রয়োগের উপরই এর মাহাত্ম্য তা না করে একে মসজিদের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী করে রেখে বাইরে যাচ্ছে তাই চর্চা করা শুরু করলাম। ধারণাটা এমন দাঁড়ালো যে মসজিদে কোন খারাপ কাজ করা যাবে না কারণ সেটা পবিত্র জায়গা। আর বাইরে সবকিছু করা যাবে। হায়রে মুসলমান। নাম আর গরু খাওয়া বৈশিষ্ট্য ছাড়া বাকী কোথায় তার সততা। ভাবলেই গাটা ঘিনঘিন করে ওঠে। এদের তো হৃদয়ের বিকাশটাই ঠিক মতো হলো না। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে অত্যন্ত ভদ্র গোছের মানুষদেরই দেখা যায় মৃত্যুর পর ফারায়েজ বন্টনের ক্ষেত্রে নিদারুণ গাফিলতি করতে। বোনরা যে লজ্জা ভেঙ্গে কিছু একটা চাইবে সেই সুযোগটাই বা কোথায়? তার আগেই তো বলে দেওয়া তোরা আর বাপের বাড়ীর সম্পত্তি নিয়ে কি করবি? মাঝে মাঝে বেড়াতে আসিস। বাবা-মা নেই তাতে কি? আমরা আছি না। যতœ আত্তি করবো। বাবা-মায়ের কবরের পাশে এসে দাঁড়ানোর শেষ সুযোগটুকু হারাতে না চাওয়া অসহায় বোনগুলো কখনই আর বাপের সম্পত্তিতে তাদের বৈধ ভাগের কথা মুখেও আনে না। এই হলো আমাদের বেশীরভাগ মুসলিম পরিবারের চিত্র।

সে যা হোক। এই লেখার বিষয় মূলতঃ এসব কথা নয়। আমরা মূলতঃ বলতে চেয়েছিলাম যে, আমাদের সংশোধন প্রয়োজন। ব্যপক সংশোধন। হৃদয়ের গভীর থেকে সংশোধন। যে মাটি থেকে খেয়ে দেয়ে পুষ্ট হচ্ছি তার শেকড় যদি পাকিস্তানের ধুলো বালিতে খোঁজার চেষ্টা করি তাহলে এটাকে কি বলা যায়? এদের কি একবারও মনে পড়ে না দীর্ঘ তেইশ বছর যাবত আমাদের পূর্ব পুরুষের নিষ্পেষিত হওয়ার করুণ কাহিনী। অবশ্য মনে পড়বে কি করে? এরা তো ইতিহাসটাই জানে না।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak