Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

 জাতীয় লজ্জার ডায়েরী - ওমর খালেদ রুমি

গঙ্গা। একটা নদী। হিন্দুদের কাছে অতি পবিত্র। মুসলমানদের কাছে ধর্মীয় বিবেচনায় এর কোন মূল্য নেই। তবে একটি নদী হিসেবে এর গুরুত্ব কোন অংশে কম নয়। গুরুত্ব যে আছে তা আলোচনার মাধ্যমেই ফুটে উঠবে।

হাজার হাজার বছর ধরে বইছে এ নদী। এর উপনদী আর শাখানদীও কম নয়। হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে জন্মলাভ করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া নদীটি হাজার হাজার বছর ধরে বয়ে এনেছে পলি। সেই পলি জমে এর মোহনায় সৃষ্টি হয়েছে একটি বদ্বীপ।

বদ্বীপটি সৃষ্টিতে অবদান গঙ্গার একার নয়। আরও একটি নদী আছে। নাম ব্রহ্মপুত্র। হিমালয়ের মানস সরোবরে জন্মলাভ করে এটিও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে বয়ে এনেছে পলি মাটি। এই বদ্বীপটি গঠনের পেছনে তাই এর অবদানও কম নয়।

প্রবন্ধটি নদী বিষয়ক নয়। তাছাড়া আমি কোন নদী বিশেষজ্ঞও নই। তবু নদীর কথা আসলো। কারণ আমরা যারা বাঙালী আমাদের জীবন যাত্রায় নদী মিশে আছে এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে। মূলতঃ নদী বাহিত পলি দ্বারা গঠিত যে বদ্বীপ তার বুকেই আমাদের বেড়ে ওঠা, জীবন, যৌবন, বিকাশ। টেকটোনিক প্লেটের সীমানা শেষ হয়ে গেছে মূলত বাংলাদেশের সীমান্তের ধার ঘেঁষে। আমাদের যে ভূখন্ডটুকু মূলত যা একটা আলগা পাললিক গঠন তা দুটো বড় নদীর মোহনায় গড়ে উঠেছে। এই জনপেদের মানুষের জীবন ও তার বৈচিত্র্য তাই মূল ভূখন্ডের মানুষদের চাইতে আলাদা। এদেরকে বুঝতে হলে তাই এদের প্রাকৃতিক অবস্থানও বুঝতে হবে। কারণ আর কিছু নেই। ভৌগোলিক এই অবস্থান, এখানকার জলবায়ু, এর মাটি, পানি, বাতাসই এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

১৯৪৭-এর দেশভাগের সময়ই আমরা আমাদের আসল চেহারাটা দেখিয়ে দিলাম। অবশ্য বিদ্বেষের ইতিহাস এই উপমহাদেশে নতুন কিছু নয়। এখানকার সবচেয়ে বেশী অনুসারীদের যে ধর্ম তার নাম হিন্দু ধর্ম বা সনাতন ধর্ম। এটা মূলতঃ আর্যদের ধর্ম বিশ্বাস। এর সাথে মিশে গেছে এই অঞ্চলের স্থানীয় মানুষদের অতি দুর্বল ধর্ম বিষয়ক আচার-আচরণ। মূলত এই চরাঞ্চলটির সমৃদ্ধ ইতিহাস কখন থেকে শুরু তা এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তাই চৈনিক সভ্যতা, মিশরীয় সভ্যতা বা মেসোপটেমিয়ার সভ্যতার মতো এর কোন হাজার হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস নেই। মূলত আজও চরের মানুষের কোন সমৃদ্ধ ইতিহাস নেই। সভ্যতার মাপকাঠিতে বিচার করলে এর ইতিহাস  ভাগ্য বিড়ম্বনার ইতিহাস। অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর অন্ধকারের ইতিহাস। জীবন সংগ্রামে অন্যান্য প্রাণীকুলের মতো কিংবা তাদের সাথেই পাশপাশি থেকে কোনোমতে টিকে থাকার ইতিহাস। আজ যদি আমরা বাংলাদেশেকে মূল ভূখন্ড ধরি তবে এর চরগুলোর দিকে তাকালে আমরা যে অবস্থা দেখতে পাই উপমহাদেশের মূল ভূখন্ডের কাছে আমরা অনুরূপই ছিলাম। আমাদের তাই বিভ্রান্ত হয়ে লাভ নেই। আমাদের ইতিহাস খুঁজতে গেলে যা পাই তা মূলতঃ অন্যের ইতিহাসের সাথে মিশে যায়। এই যেমন ধরুন মৌর্য বা গুপ্তদের ইতিহাসের সাথে কিংবা আরও পরে তুর্কী বা আফগানদের ইতিহাসের সাথে। এতে অবশ্য লজ্জার কিছু নেই। পলিবাহিত একটি অঞ্চলের বয়সই বা আর কত হবে? বৃক্ষের ফল নিশ্চয়ই তার চাইতে বয়সে বেশী হবে না।

তবে হ্যাঁ। আশার কথা হলো আমাদেরও ইতিহাস হবে। অবশ্য হতোনা। হবেও বা কেমন করে? যা অস্থির প্রকৃতির আমরা। আর তাও তো নদী আর পলিমাটির কারণে। পায়ের তলায় শক্ত মাটি থাকলে মনটাও শক্ত হয়।

কেন বললাম ইতিহাস হবে। সে প্রসঙ্গে পরে যাবো। তার আগে যেটুকু ইতিহাস আছে তা বলতে চাই। অবশ্য অন্যভাবে। কারণ আমি কোন ঐতিহাসিক নই। আর ইতিহাসের ধারাবাহিক গৎবাঁধা আলোচনাও এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। এটি একটি ভিন্ন ধরনের আলোচনার বিষয় যেখানে বিগত দিনগুলোতে যে ইতিহাসটুকু আমরা সঞ্চয় করতে পেরেছি সেখানেও আমাদের আচরণ কিংবা অংশগ্রহণ কেমন ছিলো আর তা কেমন করেই বা আমাদেরকে প্রভাবিত করেছিলো তার উপর সামান্য আলোকপাত করার চেষ্টা করব।

পাল রাজারা ছিলো গুপ্ত এবং মৌর্যদের সমসাময়িক। আমাদের যেটুকু ইতিহাস তা মূলতঃ এখান থেকেই শুরু। তবে ইতিহাস বদলে যেতে থাকে মুসলমানদের আগমনের পর থেকে। ১২০২ খ্রিস্টাব্দে রাজনৈতিক বিজয় হলেও এর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো আরও অনেক পূর্বে। ইসলামের আবির্ভাবের পরে সুফি, দরবেশ কিংবা ধর্ম প্রচারকদের আগমনের মাধ্যমে এখানকার সামাজিক পরিবেশ বদলে যেতে থাকে।

সনাতন ধর্ম ও ইসলামের এই পাশাপাশি চলার যে মিথস্ক্রিয়া মূলত এটাই আমাদের ইতিহাসের মূল উপাদান। এর বাইরে কিছু খুঁজতে যাওয়া অন্তত আমি মনে করি সময়ের অপচয়। এটা শুধু এই বদ্বীপেই নয়। আমরা যদি পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলেও দেখব পৃথিবীর ইতিহাস মূলত তাওহীদপন্থী ও বহুত্ববাদীদের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ইতিহাস। মূলত পৃথিবীর ইতিহাস হলো ধর্মের ইতিহাস। এর বাইরে যা কিছু দৃশ্যমান তা এরই উপজাত। এই যেমন ধরুণ অর্থনীতি, বিজ্ঞান, সামরিক বিদ্যা ইত্যাদি। দিন শেষে আপনাকে এই উপসংহারে আসতে হবে। মাঝখানে থানিকটা সময়ের অপচয় আর কি?

উপমহাদেশের ইতিহাস সুস্পষ্টভাবে তাই দুই ভাগে বিভক্ত। মুসলমানদের আগমনের পূর্ববর্তী সময়ের ইতিহাস। মুসলমানদের চলে আসার পরবর্তী সময়ের ইতিহাস। ওদিকটায়, গুপ্ত, মৌর্য, পাল – এদিকটায় আফগান আর তুর্কী। মূলতঃ বাংলা যাকে বলা হয় এদের কেউই এই জনপদের না। বর্তমান ভারতের মূল ভূখন্ডের বাসিন্দারা, যারা আর্য-সম্ভূুত, আর অন্যরাও, আর্যই বটে, তবে তারা দূরের অর্থাৎ এশিয়ার মধ্য পূর্ব পশ্চিম কিংবা উত্তর দিক থেকে আসা। এর মধ্যে আমরা তবে কোথায়?

আমরা মূলতঃ তেমন কোথাও নেই। আমাদের ইতিহাসের শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই। আর এই ইতিহাসের যারা জন্ম দিয়েছেন তাদের মধ্যে অনেক কুশীলব থাকলেও সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিল্লীর সুলতানী আমলই হোক, মোঘল আমলই হোক কিংবা ইংরেজ শাসন - সবশেষে পাকিস্তানী শাসনামল - যা কিছুই বলি না কেন আমাদের ইতিহাস মূলত গ্লানিরই ইতিহাস।

আমাদের সম্মান আর সার্বভৌমত্বের ইতিহাস মূলতঃ শুরু হয়েছিলো ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে।

কিন্তু বাঙালি বরাবরই অস্থিরমতি। এই উপমহাদেশের জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বৈচিত্র্য, চিন্তা-চেতনা ও বাস্তবতা বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন তাতে সহাবস্থান ও সহিষ্ণুতার মাধ্যমে একটি চমৎকার জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার একটা নিদারুণ সুযোগ ছিলো। কিন্তু বরাবরের মতো প্রতিক্রিয়াশীল আমরা আমাদের বালসুলভ আচরণের মাধ্যমে সবকিছু তালগোল পাকিয়ে ফেলি। একদল ক্ষমতা লোভী আরেক দল নির্বোধ অতি উৎসাহীর উত্তেজনাকে কাজে লাগিয়ে তাদের স্বার্থ সিদ্ধিতে সফল হয়। ঐ যে প্রথমেই নদীর কথা বলেছিলাম, বলেছিলাম পলির কথা, বদ্বীপের কথা, এর আবহাওয়া, জলবায়ু, বাতাস, বৃষ্টি, শীত, গরম ইত্যাদি ইত্যাদি অতঃপর বার বছরে মেয়েদের সাবালিকা হওয়া আর চৌদ্দ বছরে ছেলেদের ধর্ষণের উপযোগী হয়ে যাওয়াই এই সব চঞ্চল আচরণের নেপথ্যে।

এসব ফাঁক ফোকর দিয়েই তাই বার বার ধান্দাবাজরা পথ খুঁজে নেয়। কেউ নামে সামরিক উর্দিকে পুঁজি করে, কেউ আগায়, ধর্মকে পুঁজি করে অথচ এই সব মানুষকেই যদি বলা হয় পরিপূর্ণ ইসলামী শাসন কায়েম হবে তাহলে হয়তো এদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর প্রমাণ তো দেখাই গেলো। যারা রিসোর্টে ধরা পড়লো শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র হলে তো তাদের মাথাটাই গিয়েছিলো প্রায়। আল্লাহ্ সব কিছু ভালো জানেন।

ইতিহাস কি লিখব? ইতিহাস কিছু নেই। সত্যিকারের ইতিহাস তো ত্রিশ লক্ষ শহীদের ইতিহাস। দু’লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের ইতিহাস। সেই ইতিহাস লিখতে বা বলতে আমাদের অনেক জড়তা, অনেক লজ্জা, দারুণ সংকোচ। পাছে যদি ধর্ম নষ্ট হয়। কারণ হত্যা আর ধর্ষণ - এর দুটোই তো আমাদের পশ্চিম পাকিস্তানী মুসলমান ভাইয়েরা করেছে। আমাদের উপর তাদের এই এহসানের কথা কি করে মুখে আনব? তাছাড়া দায় তো আমাদেরও কম নয়। সেদিন তো আমরাও প্রাণ বাঁচাতে আমাদের স্ত্রী আর যুবতী মেয়েদের তাদের খেদমতে পেশ করেছিলাম। তাই এই ইতিহাসও যে আমাদের লজ্জা আর ভীরুতার ইতিহাস। কাপুরুষতা দিয়ে যে ইতিহাসকে কলঙ্কিত করা হয়েছে তা লিখতে গেলে সত্যি সত্যি কলম থেমে যায়। ইতিহাস তাই ইতিহাস হয় না। হয় জাতীয় লজ্জার ডায়েরী।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak