সংসার ব্যথা বেদনার জায়গা। তবে একথা বুঝতে
একটা কুকুরের অনেক কম সময় লাগলেও মানুষের অপেক্ষা করতে হয় বেশ খানিকটা সময়।
শৈশবে সে থাকে বাবা মায়ের আশ্রয়ে। তারপর বড় হলে আস্তে আস্তে সে এসব কষ্টের
আঁচ পেতে থাকে একটু একটু করে। অবশেষে সে যখন জীবনের একটা মহা¯্রােতে হাজার
হাজার জনতার সাথে মিশে যায় তখনই যে যার একান্ত নিজস্ব বেদনাগুলো অনুভব
করতে পারে।
মানুষ নিজেকে বড় ভালোবাসে। সে তাই আয়না পেলে নিজের মুখ
দেখে। দুঃখের সাথে থাকতে থাকতে একসময় দুঃখগুলোকেও হয়ত ভালোবেসে ফেলে। নইলে
পৃথিবীতে দুঃখী মানুষেরা হয়ত ঘুমাতে পারত না। আমাদের বেদনাবোধের পেছনে
লুকিয়ে থাকে তারও অধিক সহনশীলতা। মানুষ তাই জীবনের রাস্তায় হেঁটে হেটে
দুঃখের তাপ নিতে নিতে একসময় মৃত্যুর যোগ্য হয়। সৃষ্টিকর্তাই তাকে এর যোগ্য
করে তোলেন।
আমার নিজের কথা বলার জন্যেই এই বইটা লেখা। আমি মনে করি
না এটা কারো দরকারী বই। তবু এই লেখাটা দরকারী এজন্যে যে এতে আমাকে কিছু কথা
বলতে হবে। আর এই বলতে পারার মাধ্যমে আমি ভারমুক্ত হবো। হয়তো শান্তিও পাবো
কিছুটা। আর সব থেকে বড় কথা এটা অন্ততঃ এই সত্যটা জানান দেবে যে আমার মতো
কেউ একজন ছিলো।
প্রতিটি লেখার জন্যে চরিত্রগুলোর একটা না একটা নাম
থাকে তা সে নাম সত্যিই হোক আর মিথ্যাই হোক। কিন্তু আমার এই গল্পে আমার কোন
নাম নেই। আমার কি একটা নাম দেওয়া আসলেই জরুরী? আদৌ নয়। কারণ এই নাম এমন কোন
নাম নয় যা মানুষের জানা কিংবা মনে রাখা প্রয়োজন। অতএব, অপ্রয়োজনে একটা নাম
নষ্ট করার কোন মানে নেই। আমার পরিচয় তাই আমি।
এ পর্যন্ত যেটুকু বলা
হলো তাতে আমার ভাষার ধরণ, গন্ধ ইত্যাদি থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে কিনা যে আমি
পুরুষ কিংবা নারী তা আমি নিজেও নিশ্চিত নই। তবে আমার একটা লিঙ্গ তো অবশ্যই
আছে। তাছাড়া তৃতীয় লিঙ্গও আজকাল লিঙ্গের মর্যাদা পাচ্ছে। আবার যারা
লিঙ্গান্তর করছে তারাও সেলেব হয়ে উঠছে। মানুষের আগ্রহ আজকাল বিকৃত জিনিসের
দিকেই।
অবস্থা যখন এরকমই তখন আমার লিঙ্গ জানা খুব একটা জরুরী বলে
মনে হচ্ছে না। অতএব এ প্রসঙ্গটাও বাদ দেওয়া হলো। এখন প্রশ্ন আসতে পারে আমার
বয়স নিয়ে। আমার বয়সও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। কারণ সার্টিফিকেটের জন্ম
তারিখটা মানুষের দেওয়া আর আসল জন্ম তারিখটা জানা নেই। অতএব এ ব্যাপারে কথা
বলাই অবান্তর।
আমাদের শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরী
তালপাতায় কাঠ কয়লার কালি দিয়ে বাশের কঞ্চি দিয়ে বানানো কলম দিয়ে আমরা
লিখতাম। একটা ছোট্ট পাটি দিয়ে এসব মোড়ানো থাকতো। বাড়ী থেকে আধা মাইল দূরের
পাঠশালায় একজন শ্বেত শুভ্র সৌম্য দর্শন মানুষ আমাদের শেখানোর চেষ্টা
করতেন। কিন্তু আজ এতোদিন পরে কেন জানি মনে হয় আমাদের শিক্ষা ব্যর্থ হয়েছে।
আমরা মুক্ত মানুষ থেকে দাস হয়েছি। নিষ্পাপ থেকে দাগী হয়েছি। আর কাক্সিক্ষত
থেকে অনাকাক্সিক্ষত হয়েছি। এ রকম পতন কোন মানুষকে আর যাই হোক অন্ততঃ তৃপ্ত
করতে পারে না।
অতএব যে জীবন জুড়ে শুধু অতৃপ্তির মেদ জমেছে তা নিয়ে
উচ্ছসিত হওয়ার কি আছে। তবু জীবন তো জীবনই। তার সাথে জুড়ে থাকে অজ¯্র কথা।
একথা, সে কথা, সব কথা দামী নয় কবু কথাগুলো মানুষকে অনেক সময় শান্তি আর
সান্ত¦না দেয়। আমার সাদামাটা জীবনেও এমন অনেক কথা আছে। আছে অনেক মান-অপমান,
মান-অভিমান, পাওয়া-নাপাওয়া আর হারানোর গল্প। আজ এই লেখায় এসব গল্পের অল্প
স্বপ্ন কিছু বলার চেষ্টা করবো। যারা শুনবেন তারা ভাগ্যবান কিনা এটা হলফ করে
বলতে পারছি না তবে আমি কিছুটা হলেও ভাগ্যবান। আমি বলে যেতে চেয়েছিলাম।
হয়তো পারলাম। এর প্রয়োজন ছিলো।
শৈশবে যখন জানলাম পৃথিবী গোল। এর
আকার কমলালেবুর মতো, উপর নিচে খানিকটা চাপা, মাঝখানটায় কিছুটা চ্যাপ্টা
একটু অবাকই হলাম। সবকিছুতো সমতলই দেখছি। গোলটা এলো কোথা থেকে, তখনও বুঝিনি
পৃথিবীর তুলনায় আমি এতোটাই ক্ষুদ্র যে তা আমার নজরে আসে না। আর তখনি মনে
হলো সবকিছু আমার বোঝার বাইরে, দেখার বাইরে। তবে তা আছে। আর তা সত্য।
বয়স
বাড়ার সাথে সাথে সৃষ্টিকর্তার ধারণা পেলাম, মেনে নিলাম। কারণ আর কিছু নয়।
ইতোমধ্যেই তার সৃষ্টির কাছ থেকে পাওয়া ধারণা এটা বুঝিয়ে দিয়েছে কেউ একজন
আছে যিনি আড়ালে বসে কলকাঠি নাড়ছেন। আমার কাছে আড়াল এই জন্যে যে আমার তাকে
দেখার সামর্থ্য নাই।
সামান্য গোল পৃথিবীর গোলাকার আকৃতিটাই আমি এই
জমিনের উপর দাঁড়িয়ে দেখতে পারি না। এতোটা সীমাবদ্ধতা নিয়ে তাকে দেখা সম্ভব
নয়। কারণ তিনি তো সৃষ্টির চাইতে নিঃসন্দেহে অনেক বড়। অতএব এই না দেখা
বিশ্বাসই আমাকে তৃপ্তি দিলো। আমি আমার আস্তিক্য নিয়ে গর্বিত হলাম। কারণ
ধীরে ধীরে এতোটুকু অন্ততঃ বুঝলাম যে ঈমানের বুঝ শুধুমাত্র ভাগ্যবানরাই পায়।
অনেক সময় অতি বিদ্যা মানুষকে বিভ্রান্ত হতে দেখেছি। সবই নিয়তি।
এই
নিয়তি নিয়ে একটু না বলে পারছি না। যতোই বড় হলাম ততোই ভগ্যে বিশ্বাসী হয়ে
উঠলাম। কারণ আর কিছু নয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এর শিক্ষা রয়েছে। আমরা
সবাই যা কিছু চেয়েছি, পাওয়ার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি তার সবকিছু কি আমরা
পেয়েছি, পাইনি, এটাই নিয়তি। বুঝলে সহজ। যুক্তি তর্ক করলে অনেক করা যায়
কিন্তু লাভ নেই। এই বোঝা না বোঝাই নিয়তি। কপালে না থাকলে ঈমানের বুঝ তার
হবে না। নিয়তিকে চেয়ে নিতে হয়। সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে, এটা তিনিই বলেছেন,
বুঝতে হবে।
ধীরে ধীরে কিছুটা বুঝতে শিখলাম। তবে তা সীমিত। নিজের জীবনটাকে কোনমতে চালিয়ে যাওয়ার নিদারুণ একটা চেষ্টা। চলেও যাচ্ছিলো জীবন।
অনেকেই
বলেন জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসা সময়ের দাবী ছিলো। এ ধরণের অর্বাচীন
কথাবার্তা যারা বলে তারা কি রাজনীতি কি দেশ-এর কোনটাকেই কিছু দিতে পারবে
না। অর্থহীন সব কথাবার্তা। তার চেয়েও অর্থহীন ঐ সব মানুষেরা যারা ব্যক্তি
স্বার্থে রাজনীতির খেলা খেলে। এদের কাছ থেকে কিছুই প্রত্যাশা করা যায় না।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এরকম বহু লোকের ছড়াছড়ি। নইলে দীর্ঘ তেইশ বছর
পাকিস্তানী স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আত্মাহুতি দেওয়া
একটা জাতি যাদের নেতাদের বলতে গেলে জীবনের বেশীরভাগ সময়টা কেটেছে জেলে সে
রকম একটা দেশের স্বাধীনতার মাত্র চার বছর যেতে না যেতেই বঙ্গবন্ধুহীন
বাংলাদেশে একজন সামরিক বাহিনীর সদস্যেকেই প্রয়োজন হলো দেশ চালানোর জন্যে।
একবারও কি আমাদের মনে হলো না যে গণতন্ত্রের দীর্ঘ সংগ্রামের লড়াকু
মানুষগুলো কি মরে গিয়েছিলো।
আসলে ভুল আমাদের দর্শনের। ভুল আমাদের
আত্মবিশ্বাসের। ভুল আমাদের দৃঢ়তার জায়গাটায়। নইলে বার বার গণতন্ত্র মানুষের
মিছিল থেকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতর চলে যায় কেমন করে। কেউ একজন মহীরূহ এসে
(এই যেমন ধরুন শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা) আমাদের হাতে গণতন্ত্র, অধিকার এসব
তুলে দেয়। তারা সরে দাঁড়ালেই আবার ঠিক যা ছিলো তা হয়ে যায়। জাতি হিসাবে তো
অবশ্যই ব্যক্তি হিসেবেও এটা আমাদের জন্যে কতোটা লজ্জার তা বলার অপেক্ষা
রাখে না। এ যেন বণী ইসরাইলের নতুন সংস্করণ। আমাদের এইসব জাহেলী আচরণ আমাদের
দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বৈ কমায় নি। মনে রাখা দরকার এই সব কাচা চিন্তাভাবনা
গণতন্ত্রের ভিত্তিকে কখনও মজবুত করতে পারে না। দেশপ্রেম আর তার চর্চাকে
সুসংহত করা দরকার।
শ্রদ্ধাশীল হওয়া দরকার সংবিধানের প্রতি। রাষ্ট্র
পরিচালনা কোন কাচা আবেগ দ্বারা সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে খুব বেশী দূর যাওয়ার
দরকার নাই। আমরা যদি উপমহাদেশের দুই কিংবদন্তী রাজনীতিবিদের জীবনের দিকে
তাকাই তাহলে একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে দেখতো পাবো। এরা হলেন গান্ধী ও
জিন্নাহ। আবেগ দ্বারা তাড়িত গান্ধী, আর সাংবিধানিক রাজনীতির প্রতি
শ্রদ্ধাশীল জিন্নাহ। দু’জনের ফিনিশিংয়ের দিকে লক্ষ্য করা যাক। আপনারা
নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন রাজনীতি কোন বিশেষ আবেগ দ্বারা পরিচালিত হয় না। জনতার
জন্যে জনতার দিকে তাকিয়ে জনমতের উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ আবেগ বিবর্জিত
হয়ে (তা সে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতা, তাদের চাওয়া পাওয়া,
বিভ্রান্ত জনপ্রিয় আন্দোলন) সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত
পন্থায় রাজনীতিকে পরিচালিত করতে হয়। এটা ঠিক অংকের মতোই।
আসলে
জীবনী লেখার মতো করে এই বই লেখার কোন উদ্দেশ্য আমার নেই। কারণ জীবন বলতে যা
বুঝায়, সেরকম কিছু আমার নেই। তাছাড়া আমার যেখানে কোন নামই নেই যেখানে
জীবনীর কথা খুব একটা আসছেই বা কই। মূলতঃ চলার পথে যেটুকু দেখেছি তার কিছুটা
বলাই উদ্দেশ্য।
আমি ঢাকার সাথে ঘনিষ্ট হই ১৯৯০ সাল থেকে। গিয়েছি
তারও অনেক আগেই। তবে সেই যাওয়া সংক্ষিপ্ত ভ্রমণ ছাড়া আর কিছু ছিলো না। তখন
ফুটবল বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে আবাহনী মোহামেডান ম্যাচ হলে
গুলিস্তান এলাকাটা জমে উঠতো। প্রায়ই সংঘর্ষ হত্।ো প্রাণও যেতো অযথাই। এরপর
ক্রিকেট জনপ্রিয় হয়। ফুটবল হারিয়ে যায়। কিন্তু এটা তো হওয়ার কথা ছিলো না।
ফুটবল থাকবে ফুটবলের জায়গায়। ক্রিকেট ক্রিকেটের জায়গায়। কিন্তু তা হয়নি।
মূলতঃ ক্রিকেটের চাপে ফুটবল হারিয়ে গেছে এমনটা হওয়া ঠিক হয়নি। আর এ কথা
মানাও কষ্টের।
মূলতঃ যতো কথাই বলি না কেন আমাদের দেশ যদিও ক্রিকেটে
এই মুহুর্তে কিছুটা সাফল্য পাচ্ছে তবে একথা সত্য ফুটবল বা ক্রিকেট-এ দুটোর
কোনোটারই এখনো শক্ত ভিত্তি গড়ে ওঠেনি। রুট লেভেল থেকে যেভাবে খেলোয়াড়রা উঠে
আসতে পারে তার কোন ধারাবাহিকতা তৈরী হয়নি। ক্রীড়া বেঁচে আছে দয়া
দাক্ষিন্যে। এভাবে হয় না। এটা কারো আবেগ বা দয়া দাক্ষিন্যের জায়গা না। আমরা
কবে এসব বুঝতে শিখবো। এ জায়গাটা নিরেট প্রফেশনালদের জায়গা। আর্চারিতে
অলিম্পিকে সোনা জিততে হলে আপনাকে গভীর মনোযোগ দিতে হবে। তেমনি স্বচ্ছল ঘরের
সুঠাম দেহী সক্ষম আর মেধাবী ছেলেমেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। এর পাশাপাশি
দরকার সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা। অন্ততঃ উপজেলা লেভেল থেকে শুরু হোক এর যাত্রা।
তবে আমরা এসবের জন্যে প্রান্তিক লেভেলেও একাডেমী পাবো। কবে এসবের
প্রতিষ্ঠানিকীকরণ হবে।
আমাদের মাধ্যমিক যখন সমাপ্তির পথে তখন ছিলো
এরশাদ সরকারের শেষ সময়কালটা। নানামুখী আন্দোলন চলেছিলো বিগত কয়েক বছর ধরে।
রাউফুন বসুনিয়া শহীদ হলেন। শহীদ হলেন সেলিম-দেলোয়ার। সমস্ত ক্ষোভ শেষ
পর্যন্ত এক দফার দাবীতে পরিণত হলো। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ট্রাকের
চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে মারাত্মক শারীরিক খুঁতের শিকার হলেন ছাত্রলীগের
তৎকালীন স্বনামধন্য নেতা হাবিবুর রহমান। এক যন্ত্রনাময় জীবন তাকে বিভ্রান্ত
করলো। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে দূরে সরে গেলেন। বিভ্রান্ত জীবন তাকে
আদর্শচ্যুত করলো। এটা তার জন্যে যেমন লজ্জার তেমনি দল ও দেশের জন্যেও। যে
আদর্শের জন্যে এক সময় তিনি উচ্চকন্ঠ ছিলেন তাকে তার বিরুদ্ধে বলতে দেখা
গেলো। আফসোস। ভেতরের গোপন আকাক্সক্ষা মানুষকে যখন তখন মাটিতে নামিয়ে আনতে
পারে।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment