উমাইয়াদের খিলাফত চলেছিলো ৬৬১ খ্রি. থেকে ৭৫১ খ্রি. পর্যন্ত। তারপর এলো আব্বাসীয়রা। তাদের এই আসাটা এতোটা সহজ ছিলো না। আব্বাসীয় খিলাফতের প্রথম দুই খলিফা আবুল আব্বাস আল সাফ্ফাহ এবং আল মনসুরের পিতা মুহাম্মদ ইবন আলী ইবন আব্দুলাহ ইবন আল আব্বাস ইবন আব্দুল মুত্তালিব উমর বিন আব্দুল আজিজ বা দ্বিতীয় উমরের রাজত্বকালে (৭১৭-৭২০) পারস্যে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে এই মর্মে প্রচারণা শুরু করে যে খেলাফতের দায়িত্ব নবী (সাঃ) এর বংশেই থাকা উচিত। তার নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি নবী (সাঃ)-এর চাচা হযরত আব্বাস (রাঃ) এর “গ্রেট গ্রান্ডসন” বা তৃতীয় অধঃস্তন পুরুষ। অতঃপর দ্বিতীয় মারওয়ানের খিলাফতকালে (৭৪৭-৭৫০) ইব্রাহিম আল ইমাম যিনি হযরত আব্বাস (রাঃ)-এর চতুর্থ অধঃস্তন পুরুষ খোরাসানে বিদ্রোহ করেন। ৭৪৭ খ্রি. তিনি খলিফা কর্তৃক ধৃত হন এবং সম্ভবত তাকে বন্দী অবস্থায় হত্যা করা হয়।
এরপর ঐ বছরই বিদ্রোহের নেতৃত্ব চলে যায় খোরাখানের আবু মুসলিমের হাতে। খোরাসানের পাশাপাশি মার্ভেও বিদ্রোহ দেখা দেয়। আবু মুসলিম প্রায় ১০,০০০ সৈন্য জোগাড় করতে সক্ষম হন। তার সেনাপতি কাহাতাবা উমাইয়াদের গভর্নর নাসির ইবন সায়ারকে তাড়া করলে পর পর কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় যার সবগুলোতেই উমাইয়ারা পরাজিত হয়। খোরাসান, নাহাবন্দ এবং কারবালার এইসব যুদ্ধের সবগুলোই সংঘটিত হয়েছিলো পরের বছর অর্থাৎ ৭৪৮ খ্রি.।
এরপর আবার ধীরে ধীরে বিদ্রোহের নেতৃত্ব চলে আসে নবী (সাঃ) এর বংশে। একটু আগেই বলেছিলাম ৭৪৭ খ্রি. ইব্রাহিম আল ইমাম যিনি নিজেও মুহাম্মদ ইবন আলীর একজন পুত্র ছিলেন বিদ্রোহ করেছিলেন এবং বন্দী অবস্থায় নিহত হয়েছিলেন। এবার তার জায়গায় বিদ্রোহের দায়িত্ব নেন তারই ভ্রাতা আব্দুল্লাহ যিনি পরবর্তীতে আব্বাসীয় খিলাফতের প্রথম খলিফা আবুল আব্বাস আল সাফ্ফাহ নামে পরিচিত। ৭৫০ খ্রি. যাব নদীর যুদ্ধে উমাইয়াদের পরাজিত করেন। খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ান মিশরে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়। উমাইয়া পরিবারের মাত্র একজন পুরুষ সদস্য বাদে বাকি সবাইকেই হত্যা করা হয়েছিলো।
এতো গেলো আব্বসীয় খেলাফতের উত্থানের ছোট্ট ভূূমিকা। এই প্রবন্ধে আমাদের আগ্রহ মূলত আব্বাসীয় খেলাফতের আমলে শিয়াদের উত্থান নিয়ে। আমরা তাই চেষ্টা করবো সেদিকে আলোকপাত করার জন্যে।
উমাইয়াদের শাসনামলে ৭০৫ খ্রি. এর দিকে বলখ-এর কাছাকাছি সম্ভবতঃ বৌদ্ধ মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে একজন লোক কাজ করতো। সে তার পদবী বার্মাক দ্বারাই পরিচিত ছিলো। ধারণা করা হয় চিকিৎসাবিদ্যার উপরও তার দখল ছিলো। ধারণা করা হয় ৭০৫ খ্রি. এর বলখ-এর যুদ্ধের সময় তার সুন্দরী স্ত্রী আরবদের দ্বারা ধৃত হয় এবং আরব সেনাপতির ভ্রাতা আব্দুল্লাহর কাছে প্রেরিত হয়। আব্দুল্লাহর ঔরসে ঐ রমণীর গর্ভে একটি সন্তানের জন্ম হয় যার নাম রাখা হয়েছিলো খালিদ। আব্দুল্লাহ এই সন্তানকে স্বীকৃতি দিলেও পরবর্তীতে এই খালিদ ইতিহাসে খালিদ বার্মাক হিসেবেই পরিচিত হয়। এই সময় বার্মাক খলিফা আব্দুল মালিকের অসুস্থ পুত্র মাসলামারও চিকিৎসা করেন। এসবই ঐতিহাসিক আল মাসুদীর দাবী যদিও অন্যান্য ঐতিহাসিকদের এ ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।
যে যাই হোক বার্মাক উমাইয়া খেলাফতে একটা ভালো জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন। পরবর্তীতে তার পুত্র খালিদ বার্মাকও উমাইয়া খেলাফতে আরও ভালো জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। খালিদ বার্মাক প্রথম ও দ্বিতীয় আব্বাসীয় খলিফা আস সাফ্ফাহ (৭২২-৭৫৪ খ্রি.) এবং আল-মনসুর (৭১৪-৭৭৫ খ্রি.) এর অধীনে অত্যন্ত সম্মানজনক স্থান লাভ করেছিলেন। ৭৮২ খ্রি. খালিদের মৃত্যুর পর তার পুত্র ইয়াহিয়া বার্মাক তার স্থলাভিষিক্ত হন এবং রাজ দরবারে উচ্চ মর্যাদা লাভ করেন।
খালিদের পুত্র ইয়াহিয়া ইবন খালিদ খলিফা আল মাহাদির পুত্র পরবর্তী উমাইয়া খলিফা হারুন অর রশিদের শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছিলেন। ইয়াহিয়ার তিন পুত্র ছিলো। জাফর, ফজল এবং মুসা। এদের মধ্যে জাফর এবং ফজল অত্যন্ত উঁচু পদে আসীন হয়েছিলো। বিশেষ করে জাফর ছিলো খলিফার সার্বক্ষনিক সহচর। আর ফজল খেলাফতের অনেক বড় দায়িত্ব পালন করতেন।
এই জাফরের সাথেই খলিফা হারুণ অর রশিদের প্রিয় ভগ্নী আব্বাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের ফলে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয় যা হারুণ অর রশিদের পছন্দের ছিলো না। জাফর তাদের পুত্র সন্তানকে মক্কায় লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু খলিফার সন্দেহ হওয়ায় তিনি হজ্জ্বের নাম করে মক্কা ভ্রমণ করেন এবং এই মর্মে নিশ্চিত হন। অতঃপর প্রাসাদের ভেতরেই খলিফার সাথে বিচরণরত অবস্থায় খলিফার একজন বিশ্বস্ত অনুচর জাফরকে হত্যা করে। এ ঘটনা ঘটেছিলো ৮০৩ খ্রিস্টাব্দে। আর ৮০৮ খ্রি. ফজলও খলিফার বন্দীদশায় থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করেন। আর এভাবেই সুন্নী আব্বাসীয় খিলাফতে শিয়া বার্মাকীদের প্রভাবের করুণ পরিণতি ঘটে। বিখ্যাত কবি ফেলিসিয়া হিম্যানস তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “রেকর্ডস অব ওম্যান : অন্যান্য কবিতা” কাব্যগন্থে বার্মাকীদের স্মরণে একটি চমৎকার কবিতা লিখেছিলেন যার শিরোণাম ছিলো “দ্যা মোর্নার ফর দ্যা বার্মাকিদস”।
আব্বাসীয় খিলাফতে শিয়াদের দ্বিতীয়বারের মতো প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায় ৯৪৫ খ্রি. যখন তৎকালীন আব্বাসীয় খলিফা আদুদ আল দৌলা তার দরবারে ক্রমবর্ধমান তুর্কী প্রভাব কমাতে নিজেই বুইয়াদের বাগদাদে আমন্ত্রন করেন। বুইয়ার এক পুত্র আহমদ বাগদাদে প্রবেশ করেন এবং খলিফার হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তখন আব্বাসীয় খলিফা নামমাত্র খলিফায় পরিণত হন।
মূলত বুইয়ারা ৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ থেকেই একের পর এক এলাকা দখল করে আসছিলো। বুইয়ার তিন ছেলে ছিলো যাদের নাম আলী, হাসান এবং আহমদ। এদের মধ্যে আলী (৯৩৪-৯৪৯ খ্রি.) ফার্সে তার অধিকৃত এলাকার রাজধানী বানিয়েছিলো। হাসানের (৯৩৫-৯৭৬ খ্রি.) ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো রে। আর আহমদ ৯৪৫ খ্রি. সরাসরি খেলাফতের কেন্দ্রবিন্দু বাগদাদ দখল করে বসলেন খলিফার অযোগ্যতার কারণে। ৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে খলিফা আদুদ আল দৌলার মৃত্যু হলে বুইয়াদের ক্ষমতা হ্রাস পায়। এভাবে ১০৬২ খ্রিস্টাব্দে বুইয়ারা সেলজুকদের দ্বারা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
শিয়া ১২ ইমামের তালিকা:
১. হযরত ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ)
২. হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রাঃ)
৩. হযরত ইমাম হোসেন বিন আলী (রাঃ)।
৪. হযরত ইমাম আলী বিন (রহঃ) [যয়নুল আবেদীন]
৫. হযরত ইমাম মুহাম্মাদ বিন আলী (রহঃ) [বাকের]
৬. হযরত ইমাম জাফর বিন মুহাম্মাদ (রহঃ) [জাফর সাদিক]
৭. হযরত ইমাম মুসা ইবনি জাফর (রহঃ) [মুসা কাযিম]
৮. হযরত ইমাম আলী ইবনি মুসা (রহঃ) [রেজা]
৯. মুহাম্মাদ ইবনি আলী (রহঃ) [ত্বাকী]
১০. হযরত ইমাম আলী ইবনি মুহাম্মাদ (রহঃ) [নাক্বী]
১১. হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রহঃ) [আসকারী]
১২. হযরত ইমাম মাহদী (রহঃ)
শিয়া ৭ ইমামের তালিকা:
১. আলী (৬৩২-৬৬১)
২. হাসান ইবনে আলী (৬৬১-৬৬৯)
৩. হুসেন ইবনে আলী (৬৬৯-৬৮০)
৪. আলী ইবনে হুসেন যয়নাল আবিদিন (৬৮০-৭১৩)
৫. মুহাম্মদ আল-বাকির (৭১৩-৭৩৩)
৬. জাফর আল-সাদিক (৭৩৩-৭৬৫)
৭. ইসমাইল ইবনে জাফর (৭৬৫-৭৭৫)
এরপর ঐ বছরই বিদ্রোহের নেতৃত্ব চলে যায় খোরাখানের আবু মুসলিমের হাতে। খোরাসানের পাশাপাশি মার্ভেও বিদ্রোহ দেখা দেয়। আবু মুসলিম প্রায় ১০,০০০ সৈন্য জোগাড় করতে সক্ষম হন। তার সেনাপতি কাহাতাবা উমাইয়াদের গভর্নর নাসির ইবন সায়ারকে তাড়া করলে পর পর কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় যার সবগুলোতেই উমাইয়ারা পরাজিত হয়। খোরাসান, নাহাবন্দ এবং কারবালার এইসব যুদ্ধের সবগুলোই সংঘটিত হয়েছিলো পরের বছর অর্থাৎ ৭৪৮ খ্রি.।
এরপর আবার ধীরে ধীরে বিদ্রোহের নেতৃত্ব চলে আসে নবী (সাঃ) এর বংশে। একটু আগেই বলেছিলাম ৭৪৭ খ্রি. ইব্রাহিম আল ইমাম যিনি নিজেও মুহাম্মদ ইবন আলীর একজন পুত্র ছিলেন বিদ্রোহ করেছিলেন এবং বন্দী অবস্থায় নিহত হয়েছিলেন। এবার তার জায়গায় বিদ্রোহের দায়িত্ব নেন তারই ভ্রাতা আব্দুল্লাহ যিনি পরবর্তীতে আব্বাসীয় খিলাফতের প্রথম খলিফা আবুল আব্বাস আল সাফ্ফাহ নামে পরিচিত। ৭৫০ খ্রি. যাব নদীর যুদ্ধে উমাইয়াদের পরাজিত করেন। খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ান মিশরে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়। উমাইয়া পরিবারের মাত্র একজন পুরুষ সদস্য বাদে বাকি সবাইকেই হত্যা করা হয়েছিলো।
এতো গেলো আব্বসীয় খেলাফতের উত্থানের ছোট্ট ভূূমিকা। এই প্রবন্ধে আমাদের আগ্রহ মূলত আব্বাসীয় খেলাফতের আমলে শিয়াদের উত্থান নিয়ে। আমরা তাই চেষ্টা করবো সেদিকে আলোকপাত করার জন্যে।
উমাইয়াদের শাসনামলে ৭০৫ খ্রি. এর দিকে বলখ-এর কাছাকাছি সম্ভবতঃ বৌদ্ধ মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে একজন লোক কাজ করতো। সে তার পদবী বার্মাক দ্বারাই পরিচিত ছিলো। ধারণা করা হয় চিকিৎসাবিদ্যার উপরও তার দখল ছিলো। ধারণা করা হয় ৭০৫ খ্রি. এর বলখ-এর যুদ্ধের সময় তার সুন্দরী স্ত্রী আরবদের দ্বারা ধৃত হয় এবং আরব সেনাপতির ভ্রাতা আব্দুল্লাহর কাছে প্রেরিত হয়। আব্দুল্লাহর ঔরসে ঐ রমণীর গর্ভে একটি সন্তানের জন্ম হয় যার নাম রাখা হয়েছিলো খালিদ। আব্দুল্লাহ এই সন্তানকে স্বীকৃতি দিলেও পরবর্তীতে এই খালিদ ইতিহাসে খালিদ বার্মাক হিসেবেই পরিচিত হয়। এই সময় বার্মাক খলিফা আব্দুল মালিকের অসুস্থ পুত্র মাসলামারও চিকিৎসা করেন। এসবই ঐতিহাসিক আল মাসুদীর দাবী যদিও অন্যান্য ঐতিহাসিকদের এ ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে।
যে যাই হোক বার্মাক উমাইয়া খেলাফতে একটা ভালো জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন। পরবর্তীতে তার পুত্র খালিদ বার্মাকও উমাইয়া খেলাফতে আরও ভালো জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। খালিদ বার্মাক প্রথম ও দ্বিতীয় আব্বাসীয় খলিফা আস সাফ্ফাহ (৭২২-৭৫৪ খ্রি.) এবং আল-মনসুর (৭১৪-৭৭৫ খ্রি.) এর অধীনে অত্যন্ত সম্মানজনক স্থান লাভ করেছিলেন। ৭৮২ খ্রি. খালিদের মৃত্যুর পর তার পুত্র ইয়াহিয়া বার্মাক তার স্থলাভিষিক্ত হন এবং রাজ দরবারে উচ্চ মর্যাদা লাভ করেন।
খালিদের পুত্র ইয়াহিয়া ইবন খালিদ খলিফা আল মাহাদির পুত্র পরবর্তী উমাইয়া খলিফা হারুন অর রশিদের শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছিলেন। ইয়াহিয়ার তিন পুত্র ছিলো। জাফর, ফজল এবং মুসা। এদের মধ্যে জাফর এবং ফজল অত্যন্ত উঁচু পদে আসীন হয়েছিলো। বিশেষ করে জাফর ছিলো খলিফার সার্বক্ষনিক সহচর। আর ফজল খেলাফতের অনেক বড় দায়িত্ব পালন করতেন।
এই জাফরের সাথেই খলিফা হারুণ অর রশিদের প্রিয় ভগ্নী আব্বাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের ফলে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয় যা হারুণ অর রশিদের পছন্দের ছিলো না। জাফর তাদের পুত্র সন্তানকে মক্কায় লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু খলিফার সন্দেহ হওয়ায় তিনি হজ্জ্বের নাম করে মক্কা ভ্রমণ করেন এবং এই মর্মে নিশ্চিত হন। অতঃপর প্রাসাদের ভেতরেই খলিফার সাথে বিচরণরত অবস্থায় খলিফার একজন বিশ্বস্ত অনুচর জাফরকে হত্যা করে। এ ঘটনা ঘটেছিলো ৮০৩ খ্রিস্টাব্দে। আর ৮০৮ খ্রি. ফজলও খলিফার বন্দীদশায় থাকাকালীন মৃত্যুবরণ করেন। আর এভাবেই সুন্নী আব্বাসীয় খিলাফতে শিয়া বার্মাকীদের প্রভাবের করুণ পরিণতি ঘটে। বিখ্যাত কবি ফেলিসিয়া হিম্যানস তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “রেকর্ডস অব ওম্যান : অন্যান্য কবিতা” কাব্যগন্থে বার্মাকীদের স্মরণে একটি চমৎকার কবিতা লিখেছিলেন যার শিরোণাম ছিলো “দ্যা মোর্নার ফর দ্যা বার্মাকিদস”।
আব্বাসীয় খিলাফতে শিয়াদের দ্বিতীয়বারের মতো প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায় ৯৪৫ খ্রি. যখন তৎকালীন আব্বাসীয় খলিফা আদুদ আল দৌলা তার দরবারে ক্রমবর্ধমান তুর্কী প্রভাব কমাতে নিজেই বুইয়াদের বাগদাদে আমন্ত্রন করেন। বুইয়ার এক পুত্র আহমদ বাগদাদে প্রবেশ করেন এবং খলিফার হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তখন আব্বাসীয় খলিফা নামমাত্র খলিফায় পরিণত হন।
মূলত বুইয়ারা ৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ থেকেই একের পর এক এলাকা দখল করে আসছিলো। বুইয়ার তিন ছেলে ছিলো যাদের নাম আলী, হাসান এবং আহমদ। এদের মধ্যে আলী (৯৩৪-৯৪৯ খ্রি.) ফার্সে তার অধিকৃত এলাকার রাজধানী বানিয়েছিলো। হাসানের (৯৩৫-৯৭৬ খ্রি.) ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো রে। আর আহমদ ৯৪৫ খ্রি. সরাসরি খেলাফতের কেন্দ্রবিন্দু বাগদাদ দখল করে বসলেন খলিফার অযোগ্যতার কারণে। ৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে খলিফা আদুদ আল দৌলার মৃত্যু হলে বুইয়াদের ক্ষমতা হ্রাস পায়। এভাবে ১০৬২ খ্রিস্টাব্দে বুইয়ারা সেলজুকদের দ্বারা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়।
শিয়া ১২ ইমামের তালিকা:
১. হযরত ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ)
২. হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রাঃ)
৩. হযরত ইমাম হোসেন বিন আলী (রাঃ)।
৪. হযরত ইমাম আলী বিন (রহঃ) [যয়নুল আবেদীন]
৫. হযরত ইমাম মুহাম্মাদ বিন আলী (রহঃ) [বাকের]
৬. হযরত ইমাম জাফর বিন মুহাম্মাদ (রহঃ) [জাফর সাদিক]
৭. হযরত ইমাম মুসা ইবনি জাফর (রহঃ) [মুসা কাযিম]
৮. হযরত ইমাম আলী ইবনি মুসা (রহঃ) [রেজা]
৯. মুহাম্মাদ ইবনি আলী (রহঃ) [ত্বাকী]
১০. হযরত ইমাম আলী ইবনি মুহাম্মাদ (রহঃ) [নাক্বী]
১১. হযরত ইমাম হাসান বিন আলী (রহঃ) [আসকারী]
১২. হযরত ইমাম মাহদী (রহঃ)
শিয়া ৭ ইমামের তালিকা:
১. আলী (৬৩২-৬৬১)
২. হাসান ইবনে আলী (৬৬১-৬৬৯)
৩. হুসেন ইবনে আলী (৬৬৯-৬৮০)
৪. আলী ইবনে হুসেন যয়নাল আবিদিন (৬৮০-৭১৩)
৫. মুহাম্মদ আল-বাকির (৭১৩-৭৩৩)
৬. জাফর আল-সাদিক (৭৩৩-৭৬৫)
৭. ইসমাইল ইবনে জাফর (৭৬৫-৭৭৫)
Comments
Post a Comment