Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

কনস্ট্যান্টিনোপলের যতো কাছে সম্ভব আমার কবর দিও

৬৭৪ খ্রি. যখন উমাইয়া খলিফা হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর সময় কনস্ট্যান্টিনোপল অবরোধ করা হয় সেই দলের সাথে ছিলেন বৃদ্ধ সাহাবী হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ)। অবরোধ চলাকালীন তিনি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মারা যাওয়ার আগে তিনি বলে যান, যদি কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ের আগেই আমার মৃত্যু হয় তোমরা আমাকে কনস্ট্যান্টিনোপলের যতোটা কাছাকাছি সম্ভব কবর দিও।
আমরা সবাই জানি সে যাত্রা কনস্ট্যান্টিনোপল বিজিত হয়নি। কনস্ট্যান্টিনোপল বিজিত হয়েছিলো তারও বহু শতাব্দী পরে ১৪৫৩ খ্রি. অটোমান সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ বা দ্বিতীয় মুহাম্মদ কর্তৃক।
হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ) কে তার সঙ্গীরা অত্যন্ত গোপনে কনস্ট্যান্টিনোপলের থিওডেসিয়াস দেয়ালের কাছাকাছি একটা জায়গায় কবর দিয়েছিলো। খ্রিস্টানরা এ খবর জানতে পার। একজন সাহাবীর কবর যে কতোটা বরকতময় তা তারা জানতো।
জানা যায় কনস্ট্যান্টিনোপলে প্রায়ই মারাত্মক খরা দেখা দিতো। কথিত আছে যতোবারই কনস্ট্যান্টিনোপলে এরকম খরা দেখা দিয়েছে তারা সাহাবী হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ) এর কবরের কাছে এসে তাকে উসিলা করে আল্লাহ্র কাছে বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা করেছে। আর এর ফলও তারা পেয়েছে। আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে।
১৪৫৩ খ্রি. ৬ই এপ্রিল থেকে সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ যখন কনস্ট্যান্টিনোপলের দূর্গ জয় করার জন্য টানা অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তখনও কোনমতেই সাফল্যের মুখ দেখছিলেন না। সুলতান তখন হতাশ। তিনি জয়ের আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় তিনি তার প্রিয় শিক্ষক শায়খ আক শামসুদ্দিনের সাথে দেখা করলেন। শায়খ শাসসুদ্দিন তাকে বললেন কনস্ট্যান্টিনোপলের দূর্গের দেয়ালের পাশে সাহাবী হযরত আবু আইউব আনসারী (রাঃ) এর কবর রয়েছে। প্রথমে আমাদেরকে সেই কবর খুঁজে বের করতে হবে। সুলতান মুহাম্মদ প্রিয় শিক্ষক শায়খ আক শাসসুদ্দিন এবং বিশ্বস্ত একজন উজীরকে সাথে নিয়ে অত্যন্ত গোপনে কবর খুঁজতে বের হলেন। টানা তিন দিন তিন রাত মশাল হাতে নিয়ে খুঁজে অতঃপর কবর খুঁজে পেলেন। কবর উম্মুক্ত করা হলে দেখলেন তার হাতের সাথে একটি চিঠি আটকানো। তাতে লেখা আছে তোমরা কি কেউ আমাকে কনস্ট্যান্টিনোপলের মাটি এনে দেবে না। চিঠি পড়ে সুলতান এতোটাই আবেগাপ্লুত হন যে, তিনি শপথ নিলেন হয় তিনি শহীদ হবেন নয় কনস্ট্যান্টিনোপল জয় করবন। তিনি মহানবী (সাঃ) এর ভবিষ্যৎদ্বাণী পূরণ করার পাশাপাশি তার অত্যন্ত প্রিয় সাহাবীর মনস্কামনা পূর্ণ করবেন।
পরদিন ২৯শে মে ১৪৫৩ খ্রি.। সুলতান ফজরের নামাজের জামাতে ইমামতি করলেন। তারপর সমস্ত সৈন্যবাহিনীর উদ্দেশ্যে বললেন, হয় তারা শহীদ হবেন না, হয় কনস্ট্যান্টিনোপল জয় করবেন। সৈন্যরাও অত্যন্ত আবেগাপ্লুত হলো। তাদের “আল্লাহু আকবর” ধ্বনিতে রণক্ষেত্র মুখরিত হলো। সন্ধ্যা হওয়ার খানিকটা আগেই কনস্ট্যান্টিনোপল বিজিত হলো। সুলতান দূর্গের ভেতর প্রবেশ করে পাগড়ি খুলে কনস্ট্যান্টিনোপলের মটি হাতে মাখিয়ে সেই মাটি মাথায় মাখলেন। এভাবেই মহানবী (সাঃ) এর সেই ভবিষ্যদ্বানী সত্যে পরিণত হলো। শত শত বছর পূর্বে তিনি বেশ কয়েকবার বলেছিলেন,“কনস্ট্যান্টিনোপল বিজিত হবে। কতই না উৎকৃষ্ট সেই বাহিনী। আর কতই না উত্তম সেই বাহিনীর আমির।” Ñমুসনাদে আহমদ।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak