ইসলামের ইতিহাসের ক্রান্তিকাল মূলত শুরু হয়েছিলো হযরত উসমান (রাঃ)-এর হত্যার মধ্য দিয়ে। এই সময় যে জলঘোলা হয়েছিলো তার মূলে ছিলো চতুর মারওয়ানের চালাকিপূর্ণ আচরণ। আখেরে মারওয়ানের লাভই হয়েছিলো। হযরত উসমান (রাঃ)-এর সময়কালে যে আগুন তিনি জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন পরবর্তীকালে তারই ছাইভস্ম দিয়ে উঠে এসেছিলো তারই নেতৃত্বাধীন উমাইয়া শাসনামলের দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ মারওয়ান যুগের। মুয়াবিয়া, ইয়াজিদ এবং দ্বিতীয় মুয়াবিয়ার সংক্ষিপ্ত শাসনামলের পর সুযোগ বুঝে তিনি নিজেই বসে পড়লেন সিংহাসনে। তাতে কাজও হয়। সমর্থন পান কারবালার কসাই ওবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ আর সীমারের মত পাষন্ডের। এই সময় মুখতার অল সাকাফির উত্থান হয়। তিনি কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইনকে পরিত্যাগকারীদের নিয়ে যে অনুশোচনাকারীদের দল গড়ে ওঠে তার নেতৃত্ব নিজ হাতে নিয়ে মারওয়ানের পুত্র আব্দুল মালিককে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে সক্ষম হন। এক অভ্যুত্থানে হত্যা করতে সক্ষম হন ওবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ, সীমার সহ আরও প্রায় ২১৪ জনকে।
ইয়াজিদের মৃত্যুর বছরটাতে অর্থাৎ ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দে খেলাফত দাবী করে বসেন হযরত জোবায়ের ইবনুল আওয়াম (রাঃ) ও হযরত আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ)-এর পুত্র আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের। তার অবস্থান ছিলো মক্কায়। একই সময় তার ভাই মুসাব ইবনে জোবায়ের ছিলেন বসরার গভর্ণর। ইয়াজিদের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেছিলেন দ্বিতীয় মুয়াবিয়া কিন্তু তার শাসনকাল স্থায়ী হননি। পরবর্তীতে মারওয়ান ক্ষমতায় বসেন। তিনিও মাত্র এক বছর ক্ষমতায় ছিলেন। আর এই সময়ে আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের, মুসাব ইবনে জোবায়ের, মুখতার আল সাকাফি প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষমতাবলয় তৈরি করতে সক্ষম হন। মারওয়ানের মৃত্যুর পর ৬৮৫ খ্রিস্টাব্দে ক্ষমতায় বসেন আব্দুল মালেক ইবন মারওয়ান। তিনি এদের প্রত্যেককে দমনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি কুফার গভর্ণর ওবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদকে দায়িত্ব দেন মুখতার আল সাকাফির বিদ্রোহ দমনের। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। উল্টো ওবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ ও সীমার সহ তার অনুসারীরা মুখতারের অনুসারীদের হাতে নিহত হন।
মুখতারের উত্থানকে ভালোভাবে নিতে পারেননি একই সময় বসরার আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়েরের নিযুক্ত গভর্ণর তারই ভ্রাতা মুসাব ইবনে জোবায়ের। এ প্রসঙ্গে বলে রাখতে চাই মুখতার কিন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের-এর আনুগত্যে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কি জানি কি ভেবে আব্দুল্লাহ তাকে গ্রহণ করেননি। উল্টো এই মুখতারই নিহত হলেন মুসাবের হাতে। দুর্বল হয়ে গেলো বন্ধনটা। কৌশলী আব্দুল মালিক এই ফাঁকে তার আর এক প্রতিদ্ব›দ্বী ফুফাত ভাই আমর বিন সাঈদকে কৌশলে হত্যা করে মাঠ কিছুটা পরিষ্কার করলেন। এর পরই তিনি হাত বাড়ালেন মুসাবের দিকে এবং তাকেও হত্যা করলেন। মক্কায় অবস্থানরত খেলাফতের দাবীদার আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের তখন নিঃসঙ্গ হয়ে গেলেন। আর এই সুযোগে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ নৃশংসভাবে আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়েরকে হত্যা করলেন। আর এভাবেই মারওয়ান পুত্র আব্দুল মালিকের পথ কন্টকমুক্ত হলো এবং উমাইয়া শাসনও পাকাপোক্ত হলো যা ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে আব্বাসীয় কর্তৃক বিজীত না হওয়া পর্যন্ত অক্ষুন্ন ছিলো।
আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান-এর শাসনকাল ছিলো ৬৮৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৭০৫ খ্রিস্টাব্দ। ইসলামের ইতিহাসে এই সময়কালটা এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে এটাকে শুধুমাত্র একজন উমাইয়া শাসকের সময়কাল হিসেবে চিহ্নিত করতে আমি অন্ততঃ নারাজ।
আমরা জানি দামেস্কে মুয়াবিয়া যে শাসনকেন্দ্রের জন্ম দিয়েছিলেন তার সুফল তার বংশধররা খুব বেশীদিন ভোগ করতে পারেনি। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র ইয়াজিদ ৬৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই সংক্ষিপ্ত সময়কালের জন্যে ক্ষমতায় ছিলো। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে ইয়াজিদের মৃত্যু হলে তার পুত্র দ্বিতীয় মুয়াবিয়া নাম মাত্র ক্ষমতায় বসেন এবং ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। অতঃপর তার স্থলাভিষিক্ত হন মারওয়ান। ক্ষমতাও সরে যায় মুয়াবিয়ার বংশ থেকে মারওয়ানের বংশে। মারওয়ানও বেশী দিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। ৬৮৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৮৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই এক বছরকাল তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। এর পরই ক্ষমতায় বসেন তার পুত্র আব্দুল মালিক। এই আব্দুল মালিক ৬৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে টানা ৭০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা গুরুত্বের দিক দিয়ে এই সময়কালটা এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে আমার দৃষ্টিতে এটা পৃথক আলোচনার দাবী রাখে। আব্দুল মালিক এর সময়ের সংঘটিত ঘটনাবলী বিবেচনা করলে এটা স্পষ্ট হয়ে যাবে যে তার সময়কালটাতে গৃহীত তার পদক্ষেপ সমূহের কারণে পরবর্তীতে মুসলমানদের ইতিহাসই একটা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিলো। শুধু তাই নয় তার সময়কালটা এতোটাই অস্থির প্রকৃতির ছিলো যে তিনি যদি তা শক্ত হাতে দমন বা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারতেন তাহলে পরবর্তীতে উমাইয়া বংশের শাসনক্ষমতাই টিকত কি-না এ নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ আছে। এজন্যেই হয়তো তাকে উমাইয়া বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।
আব্দুল মালিকের জন্য শক্ত চ্যালেঞ্জ ছিলো আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের-এর খেলাফতের দাবীকে সামলানো। ইয়াজিদের মৃত্যুর পর আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের যিনি ছিলেন জোবায়ের ইবনে আওয়াম (রাঃ) এবং আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ)-এর পুত্র মক্কা ও তার পাশ্ববর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় খিলাফতের দাবী উত্থাপন করেন। ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৯২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় দশ বছর উমাইয়াদের বিপরীতে খেলাফত পরিচালনা করেন। অতঃপর হাজ্জাজ বিন ইউসুফের হাতে মক্কা অবরোধের মধ্য দিয়ে তার নিহত হওয়ার মাধ্যমে তার খেলাফতের দাবীর পরিসমাপ্তি হয়।
এখানে বলে রাখতে চাই হাজ্জাজ বিন ইউসুফ যিনি ইসলামের ইতিহাসে সমধিক আলোচিত এবং যার ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ৬৯২ থেকে ৬৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আব্দুল মালিকের নিযুক্ত হেজাজের গভর্ণরের দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের খেলাফতের দাবীর পরিসমাপ্তি করায় তিনি আব্দুল মালিকের কাছে প্রিয়পাত্রে পরিণত হন এবং ৬৯৪ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের গভর্ণর নিযুক্ত হন যে পদে তিনি ৭১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বহাল ছিলেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ৭০৫ খ্রিস্টাব্দে আব্দুল মালিকের মৃত্যু হলে তার পুত্র আল ওয়ালিদ ক্ষমতায় বসেন। তিনিও হাজ্জাজকে উক্ত পদে বহাল রাখেন। ৭১৫ খ্রিস্টাব্দে আল ওয়ালিদের মৃত্যুর এক বছর পূর্বে অর্থাৎ ৭১৪ খ্রিস্টাব্দে হাজ্জাজের মৃত্যু হয়। মুহাম্মদ বিন কাসিম কর্তৃক যে সিন্ধু অভিযান পরিচালিত হয়েছিলো তা হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এর নেতৃত্বেই পরিচালিত হয়েছিলো। অবশ্য আল ওয়ালিদ যিনি ইতিহাসে মহান বিজেতা হিসেবে পরিচিত তার সময়কালের প্রায় সকল মহান বিজেতাই পরবর্তীতে আল ওয়ালিদের স্থলাভিষিক্ত সোলায়মানের হাতে নিহত অথবা নিগৃহীত হন। এদের মধ্যে মুহাম্মদ বিন কাসিম যিনি হাজ্জাজ বিন ইউসুফের জামাতা ছিলেন, দুই স্পেন বিজীয় মহাবীর তারিক বিন জিয়াদ ও মুসা সহ আরও অনেক বীর সেনানী রয়েছেন।
মূলত আল ওয়ালিদের মৃত্যু ইসলামের ইতিহাসে মুসলমানদের সোনালী বিজয় অভিযানই থামিয়ে দেয়। রণক্ষেত্র থেকে একের পর এক সেনাপতিরা ফেরত আসতে থাকেন। এভাবে চীনের কাশগড় পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া মুসলমানরা যেমন ওখানেই থেমে যান তেমনি আফ্রিকায় অভিযান চালানো মুসলমানরাও উত্তর আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলবর্তী দেশগুলো জয় করেই ফিরে আসতে বাধ্য হন। সেদিন যদি মুসলমানদের ওখানে থামতে না হতো তাহলে হয়তো পৃথিবীর ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো।
যা হোক যে প্রসঙ্গে ছিলাম। আব্দুল মালিক আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়েরকে ৬৯২ খ্রিস্টাব্দে নিহত করে তার ক্ষমতার মসনদ পুরোপুরি পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হন।
৬৮৫ খ্রিস্টাব্দে আব্দুল মালিকের ক্ষমতা গ্রহণ ও ৬৯২ খ্রিস্টাব্দে আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়েরের নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার ক্ষমতাকে নিষ্কন্টক করার যে প্রক্রিয়া এই অন্তবর্তী সাত বছরে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে যা ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়কালে আব্দুল মালিককে তার আরও অনেক প্রতিদ্ব›িদ্বকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো যে এই সব প্রতিদ্ব›িদ্বদের সবাইকে তার নিজ হাতে খতম করতে হয়নি। এদের অনেকেই নিজেরাও নিজেদেরকে নিঃশেষ করেছে। যেমন মুখতারকে মরতে হয়েছিলো মুসাবের হাতে। আবার পরবর্তীতে মুসাব মরেছিলো আব্দুল মালিকের হাতে।
ইয়াজিবের সময়কালে কারবালায় যে মর্মন্তুদ হত্যাকাÐ সংঘটিত হয়েছিলো তার নায়ক ছিলো ওবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ। পরবর্তীতে মুখতার আল সাকাফির নেতৃত্বে কারবালার যে অনুশোচনাকারীর দল গঠিত হয়েছিলো তাদের হাতেই ওবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ ও সীমার সহ আরও অনেকে নিহত হন। কুফায় মুখতার ক্ষমতাশালী হয়ে উঠলে এটা বসরার গভর্ণর আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়েরের ভ্রাতা মুসাবের মাথা ব্যাথার কারণ হয়। যদিও মুখতার আব্দুল্লাহর আনুগত্য নিতে চেয়েছিলেন কিন্তু চপল ও ধূর্ত প্রকৃতির মুখতারের প্রতি আস্থা রাখতে পারেননি আব্দুল্লাহ। মুসাবের নেতৃত্বে এক অভিযানে ৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে মুখতারের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে মুসাবও আব্দুল মালিকের হাতে ৬৯১ খ্রিস্টাব্দে মাসকিনের যুদ্ধে নিহত হন। ঠিক-এর এক বছর পর তার ভ্রাতা মক্কা কেন্দ্রিক খেলাফতের দাবীদার আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের হাজ্জাজ বিন ইউসুফের হাতে নিহত হন।
মারওয়ানের বোনের ছেলে আমর ইবনে সাঈদ যিনি আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের-এর সিরিয়া অভিযানের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন তিনি পরবর্তীতে খলিফা আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্যে রোষাণলে পতিত হন এবং ৬৯০ খ্রিস্টাব্দে আব্দুল মালিকের হাতে নিহত হলে আমরের অধ্যায়েরও সমাপ্তি হয়।
এভাবে প্রথমে মুখতার (মৃত্যু-৬৮৭ খ্রিস্টাব্দ), তারপর সাঈদ (মৃত্যু - ৬৯০ খ্রিস্টাব্দ), তারপর মুসাব (মৃত্যু ৬৯১ খ্রিস্টাব্দ) এবং সবশেষে আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের (মৃত্যু-৬৯২ খ্রিস্টাব্দ) এর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে খলিফা আব্দুল মালিকের প্রতিদ্ব›িদ্বদের পরিসমাপ্তি হলে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে নিঃশেষ হতে যাওয়া উমাইয়া খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম সাত বছর অর্থাৎ ৬৮৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৯২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালটা তাই তাকে একটা অস্থিরতার মধ্যে দিয়েই পার করতে হয়েছে।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment