১১৯২ খ্রিস্টাব্দে তরাইনের দ্বিতীয় যুুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরী পৃথ্বিীরাজ চৌহানকে পরাজিত করে Muhammad of Ghor Prithviraj Chauhan Daud Khan Karrani Isa Khan
১১৯২ খ্রিস্টাব্দে তরাইনের দ্বিতীয় যুুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরী পৃথ্বিীরাজ চৌহানকে পরাজিত করে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের সূচনা করেন। পাশাপাশি বাংলায়ও মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো বখতিয়ার খিলজি কর্তৃক ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে। সেই থেকে বাংলা কখনও দিল্লীর অধীন আবার কখনও স্বাধীন সুলতান দ্বারা শাসিত হয়েছে।
তবে ঘটনায় মোড় আসে যখন ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে শের শাহ তৎকালীন বাংলার রাজধানী গৌড় দখল করেন। নিহত করেন গিয়াস উদ্দীন মাহমুদ শাহ ও তার দুই পুত্রকে। বেঁচে ছিলো তার কন্যা মোমেনা খাতুন। যার গর্ভে জন্মেছিলো বারো ভূঁইয়ার প্রধান ইসা খাঁ। অবশ্য পরবর্তীতে এই মোমেনা খাতুনের স্বামী সোলাইমান খানকেও হত্যা করা হয়। তার পুত্রদ্বয় ইসা খাঁ ও ইসমাইল খাঁকেও বিক্রি করে দেওয়া হয় ক্রীতদাস হিসেবে।
শের শাহের অধীন বাংলার প্রথম গভর্ণর ছিলেন খিজির খান। আর শেষ গভর্ণর ছিলেন শাহবাজ খান। এরপর শুরু হলো মুহাম্মদ শাহ ডাইনেস্টির শাসনকাল। প্রথম শাসক মোহাম্মদ খান সুর। আর শেষ শাসক তৃতীয় গিয়াসউদ্দীন বাহাদুর শাহ। ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে তাজ খান কররানী তৃতীয় গিয়াসউদ্দীন বাহাদুর শাহকে পরাজিত করে বাংলা দখল করেন। এই বংশের শেষ শাসক ছিলেন দাউদ খান কররানী যিনি ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় মোঘল সুবাদার খান জাহানের হাতে নিহত হন।
দাউদ খান কররানীর সাথে ইসা খাঁর সুসম্পর্ক ছিলো। কারণ দাউদ খান কররানীর চাচা তাজ খান কররানী ইসা খাঁকে ক্রীতদাস থেকে মুক্ত করে এনে তাদের পুরনো জমিদারী ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে দাউদ যখন মোঘল সুবাদার খান জাহানের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ইসা খাঁ তখন সোনারগাঁওয়ে মোঘল সেনাপতি শাহবর্দীর নৌ-বহরে আক্রমন করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেন। মোঘলদের সাথে ইসা খাঁর সংঘাত এভাবেই শুরু হয়েছিলো।
এই সংঘাত চলেছিলো ইসা খাঁর মৃত্যু পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তখন বাংলার সুবাদার ছিলেন মান সিংহ। এরপর ইসা খাঁর পুত্র মুসা খাঁ দায়িত্ব নেন। তিনি ১৬১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান। অতঃপর তিনিও মোঘল সুবাদার ইসলাম খান চিশ্তির কাছে পরাজিত হন এবং বশ্যতা মেনে নেন।
প্রতাপাদিত্য ক্ষমতায় বসেছিলো ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে। ১৬১১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে মোঘল সুবাদার ইসলাম খান একই সাথে যশোরের প্রতাপাদিত্য ও বাকলা তথা চন্দ্রদ্বীপের রামচন্দ্র বসুকে পরাজিত ও নিহত করেন।
বারো ভূঁইয়াদের মধ্যের অন্যতম শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী কেদার রায় ও চাঁদ রায় ১৬০৩ খ্রিস্টাব্দে মোঘল সুবাদার মানসিংহের হাতে নিহত হন।
Comments
Post a Comment