Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com : The glittering city aroundLife is rich with red, blue light of neonWide sky over the headPieces of moonlight, scatteredAnd in that splashed pieces of meteorThose are taken by the scientists of NASASo height the civilization reachesThis city is the flow of happiness nowSome men like us pass the wayWith frustration
বিকেল থেকেই ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। মুনার মনটা আজ ভীষন খারাপ। সব মিলিয়ে বাজে একটা অবস্থা। রোকনকে একটা ফোন করা যেতে পারে। মুনা ভাবল। পরক্ষনেই আবার তার সেই ইচ্ছেটাও উবে গেল। ইদানিং প্রায়ই এমনটা হচ্ছে মুনার। ইচ্ছে হতে না হতেই কেন জানি উবে যায়। খেতে গেলেও একই সমস্যা । সামান্য কিছু খাওয়ার পরই মনে হয় তার আর খিদে নেই। সর্বত্রই একটা এলোমেলো অবস্থা। তার সম্পর্কটাও আসলে খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।
একটা সহজ বিষয়ই মুনার জন্যে কেন জানি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয়টা হচ্ছে স্বাস্থ্যগত । আজন্ম সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মুনা বরাবরই ভীষন পরিশ্রমী মেয়ে। সেই মুনাই আজ কেন জানি বারবার পর্যুদস্ত হচ্ছে। কাজ-কর্মেও তেমন একটা ধারাবাহিকতা নেই। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই কাজ অসামাপ্ত রেখেই চলে আসতে হচ্ছে। শারিরীক সমস্যার পাশাপাশি অস্থিরতাও তাকে পেয়ে বসেছে।
মুনার বয়স মাত্র ২৫। এটা এমন কোন বয়স নয়। অথচ নানা কারনে মুনা কিছুটা হলেও বিব্রত । তার কেন জানি বারবার মনে হচ্ছে তার নিজের নিয়ন্ত্রন তার হাতে নেই। অদৃশ্য থেকে কেউ যেন কলকাঠি নাড়ছে। মুনা কিছুটা বিভ্রান্ত। বিষয়টা হয়তো এতো কালও ছিল। মুনার অনুভব করার প্রয়োজন পড়েনি।
সন্ধ্যার পর কুয়াশা পড়তে শুরু করলো। কুয়াশায় শীত কমে আসে। মুনার ভালো লাগছিল কিছুটা। সে তার পিতার কাছে গিয়ে বসল। তার পিতা লতিফ সাহেব অত্যন্ত জ্্যানী ও বিচক্ষণ লোক। মুনাকে নানা বিষয় শেখানোর চেষ্টা করে । মুনাও যখনই সুযোগ পায় পিতার সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করে। তার পিতার কথার বাইরে মুনা কখনও হাঁটেনি। এমনকি রোকনকে পছন্দ করার ব্যাপারটাও পিতার কাছ থেকে এসেছে। পিতার মুখে রোকনের প্রশংসা শোনার পর থেকেই রোকনকে তার ভালো লাগে। তার আগ পর্যন্ত সে কোন ছেলেকে নিয়ে ভাবেনি।
রোকনকে পছন্দ করার বিষয়টি লতিফ সাহেবেরও অজানা নয়। কিন্তু এ নিয়ে তার বাড়তি উচ্ছাসও যেমন নেই তেমনি কোন বাধাও নেই। তিনি ভালো করে জানেন সংসার কি জিনিস। যদি তার সঙ্গী ভালো হয় কালকে জয় করে তা টিকে থাকবে। অন্যথায় না চাইতেই ভেঙ্গে যাবে। শুধু শুধু প্রতিপক্ষ হবে কেন।
মুনার ইচ্ছে ছিলো আজ রোকনকে আসতে বলবে। কিন্তু তা আর হলো না। অন্য কোন বাধা নেই। তার মনটাই কেন জানি শেষ পর্যন্ত আর সায় দিলো না। এ বাড়িতে তার ইচ্ছায় কেউ কখনও বাধা দেয় না। কিন্তু তাই বলে কখনও সীমা অতিক্রম করেনি মুনা । ইচ্ছে করলেই রোকনকে সে রাতে থাকতে বলতে পারে । কাছে না থাক অন্ততঃ বাসার ভেতরে। পারিবারিক মেহমান কিংবা নিকট জন হিসাবে। তার বাবাও তেমন কিছু মনে করবে না। কারন রোকনকে সে ভালো করে চিনে । রোকন থাকলেও তেমন কোন দোষ নেই। সে সব সময় লতিফ সাহেবের কাছে পড়ে থাকে। এই ছেলেটার আগ্রহ মেয়ে মানুষের চাইতে তার মুরুব্বীর প্রতি বেশী। রোকনকে ভালো ছেলে বলতেই হবে। হাজার বার পরীক্ষা করা হয়েছে। রোকন ফেল করেনি। তার ব্যাপারটাই ভিন্ন ।
এতো কিছুর পর রোকনকে সে রাতে কখনও তাদের বাড়ীতে থাকতে বলেনি। রোকনও কখনও আগ্রহ দেখায়নি। যত রাতই হোক বাসায় ফিওে গেছে। দিন শেষে ক্লান্ত পাখী যেমন ঘরে ফেরে।
সময়টা আসলেই ভালো যাচ্ছে না। হঠাৎ করেই বাইরের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। চারিদিকে এক ধরনের অস্থিরতা। মানুষ আসলে কি সব যেন বলাবলি করছে। লতিফ সাহেবের মুখেও হাসি নেই। রাতভর পায়চারি করছেন। করাটাই স্বাভাবিক। লতিফ সাহেব পয়সাওয়ালা মানুষ। উত্তরাধিকারী বলতে এই একটা মাত্র মেয়ে। এখনও বিয়ে থা হয়নি। হয়নি বললেও ভুল হবে। কেন জানি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। মেয়েকে যখনই বিয়ের কথা বলেছেন মেয়ের ঐ এক কথা - এখন না। পরে। আমার সময় আসলে আমি নিজেই বলব। ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাউকে বিয়ে দেওয়া যায় না। লতিফ সাহেব জোর করার মতো মানুষ না। মেয়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। হাজার হোক তার একটাই মেয়ে। মেয়ের মুখের দিকে তাকালে তার কাছে পুরো পৃথিবীটাই মূল্যহীন হয়ে যায়।
মুনার কোন সম্পর্ক নাই। কি শীত, কি গ্রীষ্ম, কিংবা কি বর্ষা। মুনা বরাবরই এক রকম। মেয়েদের অনেক বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু মুনার একটাই বৈশিষ্ট্য। সে দিনভর কাজ করে। রাত জেগে পড়াশুনা করে। তার ইচ্ছে কিছু একটা কওে দেখানোর। লতিফ সাহেব সব সময়ই একটা কথা বলেন। তুমি আমার একমাত্র মেয়ে। আমাকে আল্লাহ সব দিয়েছেন। এতো দুশ্চিন্তা করতে হবে না। রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে নাও। তোমার পছন্দের কাউকেই বিয়ে করে ফেলো। আমার কোন আপত্তি নেই। তোমার উপর আমার আস্থা আছে।
কিন্তু কেন জানি কোন কিছুই বদলায় না। সময় যেন পাথর হয়ে গেছে। মুনার মন কেন জানি কোন একটা অজানা শংকায় আচ্ছন্ন । বিয়ে করা মানে পিতাকে ছেড়ে দূরে চলে যাওয়া। মুনা তার পিতাকে ফেলে একটা রাতও বাইরে থাকতে চায় না। তার ধারনা সে না থাকলে তার পিতার কিছু একটা হয়ে যাবে। মুনার এমনটা ভাববার কারণও আছে। মুনার মা তাদের সাথে থাকে না। শহরেরই অন্য প্রান্তে বাপের বাড়ীতে থাকে। লতিফ সাহেবের সাথে স্ত্রীর এই দূরত্ব নতুন কিছু নয়। মুনার সবই জানা। সে তার পিতাকে কখনোই দোষ দিতে পারেনি। আবার মাকেও সে কিছু বলতে পারে না। শত হলেও জন্মদাত্রী মা। মুনার অভিযোগ তাই তার দীর্ঘশ্বাসের সাথেই মিলিয়ে যায়।
দেখতে দেখতে শীতকালটা যেন আরও তীব্র হচ্ছে। এবছর এতোটা শীত পড়বে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। রাত যতো বাড়ে শীত বাড়ে তার চেয়ে বহুগুন । মুনার দুর্বল শরীর যেন আরও দুর্বল হয়ে আসে। শীতের প্রকোপে লেপ, কাথা, কম্বল সবই যেন ঠান্ডা হয়ে আসে। আসল কথা হলো দুর্বল শরীরের মানুষের কাছে সামান্য শীতও যেন অনেক ভারী।
অতীতে কখনও এমনটা ছিলো না। এইবারই প্রথম মুনা যেন বেশ খানিকটা ধরাশায়ী। নিজের পর্যাপ্ত যতœ নেওয়া সত্বেও অবস্থার তেমন কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। ডাক্তার দেখানো হচ্ছে । তেমন কোন সমস্যা পাওয়া যায়নি। মুনার অবস্থা ততৈবচ।
শীতের রাত গুলো যেন পার হতে চায় না। মুনার কাছে পুরো পৃথিবীটাই অর্থহীন লাগছে। সে বুঝে উঠতে পারে না তার আসলে কি করা উচিত। একটা রিক্সা ডেকে শহরের আর একপ্রান্তে মায়ের কাছে যায়। মাকে তার কিছু কথা বলার ছিলো। অনেক দিন ধরেই শত চেষ্টা করেও কেন জানি বলতে পারেনি। আজ তাই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বলেই ফেলল। মুনার মা রওশন আরা নির্বিকার। মেয়ের কথা শুনে তার চক্ষু চড়ক গাছ।
লতিফ সাহেব বুঝে উঠতে পারছেন না কি বলবেন মেয়েকে। এটা কেমন কথা। সে তো তার মেয়েকে কখনও এমন কিছু বলতে বলেনি। তাহলে মেয়ে এটা কি করলো। রওশন আরার কাছে তার পার্সোনালিটি বলতে কিছু থাকলো না। রওশন আরা হয়তো ভেবে নিয়েছে যে তিনি মেয়েকে ঘটকালী করতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু লতিফ সাহেব সেরকম মানুষ নন। তিনি মরতে রাজী। হারতে রাজী নন। মুনা এটা কি করলো। কিন্তু মুনার মনে অনেক আনন্দ। সে মূলতঃ জিতে গেছে। ঘর বাড়ী সাজানো হচ্ছে। বিয়ের সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন। বিয়েটা তবে কার।
লতিফ সাহেব দারুন বিব্রত বোধ করছেন। এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো। মেয়ে এট কি করলো। এই বয়সে এসব। তার উপরে মেয়ের বিয়ের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। সবাই কি যেন বলাবলি করছে। কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না। মুনা তার পিতার দুর্বলতা বোঝেন। পিতাকে তার চাইতে ভালো কেউ জানে না। তিনি মরবেন তো হারবেন না। মুনা তাই সব দায়ভার নিজের হাতে তুলে নেয়। লোকে যা বলার বলুক। তাতে কিছু আসে যায় না। তার কাছে তার পিতার জীবন, তার ভালো লাগা, মন্দ লাগা এসবই বড়। লোকের কথায় তার কিছু এসে যায় না।
রাতভর বিয়ের অনুষ্ঠান চলল । লতিফ সাহেবকে এই বয়সেও বর সাজতে হলো। মুনার বান্ধবী এলিজার পিতা সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায় বছর কয়েক আগে। তারপর থেকে ওদের দুরাবস্থা। এলিজার মায়ের মুখের দিকে তাকালে মুনার বুকটা ফেটে যায়।
সেই থেকে ঘটনার সূত্রপাত। ভদ্র মহিলার বয়সও এমন কিছু না যে হাল ছেড়ে দেবেন। লতিফ সাহেবেরও যে খুব একটা অপছন্দ তাও নয়। যতবারই ভদ্র মহিলা বাসায় এসেছেন লতিফ সাহেব কেন জানি ভীষন খুশী। লোকজন কি যেন কানাঘুষা করে। সব মিলিয়ে মুনার কাছে কেন জানি পুরো ব্যপারটাই মিলে যায়। মুনাও তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।
অবশ্য পুরো ব্যপারটা খুব একটা মন্দ হয়নি। এলাকাবাসীও ভীষন খুশী । এলাকার সবচাইতে জনপ্রিয় এবং মেধাবী ছেলেটি আর যার নাম রোকন বলেই সবাই জানত সেও ঐ রাতে বর সেজে তার আপনজনদের নিয়ে চলে আসে মুনাকে বউ করে ঘরে নিয়ে যেতে।
দখিনের বাতায়নে তখন উষন হাওয়া। হঠাৎ করে ঠান্ডা বাতাস যেন কমতে শুরু করেছে।
Comments
Post a Comment