Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

শিল্পী হাসেম খান

আজকের এই অনন্য বিকেলে বাংলাদেশের চিত্রকলার জীবন্ত কিংবদন্তী শিল্পী হাসেম খানকে নিয়ে ৫৫ জন বিশিষ্ট কবির নিবেদনে রচিত ”ছবির কবি হাসেম খান” শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্র্রী জনাব আবুল মাল আব্দুল মুহিত, অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি এমিরিটাস অধ্যাপক জনাব আনিসুজ্জামান, উপস্থিত সম্মানিত অতিথিবৃন্দ এবং সর্বস্তরের দর্শক-শ্রোতা ও গনমাধ্যমের সাংবাদিক বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম।

এ রকম একটি চমৎকার আয়োজনে আসতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। সত্যি কথা বলতে কি যাকে নিয়ে এই আয়োজন তিনি বরাবরই আমাদের জাতীয় চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করা একজন অনন্য মানুষ। শিল্পী হাসেম খান তার সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনার দাবি রাখেন।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য বরাবরই  ছবির মতো। এর থেকে যে কোন একটি টুকরো উঠিয়ে  নিলে সেটাই একটা অনিন্দ্য সুন্দর চিত্রকর্মে পরিণত হয়। শিল্পী হাসেম খান সেটাই করে দেখিয়েছেন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এবং এস. এম. সুলতান পরবর্তী বাংলাদেশের চিত্রকলাকে তিনি এক ভিন্ন উচ্চতায় উন্নীত করেছেন। শিল্পী  হাসেম খান সম্পর্কে কম বেশী সবারই জানা। তবুও বর্ষীয়ান এই শিল্পীর সম্পর্কে কিছু বলতে ইচ্ছে করে।

শিল্পী হাসেম খানের জন্ম ১৯৪৩ সালে চাঁদপুরে। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে ¯œাতক হন। বিগত ৪৪ বছর ধরে তিনি এই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৭ সালে তিনি শিক্ষকতার পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার  চিত্রকর্মগুলো মূলতঃ আবহমান বাংলার গ্রামীন জীবনের প্রতিচ্ছবি। চিত্রকর্মে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক এবং স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। তিনি একজন স্বনাম ধন্য মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের উপর তার অনেক বিখ্যাত চিত্রকর্ম রয়েছে।

তার চিত্রকর্মের উপর দেশে-বিদেশে অনেক প্রদর্শনী হয়েছে। জাপানের টোকিওতে ১৯৮৯ সালে একটা চমৎকার প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এছাড়াও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, জাতীয় যাদুঘর, বেঙ্গল গ্যালারী, শিল্পাঙ্গন গ্যালারীতে তার অনেক সফল প্রদর্শনী হয়েছে। ১৯৬১-৬৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে সিরামিক্স -এর উপর চিত্রকর্মের গবেষনা নিয়ে কাজ করেন। বইয়ের প্রচ্ছদ ও অন্যান্য পরিকল্পনার উপর ১৯৭৯ সালে জাপান থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ লাভ করেন।

হাসেম খান বিভিন্ন সময়ে অনেকগুলো যৌথ প্রদর্শনীতেও অংশ গ্রহণ করেন। তার আঁকা  চিত্রগুলো বরাবরই জ্ঞানী-গুনীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সাধারণ মানুষের জন্যেও এগুলো আনন্দের খোরাক। হাসেম খানের অনেক প্রকাশনাও রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘‘চারুকলা পাঠ”, ‘‘গুলিবিদ্ধ একাত্তর”। এ ছাড়াও চার খন্ডে লেখা তার চিত্রকলা শেখার বইটিও ভীষন গুরুত্বপূর্ণ। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের উপর তার রয়েছে একাধিক রচনা। বর্তমানে তিনি স্বাধীন চিত্রশিল্পী হিসেবে কর্মরত আছেন।

আমরা সবাই জানি ২০১৬ সালের ১৬ই এপ্রিল তিনি পঁচাত্তরে পা রাখতে চলেছেন। গুনী এই শিল্পী আমাদের মাঝে জীবনের যে বছরগুলো পার করেছেন তার প্রতিটি দিন স্বর্নালী মহিমায় ভরপুর। চিত্র কর্মের অৎস্র ধারায় সমান পারদর্শী এই মানুষটি সারাজীবন কথা বলেছেন ছবির ভাষায়। এঁকেছেন অনবদ্য সব ছবি। আজীবন সচেতন এই মানুষটি তাই সত্যিই শ্রদ্ধার দাবীদার। হাসেম খানকে নিয়ে এই প্রকাশনা সত্যিই যথাযথ ও সময়োপযোগী। তার হাত ধরে বাংলাদেশের চিত্রকলা অনেক দূর এসেছে। আগামী দিনেও তা আরও বহুদূর যাবে। আমরা শিল্পীর দীর্ঘায়ু এবং উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak