কেনান সম্পর্কে উইকিপিডিয়ায় প্রথম যে লাইনটা লেখা হয়েছে তা হলো,
এই
লাইনটার মধ্যে যে কথাটা বলা হয়েছে Canaan সম্পর্কে তা বুঝতে হলে প্রথমে যে
শব্দ বা শব্দগুচ্ছের মানে জানতে হবে তা হলো Semitic-Speaking, Levant,
Ancient Near East ইত্যাদি।
এবার তাহলে দেখা যাক Semitic-Speaking বলতে কাদেরকে বুঝায়। এ সম্পর্কে বলা হয়েছে,
The
Semitic languages are a branch of the Afro-Asiatic language family.
They included Arabic, Amharic, Hebrew, and numerous other ancient and
modern languages.
এটা আরও পরিষ্কার হবে যদি এর সাথে সাথে এটাও জেনে নেই যে কোন কোন এলাকার লোক এই ভাষায় কথা বলে।
They
are spoken by more than 330 million people across much of West Asia,
the Horn of Africa, and laterly North Africa, Malta, West Africa, Chad,
and in large immigrant and expatriate communities in North America,
Europe, and Australasia.
তাহলে Semitic-Speaking এর ব্যাপারে কিছুটা হলেও জানা গেলো।
এবার
আসা যাক Levant এর কথায়। Levant বলতে মূলত: ভূ-মধ্যসাগরের পূর্ব তীরবর্তী
দেশগুলোকে বুঝায়। এটা অন্তর্ভূক্ত করে বর্তমান ইসরায়েল, জর্ডান, লেবানন,
সিরিয়া, প্যালেস্টাইন ইত্যাদি দেশগুলোকে আর লেবাননের অবস্থান বুঝাতে গিয়ে
Southern Levant এর কথা বলা হয়েছে। তাহলে তো বোঝাই যাচ্ছে এটা ইসরাইল,
প্যালেস্টাইন, জর্ডান এর পাশাপাশি দক্ষিণ লেবানন, দক্ষিণ সিরিয়া এবং সিনাই
পেনিনসুলাকে অন্তর্ভূক্ত করে। তাহলে বোঝা গেলো কেনান জায়গাটা আসলে কোথায়
ছিলো?
আর এর
পাশাপাশি পেনিনসুলা কথাটাও একটি পরিষ্কার করে নেই। কারণ পরবর্তীতেও এটা
লাগবে। কারণ ইতিহাস খ্যাত এবং ধর্মীয় দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সিনাই
উপত্যাকায় এসেই কিন্তু মোশি তার দলবল বা লোকজন যাই বলি না কেন জড়ো
হয়েছিলেন।
Peninsula
শব্দটি দুটো শব্দের যোগফল। একটি হলো Panae যার অর্থ প্রায় আর অন্যটি
Insula যার অর্থ Island. তাহলে Peninsula শব্দের অর্থ দাঁড়াচ্ছে প্রায়
দ্বীপ। সৌদি আরবের দিকে তাকান। এর তিনদিকেই সাগর। যা প্রায় দ্বীপ। শুধু এক
দিকেই ভূখন্ডটি মূল স্থল ভাগের সাথে জুড়ে আছে। আর এটুকু জুড়ে না থাকলে তো
এটা দ্বীপই হয়ে যেতো। আর তখন এটাকে Arabian Peninsula না বলে Arabian
Island বলা হতো। Sinai ও একটি Peninsula. এটা মিশরের একটি Peninsula. এর
পশ্চিমে Gulf of Suez আর পূর্ব দিকে Gulf of Aqaba. আর নিচের দিকটায় অর্থাৎ
দক্ষিণ দিকে লোহিত সাগর বা Red Sea. এর উপরে দিকে যদিও Mediterranean Sea
বা ভূমধ্যসাগর তাহলে তো এটার চারদিকে পানি থাকায় দ্বীপ হয়ে যাওয়া কথা।
কিন্তু এটার পূর্ব এবং পশ্চিমে কিছু অংশ এশিয়া আর কিছু অংশ আফ্রিকার সাথে
লেগে থাকায় অনেকটা বাদুড়ের মতো ঝুলে আছে আর এটাকে একটা দ্বীপ হওয়ার হাত
থেকে বাঁচিয়েছে।
এতক্ষণ পর্যন্ত শুধু কেনান বা Canaan জায়গাটা কোথায়, তা বলার চেষ্টা করলাম। এবার তাহলে কেনানের ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা জানা যাক।
Archaeology
and history থেকে যদি খবর নেই তাহলে জানা যায় যে খ্রি: পূ: ৪০০০ বছর আগে
এখানে যারা বসবাস করতো তারা মূলত শিকারী সম্প্রদায়। এরা আস্তে আস্তে
কৃষিকাজ করতে শেখে এবং পাশাপাশি পশুপালন রপ্ত করতে শুরু করে ।
৪০০০ থেকে ৩৫০০ খ্রি: পূ: সময়কালটা যাকে Chalcolithic বলা হয় ঐ সময়টায় এরা ধাতুর ব্যবহার শেখে।
৩৫০০
থেকে ২০০০ খ্রি. পূ: সময়কালটা যাকে Early Bronze Age বলা হয় এই সময়টারও
কোন লিখিত রেকর্ড পাওয়া যায় না। তবে এর পরবতী যে সময়টা অর্থাৎ ২০০০ থেকে
১৫০০ খ্রি: পূ: যাকে Middle Bronze Age বলা হয় এই সময়টায় ধীরে ধীরে নগর
সভ্যতা গড়ে উঠতে থাকে।
বাইবেলের
ভাষ্য অনুযায়ী যে সময় দাঁড় করানো হয়েছে তাতে এই সময়টাতেই আব্রাহাম,
আব্রাম, আভ্রাম বা আমরা ইসলামে যাকে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) বলি তিনি
মেসোপটেমিয়ার (Mesopotemia) উর (Ur) থেকে সিরিয়ার (Syria) হারানে গিয়ে
পৌঁছান।
অতঃপর
তার পুত্রদ্বয় হযরত ইসমাইল (আঃ) ও হযরত ইসহাক (আঃ) জন্মলাভ করেন। এদের
মধ্যে হযরত ইসমাইল (আঃ) মক্কায় নির্বাসিত হন। আর হযরত ইসহাক (আঃ) এর পুত্র
হযরত ইয়াকুব যিনি যাকোব (Jacobe) নামেও পরিচিত তিনি জন্মলাভ করেন। এই হযরত
ইয়াকুব (আঃ) ই ইসরাইল নামে পরিচিত।
তার
বারো জন পুত্রের মধ্যে একজন হলেন হযরত ইউসুফ (আঃ)। হযরত ইউসুফ (আঃ) এর
সুবাদে ইয়াকুব (অঃ) মিশরে গমন করেন। সেখানে তার বংশধররা অর্থাৎ যারা বনি
ইসরাইল নামে পরিচিত তারা প্রায় সাড়ে চারশ বছর অবস্থান করেন। অতঃপর তাদেরই
বংশের একজন প্রতিনিধি যিনি একজন নবী ও রাসুল যার নাম মোশি (Moses) তিনি তার
জনগণকে নিয়ে নীল নদ পাড়ি দিয়ে সিনাই (sinai) উপত্যাকায় এসে পৌঁছান। অতঃপর
চল্লিশ বছর বিচরণের পর হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর কছে চলে যান।
এখানে
বলে রাখা ভালো যে, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) - কে আল্লাহ্ যে ভূমি দানের
প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বনি ইসরাইলরা তখনও সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। অতঃপর
আল্লাহ্র নির্দেশে হযরত মুসা (আঃ)-এর শিষ্য যশুয়া (Joshua) এই প্রতিশ্রæত
এলাকা অর্থাৎ কেনান (canaan) জয় করতে সক্ষম হন। তাদের নামানুসারে জায়গার
নামকরণ হয় ইসরাইল (Israel)।
এরপরও
প্রায় চারশ বছর গত হয়। অতঃপর হযরত দাউদ (আঃ) (David) উক্ত এলাকা পুনরায় জয়
করে রাজা ও মন্ত্রী হন। তার পুত্র হযরত সোলাইমান (আঃ) (King Soloman)
প্রথম আল্লাহ্র ঘর (First Temple) নির্মাণ করেন। এটা কয়েকশ বছর টিকে ছিলো।
ধারণা করা হয় এটা ৮৩২ খ্রি: পূ: নির্মাণ করা হয়েছিলো এবং ৫৮৭ খ্রি: পূ:
ব্যাবিলনের রাজা নেবুচাঁদ নেজার (nebuchad Nezzar) জেরুজালেম (Jerusalem)
আক্রমন করে এটা ধ্বংস করেন।
অতঃপর
পারস্য স¤্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট ব্যাবিলোনিয়ানদের (Babylonian) পরাজিত
করেন এবং ইহুদীদের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেন । এরপর তারা সেখানে দ্বিতীয়
টেম্পল (Second Temple) নির্মাণ করে যা ৭০ খ্রি: পূ: রোমানদের (Roman) হাতে
ধ্বংস হলে তারা আর কোন মন্দির নির্মাণ করতে পারেনি। পরবর্তীতে মুসলমানরা
অর্থাৎ খোলাফায়ে রাশেদীনের (Rashidun Caliphate) সময়কালটাতে তারা জেরুজালেম
জয় করলে ইহুদিদেরকে সেখানে প্রার্থনা করার অনুমতি দেওয়া হয়। তারা যেখানে
প্রার্থনা করে সেটাকে The Western Wall বা Wailing Wall বা Katel বলে।
সে
সময়কালটাতে ছিলাম অর্থাৎ ২০০০ থেকে ১৫০০ খ্রি: পূ: অর্থাৎ যে সময়টা ধর্মীয়
দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার ব্যাপারে একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
এর পরবর্তী সময়কালটা হলো ১৫০০ থেকে ১২০০ খ্রি: পূ:। সময়কালটাতে কেনান এলাকাটা বার বার মিশরের ফারাওদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে।
১২০০
খ্রি: পূ: থেকে পরবর্তীতে যীশু খ্রীস্টের আগমনের সময়ে ইতিহাসের মধ্যে যা
জানা যায় তা হলো এই সময়টার শুরুর দিকটাতেই সম্ভবতঃ নবী হযরত স্যামুয়েল (আঃ)
(Samuel), রাজা ও নবী হযরত দাউদ (আঃ), তার পুত্র হযরত সোলাইমান (আঃ) এদের
আগমন ঘটেছিলো। তবে সোলাইমান (আঃ) - এর মৃত্যুর পর তার সা¤্রাজ্য বহুধা
বিভক্ত হয়ে যায়। আর এই সময়টাতে Assyrian, Babylonian, Persian, Hellenistic
(Alexander the Great - related to Greece) এবং Roman রা শাসন করে। অতপর
৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে হযরত উমর (রাঃ) বাইজান্টাইনদের হাত থেকে জেরুজালেমের
দায়িত্ব বুঝে নিলে সেখানে মুসলিম যুগের সূচনা হয়।
Comments
Post a Comment