Skip to main content

Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com

Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com : The glittering city aroundLife is rich with red, blue light of neonWide sky over the headPieces of moonlight, scatteredAnd in that splashed pieces of meteorThose are taken by the scientists of NASASo height the civilization reachesThis city is the flow of happiness nowSome men like us pass the wayWith frustration

গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হলে - ওমর খালেদ রুমি

কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিলেই হয় না। সময়ে সময়ে আওয়াজ দিয়ে রাজপথে দাঁড়িয়ে তাকে জনিয়ে দিতে হয় আমরা তোমার সাথে আছি। তুমি এগিয়ে যাও। আমরা তোমার সরকারকে সমর্থন করি। তোমার সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি। তোমার উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সাথে একমত। আগামীর নির্বাচনেও আমরা তোমাকেই জয়যুক্ত করবো

তো গেল সত্যিকার অর্থেই যদি স্বাধীনতার পক্ষের সরকার উন্নয়নের পথিকৃত সরকার ক্ষমতায় থাকে তখনকার দায়িত্ব। যদি তা না থাকে যেমন অতীতে যখন ছিলো না তখন আমাদের কি দায়িত্ব ছিলো তা কি একবারের জন্যেও আমরা ভেবেছি। ভাবিনি। ভাবলে জাতি সেই ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসনের অধীনে তো থাকতোই না এমনকি পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে বিএনপি জামাতের সাথে জোট করে সরকার গঠন করতে পারতো না। প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগকেও দায়ী করার চেষ্টা দেখি কারো কারো মধ্যে। কিন্তু একবারও কি ভেবেছি আজকের শেখ হাসিনার যে অবস্থান সেই তুলনায় সেদিনের শেখ হাসিনার অবস্থান কতোটা নাজুক ছিলো

আলোচনা সামনে আগাবে। তার আগে একটু অতীতে যাবো। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানা ছাড়া বঙ্গবন্ধুর পরিবারের আর কেউই দুনিয়াতে রইলা না। বিদেশে অসহায় আর অনিশ্চিত জীবন কাটাতে কাটাতে অপেক্ষায় ছিলেন কখন দেশে ফিরবেন। ফিরতে ফিরতে সেই ১৯৮১ সালের মে মাস

এই দুঃসময়ের স্মৃতি চারণ করে শেখ হসিনা তাঁরশেখ মুজিব আমার পিতাগ্রন্থেরবেগম জাহানারা ইমামশিরোনামের প্রবন্ধে লিখেছেন,,

১৯৭৫ সালের জুলাই মাসের ৩০ তারিখে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি গিয়েছিলাম। মা, বাবা, ভাই সবাইকে রেখে গিয়েছিলাম। আমার সেই বাংলাদেশ, যেখানে গোলাম আজম ছিল না, যেখানে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। স্বাধীনতাবিরোধীরা রাস্তায় নামতে পারতো না, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারত না, দল করবার অনুমতি ছিল না, সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ছিল

কিন্তু ১৯৮১ সালে যেদিন দেশে ফিরলাম, মনে হল যেন আরেক বাংলাদেশ, যেখানে আমার আপনজন কেউ বেঁচে নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমার মা, বাবা, ভাইদের। ছোট্ট রাসেল, বয়স মাত্র ১০ বছর ছিল, তাকেও রেহাই দেয়নি। আমার মা, জানি না কি অপরাধ ছিল তাঁর। কামাল জামাল এবং তাদের নবপরিণীতা বধূ, যাদের হাতের মেহেদির রং তখনও মুছে যায়নি, ঘাতকরা তাদেরও রেহাই দেয়নি। আমার চাচা শেখ আবু নাসের, যার একটি পা পঙ্গু ছিল, পঙ্গু পা নিয়ে যিনি দিনের পর দিন মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছেন, ঘাতকরা তাকেও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল। মণি ভাই, যিনি ১৯৬০ সাল থেকে ছাত্রদের সংগঠিত করে ছাত্র রাজনীতি করে স্বাধীনতার ক্ষেত্র তৈরি করেছেন, তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী আরজু - যে আমার ছেলেবেলার খেলার সাথী ছিল, তাকেও হত্যা করেছে। সেরনিয়াবাত ফুফা যিনি ছিলেন অত্যন্ত সৎ চরিত্রের অধিকারী। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় নিরলসভবে কাজ করেছেন। তাঁর ১৩ বছরের মেয়ে বেবী, ১০ বছরের ছেলে আরিফ, বছরের নাতি সুকান্তসহ ভাতিজা শহীদ, বাড়ির কাজের ছেলে এবং আশ্রিত গ্রামের নাম না-জানা লোকজনকে পর্যন্ত হত্যা করেছে। কর্ণেল জামিল, যিনি আমার বাবাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁকেও সামরিক বাহিনীর আইনকানুন লঙ্ঘন করে হত্যা করেছে। এখানেই ঘাতকরা ক্ষান্ত হয়নি, ১৯৭৫ সালের নভেম্বর আমাদের জাতীয় চারনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, মনসুর আলী, কামারুজ্জামানকে কারাগারে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করেছে

স্বজন হারাবার শোক নিয়ে, বেদনায় ভরা মন নিয়ে দেশের মাটিতে ছয় বছর পর ফিরলাম। দেখলাম শুধু আমার আপনজনদেরই হারাইনি, হারিয়েছে আমার স্বাধীনতা - প্রিয় স্বাধীনতাকে, যাকে বাংলার দামাল ছেলেরা বুকের রক্ত দিয়ে অর্জন করেছিল, লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়েছিল। বাঙালির স্বাধীনসত্তাকে বিশ্বমাঝে প্রতিষ্ঠা করেছিল। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিই আজ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। কিন্তু তাদের নেতৃত্বে রয়েছে একজন মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডার, নাম জেনারেল জিয়াউর রহমান। অবৈধভাবে জেনারেল জিয়া অস্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে নিজেই রাষ্ট্রপতি করে। তারপর নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখার স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধে যারা অগ্নিসংযোগ, নারীধর্ষণ, লুটপাট গণহত্যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সাহায্য করেছে তাদের জেলখানা থেকে মুক্ত করে দেয় অথচ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দালাল আইন প্রণীত হয়েছিল। জেনারেল জিয়া তার অবৈধ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখার জন্যই সেদিন এসব ঘৃণ্য দালালকে জেলমুক্ত করে এবং ঘাতক-দালালবিরেধী যে সমস্ত আইন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু করেছিলেন, সব মার্শাল অর্ডিন্যান্স-এর মাধ্যমে বাতিল করে দেয় পরে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে সংযোজন করে।

১৯৮১ সালের ৩০শে মে জিয়ার মৃত্যু হয়। তারপর শুরু হলো এরশাদের সামরিক শাসন। চলল টানা ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। সত্যি কথা বলতে কি দেশ জাতি ভুলে গিয়েছিলো একদিন এদেশে মুক্তিয্দ্ধু হয়েছিলো। ৩০ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছিলো। লক্ষ মা বোন ইজ্জত হারিয়েছিলো

গণ-আন্দোলনে স্বৈরাচারের পতন হলো। তখনও স্বাধীনতার চেতনায় পুরোপুরি উজ্জীবিত হতে পারেনি জাতি। তার প্রমাণ পাওয়া যায় শেখ হাসিনার লেখাবেগম জাহানার ইমামপ্রবন্ধটিতে যেটি তারশেখ মুজিব আমার পিতাবইটির অন্তর্ভূক্ত। প্রবন্ধটির এক জায়গায় তিনি লিখেছেন,

১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া গোলাম আজম বৈঠক এবং নির্বাচনে সিট ভাগাভাগির যে পর্যায়ে, তখনই বা কেন প্রতিবাদের ঝড় উঠল না? তখন যদি তাকে বিরত করা হতো তাহলে তো জামাত এত সিট নিয়ে পার্লামেন্টে বসতে পারত না। আমাদেরও তখন জামাতের সাথে পার্লামেন্টে বসতে হতো না। একাদশ দ্বাদশ সংশোধনীতে ভোট দিতে হতো না। সংসদীয় কমিটিতে বসতে হতো না, সই করার প্রয়োজন হতো না

সরকার গঠনের জন্য যখন বৈঠক হল, তখনও যদি চেতনার উন্মেষ ঘটত তাহলে আজ এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো না। সংসদে বিএনপি সরকারের সাথে বিরোধীদলের যে চারদফা চুক্তি হল তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। সম্পর্কে আমার আওয়ামী লীগ থেকে যতবার দাবি তুলি, কই সকলে তো সেভাবে সোচ্চার হচ্ছে না।

কিন্তু ঘটনাপ্রবাহ তো হঠাৎ করে এসে ১৯৯১ সালে দাঁড়ায়নি। এর সূত্র বহু পূর্ব থেকেই। সেই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর থেকেই এই নগ্ন চর্চা শুরু হয়েছিলো। ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হলো রাজনীতিকে। গণতন্ত্রের সর্বনাশ করে কায়েম হলো সামরিকতন্ত্র। অথচ আমরা ভুলে গেলাম মাত্র কয়েক বছর আগেই আমরা পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম জান প্রাণ দিয়ে। শেখ হাসিনা তার একই প্রবন্ধেরই একটা জায়গায় অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন,

১৯৭৬ সালের ১৮ জানুয়ারি নাগরিকত্ব ফেরত পাবার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে বলা হয়। যে সূত্র ধরে স্বাধীনতা-বিরোধীরা বাংলাদেশে ফিরে আসার সুযোগ পায়

১৯৭৬ সালের জুন মাসে আরও একটি অধ্যাদেশ জারি করে ১৯৭২ সালে জারিকৃতবাংলাদেশ কোলাবরেটরস আদেশবিশেষ ট্রাইব্যুনাল স্বাধীনতাবিরোধী চিহ্নিত কারাবন্দি শাস্তিপ্রাপ্তদের জেনারেল জিয়া মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বানান। শহীদ পরিবারদের জন্য যে সমস্ত ঘরবাড়ি বঙ্গবন্ধু বরাদ্দ করেছিলেন তাও কেড়ে নেওয়া হয়। জেনারেল জিয়াই এই প্রক্রিয়া শুরু করে। তার উরারফব ধহফ জঁষব নামক কৌশল দেশের রাজনীতিতে বিভেদ সৃষ্টি করেছে, আর্থ-সামাজিক মূল্যবোধে ক্ষত সৃষ্টি করেছে

জেনারেল জিয়া রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে গদিতে বসেই। গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে আনে। সংগঠন করবার সুযোগ করে দেয়। একথা আমার মনে আজ বার বার জাগে, যখন জিয়া গেলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে আনে তখন তীব্রভাবে গোলাম আজমের বিচারের দাবি ওঠা উচিত ছিল এবং তখনই গণ-আদালত বসালে আজ আর নাগরিকত্ব পেত না। শিক্ষাঙ্গনে শিবিরের রাজনীতি বিস্তার লাভ করত না

পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে এই সমস্ত অর্ডিন্যান্স সংবিধানে সংযোজন করা হয়। গত ১৫ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে, আদর্শ-উদ্দেশ্যকে সঙ্গীনের খোঁচায় নস্যাৎ করে দিয়েছে। তার ওপর আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে পরিবেশন করেছে। স্কুলের পাঠ্য-পুস্তক থেকে শুরু করে সর্বস্তরে এই প্রক্রিয়া চলছে, ফলে আমাদের দেশের যুবক কিশোর আজ আর প্রকৃত ইতিহাস জানে না। এই স্বাধীনতাবিরোধীদের মনগড়া ইতিহাস সত্যকে চাপা দিয়ে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই ধারাবাহিকতা গত উনিশ বৎসর চলে আসছে। দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি। শুধু ১৯৯০ সালের গণÑঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এরশাদের পতনের পর ডিসেম্বর রাত থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত টেলিভিশনে রেডিওতে শুনেছি মুক্তিযুদ্ধের গান। তারপর মনে হয় যেন অদৃশ্য কোনো নির্বাচনে আবার সব বদলে গেল। নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে গোলাম আজমের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিট ভাগাভাগি করল, যত সিট পাবার কথা নয় তা পেল, সঙ্গে সঙ্গে জামাতকেও নির্বাচিত হবার সুযোগ করে দিল। এত করেও পর্যাপ্ত সিট পেল না সরকার গঠন করবার মতো, পরে আবার গোলাম আজম-খালেদা বৈঠক হল, মহিলা আসনের সিট ভাগাভাগি করে জামাতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করল

১৯৯১ সালে সংসদে জামাতের সঙ্গে সকলেই বসেছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বসা, আলোচনা করা, রিপোর্ট সই করা - সবই চলছে - এমন কি দ্বাদশ সংশোধনীতে জামাতও ভোট দিয়েছে এবং একই সঙ্গে সই করেছে

বিএনপি অর্থাৎ জেনারেল জিয়াউর রহমান তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গোলাম আজমকে দেশে আসা নির্বাচনী সিট ভাগাভাগি ওয়াদা হিসেবে নাগরিকত্ব প্রদান - সবই পরিকল্পিতভাবে করেছে। অপরদিকে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যিনি গোলাম আজমসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন, এই অসুস্থ শরীর নিয়ে পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীর মামলা দিয়েছে

এই আন্দোলনটা যদি ১৯৭৭ সালেই শুরু করা হতো তাহলে তো গোলাম আজম ফিরে যেতে বাধ্য হতো, তাকে দেশ থেকে কিতাড়িত করা যেত। জামাতে ইসলামী পার্টি হিসেবে দাঁড়াতে পারত না। কিন্তু কেন? কেন শুরু হয়নি? আমি তখন দেশে ফিরতে পারিনি। আমাদের জন্য দেশে ফেরা তখন নিষিদ্ধ ছিল। তাই তখনকার কথা পুরোপুরি জানি না, তবে যারা আজ আন্দোলন করছেন তারা তো সেদিনও ছিলেন। জিয়াউর রহমানের সঙ্গেও অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তাকে বাধা দেওয়া হয়নি কেন যে, এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে আর কিছু থাকবে না।

এই যে অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে থাকা, এই যে চেতনাকে ভুলে থাকা, এই যে ইতিহাসকে পাশ কাটানোর চেষ্টা কিসের জন্যে, কোন আশায়? কারা এনে দেবে শান্তি? কারা এনে দেবে মুক্তি? মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা এনেছেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতাকে সার্থক করেছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। আর যে দিনের পর দিন আমরা সত্যকে অস্বীকার করেছিলাম তার ফল কি হয়েছিলো তারই বর্ণনা পাওয়া যাবে শেখ হাসিনার একই প্রবন্ধের একটি জায়গার লেখনিতে। তিনি লিখেছেন,

আজ শহীদ জননী মৃত্যুবরণ করলেন, দেশদ্রোহীর মামলা মাথায় নিয়ে। যাঁর ছেলে স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছে, যিনি স্বামী হারিয়েছেন, দুররোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ন্যায় সত্যের জন্য লড়াই করেছেন, তিনি হলেন দেশদ্রোহী। আর তারই পাশাপাশি যে ব্যক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়, সে পেলো নাগরিকত্ব। লজ্জা আমরা কোথায় রাখব? অপমান øানি কি করে ভুলব? শহীদ জননী একাত্তরের ঘাত-দালালদের বিচার চেয়েছেন সেই অপরাধে বিএনপি নেত্রী তার নিজের বা দলের পক্ষ থেকে এতটুকু সম্মানও শহীদ জননীর প্রতি দেখালেন না। এত বড় অবজ্ঞা কেন করা হল? মুুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডাররা তাকে অভিবাদন জানান। মন্ত্রী মীর শওকত বলেছিলেন তারম্যাডামঅনুমতি দিলে তিনি যাবেন। কিন্তু তার ম্যাডাম তাকে সে অনুমতি দেননি, তাই তিনিও আসেননি। আসেননি তাতে জাহানারা ইমামের কোনো সম্মানহনি হয়নি। তাকে বাঙালি জাতি সম্মান দিয়েছে শহীদ জননী হিসেবে।

জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্যে সারা জীবনের লজ্জার যে একজন ক্যন্সারে আক্রান্ত মানুষ, যিনি অসুস্থতার পাশাপাশি বয়সের ভারে ন্যুজ্ব তাকেই দিন রাত বছরের পর বছর রাজপথে হাঁটতে হলো ঘাতক দালালদের নির্মূল করার দাবী নিয়ে। ছেলে তার প্রাণ দিয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধে। মা তার অসুস্থ শরীর নিয়ে বয়সের ভার সয়ে জীবনের সবটুকু নির্যাস বাংলার মাটিতে ঢেলে দিয়ে গেলেন আমাদের চেতনার প্রদীপটাকে আবার জ্বালিয়ে দিয়ে যাওয়ার জন্যে। ধন্য সেই মা যার অমন ছেলে থাকে। ধন্য সেই মা যার জীবন এতোটা মহিমান্বিত

যে আলোচনায় ছিলাম। ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়ে যায়নি। প্রায়ই তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। যখন তখন তার আগ্নেয়গিরির লাভার মতো উদ্গীরণও হতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না আমাদের জেগে থাকতে হবে। অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দিতে হবে দেশ মাতৃকাকে। সময়ে সময়ে আওয়াজ দিয়ে জানিয়ে দিতে আমরা ঘুমিয়ে পড়িনি। স্বাধীনতার সূর্যকে আমরা কখনও অস্ত যেতে দেবো না। স্বাধীনতার চেতনাকে আমরা কখনও হারিয়ে যেতে দেবো না

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

UCPDC - 600 Bangla

ইউসিপিডিসি-৬০০ ধারা-১ঃ ইউসিপিডিসি-এর প্রয়োগঃ ইউসিপিডিসি এর ২০০৭ সালের সংশোধনী আইসিসি পাবলিকেশন ৬০০ এর বিধি বা ধারাসমূহ (স্ট্যাণ্ড বাই লেটার অব ক্রেডিট সহ) সকল এলসিতে প্রয়োগ হবে। এলসিতে নির্দিষ্ট কোন স্থানে উল্লেখ না করলে তা সকল পক্ষের উপরই কার্যকর হবে। ধারা-২ঃ সংজ্ঞা ঃ অন্য কোন অর্থে ব্যবহার না করলে এই বিধিতে এ্যাডাভাইজিং ব্যাংক বলতে সেই ব্যাংককে বোঝাবে যে ইস্যুইং ব্যাংক এর অনুরোধে ঋণপত্র সুবিধা প্রদান করে। গ্রাহক বলতে সেই পক্ষকে বোঝাবে যার অনুরোধে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়। ব্যাংকিং কর্ম দিবস বলতে সেই দিনকেই বুঝাবে যেদিন ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট স্থানে উক্ত বিধি অনুযায়ী নিয়মিতভাবে তার প্রত্যাহিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। বেনিফিসিয়ারী বলতে সেই পক্ষকে বুঝাবে যার পক্ষে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। কমপ্লাইং প্রেজেণ্টেশন বলতে সেই প্রেজেণ্টেশনকে বুঝাবে যা ঋণের সকল শর্তানুযায়ী করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আদর্শ ব্যাংকিং চর্চার আওতাধীন। কনফার্মেশন বলতে কনফার্মিং ব্যাংক এর পাশাপাশি ইস্যুইং ব্যাংক কর্তৃক সুনির্দিষ্টভাবে একটি কমপ্লাইং প্রেজেণ্টেশনকে অনুমোদন ঝুঝায়। কনফার্মিং ব্যাংক বলতে সেই ব্যাংককে ঝুঝা

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে