Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

বৈশ্বিক মহামারী আমাদের কি বার্তা দিচ্ছে - ওমর খালেদ রুমি

 পৃথিবীতে ধর্ম সব সময়ই ছিলো। এখনও আছে। আগামীতেও থাকবে। কিন্তু যে যে ধর্মের অনুসারীই হোক না কেন তার উচিত সেই ধর্মের বিধানগুলো মেনে চলা। এমনটা হলে সমস্যা থাকতো বলে মনে হয় না। একজন মুসলমান হিসেবে আমার মন তো বলেই পৃথিবীর সব মানুষ আমার মহান ধর্ম ইসলামে আসুক। এর সুন্দর বিধান মেনে চলুক। কিন্তু আমার মন চাইলেই তো আর রাতারাতি তা হয়ে যাবে না। হবে তা- যা সৃষ্টিকর্তা চাইবেন। আর ইসলাম আসার পর ইসলাম ধর্মের মতে অন্যান্য ধর্মগুলোকে বাতিল ঘোষণা করা হলেও সেগুলোর প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের কোন সুযোগ তো নাই- বরং যে সব ধর্ম আল্লাহ্র কোন না কোন নবী বা রাসুল প্রচার করেছেন তার উপর ইমান না আনলে একজন মুসলমান তো মুসলমানই থাকবে না

হযরত ঈসা (আঃ) এর প্রচারিত ইহুদি ধর্ম হযরত মুসা (আঃ) এর প্রচারিত খ্রিস্টান ধর্ম সময়ের আবর্তনে কিছুটা বিকৃত হলেও তা যে সৌন্দর্য বহন করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এগুলোও অতীতের কোন একটা সময়ে কোন একটা জাতি, সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে আল্লাহ্র মনোনীত কোন পুরুষের মাধ্যমে পাঠানো আল্লাহ্র বার্তা। যেহেতু এখনকমপ্লিট কোড অফ লাইফআল কুরআন এসে পড়েছে তাই পুরনো ভার্সনের আর কি- বা প্রয়োজন। কিন্তু যারা এখনও সেই পুরনো ভার্সনকে আঁকড়ে ধরে আছে আর নতুন ভার্সন গ্রহণে দ্বিধা করছে তারাও যদি তাদের বিধানকে অনুসরণ করে অন্ততঃ একজন উত্তম মানুষ হওয়া সম্ভব। পরকালের ফয়সালা স্বয়ং আল্লাহ্র হাতে। তিনি কি সিদ্ধান্ত নেবেন তা তো শুধু তিনি নিজেই জানেন

একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না তিনি যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এজন্যে তাকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। অথবা তার পাঠানো বিধান অনুযায়ী না চলার কারণে যদি আপাতদৃষ্টিতে আমাদের কাউকেও জাহান্নামীও মনে হয় কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা চাইলেই তাকে ক্ষমা করতে পারেন আর প্রবেশ করাতে পারেন পরম সুখের সেই উদ্যানে

অতএব যে যে ধর্মের অনুসারীই হোক না কেন তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি প্রত্যেকেরই উচিত তার ধর্মমতকে পুরোপুরি অনুসরণ করা। আমি আমার স্বপ্নজালে যতটুকু জানি কোন ধর্মের খারাপ কাজকে উৎসাহিত করা হয়নি

এবার আসছি এই যে মহামারী এর প্রসঙ্গে। পৃথিবী জুড়ে মৃত্যুর মিছিল চলছে। যে মড়ক লেগেছে তা তো থামছেই না বরং দিনে দিনে শক্তিশালী হচ্ছে। এটা কি কোন বার্তা দিচ্ছে না। বলা হয়ে থাকে পৃথিবী ধন দৌলত ঐশ্বর্য জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে একেবারে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। পুঁজিবাদের পৃথিবীতে পুঁজির মালিকরাই এসব অর্থ বিত্ত সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের অংশীদার। বলা হয়ে থাকে এগুলো তাদের কষ্টের অর্জন। কিন্তু অপরাধটা হয় তখনই যখন পৃথিবীতে মহাদেশে মহাদেশে রাষ্ট্রব্যবস্থাগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা নিঃস্বদেরকে দিনে দিনে আরও নিঃস্ব করছে আর ধনীদেরকে করেছে আরও ধনী। মানবতার মুক্তির বার্তা নিয়ে যখন সমাজতন্ত্র এলো তাকে মানবতার মুক্তির একটা উপায় হিসেবে না দেখে বরং তাকে পুঁজিবাদের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হলো

ছাত্রলীগের চাপের মুখে একসময়ের শক্তিশালী জনপ্রিয় সংগঠন ছাত্র-ইউনিয়ন যেভাবে অতীতে লুপ্ত হয়ে যাওয়া ডাইনোসরে পরিণত হয়েছিলো তেমনি বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদের শক্তি আর ষড়যন্ত্রের কাছে হেরে গিয়ে সমাজতন্ত্রও যাদুঘরে স্থান নিলো। মুক্তির বাণী তাই নীরবে নিভৃতে কাঁদে

এদিকে বিজয়ের আনন্দে প্রাপ্তির সুখে উল্লসিত পুঁজিবাদী সমাজের ভোগবাদী মানুষগুলো বহুগুন উৎসাহ নিয়ে তাদের ভোগবাদী জীবনের আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। একদিকে পৃথিবীতে অজ¯্র শিল্প কারখানা নির্মাণ করে তারা পরিবেশ দূষণের মাত্রাকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে এলো যে তা নগরগুলো তো বটেই গ্রামগুলোকেও আক্রমন করলো। বন-জঙ্গল কমে যাওয়ার পাশাপাশি একে একে ধ্বংস হয়ে গেলো জলাশয়গুলো। ইট-কাঠ-পাথরের নগর আর নগরীগুলো গাছপালা আর পানিশূন্য হয়ে দিনে দিনে পরিণত হতে লাগলো গ্যাস চেম্বারে। যতদিন পর্যন্ত পরিবেশ এই ভার নিতে পারছিলো আমরা বেঁচে বর্তে ছিলাম কোনমতে। নিয়ে তাই মাথা ঘামানোর অতোটা প্রয়োজন পড়েনি। যদিও গ্রেটা টুনবার্গের এর মতো ছোট্ট একটা মেয়ে এসবের প্রতিবাদে জৈব জ্বালানী চালিত একটা ছোট্ট জাহাজে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলো কিন্তু এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়েও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের অনেক দিকপাল হাসি ঠাট্টা করতেও ছাড়েননি। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছে গ্রেটা কি বার্গার, হটডগ, পিজা খান না? হায়রে কপাল! এও প্রশ্ন! তাও কাউকে অপমান করার জন্যে

গ্রেটা পিজা খায় কিনা আমার জানা নেই তবে গোটা বিশ্ব যে আজ মহামারীর কবলে পড়ে নাকানি চুবানি খাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পরিবেশ দূষনের মত পাপের প্রায়শ্চিত্ত আমাদেরকে বেশ ভালোভাবেই করতে হচ্ছে

সারা বিশ্বে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য সৃষ্টির শুরু থেকে মনে হয় বর্তমান সময়েই সর্বাধিক। অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভালো কিছু আশা করা কঠিন। জুলুম এমন এক জুলুম যা মহামারীর চাইতেও মারাত্মক। সুদূর আফ্রিকা থেকে লাতিন আমেরিকা আর এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে মানুষের যে হাহাকার আর চেপে রাখা কষ্ট আর দীর্ঘশ্বাস তাও তো সৃষ্টিকর্তার কাছে পৌঁছায়। মনে রাখতে হবে তিনি সব দেখেন। পুরো বিশ্বকে বাঁচাতে হলে যে অন্যায় ইতোমধ্যে হয়ে গেছে তার জন্যে ক্ষমা তো চাইতেই হবে পাশাপাশি তাকে ঠিকও করতে হবে। আমাদের আর কি- বা করার আছে - একথা বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। এখনই সময় তাবৎ সম্পদশালী মানুষের এগিয়ে আসার, যারা অন্নহীন, যারা বস্ত্রহীন তাদের হাতে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার পাশাপাশি দুটো কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। বিশ্বব্যাপী যতো ধূলিমলিন শিশু তাদের অনাহারী মুখ নিয়ে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে আসমানের দিকে তাকিয়ে আছে তাদের মুখটাকে আমাদের দিকে ফেরানো

পৃথিবী ব্যাপী সা¤্রাজ্যবাদ বিস্তারে যে সব যুদ্ধ ছলছে তা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। মনে রাখতে হবে আল্লাহ্র গজব কিন্তু যুদ্ধ ক্ষেত্রেও যেতে সক্ষম। এটা কিন্তু বন্দুক, কামান, মেশিনগান এসব ভয় পায় না বরং যারা এসব চালায় তাদেরকেই মুহুর্তে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম

সমতার পৃথিবী আজ আর কোন স্বপ্ন নয় বরং বাস্তবতা। তাই এখনই সময় সজাগ হওয়ার। মানব সভ্যতা ধ্বংসের আগেই সচেতন হই। নিজেদের বদলাই। পৃথিবী বদলাবে। যদি মানবতাকে জাগিয়ে তোলা যায় সভ্যতাকেও বাঁচানো যাবে। তাছাড়া এটাতো সবারই জানা কল্যাণমূলক কাজ সব ধরনের বালা মুসিবতকে দূরে সরিয়ে দেয়। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak