Skip to main content

Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com

Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com : The glittering city aroundLife is rich with red, blue light of neonWide sky over the headPieces of moonlight, scatteredAnd in that splashed pieces of meteorThose are taken by the scientists of NASASo height the civilization reachesThis city is the flow of happiness nowSome men like us pass the wayWith frustration

তক্ষক - ওমর খালেদ রুমি

 

প্রকৃতির শরীর বর্ণমালা ছিলো

তাকে পড়তে পারিনি

আকাশের গায়ে চিত্রকলা ছিলো

তাকেও বুঝতে পারিনি

তোমার চোখে ভাষা ছিলো

তোমার কন্ঠে ধ্বনি ছিলো

এতো কিছু থাকার পরেও বিভ্রান্ত আমি

কাকভেজা বইমেলার স্টলে

খুঁজেছি হেলাল হাফিজ, মহাদেব সাহা

রফিক আজাদ

খুব বেশী ক্ষেপে গেলে

রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহ

যারা বিপ্লবী হয়েছিলো

তারা বেছে নিয়েছিলো

নেরুদা, লোরকা, হিকমত

আমরা অবশ্য কিছুটা শীতলই ছিলাম;

 

ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসে অনেক সকাল

দুপুর বিকেল কাটিয়েছি

কখনো বা প্লাস্টার করা মেঝেতে

বসে থেকে কেটেছে সারাটা দিন

আমি নিজেকে কখনও প্রশ্ন করিনি

আমার তবে কি চাই?

 

জীবনের মানে খুঁজতে গিয়ে

যেসব উদভ্রান্ত যুবক জ্যোৎ¯œাকে তুচ্ছ করেছিলো

তাদের অনেককেই আমি অবশেষে

খুব কাঁদতে দেখেছি;

(যদিও ব্যাপারটা আমার কাছে ভালো লাগেনি)

 

(পিতা তোমায় খুব মনে পড়ে

জীবনের একটা ছোট্ট ডিকশনারি তোমার কাছে ছিলো।)

 

প্রত্যেক যুবকের জীবনে অজ¯্র যুবতী আসে

তাদের কারো কারো হাত থাকে ঠান্ডা পানির গ্লাস

কেউ কেউ হাতে তুলে নেয় হাতপাখা

প্রবল আক্রোশের মধ্যে দিয়ে যারা বাঁচে

তারা কখনও কখনও পানশালায়ও যায়

সেখানে বিবর্ণ মানুষগুলোর বিভৎস চিৎকারে

তারাও বিভ্রান্ত নর্তকীদের ভেতর

তাদের অস্পরীদের খুঁজে পায়

ভালোবাসা এভাবেই আলগোছে

একটি কিশোরীর কানের দুলের মতো

ঘণ দূর্বাঘাসের ভেতর কোথায় যেনো হারিয়ে যায়;

 

আমার সমস্ত শরীর জুড়ে

আমিও এক ধরনের তীব্র যন্ত্রনা টের পাই

এসব যন্ত্রনা আমাকেও কখনও কখনও

বিপ্লবী হতে বলে;

 

খুব করে যারা হেসেছিলো

সুন্দর আগামীর স্বপ্নে

তাদের কেউ কেউ আজ তলানীতে

বিবর্ণ বালকদের অনেকেই উজ্জ্বল আলোতে

চলে গেছে বলে

নিজেদের ব্যর্থতার চাইতে তাদের এসব বেশী পীড়া দেয়;

 

যেদিন ভোর রাতে বৃষ্টি হতো

সেদিনের সকালের ভেজা ঘাসে

তুমি অনেক বার খালি পা ভিজিয়েছ

আমি তখন এসব খুবই তুচ্ছ ভাবতাম

কিন্তু আজ বড়ো দামী মনে হয়

পা ভেজানোর মতো ঘাস

আজ আর কোথাও দেখি না;

 

একটি অখ্যাত জনপদ থেকে

আমি এবং আমার মতো অনেকেই

পা রাখি নগরের ঝলমলে আলোয়

এ শহর কাউকে কাউকে আলিঙ্গন করে

এ শহর কাউকে কাউকে বানায় শত্রু

ভাগ্যের চাকা সবার সব সময় ঘোরে না;

 

সাফল্যের প্রসবের আশায়

ভারী-পেট মুষিকের মতো ছুটেছে পন্ডিতেরা

এসব দেখে বিব্রত সুন্দরীরা তাদের

হাত ধরেছে ভুল জ্যোৎ¯œায়

অথবা ঐশ্বর্য্যরে আলোয়

কারো কারা চোখে লেগেছে ধাঁধা

সুখের এমন সস্তা ঠিকানা

কে না খুঁজে নিতে চায় দিন শেষে;

 

আমি প্রবাহিত স্বচ্ছ জলধারার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি

সেও অবলীলায় বলেছে

তারও বেদনা আছে

যৎকিঞ্চিত

অসামান্যা সব সুন্দরীরা

অনেক খ্যাতিমান সাহিত্যিকের উপন্যাসের চরিত্র হচ্ছে

অবশ্য সেখানে বাস্তবের চেয়ে কল্পনাই মুখ্য;

 

তুমিও আমাকে কতো কিছুই না ভেবেছ

কখনও অসুর, কখনও দেবতা

পৃথিবীর কাছে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছো

মানুষ কতোটা মানবিক হলে তাকে মানুষ বলা যায়?

এর চেয়ে যদি একবারও চিৎকার করে বলতে,

ভালোবাসি ???

হাজারটা জিজ্ঞাসার উত্তর পেয়ে যেতে

এই একটি প্রশ্নে;

 

রাস্তাগুলো কোথায় যে হারিয়ে গেছে

তবু তারা শেষ মেষ আসলেই হারায় না

তাইতো দিনশেষে পথভোলা পথিকও ঘরে ফেরে;

 

আমি তত্ত্ব আর তথ্যের ফারাক বোঝার জন্যে

অনেক পন্ডিতের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি

একজনও অসামান্য মানুষ পাইনি

যে অন্ততঃ এটুকু বলতে পারে

এ দুটোর কোনোটাই তোমার কাজে আসবেনা;

 

জন্মান্ধ কি শুধু চোখ না থাকলেই হয়

শরীরের আারও অনেক অঙ্গ থাকে

যার দৃষ্টি শক্তি চোখের চেয়েও তীব্র হয়

আধুনিক মানুষ এখন আর তাদের নাকে

ভালোবাসা কিংবা ঘৃণা- কোনোটারই ঘ্রাণ পায় না;

 

একবার খুব ঝড় হয়েছিলো

অনেক গাছের ডাল ভাঙ্গলো

অনেক পাখি মারা পড়লো

অনেক বিভ্রান্তি ছড়ালো

বেশ কিছু বেহায়া মানুষ

তুমি শুধু প্রশ্ন করেছিলে

বেদনাও কি তবে ব্যবসার উপকরণ?

আমি তখনও অতোটা গভীরভাবে ভাবতে

শিখিনি

(এখনও কি পারি)

তবে তোমার চাহনি দেখে এতোটুকু বুঝেছিলাম

এভাবে বেঁচে থাকার চাইতে

শৈশবে নদীতে ¯œানের সময়

জোয়ারের জলে ভেসে গেলে মন্দ হতো না;

 

পাথরের পাশাপাশি অনেক পাথর গুছিয়েছিলাম

একদিন তোমাকে চমকে দেবো বলে

তার আগেই তুমি এসে বললে

চলো দেখবে এসো

পাহাড়ের পাশে পাহাড় সাজিয়েছি

সাগরের পাশে সাগর

পুরো পৃথিবী সাজিয়েছি

দেশ আর মহাদেশে

ভালোবাসার বাগান যে এতো বড় হয়

যার কল্পনা নেই

তাকে এসব বোঝানো দায়;

 

একদিন ভোরে তুমি আসলে

সাদা শাড়িতে সব কিছু সাদা

আমি জ্যোতির্ময় কিছু একটা দেখে

সেই যে ভয় পেলাম

তারপর থেকে আর কখনও

নারীকে ভালোবাসতে পারিনি;

 

কবিতার পর কবিতা পড়েছি দুজনে

আবৃত্তিকার এসে বলে গেছে

এভাবে পড়ার কোনো মানে হয় !!!

এইসব ভুলভাল উচ্চারণে

কবিতার আসল মানেটাই

যায় হারিয়ে

সেই থেকে আমরা দুজন ছিলাম

আবৃত্তির ক্লাসের কোন এক নির্জণ কোণের ছাত্র;

 

একদিন অনেক বিপ্লবীরা এলো

আমাদের ধরলো হাতে নাতে

তোমাকে বললো ছুড়ে ফেলো এইসব প্রসাধনী

এসব নারীকে দাসী বানায়

আমাকে বললো

ঘোর ভেঙ্গে জেগে ওঠো

তুমি না পুরুষ

লাতিনে সিমন জেগেছে

সাউথ আফ্রিকায় মেন্ডেলা

ভারতে গান্ধী জেগেছে

শুধু তুমিই দেখছি করছো অবহেলা

ঐ প্রথম আমি আবেগে এতোটা বাকরুদ্ধ হয়েছিলাম

মনে হলো পৃথিবীতে

আমার কথা বলার মতো কোনো ভাষা নেই;

 

পথচারীরা প্রতিদিন হেঁটে যেতো

কি অদ্ভূত ব্যাপার

তাদের কারো সাথে

জীবনে দুবার দেখা হয়নি

এতো মানুষ তবে কোথা থেকে আসে

এতো মানুষ তবে বোথায় চলে যায়!

 

বিশ্বযুদ্ধ যুদ্ধ থেমে গেছে

আমাদের এখানেও স্বৈরাচার ছেড়েছে গদি

এবার নতুন সূর্যের আলোর নিচে

উত্তাপ নেবে আমাদের মতো বিড়াল

অতোটা সহজ নয় যতোটা বলা যায়

গণতন্ত্র কি আর কুড়িয়ে পাওয়া ফল!

 

অপরাজেয় বাংলার পায়ের কাছে বসি

নিজেকে মনে হয় দারুণ সংগ্রামী

এইখানেই কি তবে থেমে আছে ৬২

এইখানেই কি তবে থেমে আছে ৬৪

এইখানেই কি তবে থেমে আছে ৬৬

এইখানেই কি তবে থেমে আছে ৬৯

এইখানেই কি তবে খুূঁজে নেব ৭১

মার্চের ২ কিংবা তারও পরের

রক্তঝরা ২৫শে মার্চের রাতের ঠিক

আগের মুহুর্তগুলোকে;

 

এসব কি আবোল তাবোল বকছি

এইখানে তো শুধু কংক্রিটের কঠিন শরীর

এইখানে ইতিহাস কোথায় বলতে পারো?

 

হৃদয়ে চেতনা নিয়ে সেই সব মানুষগুলো

চলে গিয়েছিলো যুদ্ধে

তারপর তারাও মরে গেছে বেঘোরে

ইতিহাসও কি তারা তবে তাদের সাথে নিয়ে গেছে?

 

(তবে কি আমাদের নতুন ইতিহাসের জন্ম দিতে হবে?)

 

আমরা দুজন উঠে চলে যাই

চারুকলার আর্ট গ্যালারিতে

জটিল সব ছবির প্রদর্শনী

একটি মাত্র ছবিই আমরা বুঝতে পারি

একজন ক্ষুধার্ত মানুষ

শেষমেষ মরতে বসেছে;

 

হরতালের নির্জন শহরে

দুজনে হাত ধরে হাঁটি

পাহারারত পুলিশের মুখে হাসি

চোখে জিজ্ঞাসা

প্রেম করার জন্যে এমন নগরী

আবার কবে পাবো জানি না;

 

লাইব্রেরীতে এক কোণায় বসি

টেবিলের উপর পড়ে থাকে

অর্থনীতির বাপ স্যামুয়েলসন

এতোটা জটিল হওয়া কি

একটা বিষয়ের খুবই দরকার;

 

তোমার পায়ের সাথে

আমার পায়ের ঘষা লাগে

মুদ্রা সংকোচ সহজেই হয়ে যায় মুদ্রাস্ফীতি

ইস! এই সামান্য জিনিসটা বোঝার জন্যে

এতোদিন কতোই না কষ্ট করেছি;

 

নীরস শিক্ষক আমাকে হিংসা করেছে

শেষ কবে উনি হেসেছেন

কেউ তার পরিসংখ্যান

দিতে পারবে না

পদার্থ আর রসায়নের সাথে

গণিতের তালগোল পাকিয়ে

তিনি এখন এসে ৬৫ তে দাঁড়িয়েছেন;

 

সাহিত্যের ক্লাসে যাই

সেখানে পদ্মলোচনা তরুণী কবি

পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ কবিকে প্রশ্ন করে

কি না থাকলে কবিতা কবিতাই হবে না স্যার?

কবির তেল চকচকে টাকে

মৃদু মৃদু ঘাম জমে

বাপরে বাপ! কি কঠিন প্রশ্ন!

কবিতার সমস্ত জার্নাল ঘেঁটে তিনি

এর সমাধান কোথাও খুঁজে পান না;

 

(জীবনের জন্যে প্রয়োজনীয় সবকিছু কেতাবে নেই)

 

লাস্যময়ী ছাত্রী মিষ্টি হেসে উত্তর দেয়

ভালোবাসা স্যার! ভালোবাসা!

কবি হাফ ছেড়ে বাঁচেন

মেয়েটা আর যাই হোক অন্তত

এটম বোমার কথা তো বলেনি;

 

প্রতিদিন সাধারণ জ্ঞানের কথা হয়

পৃথিবী কতোটা এগোলো তার পরিমাপ

ভালোবাসর মিটার ডাউন ডাউন হতে হতে

অবশেষে প্রেম ব্রেক-আপে এসে থামে

সাধারণ জ্ঞানের বইটা

এখনও কলা বাগানের সিঁড়িতেই পড়ে আছে;

 

আমাদের হাতগুলো ক্রমশঃ কাছাকাছি আসে

অনেক দ্রুত হয় বুকের ওঠা-নামা

গাঢ় গভীর নিঃশ্বাসে

বুকগুলো যেন এক একটা কামারের হাঁপর

একটু জড়িয়ে ধরার আনন্দের জন্যে

ছেলে-মেয়েরা আজকাল দেয়ালের

আড়ালেও জায়গা খোঁজে;

 

ক্যাম্পাসে অনেক মেঘ বালিকা আসে

তারা ফুলকুড়ি উড়ায় গুলদস্তা সাজায়

তাদের করপল্লব কখনও শূন্য থাকে না

তাদের হস্তপদ যুগল কখনও নিঃসঙ্গ হয় না

তারপর এদেরই কেউ কেউ নতুন

প্রেমিককে দিয়েই পুরানো প্রেমকে হত্যা করায়

নাটকের মঞ্চে কেউ না কেউ তো অভিনেতা থাকবেই;

 

আমারও দেখা হয় এমনি অজ¯্র

মেঘ বালিকার সাথে

আমরা দুজনে একসাথে হাঁটি

কি ঝকমকে সকাল

কি স্ফটিক দুপুর

কি পরিচ্ছন্ন বিকাল

আহা! প্রেম কি যে মধুময়

লালনের কথা তবে এতোটাই খাঁটি;

 

মুক্তি মুক্তি মুক্তি

মুক্তি খুঁজে সারা হই বেলা-অবেলায়

কেউ পড়ে থাকে শেষ-মেষ

কেউ কেউ চলেও যায় অবহেলায়

প্রশ্ন নেই

নেই কোন উত্তর

বোঝা যায় না এরা কে যে কাকে চায়?

 

প্রতিটি গ্রীষ্মের সেই একই রূপ

একই রূপ প্রতিটি বর্ষার

শরৎ, হেমন্ত কিংবা শীত

সব পার করে আসে বসন্ত বাহার

আহা! নওরোজ!

তখনই পড়ে মনে তোমাকে আমার

তুমিও হেসে বলো

এতোদিন পরে নিলে

পুরনো বন্ধুর খোঁজ!

 

আমরাও খুঁজে ফিরি

খুঁজে মরি জীবনের কানাগলি

চোখে চোখে বিনিময়

অভিমান চালাচালি

আহা! কি যে কোমল তার হাত

বন্ধুরা বলেছে সে প্রজাপতির মতো

তার প্রেম যেন পাহাড়ের শীতল জল প্রপাত;

 

নীরবে অশ্রু ঝরে কারো কারো

বিছানার তোষকের নিচে রাখে বেদনার শর

আহা! বেচারা! ভালোবাসার বাজারে গিয়েছিলো

সহজ সরল ছিলো

বুঝতে পারেনি কিছু

যাকে আপন ভেবেছিলো

সে এখন হয়ে গেছে পর;

 

আমাদের চলাফেরা ওঠাবসা

অনেকটা ঘোরের ভেতর

কোথাও সুন্দর নেই

কদর্যে ভরা সব

না না তা কি করে হয় !

সৌন্দর্য ঠিকই আছে

তার উপর চেপে আছে ব্যথার পাহাড়!

 

কেউ কেউ কবি হয়

তারপর ঘুঁণপোকা খুঁজে ফেরে

কবিতার ঘরে

তাকে তো যমে ধরে

সে সেখানে ভর করে

সেও একদিন ঠিকই মরে;

 

আমি আর আমাদের

এই সব ভাবনার ভেতর

মানুষের শরীর পায় দেবতার আকার

কোথাও কেউ নেই

তবু দেখি ঐশ্বরিক রূপ

এক পা বাড়ালেই বলে

এগিয়ো না সামনে

দেখছো না এটা মৃত্যুকূপ;

 

দাঁতে দাঁতে চেপে থাকি

দারুণ অভাবী এক অস্পৃশ্য জীবন

হাত নাড়ে আগামীর

আলোকিত উজ্জ্বল ভূবন;

 

কিন্তু সহজ নয় সে পথে চলা

সহজ নয় সব কথাগুলো বলা

এ ভ্রমণে কে হবে তোমার আপন?

 

তোমার চিকন হাত

তোমার নাজুক শরীর ধরে যে

সরু সরু পা তারাও

সুগন্ধী সৌন্দর্য নিয়ে আসে

মুগ্ধতায় মনে হয়

সাগরের ঢেউ ভাঙ্গে হৃদয়ের তীরে

আমি শুধু একা দেখি

একা শুনি সেই শব্দ

নগরের হাজারো মানুষের ভীড়ে;

 

জীবন এমন ছিলো

আরো কতো রকম যে ছিলো তার

বর্ষায় ভেজেনি সে

শীতেও কাঁপেনি দেহ

গ্রীষ্মে করেনি হাহাকার

 

তবু তো মানুষ ছিলাম

সুখ আর দুঃখে ভরা

অদৃশ্য অবয়ব তার;

 

কতো পরাজয় ছিলো

কতজন হেসেছে তা দেখে

কিছু তারা হারিয়েছে

কিছু তার আজো আছে লেখা

বার বার পা বাড়াই

দ্বিধা আর দ্বন্দ্বে কতো যে ফিরে আসা

কেমনে পার হবো তবে লক্ষ্মন রেখা?

 

বেদনার্ত মানুষ যতো

সত্যি আমার মতো

কিংবা আমাদের মতো

তাদের হাতে থাকে

পাথরের চাঁদ

তারা তাই মেনে নেয়

যাবতীয় পরাজয়

তোমাদের সব অপবাদ;

 

সাদা রুমালে মোছা

দুচোখের মতো অশ্রু জল

স্মৃতি থেকে ছুড়ে ফেলা

যতো সব বিষন্ন কোলাহল

কোনো এক ভোরে দেখি

জীবনানন্দের শরীর হয়ে

আমার বাড়ীর পাশে

নতুন এক ধানসিঁড়ি হয়ে

নিশ্চিন্তে আজও যায় বয়ে;

 

বিকেলের নির্জন ক্যাম্পাসে

বাসের ডিপোতে বসা

দিবসের শেষ কোন বাসের

কোন এক কোনে

ব্যর্থ প্রেমিকা কাঁদে

সবার অজ্ঞাতে ঝরে

তার চোখের সব অশ্রুজল

সেও আজ বুঝে গেছে

প্রেম আর কিছু নয়

নিষিদ্ধ এক গন্ধম ফল!

 

অনেক বৃক্ষ ছিলো

কারো ছিলো ফুল আর

কারা ছিলো ফল

তার সুগন্ধি নিতে

নির্জন বিকেলে কতো

তোমার সাথে বেধে দল

ঘুরেছি সারাটা ক্ষণ

উতলা সে তনুমন

একবারো ছোঁয়নি কোন চিকন আঙ্গুল

তুমিই বলেছো তা

বলেছো আমাকেই

হয়তো কাপুরুষ আমি

নয়তো এ আমার ভুল;

 

নিজেকে নিয় যাবো বহুদূর

অলৌকিক গন্তব্যের কাছে

সেখানে পুষ্পের উদ্যানের ভেতর

বিষাক্ত সাপেরাও বাঁচে

তারই মাঝে ঘর হবে

জেগে থাকব বিবেকের আগুন জ্বালিয়ে

জীবনই বা এর চেয়ে কম কিসে

সারাক্ষণ দগ্ধ হয় আগুনের আচে;

 

যারা কিছু দিয়েছিলো

আর যারা নিয়ে গেছে

নিঃস্ব করে সব

আমার ব্যর্থতার জন্যে

আলাদা করা হয়নি

তাদের এই বিপরীত স্বভাব

হারে যারা মরে তারা

তাদের আর হয় না দেওয়া

কোন যোগ্য জবাব;

 

দিনগুনে বেঁচে থাকা

মানুষের কাতারে আমি

মানবিক কতো বলো

হতে আর পরি

তোমার চোখে বিষ

কেউ চায় ধ্বংস

আমি বলি আমার বিদায় কি তবে

এতো তাড়াতাড়ি;

 

হৃদয়ে তুফান ওঠে

সহ¯্র কষ্টের ফেনা

কান্নার রুধির যেন

মহাসাগরের বুকে কল্লোল রাজি

জীবনে যা হারিয়েছি

আর যা পেয়েছি তার

পুরোটাই ছিলো কারসাজি;

 

মনের বারান্দায় রাখি

কাঁটাযুক্ত বন্য ক্যাকটাস

কেউ যেন না চায় আমাকে

কেউ যেন না দেখে আমাকে

হোক না একজনেরই শুধু

ব্যর্থতার সাথে বসবাস;

 

হাত ধরে যারা হাঁটে

তারাও কখনও যে

আলাদা পথের পথিক

অসম্ভব যা কিছু

তাও দেখি কখনও কখনও

একদম নির্ভুল সঠিক;

 

আমার পকেটে জমা

তোমার যাবতীয় গোপন কালিমা

আজও পড়ে আছে এক

পতিত জমির বুকে খনিজের মতো

তুমিই চাওনি ফেরত

আমিও চাইনি দিতে

আমরাই বেদনাহত;

 

যাদের অনেক ছিলো

তারাও কেড়ে নিয়ে মোদের সামান্য

গড়েছে প্রাসাদ দেখো

আজ তাই অবলীলায়

নগরী হয়ে যাচ্ছে দেখো

একদার সবুজ অরণ্য;

 

নিজেই নিজেকে হারাতে গিয়ে

হেরে গেছে সমূল বৃক্ষ

আজ নেই কোন কথা আর

ঝরে গেছে পাতা সব

শুকিয়ে গেছে ডাল

অংকের ক্লাসের ছাত্রী

এতো ভালো ফল তবু

হিসেব মেলানো ছিলো ভার;

 

সময় গড়ায় ঠিক সেভাবে

যেভাবে নাট্যশালার সামনের

সিঁড়িতে শ্যাওলা জমে

সংস্কৃতির কি তবে মৃত্যুঘন্টাই বেজে যাবে?

 

পাথরের উপর দিয়েই হাঁটি

তবু মন পড়ে থাকে মাটিতে, ঘাসে

একটি আষাঢ়, আর একটি শ্রাবণ মিলে

যেমন একটি বর্ষাকাল

তেমনি আমাদের দুজন মিলেই

পৃথিবীর সব কান্না;

 

তুমি বেড়ে ওঠো

আমিও বেড়ে উঠি

একই মাঠে

একই মাটিতে

তবুও পৃথক মানুষ হই

জীবনের পৃথক ঘাঁটিতে;

 

অনেকগুলো পরাজয় জমা হয় বুক পকেটে

তোমার পার্টসের ভাঁজেও জমে অনেক কান্না

সাফল্যের আশ্বাস দিতে দিতে

তোমাকে শেষ মেষ একটা

ডেড-এন্ড রাস্তায় এনে দাঁড় করিয়েছি;

 

টানাটানির ফলাফলে

জীবন খুব একটা আগায় না

তবুও সিদ্ধান্ত নেই

একসাথেই থেকে যাবো

হেরে যাওয়া তক্ষক

তুমি হাইস্কুলের মিষ্ট্রেস

আমি কলেজের গুরুত্বহীন শিক্ষক।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

UCPDC - 600 Bangla

ইউসিপিডিসি-৬০০ ধারা-১ঃ ইউসিপিডিসি-এর প্রয়োগঃ ইউসিপিডিসি এর ২০০৭ সালের সংশোধনী আইসিসি পাবলিকেশন ৬০০ এর বিধি বা ধারাসমূহ (স্ট্যাণ্ড বাই লেটার অব ক্রেডিট সহ) সকল এলসিতে প্রয়োগ হবে। এলসিতে নির্দিষ্ট কোন স্থানে উল্লেখ না করলে তা সকল পক্ষের উপরই কার্যকর হবে। ধারা-২ঃ সংজ্ঞা ঃ অন্য কোন অর্থে ব্যবহার না করলে এই বিধিতে এ্যাডাভাইজিং ব্যাংক বলতে সেই ব্যাংককে বোঝাবে যে ইস্যুইং ব্যাংক এর অনুরোধে ঋণপত্র সুবিধা প্রদান করে। গ্রাহক বলতে সেই পক্ষকে বোঝাবে যার অনুরোধে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়। ব্যাংকিং কর্ম দিবস বলতে সেই দিনকেই বুঝাবে যেদিন ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট স্থানে উক্ত বিধি অনুযায়ী নিয়মিতভাবে তার প্রত্যাহিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। বেনিফিসিয়ারী বলতে সেই পক্ষকে বুঝাবে যার পক্ষে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। কমপ্লাইং প্রেজেণ্টেশন বলতে সেই প্রেজেণ্টেশনকে বুঝাবে যা ঋণের সকল শর্তানুযায়ী করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আদর্শ ব্যাংকিং চর্চার আওতাধীন। কনফার্মেশন বলতে কনফার্মিং ব্যাংক এর পাশাপাশি ইস্যুইং ব্যাংক কর্তৃক সুনির্দিষ্টভাবে একটি কমপ্লাইং প্রেজেণ্টেশনকে অনুমোদন ঝুঝায়। কনফার্মিং ব্যাংক বলতে সেই ব্যাংককে ঝুঝা

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে