Skip to main content

Fabricare receipt 01 08 2024

মেঘ নেই বৃষ্টি কেমন করে হবে

প্রত্যেক মানুষই তার বুকের ভেতর অনেকগুলো স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আমিও তাই। হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ স্বপ্ন ছাড়া মানুষ হয় না। ইদানীং আমার স্বপ্নের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে একটি সুন্দর বাড়ি, একজন সুন্দরী নারী এবং একটি সুন্দর গাড়ি। অবশ্য আর বাকিই বা থাকল কি? কিছু বাকি না থাকলেও সমস্যা নেই। একজন মানুষ হিসেবে আমিও জাগতিক সবকিছুই চাইতে পারি। তাছাড়া না চাওয়ারও কোন কারণ দেখছি না। কতো মানুষকে দেখলাম জীবনে সবকিছুর অধিকারী হতে। কেউ কেউ রাজ্যসহ রাজকন্যাও লাভ করলো। আমার দোষ তো সেই তুলনায় বেশ খানিকটা কমই। আমি তো মাত্র সাধারণ তিনটা জিনিসই চেয়েছি।
কিন্তু চাওয়াগুলো যতোই সাধারণ হোক তা পূরণ হওয়া যেন আমার জন্যে দিন দিন অসাধারণ হয়ে উঠছে। একথা সত্য যে আমি একজন ভবঘুরে বৈ আর কিছু নই। কিন্তু তাই বলে তো আর আমি থেমে যেতে পারি না। পারি না স্বপ্নগুলোকে দূরে ছুড়ে ফেলতে। আর দশজন মানুষের মতো আমিও তাই আমার স্বপ্নগুলোকে নিয়ে আশাবাদী। আমার বিশ্বাস একদিন না একদিন আমার স্বপ্নগুলো পূরণ হবেই। অবশ্য এ ব্যাপারে কোন গাণিতিক হিসাবের চাইতে আমার মনঃস্তাত্ত্বিক ভ্রমবিলাসই বেশিটা প্রতিক্রিয়াশীল। অতীতেও এমনি অজস্র ভুলের মধ্যে দিয়ে আমার জীবন অতিবাহিত হয়েছে। অবশ্য আল্লাহর কৃপায় আমি বারবার টিকেও গেছি। জীবন আসলে সত্যিই অনেক সুন্দর। মাঝে মাঝে এটিকে আমার একটি কানায় কানায় ভর্তি বালি বোঝাই নৌকার মতো মনে হয় যা ডুবতে গিয়েও ডোবে না।
যা হোক যে কথা বলছিলাম। স্বপ্ন পূরণের গল্প। অবশ্য এটাকে শুধু গল্প না বলে জীবনের গল্পœ বলাই ভালো। অবশ্য গল্পই বা বলছি কেন। এটাতো মূলত কোন গল্পই না। খাঁটি বাস্তবতা। জীবনের নির্মম সত্য। আমি সেই সত্যের ধারক ও বাহক মাত্র।


সমস্ত হতাশা ও নিরাশার মধ্যেও আমি আমার স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশা করি। করার পক্ষে যথেষ্ট কারণও বিদ্যমান । কে না জানে মানুষ আশাবাদী। আর সে যখন তার আশার পক্ষে বেশ কিছু লক্ষণ, চিহ্ন ও ইঙ্গিত দেখতে পায় তখন তো সে সামনে আগাতেই পারে। আমার অবস্থাও তথৈবচ। বেশ কিছু ঘটনা যা ইদানীং ঘটেছে তা আমার প্রত্যাশা পূরণের পক্ষের যুক্তিকে আরও জোরালো ভাবে সমর্থন করে। আমার চেষ্ঠা তাই আরো জোরদার।
আমাকে আসলে আপনাদের যতোটা ভবঘুরে মনে হচ্ছে ব্যাপারটা ঠিক ততোটা নয়। নাই নাই করেও আমার বেশ কিছু গুণাবলী আছে যা একেবারে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার মতো নয়। আর এসব কারণে আমি আসলে একটা কিছুতো অবশ্যই প্রত্যাশা করতে পারি। ব্যাপরটাও আসলে তাই। আমার যুক্তির পক্ষের সেরকম বেশ কিছু কারণও তাই। কথাটা ভেঙ্গে না বললে ক্লিয়ার হবে না। আমি মোটামুটি লিখতে পারি। আর আমার বেশ কিছু পাঠক শ্রোতাও আছে। তাদের কাছে আমার একটা মান মর্যাদাও আছে। আমার শক্তির মূলটা এখানেও কিছুটা প্রোথিত। আমাকে তাই ছুড়ে ফেলা যাচ্ছে না। যাচ্ছে না তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। ধৈর্যের সাথে তাই আপাততঃ আমাকে সহ্য করতে হবে। কারণ অবশ্য আরও কিছু আছে। সেটা পরে বলব। আগে বলে নেই ঘটনা কি ঘটেছে।
হঠাৎ করেই আমার এক ভক্ত ফোন করে বললো, স্যার কি একটু কষ্ট করে আমার বাড়িতে আসবেন। তাহলে কৃতার্থ হতাম।
আমি বললাম, কোন কারণ দেখছি না । আমি ব্যস্ত। আপনার প্রস্তাবটা ভেবে দেখব। উনি আবার ফোন করলেন। এবার আরও জোরালো অনুরোধ। আমি রাজী হলাম অযথাই। ভদ্রলোকের অনেকগুলো বাড়ি। তবে থাকেন ধানমন্ডিরটায়। আমাকে সেখানে যেতে হলো। প্রথমে কথাবার্তা। তারপর খাওয়া দাওয়া। তার পর আরাম কেদারায় গা এলিয়ে দিয়ে একেবারে কেলিয়ে পড়া। উনি বিগলিত। আমি আনন্দে গদ গদ। উনি একটা ঘোষণা দিলেন। আমার গাড়িটি এখন থেকে আপনার।
আমি বললাম, এই বোঝা আমি কোথায় রাখব।
উনি বললেন, কেন রামপুরার বাড়িতে।
আমি বললাম, ওটা তো আপনার। পরের বাড়িতে আমার গাড়ি রাখতে যাবো কেন?
উনি যোগ করলেন, এখন থেকে ঐ বাড়িটাও আপনার।
আমি বললাম, এসবের মানে কি?
উনি বললেন, গভর্নেস রেডিই আছে। সেই সব সামলাবে। দারুণ স্মার্ট আর সুন্দরী। আমি নিজে আপনার জন্যে পছন্দ করেছি। ভয় নেই খরচ নিয়ে ভাববেন না। ওটার ব্যবস্থা করাই আছে। আমি আমেরিকায় চলে যাচ্ছি। আর ফেরার ইচ্ছে নেই। দেশের যা কিছু সবকিছুই আপনার। স্বপ্ন ছিল কবি হব। হতে পারিনি। সবকিছু তাই একজন কবিকে দিয়ে গেলাম। নিঃসন্তান মানুষের জীবনটাই এমন। কাউকে না কাউকে ধন্য করতে হয়। আমার আর আশা কি! মেঘ নেই বৃষ্টি হবে কেমন করে?
আমি শুধু বললাম, আমার জীবনে তো বিনা মেঘেই বৃষ্টি হলো। সে শুধু বললো, আপনি পৃথিবীর সেই সব বিরল প্রজাতির কবির মধ্যে একজন যারা ভাগ্যবান। কবিরা নাকি কেবল দুর্ভাগাই হয়। আমি বললাম, কবিদের কিন্তু বিত্ত-বৈভব গড়ার চেষ্টা থাকে না। তাই তারা দুর্ভাগা। ঐ যে আপনিই তো বললেন, মেঘ নেই, বৃষ্টি হবে কেমন করে?
আমরা দুজনেই হাসলাম।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে

NAZRUL ISLAM MAZUMDER : THE CHOICE OF THE TIME (a biography)

NAZRUL ISLAM MAZUMDER The choice of the time “The purpose of a business is to create a customer who creates customers.” -          Shiv Shing # NASSA GROUP # 30,000 employees #EXIM Bank # 3,000 employees And so on……….. A Biography By OMAR KHALED RUMI M. Sc., MBA, LL.B     ...................................................... “Patience, persistence and perspiration make an unbeatable combination for success.”    - Napoleon Hill   ...................................................... Prlogue Like another man Nazrul Islam Mazunder is also a man. But, how he has made some stories of success. Why people consider him as a special. Why he is applaused as Philanthropic in mind, dynamic in thinking, far-sighted in vision. There must some reasons. The reason is what he wanted himself he has been now. Mazumder, a conglomerate icon, in no way, a trifle name. His success, over years, mak