Skip to main content

Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com

Setara bibi under the lamp post - Literature - observerbd.com : The glittering city aroundLife is rich with red, blue light of neonWide sky over the headPieces of moonlight, scatteredAnd in that splashed pieces of meteorThose are taken by the scientists of NASASo height the civilization reachesThis city is the flow of happiness nowSome men like us pass the wayWith frustration

দোলা

বাড়ীর সামনেই নদী। নদী পেরোলেই স্কুল। সে স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী দোলা। প্রতিদিন খেয়া নৌকায় নদী পার হতে হয়। বুকের মধ্যে বই গুঁজে লাজুক মেয়েটি বারোমাস মাথা নিচু করে যাওয়া আসা করে। বলতে গেলে জোয়ার ভাটাও তার ঠিক মতো নজরে পড়ে না। সত্যি কথা বলতে কি গায়ের আর দশটা সহজ সরল মেয়ের মতোই দোলার জীবন।
প্রতিদিন সকালে উঠে মাকে ঘরের কাজে সাহায্য করতে হয় দোলার। তারপর তাড়াহুড়ো করে গোসল সেরে কোন মতে দুটো খাবার মুখে গুঁজে দিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় দোলা। দোলার ইচ্ছে একদিন স্কুল শেষ করে সে কলেজে যাবে। জেলা শহরে বড় কলেজ। সেখানে বড় ক্লাসের পড়াশুনা। সেই পড়াশুনা শেষ করে সে বড় সড় একটা কিছু হবে। দোলার বাবা মাও আশাবাদী। আশাবাদী তো হতেই পারে। মেয়ে তাদের লেখাপড়ায় ভালো। শত কষ্টের মধ্যেও লেখা পড়ায় এমন আন্তরিক মেয়ে খুব কমই দেখা যায়। বাবা মার যদিও দোলার জন্যে তেমন কিছু করার নেই তবুও তাদের আন্তরিকতার কোন কমতি নেই। বেশি না পারলেও দোলার জন্যে একটু ভালো খাবার, দুটো ভালো জামা কাপড়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করে।
এখন বর্ষাকাল। নদী খুব উত্তাল। মাঝে মাঝে নদীতে এতোটা জোয়ার যে দোলার মনে ভীষণ ভয় লাগে। শক্ত হাতে নৌকার কাঠ ধরে বসে থাকে সে। যত তুফানই আসুক জীবনের এই তরনী তাকে পার হতে হবে। নিজের জন্যে না হোক অন্ততঃ মা বাবা ভাই বোনের জনে হলেও পার হতে হবে।
দেখতে দেখতে বর্ষাকাল পেরিয়ে শীতকাল আসে। নদী এখন ভীষণ শান্ত। কিন্তু হঠাৎ করেই এলাকাটা উত্তাল হয়ে ওঠে। সামনে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। চায়ের কাপে বাড়তি উত্তাপ। নির্বাচনে দুপক্ষ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। পুরনো অভিজাত বনাম উঠতি আধুনিক। ভেতরে ভেতরে আসলে পাকিস্তানপন্থী বনাম স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি। যদিও এসব কথা কেউ মুখে বলে না। কিন্তু লড়াইটা আসলে এখানেই। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ লালন পালন পেয়ে পুরনো অভিজাতরা আবার শক্ত খুঁটি গেড়ে বসেছে। তাদের হটাতে নবীনরা মূলতঃ হিমশিম খাচ্ছে।
যতই দিন যাচ্ছে নির্বাচন ততই জমে উঠছে। শেষমেষ এমন অবস্থা যে দুপক্ষে কয়েক দফা শারিরীক সংঘর্ষ  পর্যন্ত হয়ে যায়। এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক নতুনদের পক্ষে একজন যুবকের উত্থান। তিনি প্রার্থী নন। তবে প্রার্থীকে ছাপিয়ে এলাকায় যেন তার নাম । কারণ আর কিছু নয়। তার সাহসী ভূমিকা।  যুবকের নাম মোদাচ্ছের। সে এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাদেক মোল্লার শ্যালক। যদিও তার বাড়ী পার্শ্ববর্তী উপজেলায় তবুও সে যেন এই এলাকারই একজন। তার ভূমিকা তাকে এই অবস্থানে আসতে সাহায্য করেছে। মূলতঃ সে তার দুলাভাইয়ের বাড়ীতে থেকে স্থানীয় হাইস্কুলে দশম শ্রেনীতে লেখাপড়া করছে। এই একই স্কুলে দোলাও পড়ছে।
দোলা আর মোদাচ্ছের একই স্কুলে পড়লেও দোলা মোদাচ্ছের কেন কাউকেই তেমন একটা চেনে না। সে মাথা নিচু করে স্কুলে যায়। স্কুল ছুটি হলে বাড়ীতে ফিরে আসে। প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলে না। স্কুল শেষ করে দোলা বাড়ীর উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। সাথে আরও দুটো মেয়ে। তারা একসাথে আসা যাওয়া করে। হঠাৎ করেই এক সুদর্শন সুঠামদেহী যুবক এসে দাঁড়ায়। থমকে যায় দোলার পথ চলা। যুবক অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলে, আমি মোদাচ্ছের, চিনতে পেরেছো? আসলে মোদাচ্ছেরের নাম সবারই জানা। দোলাও এই নাম বার বার শুনেছে। দোলা নরম কণ্ঠে বলে, আপনার নাম শুনেছি।
মোদাচ্ছের হাসে। সেই হাসি খুব একটা নিষ্পাপ না।
দিন যায়। মাস যায়। দোলা আর মোদাচ্ছের একই নৌকায় প্রতিদিন নদী পার হয়। দোলা বাড়ীতে চলে যায়। মোদাচ্ছের ফিরে আসে। এভাবে জোয়ার ভাঁটার সাথে সাথে তাদের প্রেম দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে একসময় পথ হারানোর উপক্রম হয়।
এলাকায় বিস্তার কথা হচ্ছে তাদের সম্পর্ক নিয়ে। দোলার মা বাবাও বিব্রত। দোলাকে হাজার প্রশ্ন করছে। সে মুখ খুলছে না। সমালোচনা বেড়েই চলছে। হঠাৎ করেই মোদাচ্ছেরকে আর এলাকায় দেখা যায় না। একদিন শোনা যায় তার দুলাভাই তাকে তার নিজ এলাকায় ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। খবরটা দোলার কানেও আসে। দোলা বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছে। মোদাচ্ছেরের সাথে যোগাযোগের কোন উপায় দোলার জানা নেই।
সময় গড়িয়ে যায়। স্কুল শেষ করে দোলা কলেজে পা রাখে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাট চত্বর। চাকুরী জীবন। মোদাচ্ছের কখন যে তার জীবন থেকে বিস্মৃত হয়ে যায় সে নিজেও বুঝতে পারে না। সবচেয়ে বড় কথা জীবনের ব্যস্ততা আর বাস্তবতা জীবনকে অনেক কিছু ভুলিয়ে দিতে সাহায্য করে।
হঠাৎ করে একদিন এক যুবক সামনে এসে দাঁড়ায়। তার পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। দোলা মাথা তুলে তাকায়। ভালো করে দেখে চেনার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুতেই সে মনে করতে পারে না মানুষটা কে। কথা বলে ওঠে মানুষটি। আওয়াজটা দোলার চেনা চেনা লাগে। কিন্তু সে কিছুতেই মনে করতে পারে না মানুষটাকে সে কোথায় দেখেছে। যুবক নিজেই নিজের পরিচয় দেয়। দোলা থমকে যায়। মোদাচ্ছের। এতোদিন পর। কিন্তু এ কি হাল।
মোদাচ্ছের অত্যন্ত বিনীত কন্ঠে বলে তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো। একটু বসবে কোথাও। দোলা আর মোদাচ্ছের একটা চায়ের দোকানে বসে। মোদাচ্ছের সংক্ষেপে তার ইতিহাস খুলে বলে। ইতিহাস বড়ই করুন। কিন্তু দোলার কোনো ভাবান্তর হয় না। সে উঠে হাঁটতে শুরু করে। মোদাচ্ছের তখনও টেবিলে বসে আছে। দোলা মনে মনে বলে একজন মাতাল মানুষের কথার কোন মূল্য এই পৃথিবীর কাছে নেই। তাছাড়া স্বামী সন্তান নিয়ে সুখী দোলা তার অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে যন্ত্রনা বাড়াতে চায় না। তবে সেই বিকেলের পর থেকে কেমন যেন একটা অস্থিরতা তাকে পেয়ে বসে। বাইরে বেরোলেই কেন জানি তার মনে হয় মোদাচ্ছের তাকে অনুসরণ করছে।

Comments

Popular posts from this blog

মিথ-পুরাণ ও বিষ্ণু দে-র কবিতা / সৈয়দ কওসর জামাল

মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো  সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন  মনের আধুনিক অ

UCPDC - 600 Bangla

ইউসিপিডিসি-৬০০ ধারা-১ঃ ইউসিপিডিসি-এর প্রয়োগঃ ইউসিপিডিসি এর ২০০৭ সালের সংশোধনী আইসিসি পাবলিকেশন ৬০০ এর বিধি বা ধারাসমূহ (স্ট্যাণ্ড বাই লেটার অব ক্রেডিট সহ) সকল এলসিতে প্রয়োগ হবে। এলসিতে নির্দিষ্ট কোন স্থানে উল্লেখ না করলে তা সকল পক্ষের উপরই কার্যকর হবে। ধারা-২ঃ সংজ্ঞা ঃ অন্য কোন অর্থে ব্যবহার না করলে এই বিধিতে এ্যাডাভাইজিং ব্যাংক বলতে সেই ব্যাংককে বোঝাবে যে ইস্যুইং ব্যাংক এর অনুরোধে ঋণপত্র সুবিধা প্রদান করে। গ্রাহক বলতে সেই পক্ষকে বোঝাবে যার অনুরোধে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়। ব্যাংকিং কর্ম দিবস বলতে সেই দিনকেই বুঝাবে যেদিন ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট স্থানে উক্ত বিধি অনুযায়ী নিয়মিতভাবে তার প্রত্যাহিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। বেনিফিসিয়ারী বলতে সেই পক্ষকে বুঝাবে যার পক্ষে ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। কমপ্লাইং প্রেজেণ্টেশন বলতে সেই প্রেজেণ্টেশনকে বুঝাবে যা ঋণের সকল শর্তানুযায়ী করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আদর্শ ব্যাংকিং চর্চার আওতাধীন। কনফার্মেশন বলতে কনফার্মিং ব্যাংক এর পাশাপাশি ইস্যুইং ব্যাংক কর্তৃক সুনির্দিষ্টভাবে একটি কমপ্লাইং প্রেজেণ্টেশনকে অনুমোদন ঝুঝায়। কনফার্মিং ব্যাংক বলতে সেই ব্যাংককে ঝুঝা

ইতিহাসের কবি, কবির ইতিহাস : জীবনানন্দ দাশ / সৈয়দ কওসর জামাল

What thou lov`st is thy true heritage! উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা যা কিছু পাই, তার মধ্যেকার ভালোটুকু এবং ইতিহাসের প্রতি যথাযথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ক্ষেত্রে এজরা পাউন্ডের এই পংক্তিটি প্রবাদ হয়ে আছে। এই হেরিটেজ-এর প্রতি মমত্ব যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের সহজাত, কবিও তেমনি এখানে খুঁজে পান তাঁর ইতিহাসচেতনার আধারটিকে। হেরিটেজ যেমন ইতিহাস হয়ে ওঠে, এই ইতিহাসও তেমনি কবিতার হেরিটেজ হয়ে যায়। ইতিহাস বিচ্ছুরিত আলো কবির মুখে পড়ে, আর কবিতাও সেই আলোর স্পর্শ পায়।     ইতিহাসে আছে আমাদের রাষ্ট্রীয় ও সমাজজীবনের এক ব্যাপক বিস্তার। এই বিস্তারের দিকে কবিকেও চোখ রাখতে হয়। তবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের জন্য নয়, ইতিহাসের ভিতরের সারসত্যটুকু ও ইতিহাসের মর্মকথাটিকে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অলোকে খুঁজে নেওয়ার জন্য। কবির চেতনার আলোকে ইতিহাসের দুএকটি মর্মকথা বা সত্যসূত্র শুধু উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। একেই আমরা কবির ইতিহাসচেতনার বলি, যা বহুস্তরীয়, আর তাকে প্রকাশিত হতে দেখি কবিতায় কতো বিচিত্র ভঙ্গিতে। কাব্যপ্রক্রিয়ার এই চেতনা অতি সূক্ষ্মভাবে এক বিশেষ মাত্রা যোগ করে দেয়। অন্য সে কবিতা ইতিহাস নয় ইতিহাসের সারমর্মটুকু বুকে ধরে রাখে। ইতিহাসপাঠে