আমার আনন্দ, আমার বিষাদ
If life gives you Lemons
then sell it .......and by clothes.
....... Collected
কাপড়-চোপড় কেনার শখ আমার বরাবরের। সেই ছোট বেলা থেকে ধারাবাহিক সংগ্রামী জীবনের এখনও মেঘ কখনও রোদ্দুরের মতো কিছুটা স্বচ্ছলতা কিছুটা অসচ্ছলতার মধ্যেই আমার বেড়ে ওঠা। তাই বলে রুচির সাথে কখনও আপোষ করিনি। আমি প্রয়োজন হলে কেনাকাটা থেকে দূরে থেকেছি। তবুও সস্তা জিনিস কিনে পস্তানোর মতো মানসিকতা আমার কথনও ছিলো। বরাবর আমার ভালোটাই চাই। তার জন্যে আপেক্ষা করতে তৈরি আছি। জীবনের সর্বত্র আপোষ নয়। অন্ততঃ রুচির ক্ষেত্রে।
অনেকেই এ নিয়ে অনেক কথা বলে। বলাটাই স্বাভাবিক। আমি যা করি তা আমার সামর্থ্যরে বাইরে। তবুও করি। আমার স্বপ্নগুলো এমনই। চাওয়াগুলোও এমন। বা¯বতা আরও কঠিন। দুটো যেন সমান্তরাল রেল লাইনের মতো। কখনও এক বিন্দুতে মেলে না।
তবুও দিন চলে যাচ্ছে। বহুবার ঋণগ্রস্থ হতে হতে ক্লান্ত হয়েছি। আল্লাহর অসীম রহমতে আবার সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। তবুও স্বভাবের পরিবর্তন হয়নি। ঘোড়ার ক্ষুরের মতোই। সহজে ক্লান্ত হয় না।
আমার জীবনে এরকম বদ অভ্যাস আরও আছে। ছোট বেলা থেকে রাত জেগে পড়াশুনা করা। এটা একটা দারুণ বদ অভ্যাস। আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কোন লাভ হয়নি। দিনে দিনে আরও বেড়েছে। এখন চল্লিশ পেরিয়ে মনে হচ্ছে আমি একটা বুড়ো খাটাশ। সহজে বদলাবার নয়। নিজেকে নিয়ে নিজের উপর বিরক্ত হই। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয় না। মানুষ অতো সহজে বদলায় না।
সম্ভবতঃ ১৯৭২ সালে আমার জন্ম। মার ভাষ্যমতে তাই। কারণ তার স্মৃতি অনুযায়ী যুদ্ধের পরের বছরে আমার জন্ম। যুদ্ধটা হয়েছিলো ১৯৭১ সালে। তাহলে ওটা ৭২ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
স্বাধীন মাটিতে জন্মানো মানুষ। একটু বেশি স্বাধীনচেতা তো হবোই। এটাই স্বাভাবিক। মরে যাবো তবু ভেঙ্গে যাবো না। মাঝে মাঝে ভাবতেই অবাক লাগে। অবশ্য অনেক বড় মানুষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হয়ে গেলাম চাপরাশি। নিজে মতামত নিয়ে কিছুই করতে পারলাম না।
অন্যের সাজানো ফরম্যাটেই জীবন কেটে গেলো। কার্ল মার্ক্স কিংবা কার্লাইল- কারো ক্রিয়েটিভিটিই চমকে দিতে পারলো না। চিরাচরিত নির্বোধের মতে বেঁচে থাকা। খাওয়া-দাওয়া, মলমূত্র ত্যাগ, সন্তান সন্ততি জন্মদান। এরিক মারিয়া রেমার্ক ’অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ লিখলেন। আমাদের দেশেও একটা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়ে গেলো। আমি মুক্ত ভূমিতে জন্মগ্রহণ করলাম। কিন্তু দেশের জন্যে মহৎ দু’চার কথা লিখতে পারলাম না। সবার দ্বারা মহৎ কীর্তি হয় না। কারো কারো কাজ হলো অন্যের কাজ দেখে অবাক হওয়া। সে তাতেই সন্তষ্ট।
আমরা দশ ভাই বোন। পাঁচ ভাই, পাঁচ বোন। একটা ভাই শৈশবেই মারা যায়। এখন নয় জন। মোটামুটি একটা ভরাট বড় বৃত্ত। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। আমরা কেউই আমাদের মহামান্য শিক্ষক পিতার ছায়াও টপকাতে পারিনি। অন্তত: অর্জনের দিক থেকে। মানুষ হিসেবে তো প্রশ্নই আসে না। তিনি আমার কাছে মহামানব। আমি সারা জীবন তার ছায়াকে অতিক্রম করার জন্য সংগ্রাম করছি। যদিও আমি জানি তা হবার নয়। তবুও আমি আমার পিতার অসমাপ্ত ইচ্ছার ভগ্নাংশ হতে চাই। তাকে ছুঁতে না পারলেও তাকে অনুসরণ করে কিছুটা পথ যেতে চাই। এখন মনে হচ্ছে অতি মুশকিল। বরং রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে একাকী মশারীর নিচে শুয়ে শুয়ে বলি, পিতা, আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমার নাদান সন্তান। তোমার স্বপ্নের সারথী হতে পারলাম না।
মায়ের ঋণ শোধ করার তো প্রশ্নই ওঠে না। মায়ের সামনে যেতে লজ্জা হয়। আমার ব্যর্থতা আমার বোধকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখন নিজেকে একটা আগুন লাগা হনুমানের মতো লাগে। আমি না চাইতেই আমার আগুনে লংকা পুরী ছাই হয় যাচ্ছে। ব্যর্থতা মাঝে মাঝে ভীষণ নির্বোধের মতো হয়ে ওঠে। অন্যথায় এর মধ্যেও কিছু মাহাত্ম্য আছে বলে মনে হয়। এটা অবশ্য সান্তনার কথা। সব হারানো মানুষ না পাওয়ার গল্প শুনলে কেমন করে তাকিয়ে থাকে। তখন নির্বোধকেও খানিকটা বুদ্ধিমান মনে হয়।
আমার স্কুলে যেতে দেরী হয়েছিলো। খৎনা করাতেও দেরী হয়। বয়স তখন সম্ভবতঃ দশের কাছাকাছি। তবুও সেই পরিস্থিতি। ইনফেকশন। তারপর ছয় মাস। বড়ই গাছের কাটা সমেত ডাল পুড়িয়ে ধোয়া দিয়ে সেক দেওয়া। এটা অবশ্য আমার এক ভাবীর অবদান। এভাবে ছ‘মাসে সেই পুটুলি শুকিয়ে আস্তে আস্তে স্বাভাবিকে আসা।
ততদিনে সময় অনেক গড়িয়ে গেছে। আমার জীবনে আমি কিছু একটা হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিধানে নেই। অবশ্য ভাগ্যেও নেই। বরাবরই দুর্বল পুরুষ। ভীষণ ভীরু আর কাপুরুষ। অলেকজান্ডার, নেপোলিয়ান , হিটলার সবার জীবনী পড়েছি। লাভ হয়নি।
ভাই বোনরা সবাই কমবেশী লেখাপড়া শিখতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু আখেরে কেউই গাছের মগডালে উঠতে পারেনি। কেউ কেউ নিরাপদ দুর্ভাগ্যের কারণে কেউ কেউ মাঝ পথে পাকা ফল তুলতে গিয়ে ঝরে পড়েছে। কয়েকজন গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে। তবে তাতে লাভ কিছু হয়নি। সব ঐ কেরানী পর্যন্ত। কোনো সিমন বলিভার কিংবা ল্যান্স আর্মস্টং হয়নি। সবাই সন্ধ্যা হলে ঘরের দরজা জানালা সঠিকভাবে বন্ধ করে ঘুমোতে যায়। বাবার ইচ্ছে ছিলো বিপ্লবী কিংবা প্রতিবিপ্লবী হবে। সবকিছু বদলে দেবে। নিজের ভাগ্য, দেশের চেহারা, দলের অবস্থা। কিছুই হয়নি। নিজেই নিজের চোয়ালের ভেতর পেটের ভেতর জমিয়ে রাখা ঘাস এনে অবসরে জাবর কাটছে। দোষ দিয়ে লাভ নেই। সব সৈন্যদলেই কিছু ভেতো সৈন্য থাকে। যুদ্ধে, ডামাডোলের সময়ও তার সব ঠিক ঠিক। বোঝা যায় না তবুও তার পদবী সৈনিকই।
বোনেদের কয়েক জনের খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়। পড়াশুনায় খুব বেশী দূর আগাতে পারেনি। তবে মাথা ভালো ছিলো। তাদের ছেলেমেয়েগুলো লেখাপড়ায় ভালো। অবশ্য অভাব সবকিছু গুলিয়ে দিয়েছে। আমিও সেরকম তালগোল পাকানোদেরই একজন। পার্থক্য শুধু এটুকু। আমার জীবনে অসাধারণ কিছু সুযোগ আমি পেয়েছি। একটা ভালো উপার্জনের চাকুরী। আলহামদুল্লিাহ।
১৯৮৯ সালে মেট্রিক পাশ করেছিলাম। ফলাফল মোটামুটি ভালোই হয়েছিলো। কেন্দ্রে প্রথম হয়েছিলাম। অবশ্যই ফার্স্ট ডিভিশন। অবশ্য এর আগেও একটু আধটু কৃতিত্ব ছিলো। পঞ্চম শ্রেণিতে কেন্দ্রে প্রথম হয়ে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলাম। তারপর ১৯৯১ তে এইচএসসি করলাম। সাইন্স থেকে। ফলাফল ভালো হয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হলো। অবশ্য আর তেমন ভালো ফলাফল হয়নি। অনার্স, মাস্টার্স সবই দ্বিতীয় শ্রেণি। পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন্যান্সে ভালোভাবে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা নিয়েই এমবিএ করেছিলাম। সেই সাথে এলএলবিটাও করেছিলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বেশ মজার ব্যাপার। দেখতে দেখতে অনেকগুলো ডিগ্রী হয়ে গিয়েছিলো।
জীবন বরাবরই অনাড়ম্বর ছিলো। কিন্তু আমি সবসময়ই চেষ্টা করেছি তাকে বর্ণিল করার। ..
If life gives you Lemons
then sell it .......and by clothes.
....... Collected
কাপড়-চোপড় কেনার শখ আমার বরাবরের। সেই ছোট বেলা থেকে ধারাবাহিক সংগ্রামী জীবনের এখনও মেঘ কখনও রোদ্দুরের মতো কিছুটা স্বচ্ছলতা কিছুটা অসচ্ছলতার মধ্যেই আমার বেড়ে ওঠা। তাই বলে রুচির সাথে কখনও আপোষ করিনি। আমি প্রয়োজন হলে কেনাকাটা থেকে দূরে থেকেছি। তবুও সস্তা জিনিস কিনে পস্তানোর মতো মানসিকতা আমার কথনও ছিলো। বরাবর আমার ভালোটাই চাই। তার জন্যে আপেক্ষা করতে তৈরি আছি। জীবনের সর্বত্র আপোষ নয়। অন্ততঃ রুচির ক্ষেত্রে।
অনেকেই এ নিয়ে অনেক কথা বলে। বলাটাই স্বাভাবিক। আমি যা করি তা আমার সামর্থ্যরে বাইরে। তবুও করি। আমার স্বপ্নগুলো এমনই। চাওয়াগুলোও এমন। বা¯বতা আরও কঠিন। দুটো যেন সমান্তরাল রেল লাইনের মতো। কখনও এক বিন্দুতে মেলে না।
তবুও দিন চলে যাচ্ছে। বহুবার ঋণগ্রস্থ হতে হতে ক্লান্ত হয়েছি। আল্লাহর অসীম রহমতে আবার সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। তবুও স্বভাবের পরিবর্তন হয়নি। ঘোড়ার ক্ষুরের মতোই। সহজে ক্লান্ত হয় না।
আমার জীবনে এরকম বদ অভ্যাস আরও আছে। ছোট বেলা থেকে রাত জেগে পড়াশুনা করা। এটা একটা দারুণ বদ অভ্যাস। আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কোন লাভ হয়নি। দিনে দিনে আরও বেড়েছে। এখন চল্লিশ পেরিয়ে মনে হচ্ছে আমি একটা বুড়ো খাটাশ। সহজে বদলাবার নয়। নিজেকে নিয়ে নিজের উপর বিরক্ত হই। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয় না। মানুষ অতো সহজে বদলায় না।
সম্ভবতঃ ১৯৭২ সালে আমার জন্ম। মার ভাষ্যমতে তাই। কারণ তার স্মৃতি অনুযায়ী যুদ্ধের পরের বছরে আমার জন্ম। যুদ্ধটা হয়েছিলো ১৯৭১ সালে। তাহলে ওটা ৭২ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
স্বাধীন মাটিতে জন্মানো মানুষ। একটু বেশি স্বাধীনচেতা তো হবোই। এটাই স্বাভাবিক। মরে যাবো তবু ভেঙ্গে যাবো না। মাঝে মাঝে ভাবতেই অবাক লাগে। অবশ্য অনেক বড় মানুষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হয়ে গেলাম চাপরাশি। নিজে মতামত নিয়ে কিছুই করতে পারলাম না।
অন্যের সাজানো ফরম্যাটেই জীবন কেটে গেলো। কার্ল মার্ক্স কিংবা কার্লাইল- কারো ক্রিয়েটিভিটিই চমকে দিতে পারলো না। চিরাচরিত নির্বোধের মতে বেঁচে থাকা। খাওয়া-দাওয়া, মলমূত্র ত্যাগ, সন্তান সন্ততি জন্মদান। এরিক মারিয়া রেমার্ক ’অল কোয়ায়েট অন দ্যা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ লিখলেন। আমাদের দেশেও একটা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়ে গেলো। আমি মুক্ত ভূমিতে জন্মগ্রহণ করলাম। কিন্তু দেশের জন্যে মহৎ দু’চার কথা লিখতে পারলাম না। সবার দ্বারা মহৎ কীর্তি হয় না। কারো কারো কাজ হলো অন্যের কাজ দেখে অবাক হওয়া। সে তাতেই সন্তষ্ট।
আমরা দশ ভাই বোন। পাঁচ ভাই, পাঁচ বোন। একটা ভাই শৈশবেই মারা যায়। এখন নয় জন। মোটামুটি একটা ভরাট বড় বৃত্ত। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। আমরা কেউই আমাদের মহামান্য শিক্ষক পিতার ছায়াও টপকাতে পারিনি। অন্তত: অর্জনের দিক থেকে। মানুষ হিসেবে তো প্রশ্নই আসে না। তিনি আমার কাছে মহামানব। আমি সারা জীবন তার ছায়াকে অতিক্রম করার জন্য সংগ্রাম করছি। যদিও আমি জানি তা হবার নয়। তবুও আমি আমার পিতার অসমাপ্ত ইচ্ছার ভগ্নাংশ হতে চাই। তাকে ছুঁতে না পারলেও তাকে অনুসরণ করে কিছুটা পথ যেতে চাই। এখন মনে হচ্ছে অতি মুশকিল। বরং রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে একাকী মশারীর নিচে শুয়ে শুয়ে বলি, পিতা, আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমার নাদান সন্তান। তোমার স্বপ্নের সারথী হতে পারলাম না।
মায়ের ঋণ শোধ করার তো প্রশ্নই ওঠে না। মায়ের সামনে যেতে লজ্জা হয়। আমার ব্যর্থতা আমার বোধকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখন নিজেকে একটা আগুন লাগা হনুমানের মতো লাগে। আমি না চাইতেই আমার আগুনে লংকা পুরী ছাই হয় যাচ্ছে। ব্যর্থতা মাঝে মাঝে ভীষণ নির্বোধের মতো হয়ে ওঠে। অন্যথায় এর মধ্যেও কিছু মাহাত্ম্য আছে বলে মনে হয়। এটা অবশ্য সান্তনার কথা। সব হারানো মানুষ না পাওয়ার গল্প শুনলে কেমন করে তাকিয়ে থাকে। তখন নির্বোধকেও খানিকটা বুদ্ধিমান মনে হয়।
আমার স্কুলে যেতে দেরী হয়েছিলো। খৎনা করাতেও দেরী হয়। বয়স তখন সম্ভবতঃ দশের কাছাকাছি। তবুও সেই পরিস্থিতি। ইনফেকশন। তারপর ছয় মাস। বড়ই গাছের কাটা সমেত ডাল পুড়িয়ে ধোয়া দিয়ে সেক দেওয়া। এটা অবশ্য আমার এক ভাবীর অবদান। এভাবে ছ‘মাসে সেই পুটুলি শুকিয়ে আস্তে আস্তে স্বাভাবিকে আসা।
ততদিনে সময় অনেক গড়িয়ে গেছে। আমার জীবনে আমি কিছু একটা হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিধানে নেই। অবশ্য ভাগ্যেও নেই। বরাবরই দুর্বল পুরুষ। ভীষণ ভীরু আর কাপুরুষ। অলেকজান্ডার, নেপোলিয়ান , হিটলার সবার জীবনী পড়েছি। লাভ হয়নি।
ভাই বোনরা সবাই কমবেশী লেখাপড়া শিখতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু আখেরে কেউই গাছের মগডালে উঠতে পারেনি। কেউ কেউ নিরাপদ দুর্ভাগ্যের কারণে কেউ কেউ মাঝ পথে পাকা ফল তুলতে গিয়ে ঝরে পড়েছে। কয়েকজন গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে। তবে তাতে লাভ কিছু হয়নি। সব ঐ কেরানী পর্যন্ত। কোনো সিমন বলিভার কিংবা ল্যান্স আর্মস্টং হয়নি। সবাই সন্ধ্যা হলে ঘরের দরজা জানালা সঠিকভাবে বন্ধ করে ঘুমোতে যায়। বাবার ইচ্ছে ছিলো বিপ্লবী কিংবা প্রতিবিপ্লবী হবে। সবকিছু বদলে দেবে। নিজের ভাগ্য, দেশের চেহারা, দলের অবস্থা। কিছুই হয়নি। নিজেই নিজের চোয়ালের ভেতর পেটের ভেতর জমিয়ে রাখা ঘাস এনে অবসরে জাবর কাটছে। দোষ দিয়ে লাভ নেই। সব সৈন্যদলেই কিছু ভেতো সৈন্য থাকে। যুদ্ধে, ডামাডোলের সময়ও তার সব ঠিক ঠিক। বোঝা যায় না তবুও তার পদবী সৈনিকই।
বোনেদের কয়েক জনের খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়। পড়াশুনায় খুব বেশী দূর আগাতে পারেনি। তবে মাথা ভালো ছিলো। তাদের ছেলেমেয়েগুলো লেখাপড়ায় ভালো। অবশ্য অভাব সবকিছু গুলিয়ে দিয়েছে। আমিও সেরকম তালগোল পাকানোদেরই একজন। পার্থক্য শুধু এটুকু। আমার জীবনে অসাধারণ কিছু সুযোগ আমি পেয়েছি। একটা ভালো উপার্জনের চাকুরী। আলহামদুল্লিাহ।
১৯৮৯ সালে মেট্রিক পাশ করেছিলাম। ফলাফল মোটামুটি ভালোই হয়েছিলো। কেন্দ্রে প্রথম হয়েছিলাম। অবশ্যই ফার্স্ট ডিভিশন। অবশ্য এর আগেও একটু আধটু কৃতিত্ব ছিলো। পঞ্চম শ্রেণিতে কেন্দ্রে প্রথম হয়ে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলাম। তারপর ১৯৯১ তে এইচএসসি করলাম। সাইন্স থেকে। ফলাফল ভালো হয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হলো। অবশ্য আর তেমন ভালো ফলাফল হয়নি। অনার্স, মাস্টার্স সবই দ্বিতীয় শ্রেণি। পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন্যান্সে ভালোভাবে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা নিয়েই এমবিএ করেছিলাম। সেই সাথে এলএলবিটাও করেছিলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বেশ মজার ব্যাপার। দেখতে দেখতে অনেকগুলো ডিগ্রী হয়ে গিয়েছিলো।
জীবন বরাবরই অনাড়ম্বর ছিলো। কিন্তু আমি সবসময়ই চেষ্টা করেছি তাকে বর্ণিল করার। ..
Comments
Post a Comment