আমজাদ আলী কোনোমতেই পরাজয় স্বীকার করার পাত্র নয়। পাত্র বা পাত্রীর হালাত যাই হোক না কোন তাদের একটা হিলা তিনি করেই দেবেন তা সে যে করেই হোক। তাছাড়া স্বল্প শিক্ষিত আমজাদ আলী এমনিতে কেতাদুরস্ত। তার উপরে ঘটক হিসাবে আমজাদ আলী তার জীবনের শুরুতেই একটি বিষয় অত্যন্ত ভালোভাবে জেনে গেছে। বিবাহের ক্ষেত্রে সামান্য একটু এদিক ওদিক করা ইসলামেও জায়েজ। আমজাদ আলী এই সামান্য মতের বিষয়টিকে তার নিজের মতো করেই ব্যাখ্যা করে। পাত্র যদি তালগাছের মাথায় উঠে বসে থাকে আর পাত্রী যদি গাছের গোড়ায় মাদুর পেতে বসে আমজাদ আলী বিয়ে পড়িয়ে দেন। আমজাদ আলীর কাছে সবই সম্ভব।
এ কারনে অবশ্য আমজাদ আলীর সুনামও বিস্তর। এই সুবাদে তিনি দরিদ্র অসহায় পিতামাতার ভরসারও কেন্দ্রস্থল। কেউ কেউ বলে আমজাদ আলী নিদারুন সত্তয়াবের কাজ করছে। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচছে। তবে অনেকের কাছেই আবার আমজাদ আলী সাক্ষাত যমদূতত্ত। যাদের সর্বনাশ হয়েছে তাদের কথা থেকেই বলছিলাম। আমজাদ আলীর কথা শুনলে তাদের যেমন হুস থাকে না তেমনি গায়েও কাঁটা দেয়। আমজাদকে পারলে তারা চিবিয়ে খায়। কিন্তু শত হলেও ঘটক। সবারই একটু আধটু কাজে লেগে যায়। তাই বিরক্ত হলেও সহজে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলে না। আমজাদ আলীর দিনকাল ভালই যাচ্ছে বলতে হবে।
আমজাদ আলীর প্রতিটি দিনই কীর্তিময়। এই যেমন কিছু দিন আগে সরকারী চাকুরী পাওয়া এক দুর্দান্ত পাত্রকে বিয়ের পাশাপাশি দশ লাখ টাকা যৌতুক পাইয়ে বিয়েুর কাজটা সমাধা করে দিল। সবাই তো মহাখুশী। পাত্রী সুদর্শনা। দীঘল কালো চুল। জোড় ভ্রু। গৌরবর্ণা। দেহসৌষ্ঠব যার পর নাই। পাত্র তো মহাখুশী। খুশী হওয়ারই কথা। ক্ষুধার্ত ব্যাঘ্রের সামনে নরম হরিণ শাবক।
মধু চন্দ্রিমা সেরে আসতে না আসতেই তুলকালাম। পাত্র পক্ষের তোপের মুখে আমজাদ কিছু দিনের জন্যে হলেও এলাকা ছাড়া। সুরমা দেওয়া চোখের উজ্জ্বল চেহারার মানুষটির মুখে হাসি আনন্দের লেশ মাত্রও নেই। বরং সেখানে ভীতি। পাত্রর মামা পুলিশের বড় কর্তা। না জানি কি হয় এবার। কেন যে এতো বড় একটা ঝুঁকি সে নিতে গেল। কোন মাথায় এরকম একটা বাজে বুদ্ধি এলো। অবশ্য বুদ্ধির দোষ দিয়ে কি লাভ। কমিশনটা ভালো ছিলো। পাত্রী পক্ষ তাকে টার্গেট দিয়েছিলো ভালো পাত্র ধরিয়ে দিতে পারলে কমসে কম দুলাখ টাকা কমিশন। আমজাদও লোভ সামলাতে পারেনি। এতো টাকা একসাথে। আমজাদের ঘরটা তোলা দরকার। তিন তিনটে বউয়ের খোরাকী। প্রায় আট দশটা ছেলেপুলের খানা দানার পাশাপাশি পড়াশুনার খরচ। কাহাতক সামলানো যায়। আমজাদ আলী পেয়ে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি। হাওলাদার বাড়ীর যুৎসই পাত্রকে সে ঠিক ঠিক গছিয়ে দেয়। দোষ কি শুধু তার একার। পাত্রর মায়েরও তো অনেকটা দায় আছে। কথা তো দশ লাখেরই ছিলো। অনানুষ্ঠানিক ভাবে তো আরও পাঁচ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন। অবশ্য মেয়ের ত্রুটির বিনিময়ে নয়। জাষ্ট বিয়ের আগ মুহুর্তে বেঁকে বসে চাপটা দিয়েছিলেন। আমজাদের তখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এই অবস্থায় বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া ঘটকের জন্যে সবচেয়ে বড় অমর্যাদার। অবশ্য আমজাদ শেষ পর্যন্ত হারেনি। পাত্রী পক্ষকে বলে কয়ে বাড়তি পাঁচ লাখ ঠিকই ম্যানেজ করে দিয়েছিলো। কিন্তু ঝামেলা তবুও তার পিছু ছাড়েনি। মাথা গরম করা পাত্রের মামাই ভেঝালটা বাড়িয়েছে। ব্যাটা পুলিশের বাচ্চা। নিজে তো একটা ঘুষখোর। তার উপরে লুচ্চা। কারো ভালো দেখতে পারে না। আমজাদের মাত্র একটু কপাল খুলেছিলো তাও তার সহ্য হচ্ছে না। তবে আমজাদ হাল ছাড়ার পাত্র না। সে ঠিকই সব ম্যানেজ করে নেবে। দুলাখ টাকার মামলা। যা তা ব্যাপার না। তার উপরে বিয়ে তো হয়ে গেছে। এখন না বললে হবে নাকি। মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে ছেলে মেয়ে ইঞ্জিন গরম করে এসেছে। তাদের ব্যাপারটাতো এখন ফুল খিলি গুলশান গুলশান। আমজাদ কিছুটা হলেও ঝুঁকি মুক্ত। কপাল ভালো বিয়ের আগে ব্যাপারটা ধরা পড়েনি। তাহলে সবটাই মাঠে মারা গেছিল। পুরো প্ল্যানটা ভেস্তে যেত। আমজাদ অবশ্য সব ধরনের সতর্কতাই অবলম্বন করেছিল। তবুও ঝামেলা বাধতে আর সময় লাগে না। নাও কাম, বিয়া কাম আরও যেন কি কামে ঝামেলার শেষ নেই। আমজাদ সবই জানে। সে তাই নায়ে ভালো করেই গিট দিয়েছিল। স্রোতেও যাতে ভেসে যেতে না পারে। অবশ্য ভেসেও যায়নি। শেষ পর্যন্ত সে পাত্র পাত্রী কে মধুচন্দ্রিমা থেকে ঘুরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
অবশ্য গোলটা বাঁধে সেখান থেকে ফেরার পর। নির্দোষ গোবেচারা পাত্র সবাইকে বলে দিয়েছে যে মেয়ের এক চোখে সমস্যা। পাথর বসানো। দোষ অবশ্য মেয়েরও নয়। মেয়ে যারপরনাই ভালো। সতী সাধ্বী। সুন্দরী। সাত চড়ে রা নেই। মাথা তুলে কথা বলে না। লেখা পড়ারয় ভালো। গায় গতরে ফেটে পড়া যৌবন। এরকম মেয়ে কার না পছন্দ। কিন্তুু সমসাটা হয়ে গিয়েছিলো শৈশবে। দুষ্টুমি করতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গিয়ে চোখের মধ্যে বাঁশের চোখা কঞ্চি ঢুকে যায়। শেষ মেষ চিকিৎসক সুন্দর একটা পাথর বসিয়ে দিয়েছেন। পাত্রী দেখার সময় কেউ সেটা ধরতেও পারেনি। তাছাড়া পাত্র পক্ষেরও চাপ ছিলো। সুন্দরী পাত্রীর পাশাপাশি দশ লাখ কাঁচা টাকা। পাত্রের মায়েরও কিছুটা তাড়া ছিলো বাড়তি পাঁচ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মন্দ না। তাই তাড়াতাড়ি ধুমধাম করেই হয়ে যায়। সমস্যার দিকে কারো নজর পড়েনি। তাছাড়া পাত্রী সব সময় আধুনিক চশমা পড়ে। ধরা পরাটা একটু কঠিন। সবচেয়ে বড় কথা পাত্রীর দীঘল কালো চুল, বাঁধভাঙ্গা যৌবনের দিকেই সবার নজর ছিলো। এরকম মেয়ে হাজারে একটা মেলে না। বিশেষ করে আজকাল তো গাঁও গেরামে সীতার মতো সতী মেয়ে বলতে গেলে নেইই। সব মিলিয়ে অন্য কিছু নিয়ে ভাবার অবকাশ কারোরই ছিলো না। যা হোক শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়ে গিয়েছিলো।
এই যখন অবস্থা আমজাদের মুখে তখনও কৃত্রিম হাসি। যদিও কলিজা শুকিয়ে কাঠ। শেষ পর্যন্ত যদি বিয়েটা না টেকে। গাঁও গেরামের ব্যাপার। সামান্যতেই রক্তারক্তি কান্ড। তার উপরে বিয়ে থার ব্যাপার। আমজাদ নিজেও কম শিক্ষিত হলেও সভ্য সমাজে ঘটকালী করার সুবাদে লোকের সাথে মিশতে মিশতে তার অতটুকু জ্ঞান হয়েছে। সে জানে গায়ের লোকগুলো এক একটা মানুষের আকৃতির আড়ালে পশু ছাড়া আর কিছু নয়। এদের উপর ভরসা করা যায় না। আমজাদ তবুও হাসে। আশায় বুক বাঁধে। সে নিজেই খনিকটা দায়িত্ব নিয়ে নেয় বিয়েটা টিকিয়ে রাখার।
বাজারে গিয়ে একটা বড় সাইজের বোয়াল মাছ কেনে সে। পাত্রের মায়ের বোয়াল মাছের প্রতি দুর্বলতার কথাটা আমজাদ জানে। সাথে নিয়ে নেয় কেজি পাঁচেক কালোজাম। দুটো বড় সাইজের টাটকা লাল মোরাগ। অন্য হাতে ঝুলিয়ে নেয় আম জাম কাঠাল। কিছুই বাদ যায়না। বাকীটা তার ছেলেদের মধ্যে থেকে একটার মাথায় ঝুড়িতে তুলে দিয়ে আমজাদ রওনা দেয় হাওলাদার বাড়ীর দিকে। খবর অবশ্য ততক্ষনে লোক মুখে হাওলাদার বাড়ীতে পৌঁছে গেছে।
এ কারনে অবশ্য আমজাদ আলীর সুনামও বিস্তর। এই সুবাদে তিনি দরিদ্র অসহায় পিতামাতার ভরসারও কেন্দ্রস্থল। কেউ কেউ বলে আমজাদ আলী নিদারুন সত্তয়াবের কাজ করছে। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচছে। তবে অনেকের কাছেই আবার আমজাদ আলী সাক্ষাত যমদূতত্ত। যাদের সর্বনাশ হয়েছে তাদের কথা থেকেই বলছিলাম। আমজাদ আলীর কথা শুনলে তাদের যেমন হুস থাকে না তেমনি গায়েও কাঁটা দেয়। আমজাদকে পারলে তারা চিবিয়ে খায়। কিন্তু শত হলেও ঘটক। সবারই একটু আধটু কাজে লেগে যায়। তাই বিরক্ত হলেও সহজে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলে না। আমজাদ আলীর দিনকাল ভালই যাচ্ছে বলতে হবে।
আমজাদ আলীর প্রতিটি দিনই কীর্তিময়। এই যেমন কিছু দিন আগে সরকারী চাকুরী পাওয়া এক দুর্দান্ত পাত্রকে বিয়ের পাশাপাশি দশ লাখ টাকা যৌতুক পাইয়ে বিয়েুর কাজটা সমাধা করে দিল। সবাই তো মহাখুশী। পাত্রী সুদর্শনা। দীঘল কালো চুল। জোড় ভ্রু। গৌরবর্ণা। দেহসৌষ্ঠব যার পর নাই। পাত্র তো মহাখুশী। খুশী হওয়ারই কথা। ক্ষুধার্ত ব্যাঘ্রের সামনে নরম হরিণ শাবক।
মধু চন্দ্রিমা সেরে আসতে না আসতেই তুলকালাম। পাত্র পক্ষের তোপের মুখে আমজাদ কিছু দিনের জন্যে হলেও এলাকা ছাড়া। সুরমা দেওয়া চোখের উজ্জ্বল চেহারার মানুষটির মুখে হাসি আনন্দের লেশ মাত্রও নেই। বরং সেখানে ভীতি। পাত্রর মামা পুলিশের বড় কর্তা। না জানি কি হয় এবার। কেন যে এতো বড় একটা ঝুঁকি সে নিতে গেল। কোন মাথায় এরকম একটা বাজে বুদ্ধি এলো। অবশ্য বুদ্ধির দোষ দিয়ে কি লাভ। কমিশনটা ভালো ছিলো। পাত্রী পক্ষ তাকে টার্গেট দিয়েছিলো ভালো পাত্র ধরিয়ে দিতে পারলে কমসে কম দুলাখ টাকা কমিশন। আমজাদও লোভ সামলাতে পারেনি। এতো টাকা একসাথে। আমজাদের ঘরটা তোলা দরকার। তিন তিনটে বউয়ের খোরাকী। প্রায় আট দশটা ছেলেপুলের খানা দানার পাশাপাশি পড়াশুনার খরচ। কাহাতক সামলানো যায়। আমজাদ আলী পেয়ে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি। হাওলাদার বাড়ীর যুৎসই পাত্রকে সে ঠিক ঠিক গছিয়ে দেয়। দোষ কি শুধু তার একার। পাত্রর মায়েরও তো অনেকটা দায় আছে। কথা তো দশ লাখেরই ছিলো। অনানুষ্ঠানিক ভাবে তো আরও পাঁচ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন। অবশ্য মেয়ের ত্রুটির বিনিময়ে নয়। জাষ্ট বিয়ের আগ মুহুর্তে বেঁকে বসে চাপটা দিয়েছিলেন। আমজাদের তখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এই অবস্থায় বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া ঘটকের জন্যে সবচেয়ে বড় অমর্যাদার। অবশ্য আমজাদ শেষ পর্যন্ত হারেনি। পাত্রী পক্ষকে বলে কয়ে বাড়তি পাঁচ লাখ ঠিকই ম্যানেজ করে দিয়েছিলো। কিন্তু ঝামেলা তবুও তার পিছু ছাড়েনি। মাথা গরম করা পাত্রের মামাই ভেঝালটা বাড়িয়েছে। ব্যাটা পুলিশের বাচ্চা। নিজে তো একটা ঘুষখোর। তার উপরে লুচ্চা। কারো ভালো দেখতে পারে না। আমজাদের মাত্র একটু কপাল খুলেছিলো তাও তার সহ্য হচ্ছে না। তবে আমজাদ হাল ছাড়ার পাত্র না। সে ঠিকই সব ম্যানেজ করে নেবে। দুলাখ টাকার মামলা। যা তা ব্যাপার না। তার উপরে বিয়ে তো হয়ে গেছে। এখন না বললে হবে নাকি। মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে ছেলে মেয়ে ইঞ্জিন গরম করে এসেছে। তাদের ব্যাপারটাতো এখন ফুল খিলি গুলশান গুলশান। আমজাদ কিছুটা হলেও ঝুঁকি মুক্ত। কপাল ভালো বিয়ের আগে ব্যাপারটা ধরা পড়েনি। তাহলে সবটাই মাঠে মারা গেছিল। পুরো প্ল্যানটা ভেস্তে যেত। আমজাদ অবশ্য সব ধরনের সতর্কতাই অবলম্বন করেছিল। তবুও ঝামেলা বাধতে আর সময় লাগে না। নাও কাম, বিয়া কাম আরও যেন কি কামে ঝামেলার শেষ নেই। আমজাদ সবই জানে। সে তাই নায়ে ভালো করেই গিট দিয়েছিল। স্রোতেও যাতে ভেসে যেতে না পারে। অবশ্য ভেসেও যায়নি। শেষ পর্যন্ত সে পাত্র পাত্রী কে মধুচন্দ্রিমা থেকে ঘুরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
অবশ্য গোলটা বাঁধে সেখান থেকে ফেরার পর। নির্দোষ গোবেচারা পাত্র সবাইকে বলে দিয়েছে যে মেয়ের এক চোখে সমস্যা। পাথর বসানো। দোষ অবশ্য মেয়েরও নয়। মেয়ে যারপরনাই ভালো। সতী সাধ্বী। সুন্দরী। সাত চড়ে রা নেই। মাথা তুলে কথা বলে না। লেখা পড়ারয় ভালো। গায় গতরে ফেটে পড়া যৌবন। এরকম মেয়ে কার না পছন্দ। কিন্তুু সমসাটা হয়ে গিয়েছিলো শৈশবে। দুষ্টুমি করতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গিয়ে চোখের মধ্যে বাঁশের চোখা কঞ্চি ঢুকে যায়। শেষ মেষ চিকিৎসক সুন্দর একটা পাথর বসিয়ে দিয়েছেন। পাত্রী দেখার সময় কেউ সেটা ধরতেও পারেনি। তাছাড়া পাত্র পক্ষেরও চাপ ছিলো। সুন্দরী পাত্রীর পাশাপাশি দশ লাখ কাঁচা টাকা। পাত্রের মায়েরও কিছুটা তাড়া ছিলো বাড়তি পাঁচ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মন্দ না। তাই তাড়াতাড়ি ধুমধাম করেই হয়ে যায়। সমস্যার দিকে কারো নজর পড়েনি। তাছাড়া পাত্রী সব সময় আধুনিক চশমা পড়ে। ধরা পরাটা একটু কঠিন। সবচেয়ে বড় কথা পাত্রীর দীঘল কালো চুল, বাঁধভাঙ্গা যৌবনের দিকেই সবার নজর ছিলো। এরকম মেয়ে হাজারে একটা মেলে না। বিশেষ করে আজকাল তো গাঁও গেরামে সীতার মতো সতী মেয়ে বলতে গেলে নেইই। সব মিলিয়ে অন্য কিছু নিয়ে ভাবার অবকাশ কারোরই ছিলো না। যা হোক শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়ে গিয়েছিলো।
এই যখন অবস্থা আমজাদের মুখে তখনও কৃত্রিম হাসি। যদিও কলিজা শুকিয়ে কাঠ। শেষ পর্যন্ত যদি বিয়েটা না টেকে। গাঁও গেরামের ব্যাপার। সামান্যতেই রক্তারক্তি কান্ড। তার উপরে বিয়ে থার ব্যাপার। আমজাদ নিজেও কম শিক্ষিত হলেও সভ্য সমাজে ঘটকালী করার সুবাদে লোকের সাথে মিশতে মিশতে তার অতটুকু জ্ঞান হয়েছে। সে জানে গায়ের লোকগুলো এক একটা মানুষের আকৃতির আড়ালে পশু ছাড়া আর কিছু নয়। এদের উপর ভরসা করা যায় না। আমজাদ তবুও হাসে। আশায় বুক বাঁধে। সে নিজেই খনিকটা দায়িত্ব নিয়ে নেয় বিয়েটা টিকিয়ে রাখার।
বাজারে গিয়ে একটা বড় সাইজের বোয়াল মাছ কেনে সে। পাত্রের মায়ের বোয়াল মাছের প্রতি দুর্বলতার কথাটা আমজাদ জানে। সাথে নিয়ে নেয় কেজি পাঁচেক কালোজাম। দুটো বড় সাইজের টাটকা লাল মোরাগ। অন্য হাতে ঝুলিয়ে নেয় আম জাম কাঠাল। কিছুই বাদ যায়না। বাকীটা তার ছেলেদের মধ্যে থেকে একটার মাথায় ঝুড়িতে তুলে দিয়ে আমজাদ রওনা দেয় হাওলাদার বাড়ীর দিকে। খবর অবশ্য ততক্ষনে লোক মুখে হাওলাদার বাড়ীতে পৌঁছে গেছে।
Comments
Post a Comment