১৯৭১ সালের ২৬শে
মার্চ হঠাৎ করেই
পাক বাহিনী
পূর্ব পাকিস্তানকে
আক্রমন করে
বসে।
অপারেশনের নাম দেওয়া হয় “অপারেশন
সার্চ লাইট”।
শুরুতেই প্রশ্ন
চলে আসছে
এই আক্রমন
কতোটা প্রয়োজনীয়
ছিলো।
শেখ মুজিব
নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল মেজরিটি নিয়ে। উভয়
পাকি¯তানের প্রধানমন্ত্রীর
পদ ছিলো
তার জন্যে
নৈতিক এবং
ন্যায্য দাবী। সবচেয়ে
বড় কথা
বাঙ্গালী যদি
উভয় পাকি¯তানের
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নাই হয়
তাহলে তাদের
নিয়ে ২৪
বছর একত্রে
থাকা কেন?
শুরুতেই আলাদা
করে দিলে
পারতো।
কে না
জানে পূর্ব
পাকি¯তান বরাবরই
সংখ্যাগরিষ্ঠ। মেনে নিলাম শেখ
মুজিব পশ্চিম
পাকিস্তানে কোন আসন পাননি।
ভুট্টোও তো
পূর্ব পাকি¯তানে
কোনো আসন
পাননি।
তাহলে কি
ভুট্টোর কথাই
ঠিক-ওদার
তুম, ইদার
হাম।
এটা তো
আলাদা হয়ে
যাওয়ার সরাসরি
ইঙ্গিত।
তাহলে ভুট্টোই
কি স্বাধীন
বাংলাদেশের প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা।
সময়ে সবকিছু বদলে
যায়।
এখন স্বাধীনতার
৪৪ বছর
পর অনেক
ইস্যু জড়ো
হয়েছে।
কিন্তু একটা
কথা মনে
রাখতে হবে
সমস্যা কিন্তু
এখনও তার
গভীরেই রয়ে
গেছে।
আওয়ামীলীগ ইতোমধ্যে অনেক বিতর্কিত বিষয়ের
সমাধান করেছে। এটা
অত্যšত
ভালো বিষয়। কিন্তু
এসব সমাধান
গভীরের ক্ষত
কতটা ভালো
করতে পারবে
তা ভাববার
বিষয়।
আমরা কি
মন থেকে
সত্যিই সত্যিই
আজও বাংলাদেশকে
মেনে নিতে
পেরেছি।
নাকি আজও
আমাদের পুরাতন
প্রভু পাকি¯তানিদের
বুটের নীচে
আমাদের ভবিষ্যত
দিক নির্দেশনা
খুঁজি।
বিষয়টা নিয়ে
ভাববার যথেষ্ট
অবকাশ আছে।
উন্নয়ন তখনই অর্থবহ
হবে যখন
জাতি তার
চিšতা
চেতনায় এক
হতে পারবে। ফ্যাসিষ্ট
জার্মানীকে আমরা যতই ঘৃনা করি
তারাতো তাদের
চিšতা,
চেতনা, লক্ষ্যে
এক হতে
পেরেছিলো।
আর এ
কারনেই একটা
বিরাট বিশ্বযুদ্ধ
চালিয়ে যাওয়ার
পাশাপাশি পুরো
পৃথিবীর মানচিত্রটাই
বদলে দিতে
সক্ষম হয়েছিলো। অস্বীকার
করার উপায়
নেই দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো
স্বাধীন রাষ্ট্রের
জন্ম হয়েছে
তা আর
কখনও সম্ভব
হয়েছিল কিনা
আমার জানা
নেই।
হ্যারল্ড লাস্কি
তার দ্যা
স্টেট-এ
রাষ্ট্রের পরিচালনার দর্শন লিখেছেন।
নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি
লিখেছেন ‘দ্যা
প্রিন্স’-এ।
প্লেটোর ‘রিপাবলিক’ কিংবা
জন ষ্টুয়ার্ট
মিল এর
‘অন লিবার্টি’ তে
আমরা অনেক
কিছুর সন্ধান
পাই।
ইসলামী বিধানকে আমরা
সবার উপরে
রাখতে চাই। কারণ
এটাই সবচেয়ে
পরীক্ষিত ও
কার্যকরী পদ্ধতি। কারন
নিঃসন্দেহে এটা স্বর্গীয় এবং নির্ভূল। মানুষের
জন্যে মানুষের
স্রষ্টার মতবাদ
শ্রেষ্ঠ হবে
এটাই স্বাভাবিক। নিকোলো
মেকিয়াভেলি তার প্রিন্স-এও এ কথাই বলেছেন। কথা
হচ্ছে আমরা
কতটুকু প্রস্তুত
এই শ্রেষ্ঠ
বিধানকে বাস্তবায়ন
করতে।
এটা দীর্ঘ
আলোচনা।
আজ থেকে চৌদ্দশ
বছর আগে
আরবের বুকে
যে ইসলাম
এসেছিল তার
যেটুকু সুবাস
এ পর্যšত এসে
পৌঁছেছে তার
সাথে যুক্ত
হয়েছে এই
অঞ্চলের নানান
সামাজিক ও
ধর্মীয় রীতিনীতি। এর
কিছুটা আপনাআপনি
মিশেছে আর
কিছুটা মেশানো
হয়েছে।
এর মধ্যে
ষড়যন্ত্র ছিলো। ছিলো
সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্ত।
রাজ্য বি¯তারের
নেশা, অ¯িতত্বকে
টিকিয়ে রাখা,
ধর্মান্ধ, স্বার্থপর, লোভী কতিপয় মানুষের
অসৎ
উদ্দেশ্য।
যে যে
ভাবে পেরেছে
তার স্বার্থ
উদ্ধারের চেষ্টা
করেছে।
খনি থেকে
মুক্তো উদ্ধারের
জন্যে প্রত্যেক
খননকারী যেমন
তার খেয়াল
খুশী মতো
খনন কার্য
চালায় তেমনি
আমাদেরও আর্থ
সামাজিক রাজনৈতিক
আর ধর্মীয়
জীবনের অনুরূপ
কিংবা তার
চেয়েও জঘন্য
এক্সপেরিমেন্ট চালানো হয়েছে। এমনটা
হওয়াটাই স্বাভাবিক। সবাই
তার নিজের
ভালোটা বোঝে। কিন্তু
গর্বের বিষয়
মুসলমানদের কুরআন এবং হাদীস এখনও
অবিকৃত।
কিয়ামত পর্যন্ত
তা অবিকৃতই
থাকবে।
কিন্তু আমরা
কি তার
উপর প্রতিষ্ঠিত
আছি?
স্বাধীনতার পর ৪৪
বছর পার
হয়েছে।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে তিনবার।
মোট সময়কাল
মোটামুটি ১২
বছরের মতো। প্রথমবার
দলটির সময়
চলে গেছে
রাজনৈতিক ও
আমলাতান্ত্রিক জঞ্জাল সরাতে সরাতে।
দ্বিতীয় বারের
বেশীরভাগ সময়
চলে গেছে
অতীতের গ্লানি
মোচনে।
তৃতীয় বারে
এই দুইয়েরপাশাপাশি
উন্নয়নের চাকাও
সচল রাখতে
হচ্ছে।
নানামুখী প্রচেষ্টা
বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু কথা
এখানে নয়। চেতনার
যে জায়গাটা
সেখানে কতোটা
মৌলিক পরিবর্তন
হয়েছে।
নাকি রাজনৈতিক
চাপের মুখে
কোনঠাসা হয়ে
যাওয়া কিছু
মানুষ আপাততঃ
অস্তিত্ব টিকিয়ে
রাখতে ঘাঁপটি
মেরে আছে। সময়
সুযোগ আসলে
তারা দ্বিগুন
শক্তি নিয়ে
ঝাপিয়ে পড়বে
সবকিছু নস্যাৎ করে
দিতে।
একটা কথা
মনে রাখতে
হবে নির্মানে যতোটা
সময় লাগে
ধ্বংসে লাগে
না তার
কিঞ্চিতও।
ধর্মান্ধতা কি কখনও দেশপ্রেমের উপরে
যেতে পারে। দেশপ্রেমতো
ধর্মেরই বিধান। কিন্তু
তার বা¯তবায়ন
কই।
কেন ধর্মীয়দলগুলো
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে
সবসময় দেশকে
তাদের প্রতিপক্ষ
বানিয়ে ফেলে। এ
শিক্ষা তাদেরকে
কে দিচ্ছে। এর
মূল কোথায়। আমাদেরকে
সেখান থেকেই
ভাবতে হবে।
আমাদের দেশে কতগুলো
ধারণা প্রতিষ্ঠিত
হয়ে গেছে। ধর্মের
বুলি আওড়ানো
কতিপয় মানুষ
যাদের নিজেদের
মধ্যেই ধর্ম
মূলতঃ কোন
জায়গা করে
নিতে পারেনি,
যারা আজও
ব্যক্তিগত সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠতে পারেনি,
যারা কখনও
মানুষের কল্যানে
এগিয়ে যেতে
তৈরী নয়,
সমাজের উন্নয়ন,
দেশের উন্নয়ন,
যাদের চিšতা-চেতনার
মধ্যে নেই
তারা সামান্য
কিছু কিতাবী
বিদ্যা অর্জন
করে ধর্মের
এবং কল্যাণে
নেমে পড়েছে। কিন্তু
এটা কি
এতোটাই সহজ। আমার
দুঃখ লাগে
যখন দেখি
আমাদের এই
প্রজন্মকবি আলতাফ হোসেন হালীর কথাই
জানে না। হালীর
কথা না
হয় বাদই
দিলাম আমরা
আল্লামা ইকবালই
বা কতটুকু
পড়ি।
আসলে আমরা
দারুন সেয়ানা। কি
মোল্লা, কি
রাজনীতিবিদ, কি আমার মতো আম
জনতা, মধু
খেতে সবাই
তৈরী।
কিন্তু মৌমাছি
কত কষ্টে
এই মধু
জমা করে
তা নিয়ে
ভাবতে রাজী
নই।
আমরা কি
ধরেই নিয়েছি
যে, টুপি,
জোব্বা পড়ে
কিছু জ্বালাময়ী
বক্তৃতা দিলেই
ধর্ম আর
দেশ রক্ষা
হয়ে যাবে। ইসলাম
কি এতোই
দুর্বল যে
আমার মতো
অপদার্থের সাহায্য না হলে তা
বিপন্ন হয়ে
যাবে।
এমনটা ধারণা
করার কোন
কারণ নেই। আল্লাহ্র
জমিনে আল্লাহর
দ্বীন কায়েমের
জন্যে আল্লাহ
নিজেই যথেষ্ট। তিনি
শুধু দেখছেন
আমরা কে
কি করছি। প্রয়োজন
হলে তিনি
এক আছাড়ে
সব গুঁড়ো
করে দিয়ে
আবার নতুন
কিছু সৃষ্টি
করবেন।
আমাদেরকে ডেকেও
জিজ্ঞেস করবেন
না।
অতএব, সময়
থাকতে ভন্ডামী
ছেড়ে সত্যের
পথে চলতে
শুরু করা
উচিত।
আমাদের নিজেদের
জন্যেই এটা
জরুরী।
আমাদের সমস্যা মূলত:
কোথায়।
আমরা হয়তো
কেউই তা
জানি না। অথবা
জানি কিন্তু
মানি না। আবার
মানলেও সংশোধন
করতে রাজী
নাই।
এতে সমস্যা
অনেক।
অনেকের স্বার্থের
হানি হবে। তাই
হয়ত সবাই
চুপচাপ।
মূল সমস্যা
এখানেই।
ইংরেজ আমলে আমরা
হিন্দু বিদ্বেষ
নিয়ে ছিলাম। ইংরেজরাও
তাদের টিকে
থাকার জন্যে
রাজনৈতিক কৌশল
হিসেবে এটাকে
ব্যবহার করেছিল। তাতে
ফায়দাও হয়েছিল। ১৯০
বছর তার
টিকে গিয়েছিলো। আসল
সমস্যার শুরু
ওখান থেকেই।ইংরেজরা
আমাদেরকে যাবতীয়
জিনিসের অপব্যবহার
শিখিয়ে দিয়ে
গিয়েছিলো।
তার আগ
পর্যšত
উপমহাদেশের হিন্দুরা খাঁটি হিন্দু ছিলো। মুসলমানরা
খাঁটি মুসলমান
ছিলো।
সমস্যার শুরু
হলো তারপর
থেকেই।
আমাদের মধ্যেই একটা
গোষ্ঠী পাকি¯তানকে
তাদের আদর্শ
হিসেবে উপস্থাপন
করে।
আমিও না
হয় আপাতত:
পাকি¯তানকে আদর্শ
হিসেবে মেনে
নিলাম।
১৯৪৭ সালের
পর থেকে
পাকি¯তানের রাজনৈতিক
পরিক্রমা কি
একবারও ভেবে
দেখেছি।
পাকি¯তানে কখন
সত্যিকারের ইসলামী শাসন কায়েম হয়েছে। আমার
কাছে তো
এমন কোন
তথ্য উপাত্ত
নেই।
বরং সেখানে
ইসলামী শাসন
কায়েম হওয়া
কঠিন।
কারণ বহুবিধ। অন্যতম
কারণ বিভিন্ন
জনগোষ্ঠী।
তার চেয়ে
বরং বাংলাদেশে
সহজ।
আমরা একই
জনগোষ্ঠী।
এক ধরনের
চিšতা,
চেতনা, সামাজিকতা। আমরা
নিজেদের ফেলে
অন্যদেরকে আদর্শ হিসেবে নিয়েছি।
সমস্যার মূল
এখানেও।
আসল কথা হলো
পাকি¯তান কিছু
না।
ইসলামী শাসন
নিয়েও এসব
জনগোষ্ঠীর মাথাব্যাথা নেই। বিরোধীতার
জন্যে বিরোধীতা। তুমি
একটা কিছু
বলেছ।
আমাকে প্রতিপক্ষ
হতে হলে
একটা কিছুতো
বলতেই হবে। অতএব
যৌক্তিক অযৌক্তিক
পরের কথা। আগে
কিছু একটা
বলা চাই।
মক্কার আরবদেরও এই
একই সমস্যা
হয়েছিল।
তারা জানত
মুহাম্মদ (সা.) সত্য নবী।
তাঁর নবুয়তী
সত্য।
কিন্তু তারা
বিরোধীতা করে
বসল।
কারণ একটাই।গোমরাহী। এই
গোমরাহীই ছিল
পৃথিবীর প্রথম
পাপ।
ইবলিশ প্রথম
এই পাপ
করেছিল।
সেখান থেকেই
শুরু।
বিরোধীতা আমাদের
স্বভাবে ঢুকে
গেল।
একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা স্বদেশের
পক্ষ নিলো। আর
অমনি একটা
দল দাঁড়িয়ে
গেল তাদের
বিরুদ্ধে।
কি যুক্তি
ছিলো তাদের
পক্ষে।
পাকি¯তান রাষ্ট্রের
বা¯তবতা যে
ততদিনে শেষ
হয়ে গিয়েছিলো
তা তারাও
জানত।
স্বদেশের পক্ষে
দাঁড়িয়ে এবং
সংস্কারের মাধ্যমে কল্যাণের চিšতা
করলে অনেক
বেশী মঙ্গল
হতো।
কোন প্রকার
যুক্তিতর্ক ছাড়াই কিন্তু তারা সেটা
করতে পারত। কিন্তু
তা না
করে রাতারাতি
প্রতিপক্ষ হয়ে গেলো।
কল্যাণ কি কিছু
হলো।
৪৪ বছর
ধরে আমরা
সেই গ্লানি
বহন করে
আসছি।
রাজাকারের দায়ভার আমরা আজও বহন
করছি।
একথা ঠিক
অপরাধীর বিচার
হওয়া দরকার। কিন্তু
কয়েকজন চিহ্নিত
অপরাধীর ফাঁসি
হলেই তো
সব মানুষের
মনের ভেতর
বাংলাদেশের মানচিত্র বসানো হয়ে যাবে
না।
যারা তাদের
হৃদয়ে পাকি¯তানের
মানচিত্র এঁকেনিয়ে
বসে আছে
তাদের অšতর থেকে
আগে তা
মুছতে হবে। বাংলাদেশকে
যে গ্রহণ
করতে পারবে
না তার
জন্যে এই
ভূখন্ডে ইসলাম
কায়েমের আন্দোলন
অবাšতর
ছাড়া আর
কিছু নয়। হয়রত
মুহাম্মদ (সা.) আগে মক্কা অর্থাৎ তার
মাতৃভূমি এবং
সেখানকার মানুষগুলোকে
ভালোবেসেছিলেন। অত:পর অনেক
কিছুর যোগ্য
হয়েছিলেন।
সবচেয়ে বড় কথা
তিনি ৪০
বছর বয়সে
নবুয়তী পেয়েছিলেন। প্রথমে
নবুয়তীর যোগ্য
হয়েছিলেন।
অত:পর
দায়িত্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আমরা কোন
কিছুর জন্য
যোগ্য হতে
চাই না।
স্বাধীনতার পর ৪৪
বছর পার
হলো।
কোন সুষ্ঠু
রাজনৈতিক দর্শন
আজও দাঁড়ায়নি। দাঁড়াবে
কেমন করে। রাজনৈতিক
প্রয়োজনে একে
অপরের সাথে
কথা বলতেও
রাজী না। কেউই
জানে না
তার দলের
লক্ষ্য,উদ্দেশ্য
কিংবা আদর্শ
কি? না
জানাটাই স্বাভাবিক। কোন
থিংকট্যাংক নেই। নেই কোন
গুরু।
সিরাজুল ইসলাম, যিনি
গুরু নামে
পরিচিত, ভুল
পথে পা
বাড়িয়ে পুরোটাই
মাটি করে
দিলেন।
তাছাড়া এটা
ভালো করে
জানা উচিত
শতকরা ৯০
ভাগ মুসলমানের
দেশে সমাজতন্ত্র
যায় না। আমি
ধর্মীয় অনুভূতির
কথা বাদই
দিলাম।
আপনাকে সবসময়
গ্রহণযোগ্য বিষয়টির সাথে থাকতে হবে। একজন
অভিনেত্রী কাজল এবং একজন অভিনেতা
শাহরুখ খান
যখন একটা
‘দিলওয়ালে দুলহানিয়ালে জায়েঙ্গে’করেন
তখন তা
যে কোন
একটা হলে
২০ বছর
চলে।
কিন্তু এই
দুজন মিলে
যদি একটা
নোংরা ছবি
করতো আমার
তো মনে
হয় তা
যতোই রসালো
হোক না
কেন এক
সপ্তাহ চলত
কিনা সন্দেহ। আমাদেরকে
গ্রহণযোগ্য জায়গাটায় থাকতে হবে।
সেটা ধর্ম
কিংবা অন্য
কোন বিধানই
হোক না
কেন?
হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা
শিখ যে
কোন ধর্মীয়
বিধানই হোক
না কেন
তার যদি
কোন গভীরতা
না থাকত
তাহলে এতো
বছর ধরে
টিকে থাকত
না।
মনে রাখতে
হবে নিতাšত নোংরা
মানুষও নোংরা
জিনিসবেশী দিন গ্রহন করে না। ভালো
মানুষতো বাদই।
আমরা চেতনার কথা
বলতে চেয়েছিলাম। নানা
প্রসঙ্গ এসে
যাচ্ছে।
আসাটাই স্বাভাবিক। ব্যাপারটা
কঠিন।
হাজার বছরের
ইতিহাস নানা
জঞ্জালে ভরপুর। এখানে
তিতুমীর, হাজী
শরীয়তুল্লাহ কিংবা সিরাজউদ্দৌলা যেমন আছে
তেমনি মীরজাফর,
মীরকাসিমও আছে।
আসল কথা হলো
যতদিন না
এই ভূখন্ডকে
আমরা আমাদের
বলে মানব
ততোদিন কোন
তত্ত্ব কথাই
কাজে দেবে
না।
বর্তমানে যেটা
চলছে তা
হলো মলম
দিয়ে ক্ষত
শুকানোর চেষ্টা। কিন্তু
এটা তো
সাময়িক।
অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। না
হলে কেমো। তাতে
না হলে
অপারেশন।
রোগীর বাঁচামরা
সময়ের ব্যাপার। চিকিৎসায় ভুল
হলে চলবে
না।
কে হবে
সেই ডাক্তার। শেখ
হাসিনা একা
আর কতো
লড়বেন?
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে
অনেক কিছু
করার প্রয়োজন
ছিলো।
বঙ্গবন্ধু একা কিছুটা হলেও চেষ্টা
করেছিলেন।
এইচ টি
ইমামের বাংলাদশ
(১৯৭১-১৯৭৫)
বইটি পড়লে
অনেক কিছু
জানা যাবে। কিন্তু
আমার তো
মনে হয়
এটুকু যথেষ্ট
ছিলো না।
বাকিরা কি করলো। আওয়ামীলীগের
প্রতিপক্ষ হয়ে গেলো। তারপর
বিরোধীতা।
শেখ সাহেব
যেন একাই
বাংলাদেশের পক্ষে। সম¯ত দরকার
তার একারই। বাকিরা
সবাই প্রতিপক্ষ। পরিণতি
যা হবার
তাই হলো। আমাদের
এতিম করে
দিয়ে তিনি
চলে গেলেন। টুঙ্গীপাড়ার
মাটিতে শেখ
মুজিবের মৃতদেহের
সাথে সাথে
আমাদের সম¯ত
চেতনার কবর
হয়ে গেলো।
আমরা মেরে আবার
চেষ্টা করলাম। কোন
লাভ হয়নি। খন্দকার
মো¯তাকের সমালোচকদের
অভাব নেই। আমি
নিজেও ঘৃনা
করি লোকটাকে। কিন্তু
মো¯তাকের তিন
মাসের শাসনামল
নিয়ে কখনও
ভেবে দেখেছি?
আর্মিকে তিনি
কখনো পাত্তাই
দেননি।
ইসলামী চেতনা
উজ্জীবিত রাখতে
যাবতীয় চেষ্টা
করেছিলেন।
আমার মনে
হয় তার
মতো কুশলী
শাসক খুব
কমই আছে। তিনিই
তৎকালীন
প্রতিক্রিয়াশীল চক্রদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফেলে
বিভ্রাšত
করতে পেরেছিলেন।
মো¯তাকের
কুটিল চাল
বুঝতে পেরেছিলেন। ফলে
জিয়াউর রহমান
উঠে এলেন। বাকিদের
কিছুটা হলেও
সুবিধা হলো। জিয়ার
চেয়ে মো¯তাক
হাজার গুন
ভালো ছিলেন। মো¯তাকের
দর্শন পরিষ্কার
ছিলো।
জিয়ার দর্শন
আজও অস্পষ্ট। সেই
অস্পষ্টতার ধারায় বাংলার বেশীরভাগ মানুষ
আজও ঘুরপাক
খাচ্ছে।
সত্য কথা বললে
এদেশে তার
বড় সমস্যা। কিন্তু
তারপরও সত্য
বলতে হবে। সত্যকে
জানতে হবে। মানতে
হবে।
বাংলাদেশে যদি ইসলামী শাসন আসে
সবার আগে
আমি এগিয়ে
যেতে রাজী
আছি।
এখন কথা হলো
যেটা কে
সেটা আনবে?
আমাকেও এগিয়ে
যেতে হবে। আমি
রাজী আছি। সন্ত্রাস,
দাঙ্গা আর
বোমাবাজির পথে না। শাšিতর পথে। ইসলাম
মানে শাšিত।
মুসলমান মানে
আত্মসমর্পনকারী। শাšিতর পথে
আত্মসমর্পনই আমাদের মূল কাজ।
কিšতু
বর্তমানে হচ্ছেটা
কি।
আপাত দৃষ্টে হলেও
আমাদের কিছুপরিকল্পনাহয়তো
একটা পথ
খুঁজে পেয়েছে। কিšতু অন্যান্য
পরিকল্পনার কি অবস্থা। শিক্ষানীতির
কি অবস্থা। একদিকে
সাধারণ শিক্ষায়তন। অন্যদিকে
আলিয়া মাদ্রাসা। একদিকে
ইংলিশ মিডিয়াম। অন্যদিকে
কওমী মাদ্রাসা। কেউই
জানে না
তার গšতব্য কোথায়।
যদিও আপাত:দৃস্টে
কোন একটা
দল মনে
করছে তারা
কামিয়াব কিন্তু
আলটিমেট বলে
কিছু নেই। অন্যদেরকে
কোনঠাসা করে
রাখলে তারা
কি ছেড়ে
কথা বলবে। একটা
নৌকায় সব
যাত্রী মরার
জন্য একটা
ছিদ্রই যথেষ্ট। আমরা
এটা ভুলে
যাই।
স্বাধীনতার পর ৪৪
বছর ইতোমধ্যে
পেরিয়ে গেছে। সময়টা
আসলে দেখতে
দেখতেই পেরিয়ে
গেলো।
ভাল কিছু
করার মতো
সময় যে
আসেনি তা
কিন্তু নয়। কিন্তু
সেই সময়গুলোর
বেশীরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে রাজনীতির
নানান ধরনের
বাঁকে।
আমরা সবাই জানি
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে আওয়ামীলীগই ছিলো
প্রধান রাজনৈতিক
দল।
আরও কিছু
রাজনৈতিক দলও
যে ছিলো
না তা
কিন্তু নয়। কিন্তু
তাদের কেউই
কেন জানি
মঞ্চ দখল
করতে পারেনি। কারণগুলো
হয়ত বহুবিধ। কিন্তু
একটা কারণ
একেবারেই স্পষ্ট। সেটা
হলো এসব
দলের নেতাদের
দূরদর্শীতা। একমাত্র আওয়ামী লীগের
কান্ডারী শেখ
মুজিব ছাড়া
অন্য কারো
মধ্যেই সেই
দূরদর্শীতা ছিল না। না
থাকার কারণও
ছিলো।
তাদের সবাই
বলতে গেলে
এক এক
সময় এক
এক ধরনের
টোপ গিলেছেন। কখনও
ক্ষমতার টোপ। কখনও
পদের টোপ। কখনও
আঞ্চলিক পর্যায়ের। কখনও
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের।কখনও পূর্ব
পাকি¯তানে।কখনও অল
পাকি¯তানে।
সত্যি কথা বলতে
গেলে মুজিব
ছাড়া সবাই
কমবেশী ধরা
খেয়েছেন।
ইতিহাসের একটা
মজার ব্যাপার
হলো যখন
ঘটনাগুলো ঘটে
তখন তা
পুরোপুরি স্পষ্টভাবে
বোঝা যায়
না।
তার জন্য
সময় দরকার। আজ
এতো বছর
পর সবকিছু
স্পষ্ট।
একজন সাধারণ
মানুষেরও এটা
বুঝতে কষ্ট
হয় না।
স্বাধীনতার মাত্র পাঁচ
বছরের মাথায়
আমরা আমাদের
স্থপতিকে হারাই। নিঃসন্দেহে
এটা একটা
বিরাট ক্ষতি। কিšতু একথাও
সত্য যে
একা মুজিবের
পক্ষে আমাদের
ঘরে ঘরে
গিয়ে উন্নয়ন
আর সমৃদ্ধির
বাতি জ্বালানো
যেমন সম্ভব
ছিলো না
তেমনি আমাদের
চেতনাকেও শানিত
করা সম্ভব
ছিলো না। ছিলো
না এই
জন্যে যে
আমরা যদি
স্বেচ্ছায় আমাদের অšতরে জঞ্জালবহন করি
তা সরানোর
সাধ্য কার। যে
জাতি ঘুমিয়ে
আছে তাকে
জাগানো যায়,
কিন্তু যে
জাতি জেগে
জেগে জেগে
ঘুমায় তাকে
জাগানোর সাধ্য
কার।
এটা আমার
কথা নয়। মহামানবদের
কথা।শেখ মুজিব
নেতা হিসেবে
অন্যতম শ্রেষ্ঠ। এতে
কোন সন্দেহ
নেই।
কিšতু
একটা কথা
মাথায় রাখতে
হবে যে
তিনিও একজন
মানুষ।
তারও সীমাবদ্ধতা
আছে।
তার কাছে
যেমন কোন
ঝাড়, ফুঁক
বা মন্ত্র
ছিলো না
যা সারা
দেশের মানুষকে
রাতারাতি বদলে
দেবে।
শেখ মুজিবকেও
তার অবস্থানে
আসতে সেই
শৈশব থেকেই
রাজনীতি করতে
হয়েছে।
মুজিব একদিনে
তার অবস্থানে
আসতে পারেননি। এটা
কারও পক্ষেই
সম্ভব নয়। তবুও
আমরা তার
কাছ থেকে
আশা করেছিলাম। আর
সেটা হয়তো
সম্ভবও ছিলো। কিন্তু
সোনার ডিম
দেওয়া হাঁসকে
মেরে ফেললে
সে যে
আর ডিম
দেবে না
এটাই স্বাভাবিক। আমরা
সেই ভুলটাই
করেছিলাম।
আসলে কি
ভুল করেছিলাম?
নাকি পুরো
ব্যাপারটা ছিলো ইচ্ছাকৃত। কতিপয়
অস্থির, উগ্র
আর স্বার্থপর
এবং হীনমন্য
মানুষের ক্ষমতার
লিপ্সার ফসল। একটা
কথা বলে
রাখা দরকার
যে জাতি
২৩ বছর
অন্যের পা
চেটেছে তাকে
স্বাধীনতার মর্যাদা দিলেও সে তা
কতটুকু গ্রহণ
করতে পারবে
এটা প্রশ্ন
সাপেক্ষ।
সেদিন সেটাই
প্রমানিত হয়েছিল। অস্বীকার
করতে লজ্জা
থাকা উচিত
নয়।
প্রতিটি দেশ,
জাতি ও
সমাজকে একটা
সুনির্দিষ্ট নিয়ম বা শৃঙ্খলার মধ্যে
দিয়ে আসতে
হয়।
সেটা হতে
পারে ঐশ্বরিক
কিংবা মানব
রচিত।
কিন্তু তা
যাই হোক
তার মধ্যে
শৃঙ্খলা জরুরী। আমরা
কি আজও
চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি জাতি
হিসেবে আমরা
একটা সুশ্ঙ্খৃল
জাতি।
আমাদের প্রত্যাশা
পূরণের জন্যে
আমরা যে
কোন পন্থা
অবলম্বন করতে
রাজী আছি। এটা
কোনো সুশৃঙ্খল
জাতির বৈশিষ্ট্য
নয়।
আমাদের অনেক
কিছু শিখতে
হবে।
একটা জাতির
জন্যে ধৈর্ঘ্য,
শৌর্য, আত্মত্যাগ
আর কঠোর
পরিশ্রম অনেক
জরুরী।
বাঙালী এ
ব্যাপারে যে
কতটা দেউলিয়া
তা বলার
অপেক্ষা রাখেনা।
১৯৭৫ সালের ১৫ই
আগষ্ট যা
ঘটল তা
থেকে আমাদের
শিক্ষা দেওয়া
উচিত ছিলো। কিন্তু
শেখা তো
দূরে থাক
উল্টো আমরা
তাকে সুযোগ
হিসেবে নিয়ে
নিলাম।
জিয়াউর রহমানের
হাত ধরে
একটা উদ্ভট
মতবাদ প্রতিষ্ঠিত
হলো।
দেশটা যদি
পুরোপুরি একটা
ইসলামিক রাষ্ট্র
হয়ে যেতো
তবে তা
হতো সবচেয়ে
মঙ্গলের।
কিন্তু তাতো
হলোই না
বরং না
ইসলামিক না
অনৈসলামিক এমন একটা জগাখিঁচুড়িঅবস্থার সৃষ্টি হলো। এটা
যে কতোটা
বাজে পরিস্থিতির
জন্ম দিয়েছিলো
তার ফলাফল
পরবর্তীতে তিলে তিলে বোঝা গেছে। এক
বিরাট গভীর
ক্ষত আমাদের
জাতির অšতরকে দ্বিধাবিভক্ত
করে দিয়ে
গেছে যা
সেরে উঠতে
অনেক সময়
লাগবে।
নিঃসন্দেহে ভুল কিছু জানার চাইতে
মূর্খতা অনেক
সুন্দর।
আমাদেরকে এখন
যা কিছু
ভুল শিখেছি
তা ভুলে
যেতে হবে। তবে
তার জন্যেও
সময় লাগবে।
বাঙ্গালী জাতি হিসেবে
বড়ই অসহিষ্ণু। এর
সাথেই এখানে
অনিয়মতান্ত্রিক ক্ষমতার পালা বদল হয়। কতিপয়
অতি ধূর্ত
লোক যেহেতু
এটা জানে
সেহেতু তারাই
বারেবারে সুযোগ
নেওয়ার চেষ্টা
করে।
আমরা ধরা
খাই চেতনে
কিংবা অবচেতনে। অস্বীকার
করার উপায়
নেই চুয়াল্লিশ
বছরে আমরা
এখনও ভোট
কেনার রাজনীতিটাই
বন্ধ করতে
পারলাম না। তবে
একটা কথা
বলে রাখা
দরকার ভোট
বিক্রি করেপ্রতি
পাঁচ বছর
পর পর
অন্তত গরীব
লোক ১০/২০ টাকা
পায়।
কিšতু
কখনও কখনও
রাজনীতির এমন
দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে যে এসব খেটে
খাওয়া মূর্খ
মানুষদেরকে সেই ১০/২০ টাকার
সম্মানটুকুও দেওয়া যায়নি। নিঃসন্দেহে
এটা অত্যšত বাজে
ধরনের পরিতাপের
বিষয়।
আমরা স্বপ্ন
দেখায় ভীষন
অভ্য¯ত।
সবাই এমন
স্বপ্ন নিয়ে
ঘুমাতে যাই
যে ভোর
বেলা ঘুম
ভেঙ্গে উঠে
দেখবো দেশটা
রাতারাতি বদলে
গেছে।
কিন্তু একটা
কথা মনে
রাখতে হবে
যে কোন
কিছু রাতারাতি
বদলায় না। একটি
শব্দ শিখতে
কখনও কখনও
আমাদের একটা
জীবন লেগে
যায়।
একটি রা¯তা
নির্মাণে অনেক
ইট, কাঠ,
বালি, পাথর
প্রাণ দেয়। আমরা
কেমন করে
এতটা সহজে
সব কিছু
প্রত্যাশা করি। অবশ্য এইসব
সহজে প্রত্যাশাকারীরাই
আজ রা¯তার
দুধারে বড়
রাজপ্রাসাদ বানিয়েছে শর্টকাট পদ্ধতিতে দাও
মেরে।
তারা মনে
করে এটা
তাদের সাফল্য। এটা
অত্যšত
ভয়াবহ একটা
ব্যাপার।
প্রতিটি জাতিকে
শীত, গ্রীষ্ম,
বর্ষার মতো
কঠিন সময়
পেরিয়ে আসতে
হয়।
আজকে যে
আমরা কথায়
কথায় আমেরিকার
দুর্বৃত্তায়নের উদাহরণ দেই সেই দুর্বৃত্তায়ন
কিন্তু রাতারাতি
আজকের এই
অবস্থানে আসতে
পারেনি।
অনেক কঠিন
বিষয়ের মধ্য
দিয়ে তাকে
আসতে হয়েছে। সেই
সব বিষয়ের
থেকে তারা
শিখেছে কিভাবে
ঐক্যবদ্ধ হতে
হয়।
আর আমরা
বিষয়টি থেকে
শিখেছি কিভাবে
ভেঙে টুকরো
টুকরো হতে
হয়।
আমাদের এখন
শুধু ভূগোলের
সীমারেখাটাই এক। বাকি সবকিছু
ভেঙেচুরে খান
খান।
ভাষার ব্যবহার
যে কোন
জাতির জন্যে
একটি মর্যাদার
পরিচায়ক।
কিন্তু এ
ব্যাপারে আমরা
যে কোথায়
অবস্থান করছি
তা আমরা
নিজেরাও জানি
না।
এক পক্ষ
অন্য পক্ষের
বিরুদ্ধে যে
সব অকথ্য
ভাষা ব্যবহার
করছে তা
আমাদের প্রত্যেকের
রুচিবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে প্রতিনিয়ত।
কি ঘরে
কি বাইরে
আমাদের ভাষা
ব্যবহারের রুচিবোধ বরাবর একই।
তাই না
আমরা কোন
রাজনৈতিক জনসভায়
ভালো কিছু
জানতে পারি
না সংসদের
অধিবেশন চলাকালীন
টিভিতে কিংবা
রেডিওতে কান
পাতা যায়। আমরা
মূলত: একটা
হযবরল অবস্থার
মধ্যে দিয়ে
যাচ্ছি।
আমরা যদি
একটু লক্ষ্য
করি তাহলে
দেখতে পাবো
যেখানে আমাদের
উত্তরনের কথা
ছিলো সেখানে
ক্রমশই আমরা
একটা খারাপ
পরিস্থিতি থেকে আর একটা খারাপ
পরিস্থিতিতে পতিত হয়েছি। জিয়াউর
রহমানের বিদায়ের
পরে এরশাদ
সরকারের আমল
এসে পড়ল। সেই
সময়টা চলল
প্রায় ৯
বছর।
জাতি কি
মনে করে
মুখ বুঝে
পড়ে রইল
তা আজও
স্পষ্ট নয়। আমার
মনে হয়
আমাদের জাতীয়
জীবনে বারবার
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা এসে মুগ্ধতায় ভাসিয়ে
দিয়ে অবশেষে
সর্বশাšত
করে রেখে
চলে যায়। আমি
হয়তো পুরো
ব্যাপারটা ঠিক লিখে বোঝাতে পারছি
না।
কিন্তু বা¯তবতা
আরও ভয়াবহ। কি
জিয়াউর রহমানের
আমল, কি
এরশাদের আমল
পুরোটাই হয়বরল। এর
কোন জবাব
নেই।
জবাব হবেও
না।
এসব সরকারের
কোনোটাই ধরাবাঁধা
কোন নিয়মের
মধ্যে ছিলো
না।
জিয়াউর রহমান
অগনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজস্ব ফর্মুলায় গণতন্ত্র
উদ্ধারের চেষ্টা
করেছিলেন।
কিন্তু তিনি
হয়তো জানতেন
না খাঁকি
পোশাক পরে
পৃথিবীতে আজ
পর্যন্ত কেউ
গণতন্ত্র উদ্ধার
করতে পারেনি। গণতন্ত্র
উদ্ধার করতে
হলে তাকে
গণমানুষের প্রতিনিধি হতে হবে।
শাসন করা
আর শাসনতন্ত্র
প্রতিষ্ঠিত করা এক জিনিস নয়। এর
মধ্যে বি¯তর
ফারাক।
জগতে অনেক
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর অনেক রাষ্ট্রনীতি
বিষয়ক ফর্মূলা
আছে।
কিন্তু এরা
মোটেই এসবের
ধার ধারেননি। একটা
কথা সব
সময় মাথায়
রাখতে হবে
যে বিজ্ঞান
একটি ধারাবাহিক
এবং সুশৃঙ্খল
প্রক্রিয়া।
কিন্তু আমরা
এর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া আমাদের
মতো করে
ঘটাতে চেয়েছি। ফলে
প্রোডাক্টও যেমন যাচ্ছে তাই হয়েছে
ফলাফলও হয়েছে
তেমনি একেবারেই
যাচ্ছে তাই। আমরা
মূলত: কোন
প্রক্রিয়াই অনুসরণ করিনি। শুদ্ধ-অশুদ্ধ তা
সে যাই
হোক।
কেউ একজন
চেয়েছিলেন কঠোর দমননীতির মাধ্যমেই হয়তো
সবকিছুকে নিয়ন্ত্রন
করা যাবে। শেখ
মুজিব যে
ভুল করেছিলেন
বলে তিনি
মনে করেছিলেন
সেই ভুলগুলো
তিনি করতে
চাননি।
অবশ্য এটা
করতে গিয়ে
তিনি অন্য
ধরনের সব
ভুল করে
বসলেন।
তারপর এলেন
একজন যিনি
তার হৃদয়
দিয়ে পুরো
জাতিকে মুগ্ধতায়
ভরিয়ে দিতে
চাইলেন।
কি রসলীলা,
কি রঙ্গলীলা
সবাই মুগ্ধ
হলো।
কিন্তু ফলাফল
কিছুই হলো
না।
একটা দীর্ঘ
সময় নষ্ট
হলো।
সবার কথাই
তিনি মাথায়
রেখেছিলেন।
কিন্তু তাতেও
মন ভরেনি। শেষমেষ
সবাই একযোগে
বেঁকে বসল। তাকেও
নামতে হলো। এরপরের
পরিস্থিতিগুলোও যে খুব একটা সুখকর
তা কিন্তু
নয় দুটো
দলের মধ্যে
ক্ষমতার ভাগাভাগিটা
সীমাবদ্ধ হয়ে
গেল।
বাকী দুটো
দল ক্ষমতাধারী
দুটো দলের
লেজ ধরে
ঝুলে পড়ল। পাকাপোক্ত
হতে না
পারলেও প্রভাবিত
করতে লাগলো
বরাবরই।
এর ফলাফলও
হলো বিশ্রী
রকমের।
দুটো দলই
বিভ্রাšত
হলো যাচ্ছে
তাই ভাবে। দেখা
গেলো হাতিতে
কান নাড়ছে
না উল্টো
কানই হাতিকে
নাড়ছে।
সবচেয়ে জঘন্য
অবস্থা বলা
যেতে পারে
এটাকে।
আর এর
ফলে আজ
একটা রাজনৈতিক
দলের অ¯িতত্বতো
হুমকির মুখে। ৪৪
বছরে অনেকবার
ক্ষমতার পট
পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু
সবচেয়ে বিশ্রী
যে ব্যাপারটা
তা হলো
সমস্যাগুলো একই জায়গায় একই চেহারা
নিয়েই বর্তমান। গণতন্ত্রায়নের
যে আষাঢ়ে
গল্প আমরা
এতোদিন ধরে
শুনে আসছি
তা আজও
আষাঢ়ে গল্প
হয়েই রয়ে
গেছে।
নি:সন্দেহে
বর্তমান সরকার
ক্ষমতায় আসার
পর থেকে
কাজ করে
যাচ্ছে।
মূলত: কাজ
করতে গিয়ে
তারা জনপ্রিয়
হওয়ার পরিবর্তে
অনেকেরই বিরাগভাজন
হয়েছে।
হওয়াটাই স্বাভাবিক। টাকাগুলো
চলে যাচ্ছে
উন্নয়ন খাতে। তার
চেয়ে বরং
সরকার যদি
এই বিশাল
অংকের টাকা
জনগণের মধ্যে
ছড়িয়ে-ছিটিয়ে
দিতো তাহলে
অনেকেই বাজার
থেকে দেশীয়
কই, মাগুর,
শিং, পাঙ্গাস,
বোয়াল, রূপচাঁদা
এসব কিনতো
আর সরকারের
গুনগান করতো। রাঘব
বোয়াল থেকে
শুরু করে
সামান্য চুনোপুটিও
দূর্নীতির ভাগ পেতে চায়।
তা সে
মৌলভী হোক
আর পতিতা
হোক।
ভাগের বেলায়
আমরা সবাই
সজাগ।
পরিবর্তনের চিšতা কিংবা
কিছু একটা
করার চেষ্টাও
যে হয়নি
তাও কিন্তু
নয়।
কিন্তু পুরোটাই
ছিল বিচ্ছিন্নতায়
ভরপুর।
এদের মধ্যে
অনেকেই ছিলেন
ক্ষমতার বাইরে। অনেকে
আবার ক্ষমতায়
থেকেও দলকে
সাথে পাননি। সুষ্ঠু
পরিবেশের অভাব
সব সময়ই
ছিলো।
ছিলো দলগুলোর
ভেতরে মুক্তমনা
ও গণতন্ত্রমনা
মানুষের অভাব। বেশীর
ভাগ সময়ই
দলগুলো ছিল
এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক
এবং এর
পিছনে অবশ্য
কারণও ছিলো। বাকীরা
কেউই কখনওই
সেই রকম
কোন যোগ্যতা
প্রদর্শন করতে
পারেননি।
অনেকেই ঐতিহাসিক
গুরুত্ব অর্জন
করেছিলেন।
কিন্তু দুঃখের
বিষয় একটাই। আমাদের
জর্জ ওয়াশিংটন
ঐ একজনই। আমাদের
আব্রাহাম লিংকনও
ঐ একজন। বাংলার
রাজনীতি মুজিবময়। মুজিবকে
বাদ দিলে
বাকিটুকু অন্ধকার। তাই
মুজিবের মৃত্যুর
পর বাংলার
রাজনীতি যেন
পথহারা পথিক। আমরা
আমাদের মালায়
অজস্র ফুল
পেয়েছি কিন্তু
লকেট ঐ
একজনই।
শেখ মুজিব। তাই
শেখ মুজিবের
মৃত্যুর পর
কেউই আর
রা¯তা খুঁজে
পাননি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুটি পক্ষের দীর্ঘ
টানাপোড়েন রয়েছে। এরা কখনই
আসতে পারেননি
মূলধারায়।
আসতে পারার
কথাও নয়। দুটো
দলই রাজনীতিতে
কোন সুস্পষ্ট
দিক নির্দেশনা
দিতে পারেনি। একদল
আপাতদৃষ্টে বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো।
আর একদল
ধর্মকে এতোটাই
উগ্রভাবে উপস্থাপন
করেছিলো যে
তারা কখনওই
মানুষের কাছে
গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
৪৪ বছরের
আমাদের রাজনীতি
অনেক অর্থবহ
হতে পারতো
যদি গুরুত্বপূর্ণ
রাজনৈতিক দলগুলো
তাদের একগুঁয়েমি
পরিহার করে
সহনশীলতার নীতি অবলম্বন করতে পারতো। এতে
বাংলার জনগনের
যেমন কল্যাণ
হতে তেমনি
দলগুলোর একটি
গঠনশীল অবস্থান
তৈরী হতো। আখেরে
এসবের কিছুই
হয়নি।
হওয়ার কথাও
নেই।
সুস্পষ্ট রাজনৈতিক
দর্শন, সুদূরপ্রসারী
লক্ষ্য ছাড়া
কোন দলের
পক্ষেই সাফল্য
অর্জন করা
সম্ভব নয়। আমাদের
রাজনৈতিক দলগুলো
কখনওই এসব
কথা মাথায়
রেখে রাজনীতি
করেননি।
১৯০ বছরের
ইংরেজ শাসনামলে
বাংলার রাজনীতি
কম গুরুত্বপূর্ণ
ছিলো না। ইতিহাসে
তার প্রমান
আছে।
মুসলিম লীগের
জন্ম কিন্তু
ঢাকায়ই হয়েছিলো। শেরেবাংলা
ফজলুল হকই
উপস্থাপনা করেছিলেন ঐতিহাসিক লাহোর প্র¯তাব। কিন্তু
১৯৪৭ সালে
এসে দর
কষাকষির সময়
আমরা পিছিয়ে
গেলাম।
পাকি¯তান আমলে
কিছুতেই যেন
গুঁছিয়ে নিতে
পারলাম না। ১৯৫২-র আন্দোলনের
ফল ফললো
১৯৫৫ সালে। কিন্তু
১৯৫৪-তে
যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েও সুবিধা
নিতে পারলো
না।
আভ্যšতরীণ
কোন্দল আর
উর্ধ্বতন নেতৃত্বের
দোদুল্যমানতায় সবকিছু ভে¯েত
গেল।
বলার অপেক্ষো
রাখে না
তারপর আর
আমরা হালে
পানি পাইনি। আন্দোলনের
পর আন্দোলন। ১৯৬২-র শিক্ষা
আন্দোলন, ৬৬-র ছয় দফা, ৬৮-র ১১ দফা, ১৯৬৯-র গণ অভ্যুত্থান আমাদের
স্বাধীনতার দ্বারপ্রাšেত নিয়ে আসে। তখন
পর্যšত
২২৩ বছরের
মধ্যে আমাদের
সেরা অর্জন
স্বাধীনতা।
অবশ্য স্বাধীনতাই
আমাদের সকলের
সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন।
বাঙ্গালীর জন্যে
অনেক সুযোগ
ছিলো।
কিন্তু এসবের
কোনোটাই আমরা
কাজে লাগাতে
পারিনি।
না পারার
অজস্র কারণ। ঔপনিবেশিক
শাসনামলে আমাদের
যে মতিভ্রম
ঘটেছে তা
আমাদের ভেতরে
কেবল দৈন্যই
সৃষ্টি করেছে। আমরা
সাহেব-বিবি-গোলামের খেলায়
শেষ পদটাই
সব সময়
অলংকৃত করেছি। ইংরেজ
আভিজাত্য, ভারতীয় ব্রাক্ষ্মন্যতন্ত্র,
পাক ঔদ্দত্যের
সামনে আমরা
বরাবরই অসহায়
ছিলাম।
ক্ষমতার যে
ছিটেফোঁটা আমাদের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে
দেয়া হয়েছিল
তার উপরও
শকুনের দৃষ্টি
ছিল সবসময়ই
প্রখর।
আর তাই
কোন কিছুই
ধরে রাখা
সম্ভব হয়নি। নিজেদের
ব্যর্থতার পাশাপাশি অন্যের লোলুপ দৃষ্টি
বরাবর সবকিছুকে
ভন্ডুল করে
দিয়েছে।
আমরা এটা
বুঝেও নিজেদের
গুঁছিয়ে নিতে
পারিনি।
এ ব্যর্থতার
দায়ভার আজ
ইতিহাসের আলোচিত
বিষয়ে পরিণত
হয়েছে।
আমাদের ইতিহাস
খুঁজতে গেলে
তাই সবার
আগে সাফল্যের
চেয়ে ব্যর্থতাই
চলে আসে।
Comments
Post a Comment