ইতিহাস
গতিময়। চলমান। ইতিহাসের
পেছনে থাকে ইতিহাস।
বাংলাদেশের আগে পাকিস্তান।
পূর্ব পাকিস্তান। পাকিস্তানের
আগে ব্রিটিশ। ১৯৪০
সালে লাহোর প্রস্তাব, ১৯৪২
সালে ক্রিপস মিশন, ১৯৪৩
সালের দুর্ভিক্ষ, ১৯৪৭ সালের উপমহাদেশ
বিভক্তি, এ বিভক্তির গতিপথে
বাংলার রাজনীতি, ১৯৬৯ সালের গন
অভ্যূত্থান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ
প্রকৃতপক্ষে একটা ধারাবাহিক ইতিহাস। এ
ইতিহাস সহ পরবর্তীতে এ
পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে স্বল্প
কথায় অল্প বিশ্লেষনে সাবলীল
ভাষার এদেশের লেখকদের মধ্যে
যিনি সার্থকভাবে ইতিহাস লিখেছেন এবং
রাজনৈতিক গ্রন্থ লিখে অন্যতম
পক্ষপাতহীন লেখক হিসেবে নিজেকে
প্রমান করতে সমর্থ হয়েছেন
তিনি ওমর খালেদ রুমি। সাহিত্যে
তার আবির্ভাব সত্যিকার অর্থেই একটি যুগান্তকারী
ঘটনা।
লেখক ওমর খালেদ রুমি
অসংখ্য গ্রন্থপ্রণেতা। তার
কাব্য গ্রন্থ ১৪টা, ৯টা
উপন্যাস, ১২টা ছোটোগল্পের বই,
রাজনৈতিক বিষয়সমৃদ্ধ বই ১২টা, ৭টা
ব্যাংকিং বই, ২টা অনুবাদ
গ্রন্থ, অন্যান্য ২টা গ্রন্থসহ সর্বমোট
সংখ্যা ৫৬। ইতিহাস
বিশ্লেষক হিসেবে তিনি সম্পাদনায়
পারদর্শী। তার
বিশ্লেষন অত্যন্ত সত্যনিষ্ঠ। লেখকের
অনুবাদগ্রন্থে বর্ননার চাতুর্য ও ভাবানুবাদের শৈলী
সহজেই পাঠককে আকৃষ্ট করে। তার
আক্ষরিক অনুবাদও সুখদপাঠ্য বাক্য গঠনের শব্দশৈলীতে
ব্যতিক্রমধর্মী। শব্দচয়ন
ও বাক্যের শ্রুতিমাধুর্য আনয়নে তার দক্ষতা
যে কোন অনুবাদকের চেয়ে
প্রশংসনীয়। তার
উপন্যাস গ্রন্থের আখ্যান, কাহিনী নির্মান, সংলাপ
সৃষ্টি অনন্য সাধারণ প্রতিভার
স্বাক্ষর বহন করে।
কাব্যগ্রন্থে রয়েছে অত্যাধুনিকতা।
ওমর খালেদ রুমির জন্ম
১৯৭৫ সালের ১০ই জানুয়ারি। তার
পিতার নাম মরহুম মোহাম্মদ
আইউব আলী হাওলাদার।
মাতা মিসেস রহিমা খাতুন। পিরোজপুর
জেলার ইন্দুরকানি উপজেলা লেখকের জন্মস্থান। ছায়াঘন
প্রকৃতির মাঝে তার বেড়ে
ওঠা। স্কুল-কলেজ জীবন কৃতিত্বময়। তিনি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে স্নাতক
(সম্মান) ও স্নাতকোত্তর এবং
পরে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
ফাইন্যান্সে এমবিএ করেন।
তিনি এলএলবি ডিগ্রী নিয়েছেন
ঢাকা সেন্ট্রাল ‘ল’
কলেজ থেকে। তার
সহধর্মিনী শামিমা আক্তার।
নুবা ও উমায়না নামে
দুই কন্যা সন্তানের জনক
ওমর খালেদ রুমি ব্যক্তিগত
জীবনে একজন নিরহংকার মানুষ।
লেখক ওমর খালেদ রুমি
একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার,
প্রাবন্ধিক, ইতিহাস বিশ্লেষক, রাজনীতিক,
দক্ষ অনুবাদক। তিনি
প্রগতিশীল রাজনীতিতে বিশ্বাসী। দলমতের
উর্ধ্বে তার সমালোচনা।
রাজেনৈতিক ফায়দা লুটে নেবার
অপকৌশলীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে তিনি রাজনৈতিক
গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তাতে কাউকে ছাড় দেননি। নিরপেক্ষতা
রয়েছে তার উচ্চারনে।
তাই সত্যিকার ইতিহাস লেখা এবং
সেই ইতিহাসের বিশ্লেষনে তার বিপুল সাহসিকতা
তাকে বিরল শ্রেষ্ঠত্ব এনে
দিয়েছে। ১৯৭১
সালের মুুক্তিযুদ্ধকে তিনি সমর্থন করেছেন। পাকিস্তানী
শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরন সম্পর্কে ঐতিহাসিক
প্রফেসর কে, আলী যেমন
তার Bangladesh : A New
Nation নামক গ্রন্থে লিখেছেন,
The Pakistani Rulers all through pursued a policy of
disparity for the two wings of the country. তেমনি
ইতিহাস বিশ্লেষন ওমর খালেদ রুমি
তার সময়কালের রাজনৈতিক আলোচনায় উত্থান পতনের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী কোনো কোনো শাসকের
স্বৈরশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতাকে দায়ী
করেছেন।
কবি ও লেখক ওমর
খালেদ রুমির লেখার মূল
প্রতিপাদ্য হলো দেশপ্রেম, মানবতাবোধ,
ঐতিহ্যমুখিতা, স্বাজাত্যবোধ, নিসর্গ প্রৗতি, সার্বজনীনতা,
বুদ্ধিদীপ্ত বিশ্লেষন এবং সাহসী উচ্চারন। তার
ব্যাংকিং গ্রন্থগুলো মুসলিম প্রশাসন অনুযায়ী
হালাল শরীয়াহ্ আইনের লেনদেন সম্পর্কিত
নির্দেশনায় সমৃদ্ধ। অনুবাদ
গ্রন্থে রয়েছে সংগৃহীত প্রেমকাহিনী
ও ব্যাংকিং সুব্যবস্থাপনরা দৃষ্টান্তচিত্র। উপন্যাসে
রয়েছে প্রেম বিরাগের মর্মস্পর্শিতা। তার
কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায় রয়েছে অসাধারন
চিত্রকল্প, উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা,
অনুপ্রাস, ছন্দ অলংকারসহ অপূর্ব
কাব্যিকতা। পরম
করুনাময় আল্লাহ-তায়ালার প্রতি
আনুগত্য এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল
মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসাই
তার লেখনীর মৌলিক প্রকাশ। ইংরেজি
ভাষায় কবিতা রচনায় তার
দক্ষতা কম নয়।
এক্ষেত্রেও তিনি প্রচন্ড মানবতাবাদী। তাই
Poems of love and life নামক
কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতায় এক
দরিদ্র সেতারা বিবির জীবন
কাহিনীর বর্ণনায় তিনি লিখেছেন,
Water drops fall
Inside the room of sitara Bibi
Death comes to her door open
And this is never the news.
এ মানবতাবোধ ও স্বাজাত্যবোধ কবি-হৃদয়কে বারবার স্পর্শ
করেছে। একটা
প্রবন্ধের আলোকে একটা বই
লেখা বা সম্পাদনা করা
শুধুমাত্র লেখক ওমর খালেদ
রুমির পক্ষেই সম্ভব হয়েছে। তার
সম্পাদনায় রচিত বই ‘স্বাধীনতার
৪৪ বছরঃ ফিরে দেখা
বাংলাদেশ’
আমাদের সঠিক ইতিহাস তুলে
ধরতে সক্ষম হয়েছে।
নির্ভয়ে লিখেছেন বলে লেখকের এ
বইটি সত্যনিষ্ঠ ইতিহাসে পাবে নির্দিষ্ট ধারাক্রম। তার
রচিত The Other Side of
Dream গ্রন্থটি মূলতঃ A Collection of Five
Novels. এতে
সংগ্রহকৃত কাহিনীমালা সংক্ষিপ্ত ও প্রেমবিষয়ক।
প্রেম শাশ্বত। প্রেম
চিরস্থায়ী তাই লেখকের জবানিতে
প্রেম পরিস্ফুটিত। জামিলের
ডায়েরীতে লেখা হয়েছে,
I wanted your love
And though there is no star
in the sky in this Midnight
yet only one star dazzles
in the core of my heart.
১৯০৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম
সংগৃহীত ইতিহাস লেখেন প্রথম
বাঙালি লেখক আর সি
মজুমদার। এই
রমেশ চন্দ্র মজুমদার একজন
কালজয়ী ঐতিহাসিক। বাংলার
বাঙালিদের ইতিহাস তার মাধ্যমে
সফলভাবে সংগৃহীত না হলে
আমাদের পূর্বেকার ইতিহাস সার্থকভাবে লেখা
হতো না। আধুনিক
কালের ঐতিহাসিক লেখক হিসেবে ওমর
খালেদ রুমি তার লেখা
বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্রন্থে বাংলাদেশের ইতিহাস সাহসিকতার সাথে
সার্থকভাবে লিখে সুখ্যাতি অর্জন
করেছেন। “বাঙলার
রাজনীতির সেকাল-একাল’ গ্রন্থের
ভূমিকায় তিনি লিখছেন,
“আমি
পুরনো দীর্ঘ ইতিহাসের সবটুকু
আলোচনা করতে পারবে না। আমি
শুধু সম্মিলিত ভারতবর্ষে কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে
বর্তমান পর্যন্ত ইতিহাসের অন্ধকার বাঁকগুলো আলোচনা করবো।’’
অন্ধকার
বাঁকগুলো তিনি ঠিকই টেনে
তুলেছেন। সাথে
সাথে “স্বাধীনতা একদিনে আসেনি” নামক
গ্রন্থে বর্তমানের অন্ধকার বাঁকগুলোও আশ্চর্য সাহসিকতার সাথে তুলে ধরে
তিনি বর্তমান সময়ের একজন উল্লেখযোগ্য
ঐতিহাসিক হিসেবে নিজের স্থান
সুদৃঢ় করে নিয়েছেন ।
লেখক ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা
যুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। তিনি
জন্মেছেন ১৯৭৫ সালে।
ইতিহাস সংগ্রহ করে বাঙালির
স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধকে রক্তাক্ত যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ
করতে গিয়ে তিনি Allen Ginsberg এর বিখ্যাত
কবিতা September on
Jessore Road এর আশ্রয় নিয়েছেন,
Millions of babies watching the skies
Bellies swollen, with big round eyes on Jessore Road
Millions of fathers in rain
Millions of mothers in pain
Millions of brothers in woe
Millions of sisters no where to go.
রক্তগঙ্গায়
ভেসে ভেসে এসেছে আমাদের
স্বাধীনতা। এই
স্বাধীনতা অর্জনের পথে পথে অনেক
রক্ত ঝরেছে। ইতিহাসের
রাজা শশাংক, গোপাল থেকে
শুরু করে মুঘল আমল
ও ব্রিটিশ শাসনামলের ইতিহাসে লিখতে গিয়ে স্বাধীনতার
উত্থানপতন সম্পর্কে ব্যর্থতার দিকটি সঠিকভাবে চিহ্নিত
করেছেন তিনি। অত:পর Political Essays on India,
Pakistan and Bangladesh গ্রন্থে
স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিষয়টিকে তিনি সার্থকভাবে তুলে
ধরছেন। ১৭৫৭
সাল পরবর্তী বাঙালীর ইতিহাস অত্যাচারিত হবার
ইতিহাস। এই
ইতিহাস ১৯৭৪ সালের মুক্তিযুদ্ধের
মধ্য দিয়ে এক গর্বিত
ইতিহাসের সৃষ্টি করে।
৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ সর্ম্পকে
বলতে গিয়ে তিনি লিখেছেন,
A war of nine month which took millions of lives and gave us
freedom since 1757 when we lost our freedom to the British at plassee for the
last time can never be faded as easily as some people think.
বাংলার
ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস। দীর্ঘ
দীর্ঘ ইতিহাসে একদিকে স্বাধীনচেতা সংগ্রামী
নেতৃত্ব, অন্যদিকে শুধু বিশ্বাস ঘাতকতা। লেখকের
জীবদ্দশায় তার সমকালীন ইতিহাসেও
বিশ্বাস ঘাতকতার চিত্র ফুটে উঠেছে। লেখকের
শৈশব থেকে এ পর্যন্ত
তিনি বাংলাদেশে দুই ধারার রাজনীতি
প্রত্যক্ষ করেছেন। একটা
প্রগতিশীল ধারা, অন্যটা প্রতিক্রিয়াশীল
ধারা। প্রগতিশীল
ধারায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু
নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের
মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসকদের
আবির্ভাব ঘটে। রাজনীতির
অন্ধকার বাঁকে খোলস থেকে
বেরিয়ে আসেন জিয়াউর রহমান। তিনি
নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সব
প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন। তার
আমলে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা
ছিলো কর্ণেল তাহেরের ফাঁসি। সামরিক
আদালতে প্রহসনের বিচারে তাহেরকে ফাঁসি
দেয়া হয়েছিলো। অথচ
৩রা নভেম্বর যে বিপ্লব হয়েছিলো
এবং তার বিপরীতে ৭ই
নভেম্বর যে প্রতি বিপ্লব
হয়েছিলো, তার মূল নায়ক
তাহের মর্মান্তিকভাবে নিহত হন।
অথচ রাজনীতির সুবিধাভোগী নেতা হিসেবে জিয়াউর
রহমান ১৯৮১ সালের ৩১শে
মার্চ আর ১০জন সামরিক
শাসকের মতো ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে
নিহত হন। নিয়তির
এই অনিবার্য পরিনতির ঘটনা সবাই তুলে
ধরতে সাহস পায় না। ৪টি
রাজনৈতিক গল্পের বই “কুয়াশর
কাফন”
নামক গ্রন্থে লেখক ওমর খালেদ
রুমি সঠিক ইতিহাসকে নির্ভয়ে
তুলে ধরেছেন। ‘‘বাংলাদেশ
কোন পথে’’
নামক গ্রন্থে লেখক চরম সাহসিকতার
সাথে লিখেছেন,
“বাংলাদেশের
সবচেয়ে বড় যেটা সমস্যা,
তা হলো আন্তর্জাতিক গুরুদের
দেয়া প্রেসক্রিপশন। সেই
প্রেসকিপশনকে তাবিজ বানিয়ে খেতে
খেতে আমরা আজ দিশেহারা,
বিভ্রান্ত।”
অকাট্য
সত্যাশ্রয়ী এ উদাহরনকে সামনে
রেখে আমরা যদি লেখকের
সাহসিকতা সম্পর্ক বলতে চাই, তাহলে
তাকে বর্তমান সময়ের একজন নির্ভীক
সাহসী ঐতিহাসিক, রাজনীতির বিশ্লেষক ও যুগোপযোগী লেখকের
আসনে স্থান দিতে হবে। তার
প্রতিটি রাজনৈতিক গ্রন্থের আলোচনায় আমি এভাবে তাকে
আমূল পাঠ করে প্রত্যক্ষ
করেছি। তবে
রাজনৈতিক আলোচনায় প্রগতিশীল লেখক হিসেবে তার
বিরুদ্ধাচারন করে প্রতিক্রিয়াশীল লেখকেরা
তার প্রতি বিদ্বেষভাব পোাষন
করলেও সেটা প্রতিহিংসামূলক।
এই হিংসা বিদ্বেষভাবাপন্নদের মন্তব্য
ইতিহাসের সময়োচিত বিচারে টিকবে না।
সত্য চিরন্তন। সত্যই
টিকে থাকে। সত্যাশ্রয়ী
লেখক ওমর খালেদ রুমিও
টিকে থাকবেন ইতিহাস ও
সাহিত্যের ভূবনে। রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর তার ধূপনারানের কূলে
কবিতায় লিখেছেন,
“সত্য
যে কঠিন
কঠিনেরে
ভালোবাসিলাম
সে কখনো করে না
বঞ্চনা।
আমৃত্যু
দুঃখের তপস্যা এ জীবন
সত্যের
দারুন মূল্য লাভ করিবারে
মৃত্যুতে
সব দেনা শোধ করে
দিতে।”
লেখক ওমর খালেদ রুমি
বহু গুনে গুনান্বিত।
কখনো কবি, কখনো ঔপন্যাসিক,
কখনো গল্পকার। কবি
হিসেবে তার লেখনীতে কাব্যিক
চেতনা দৃঢ়ভাবে পরিস্ফুটিত। ইংরেজি
ও বাংলা উভয় ভাষায়
রচিত তার কাব্যগ্রন্থে শব্দচয়ন
সৌন্দর্র্যমন্ডিত। বাক্যগঠন
সৌষ্ঠবমন্ডিত। ছোট
ছোট বাক্য। যতি
চিহ্নের ব্যবহার। বর্ণনা
অল্পকথায়। তার
কবিতায় বেশিরভাগ মাত্রাবৃত্ত ছন্দের ব্যবহার লক্ষ্য
করা যায়। তবে
কবিতায় ভাবের গভীরতা বেশি। মননশীল
কবি ওমর খালেদ রুমি
অত্যাচারিত নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষের কবি। দুঃখী
মানুষের দুঃখ দুর্দশার সাথে
তিনি নিজের জীবনকে জড়িয়ে নিয়েছেন।
অনেক কষ্টসাধ্য জীবন তার।
লেখাপড়া করেছেন প্রচুর।
পরিচিত হয়েছেন দেশে-বিদেশী
কালজয়ী কবি-লেখকদের সাহিত্যকর্মের
সাথে।
ব্যক্তিগত
জীবনে একজন ব্যাংকার।
চাকুরিজীবি হয়েও বই পড়তে
ভালোবাসেন। কর্মজীবনের
সাথে সাহিত্যকর্মও ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। যখনই
সময় পান তখনই সাহিত্যকর্মে
নিয়োজিত হন। একদিকে
দৈনন্দিন কর্মের মাঝে তিনি
সময় বাঁচান, অন্যদিকে বিশ্রামের সময়টা অনেকাংশে ব্যবহার
করেন সাহিত্যকর্মে। এজন্য
তাকে নিরলস পরিশ্রম ও
কষ্ট করতে হয়।
অন্য লেখকের ক্ষেত্রে এ
ধরনের কষ্টসহিষ্ণুতা ও পরিশ্রম একেবারেই
দুর্লক্ষ্য। ভাবগভীরতায়
সমৃদ্ধ তার ইংরেজি কবিতা
যে কোন পাঠককে সহজেই
আকৃষ্ট করে। তার
রচিত ILLUSION কবিতায় ভাবগভীরতা এভাবেই
পরিস্ফুটিত,
Sometomes love some one
And stones also love some times
Or a dead man
Comes back to the world like him
And comes to me sometimes.
ভাবপ্রধান
কবিতাই মর্মস্পর্শী বল উল্লেখ করেছেন
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এক্ষেত্রে
ওমর খালেদ রুমির প্রতিটি
বাংলা ও ইংরেজি কাব্যগ্রন্থের
কবিতা মর্মস্পর্শিতা লাভ করেছে।
সব কবিতাই যেন হƒদয় ছুঁয়ে যায়। প্রতিটি
কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উত্তর
আধুনিক কবি হিসেবে কাহিনী
নির্মানেও তার দক্ষতা কম
নয়। কাহিনীগুলো
বেশিরভাগ প্রেম ও রাজনীতিবিষয়ক। এক্ষেত্রে
তাকে আপাতভাবে বিশেষ গন্ডীবদ্ধ কাহিনীর
রূপকার বলা যাবে না। বরং
একটা বিশেষ অবস্থানে তার
শ্রেষ্ঠত্ব বা বিশেষত্ব প্রকাশ
পায়। ইসলামী
মূল্যবোধ উঠে এসেছে তার
উপন্যাস ও ছোট গল্পে। এটাও
তার বিশেষ দক্ষতা।
কবিতা ও প্রবন্ধে তিনি
যেমন সহজবোধ্য ভাষা ব্যবহার করেছেন,
ছোট গল্প ও উপন্যাসেও
একই ভাবে ব্যবহার করেছেন
প্রাঞ্জল ভাষা। কবিতার
ভাবের গভীরতা আছে তবে
দুর্বোধ্যতা নেই। অসাধারণ
চিত্রকল্প আছে কবিতায়।
ছোটগল্প ও উপন্যাসের কাহিনী
ও পরিবেশ বর্ণনায় কিছুটা
কাব্যময়তা থাকলেও তা দুর্বোধ্য
না। তার
রচিত “কুয়াশার কাফন”
নামক গল্পগ্রন্থের ‘‘হিংসা ও ঘৃনার
গল্প’’
এভাবেই বর্ণনা সমৃদ্ধ হয়েছে,
“গ্রামের
রাস্তা। কিছুটা
হেঁটে। কিছুটা
স্থানীয় যানবাহনে। ভ্যান-রিক্সা মিলিয়ে ছয়
মাইল। দেখতে
দেখতে পথ ফুরায়।
মহব্বত বুঝে উঠতে পারেনা। রুমারও
একই অবস্থা। এটা
তাদের বয়সের ভালো লাগা।”
ছোট গল্প ছোট কথা,
ছোট ছোট দুঃখ-ব্যথা,
নিতান্তই সহজ সরল- বিশ্বকবি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই উক্তি যখন
ছোট গল্প লেখার বৈশিষ্ট্য
হিসেবে স্বীকৃত, তখন ওমর খালেদ
রুমির ছোট গল্প লেখার
বৈশিষ্ট্য অনুরূপভাবে চোখে পড়ার মতো। তিনি
একজন সার্থক ছোট গল্পকার। ছোট
ছোট বাক্য নির্মানে তার
যেন জুরি নেই।
অল্প কথায় অনেক কিছুই
বলতে পারাটা তাকে অসাধারণ
শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের স্বীকৃতি দেয়। তার
উপন্যাস গুলোতেও বর্ণনার চমৎকারিত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
এতোটা সহজ ভাষায় ইংরেজি
বাংলা সাহিত্য রচনায় সমকালীন কবি-লেখকদের মধ্যে তিনি যে
নান্দনিক প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন, তা সহজেই দৃষ্টিগ্রাহ্য। এভাবে
সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায়
লেখাটা আসলেই কঠিন।
অসম্ভব দক্ষতার প্রয়োজন। সময়ও
বেশি লাগে তাতে।
অনেক ভাবতে হয়।
গভীরভাবে চিন্তা করতে হয়। ভাষা
ও বর্ণনার সংক্ষেপনে কাহিনীর যাতে অঙ্গহানি না
হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হয়। দুর্বোধ্য
শব্দ ব্যবহার করে সাহিত্যে যেমন
প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছেন কবি
মাইকেল মধুধূদন দত্ত এবং সাহিত্য
সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, তেমনি সহজ চলিত
ভাষায় পথের পাঁচালী উপন্যাস
লিখে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যয়। আবার
জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে উঠে এসেছেন জীবন
পলাতক পরাবাস্তবের কবি রূপকের কবি
জীবনানন্দ দাস। জনপ্রিয়তাই
গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি।
এই প্রাপ্তির নিক্তিতে যদি লেখক ওমর
খালেদ রুমির অবদান বা
কৃতিত্ব পরিমাপের আয়োজন হয় কোনোদিন,
সেদিন অবাক হবার কিছুই
থাকবে না। কারণ
তিনি এ সম্ভাবনার পথে
অনেকটা পথ হেঁটে এসেছেন। এখনো
ক্লান্তি নেই তার লেখনীতে। সবসময়
নতুনত্ব আছে তার লেখায়। একজন
প্রকৃত লেখকের
মধ্যে যেসব গুনাবলী থাকতে
হয়, লেখক ওমর খালেদ
রুমির মধ্যে তার অনেকগুলোই
বর্তমান। তার
রচিত ‘‘আশায় তুমি নিরশায়ও
তুমি’’
উপন্যাসের প্রেমকাহিনী আকর্ষণীয়। আদর্শিক
প্রেম আর আদর্শিক চিন্তা
চেতনা প্রোথিত হয়ে আছে তার
মন ও মননে।
‘‘হেলেনের কবিতার খাতা’’ তার
এক অনন্য কাব্যগ্রন্থ।
ইংরেজি কবিতায়ও তার চিন্তাগুলো বিন্দু
থেকে সিন্ধুতে পরিনত হয়েছে ভাবের
প্রাবল্যে। Whims নামক কবিতায়
তিনি লিখেছেন,
The
paper boats have been floated
in
the water
and
that tell all
I
am a child
in
my youth.
ওমর খালেদ রুমির রাজনৈতিক গ্রন্থ ‘‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’’, ‘‘জনগণের
নয়নের মনি জননেতা শেখ
হাসিনা’’,
‘‘আমাদের আগামীর নেতা সজীব
ওয়াজেদ জয়’’
বর্তমান সময়কালে বিশেষ সমাদৃত ও
প্রশংসার যোগ্য।
তার রচিত উপন্যাসগ্রন্থসমূহ হলো
‘‘নীতুর চোখে জল’’, ‘‘স্বপ্নের
উল্টোপিঠ’’,
‘‘আমার অমৃত সত্তা’’, ‘‘সেলফি’’,
‘‘কষ্টের ক্যাম্পাস’’,
‘‘আশায় তুমি নিরাশায়ও তুমি’’,
‘‘ভালোবাসা ভালো নয়’’, ‘‘জোনাকির গল্প’’,
‘‘দ্যা আদার সাইড অফ
ড্রিম’’। এগুলো
প্রকাশিত গ্রন্থ।
প্রকাশিত
কাব্যগ্রন্থগুলো যথাক্রমে ‘‘নির্বাসনে প্রেম’’,
‘‘কাগজ ছেঁড়ার খেলা’’, ‘‘কালার
অব রোজ’’,
‘‘হেলেনের কবিতার খাতা’’, ‘‘কাচঘরে
আমি’’,
‘‘অলৌকিক দহন’’,
‘‘একদিন প্রেম এসে হঠাৎ
দরোজায় কড়া নেড়েছিলো’’, ‘‘তারার
নিচে হাঁটাহাঁটি’’,
‘‘তোমার আয়নায় আমার মুখ’’,
‘‘নাজুক প্রেমের পদ্য’’,
‘‘এই প্রেম তোমার আমার’’,
‘‘এ সময়ের প্রেমের কবিতা’’,
‘‘কেউ নেয়নি আমায় জলের
কাছে’’,
‘‘পোয়েমস অব লাভ এন্ড
লাইফ’’।
প্রকাশিত
ছোট গল্পগ্রন্থগুলো হলো ‘‘সোনালী দিনের
সোনালী বালিকারা’’,
‘‘হেলেনকে আমি ভালবেসেছিলাম’’, ‘‘জলমহল
এন্ড আদার স্টোরিজ’’, ‘‘সে
আসবে’’,
‘‘কৃষ্ণচূড়া ও অন্যান্য প্রেমের
গল্প’’,
‘‘কুয়াশার কাফন’’,
‘‘সুকান্তর হাতে তিনটি গোলাপ’’,
‘‘হারানো চাবিওয়ালা’’,
‘‘এই শহরে তোমার কখনও
প্রেম হয়নি’’,
‘‘শতাব্দীর সৌরভ’’,
‘‘কালবালা-২০১৬’’,
‘‘স্টোরি অব এন ইভিনিং’’।
লেখকের
প্রকাশিত রাজনৈতিক গ্রন্থসমূহ হলো ‘‘দ্যা হিস্টরি
অব ইন্ডিয়ান মুসলিমস্’’,
‘‘স্বাধীনতা একদিনে আসেনি’’, ‘‘বঙ্গবন্ধু
ও বাংলাদেশ’’,
‘‘জনগণের নয়নের মনি জননেতা
শেখ হাসিনা’’,
‘‘আমাদের আগামীর নেতা সজীব
ওয়াজেদ জয়’’,
‘‘বাংলার রাজনীতির সেকাল একাল’’, ‘‘স্বাধীনতার
৪৪ বছরঃ ফিরে দেখা
বাংলাদেশ’’,
‘‘তাত্ত্ব্কি বিশ্লেষণে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম’’,
‘‘পলিটিক্যাল, এসেস অন ইল্ডিয়া,
পাকিস্তান এন্ড বাংলাদেশ’’, ‘‘রক্তে
কেনা বাংলাদেশ’’,
‘‘মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র’’,
‘‘সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্স’’।
অতঃপর
প্রকাশিত ব্যাংকিং গ্রন্থগুলো হলো ‘‘মোডস্ অব
ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ইট্স কোয়ালিটি’’,
‘‘গল্পে গল্পে ব্যাংকিং’’, ‘‘জেনারেল
ব্যাংকিং গ্লোসারী”,
‘‘ইসলামিক ব্যাংকিং গ্লোসারী’’,
‘‘এ টু জেড ব্যাংকিং
গ্লোসারী ফর অল’’, ‘‘ইসলামিক
ব্যাংকিং একোর্ডিং টু মাকাসিদ আল
শরীয়াহ্”। লেখকের
প্রকাশিত দুটো অনুবাদগ্রন্থ হলো
‘‘সফল ম্যানেজার’’,
‘‘আমার বিষন্ন প্রেয়সীদের গল্প’’।
অন্যান্য
প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘‘আমার যতো প্রেম’’
এবং ‘‘ফিফটি বুক্স দ্যাট
চেঞ্জ দ্যা ওয়ার্ল্ড’’ বিশেষভাবে
উল্লেখযোগ্য। আগামী
বইমেলা ২০১৮ উপলক্ষে লেখকের
আরো কয়েকটি বই প্রকাশের
পথে। প্রকাশিতব্য
বইগুলো একুশের বইমেলায় সমাদৃত
হবে এবং পাঠক পরিচিতি
পাবে বলে আশা করা
হচ্ছে।
ঐতিহাসিক
ও ইতিহাস বিশ্লেষক ওমর
খালেদ রুমি ১৯৫২ সালের
ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তার কোনো
কোনো রাজনৈতিক গ্রন্থে তুলে ধরে বাঙালী
জাতীয়তাবাদের কথা বলেছেন।
২১শে ফেব্রুয়ারীর কথা লিখতে গিয়ে
তিনি লিখেছেন,
The 21st February was not only a cultural movement; it was
also the first step of our Bangali Nationalism.
বাঙালি
জাতীয়তাবাদের বিমূর্ত প্রতীক, চেতনাদীপ্ত দেশপ্রেমিক, কবি ও লেখক
ওমর খালেদ রুমি কর্মজীবনে
একজন সফল ব্যাংকার এবং
একজন পরিশ্রমী মানুষ। অফিসিয়াল
কর্তব্যপালনে তিনি একনিষ্ঠ।
তিনি সদালাপী, সত্যবাক, স্পষ্টভাষী, সৌজন্য প্রিয়, বন্ধুবৎসল,
দয়াবান ও হৃদয়বান মানুষ। মানবতার
কবি ওমর খালেদ রুমির
প্রকৃত নাম মোহাম্মদ মনির
হোসেন। লেখক
হিসেবে ইতিহাস ও সাহিত্যে
তিনি ওমর খালেদ রুমি
নামে বিশেষভাবে পরিচিত। এই
নামটি তার একান্ত অর্জন। একটা
কস্টসাধ্য অর্জনই বলতে হবে। তার
প্রকৃত নামটা অনেকেই জানেন
না। ওটা
তার একাডেমিক সার্টিফিকেটের নাম। কিন্তু
লেখক হিসেবে তার নামের
আইডি হলো ওমর খালেদ
রুমি। সুপরিচিত
হবার জন্য একটা পছন্দসই
নাম। এই
নাম আরো যশস্বী হবে
তার প্রতিভাধর লেখনীর কারণে।
বাঙালি জাতির জন্য, মুসলিম
জাতির জন্য, বিশ্বের সকল
মানুষের জন্য তিনি অবিশ্রান্ত
লিখে চলেছেন। পৃথিবীর
নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য তার হৃদয়ে
রয়েছে মমত্ববোধ আর সহমর্মিতা।
মুসলিম প্রশাসন ও মুসলিম ব্যাংকিং
ব্যবস্থা এবং শরীয়াহ্ ভিত্তিক
সুদমুক্ত লেনদেনের ব্যবস্থা তার একান্ত পছন্দের
বিষয়। নিসাব
অনুযায়ী ইসলামী যাকাত ব্যবস্থা
এবং ইসলামী সমাজন্ত্রকে তিনি
সমর্থন করে অনেকগুলো ব্যাংকিং
গ্রন্থ রচনা করেছেন।
প্রকাশিত ঐ সব গ্রন্থসমূহ
সমাজ, রাষ্ট্র ও জীবনের প্রয়োজনে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষার্থী ব্যাংকার ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায়
বইগুলো মূল্যবান সস্পদ। ব্যক্তিগত
কর্মজীবনে লেখক ওমর খালেদ
রুমি এক্সিম ব্যাংক, খুলনা
শাখায় কর্মরত। এভিপি
এন্ড অপারেশন ম্যানেজার। শারীয়াহ্
ভিত্তিক এই ইসলামী ব্যাংকে
তিনি সুনাম ও সুখ্যাতির
সাথে কাজ করে চলেছেন। জীবনের
অনেক চড়াই উতরাই পার
হয়ে তিনি এ পর্যায়ে
পৌঁছেছেন। শিক্ষাজীবনে
ও কর্মজীবনে তাকে অনেক কাঠখড়
পোড়াতে হয়েছে। ধাপে
ধাপে সুশৃংখল ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে তিনি
উত্তরোত্তর প্রতিষ্ঠার সোপানে পা রেখে
সম্মুখে এগিয়ে চলেছেন।
আমাদের জাতিসত্তায় ঘুরে দাঁড়ানোর মতো
নৈতিক সাহস অর্জনে এদেশের
মানুষকে সর্বদা প্রেরণা দেবার
জন্য সাহিত্য কর্মকে একটা উল্লেখযোগ্য
মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছেন। অপসংস্কৃতির
বিরুদ্ধে তার লেখনী সোচ্চার। নব্য
আধুনিকতা দ্বারা আচ্ছন্ন অসংলগ্নতায়
ভরা যে সাহিত্য ভান্ডার
এদেশে তৈরি হচ্ছে দিনে
দিনে, সেই জগদ্দল পাথরের
বোঝাটাকে তিনি সরিয়ে ফেলতে
চান। এজন্য
অর্থহীন মতবাদ সরিয়ে ফেলতে
হবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে
সব মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
কোরআন ও সুন্নাহ্র পথ
অনুসরণ করতে হবে।
ধর্মান্ধতা পরিহার করে সার্বজনীনতার
আলোকে আলোকিত হতে হবে। বিদ্রোহী
কবি কাজী নজরুল ইসলামের
ভাষায়,
‘‘আমার দানের অনুরাগে
রাজা
সকলের তরে দিয়ে
দিয়ে ঈদগাহরে আপনারে
দেহ নয় দিল
হবে শহীদ।’’
একজন আত্মত্যাগী, পরোপকারী মানুষ হিসেবে লেখক
ওমর খালেদ রুমিও কর্তব্যকর্মের
আহবানে ছুটে চলেছেন দিন
থেকে দিনান্ত অব্দি। তিনি
অত্যন্ত কর্মতৎপর। কর্মক্ষেত্রে
অগনিত সহকর্মীকে দিক নির্দেশনা দেন। সাহিত্যের
ভূবনে বিচরণে তার সান্নিধ্য
প্রত্যাশী বন্ধুরা অপেক্ষায় থাকে। আলাপচারিতায়
ও সখ্যতায় কাটে মুগ্ধ প্রহর। অত্যন্ত
সামজিক মানুষ তিনি।
লোভ-মোহ-হিংসা-বিদ্বেষ
কিছুই তাকে স্পর্শ করতে
পারে না। রাজনীতিতে
বিরোধিতার পাশাপাশি সহনশীলতা কামনা করে তিনি
জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠায় আশাবাদী। তার
লেখা প্রতিটি রাজনৈতিক গ্রন্থ সত্যিকারের ইতিহাস
সন্ধানীদের প্রেরণা জোগায়। তিনি
রাজনীতির নামে ব্যাবসা, সুদÑঘুষ-দুর্নীতি ও
ধর্মব্যবসাকে সম্পূর্ণরূপে ঘৃনা করেন।
তাই বারবার স্বাধীনতাকে সমুন্নত
রাখার কথা বলেছেন।
স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার। ধর্ম
আমাদের পথ চলার নির্দেশক। ধর্মীয়
বিধি-বিধান অনুযায়ী আমাদের
জীবন ও সাহিত্যকে পরিচালনা
করার দৃপ্ত প্রত্যয় নিয়ে
বাংলাদেশে যারা একনিষ্ঠভাবে লেখালেখির
মধ্যে নিমগ্ন রয়েছেন, তাদের
মধ্যে ওমর খালেদ রুমির
লেখা যেমন উদ্দীপনামূলক, তেমনি
জাতিসত্তার জন্য প্রেরণাদায়ী।
তার ইতিহাস ও সাহিত্য
স্বাতন্ত্র্যমন্ডিত। তার
কবিতায় নিসর্গপ্রীতি ও মানবপ্রেম প্রতিভাত
হয়েছে। সার্বিক
মূল্যবোধের এই কবি প্রবন্ধ
সাহিত্য, ইতিহাস রচনা, গল্প
কাহিনী নির্মানের এক সুদক্ষ নির্মাতা। তার
জ্ঞানোজনে সমৃদ্ধ শব্দভান্ডার ভেতরে
থাকলেও তিনি সহজ ও
প্রাঞ্জল ভাষায় সাহিত্য রচনা
করে পাঠকের হৃদয় স্পর্শ
করতে সমর্থ হয়েছেন।
তাই তার দ্বারা সুকৃতির
সোনালী দিগন্ত উম্মোচিত হবে
বলে আমার প্রত্যাশা।
:সমাপ্ত:
Comments
Post a Comment