রক্তে কেনা বাংলাদেশ বইটির ভূমিকা লিখতে গিয়ে কেন জানি খানিকটা হলেও
আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লাম। আমি যুদ্ধ দেখিনি। আমার জন্মই যুদ্ধের পরে। তাই
অন্তরটা দেশপ্রেমে গদগদ থাকলেও দেশের সেই মহান যুদ্ধের কোন স্মৃতিই আমার
নেই। বরং আমি যখন বুঝতে শুরু করি তখন বাংলাদেশ অনেকটা পথ পাড়ি
দিয়েছে। রাজনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ ১৯৯০ সালের গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তখন
বাগেরহাট সরকারী পিসি কলেজের ছাত্র ছিলাম। মুসলিম হোস্টেলে থাকতাম। আন্দোলন
তখন ধীরে ধীরে দানা বাঁধছে। আমরা বলতে গেলে শুরু থেকেই জড়িয়ে গেলাম। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম জগলু ভাই বাগেরহাটের
কৃতি সন্তান। তিনি ঢাকা থেকে বাগেরহাট চলে এলেন। মেজর জেনারেল (অবঃ)
মোস্তাফিজুর রহমানও তখন স্বশরীরে বাগেরহাটে। আন্দোলনের তদারকি করছেন। দু‘জন
তুখোড় মানুষের সরাসরি পরিচালনায় বাগেরহাটে আন্দোলন দারুণ জমে উঠেছিল। সেই
স্মৃতি আজও জীবন্ত। ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর। এরশাদ পদত্যাগ করলেন। আমরা
আবারও পড়াশুনায় ফিরে গেলাম। দারুণ লাগল। এর পরের অভিজ্ঞতা ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই আমি জাসদ ছাত্রলীগ-এর
সাথে জড়িয়ে যাই। তারপর ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনে সরাসরি
যোগদান করি। সেই সর্বাত্মক আন্দোলনের স্মৃতি এখনও মানসপটে জীবন্ত।
পরবর্তীতে আর সরাসরি রাজনীতি না করলেও রাজনৈতিক বিষয়াবলী থেকে কখনও খুব
বেশি দূরে থাকিনি। এমনকি এই বইটি প্রকাশের পূর্বেই আরও প্রায় ডজন খানেক
রাজনৈতিক বই প্রকাশিত হয়েছে। তবুও এই বইটি লিখতে গিয়ে কেন জানি একটা ভিন্ন
ধরনের আবেগ অনুভব করি। বইটিতে যুদ্ধকালীন সময়ের কিছু বর্ণনা আছে যার
প্রত্যক্ষদর্শী আমি নই। বইটিতে আমারও কিছু মতামত যুক্ত করেছি যুদ্ধে
বর্ণনার বাইরের কিছু লেখার মাধ্যমে। মূলতঃ এর সবই সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ।
আমি মূলতঃ নিজেকে কেন জানি কিছুতেই প্রবোধ দিতে পারছিলাম না। যুদ্ধ আমাদের
কতোটা প্রভাবিত করেছিল সেই আবেগ সেই অনুভূতি আজও যে ম্লান হয়নি তার প্রমাণ
বাংলার ঘরে ঘরে। মাঝে একটু সময় এই বাঁধভাঙ্গা অনুভূতি মিথ্যের আড়ালে চাপা
দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তা কোন কাজে আসেনি। তাই আজকের এই সব উচ্ছাস
দেখলেই বোঝা যায়। আসলে জোর করে কাউকেই তার অনুভূতি থেকে সরানো যায় না।
মিথ কী ও কেন মিথ বিষয়টিকে জানা ও বোঝার জন্য বিগত শতকের মধ্যবর্তী সময় থেকে নৃতত্ত্ববিদ, সমাজবিদ, এমনকি সাহিত্য সাহিত্য সমালোচকের মধ্যে উৎসাহের অন্ত নেই। অজ¯্র গ্রন্ত এ বিষয়ে রচিত হয়েছে। বিচিত্র এসবের বিষয়, বিচিত্র এইসব গবেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষিতে মিথের কোনো সৃনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারণ করা বেশ দুরুহ। কোনো পক্ষ থেকে নৃতত্বের পাঠকদের জানানো হয়েছে যে প্রাচীন ও আধুনিক সাহিত্যে তারা যে মিথের ব্যবহার দেখে থাকেন, তা আসলে মিথ-ই নয়। কেননা তাদের কোনো ধর্মীয় ও আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। কেউ আবার আধুনিক লেখদের ‘মিথোম্যানিয়া’ সম্পর্কেও পাঠকদের সতর্ক করেছেন, কারণ এ হল ইতিহাস থেকে প্রতিক্রিয়াশীল পশ্চাদপসারণ। এ সব সত্ত্বেও সাহিত্য মিথের ব্যবহার সক্রিয় আর বুদ্ধিবৃত্তি বা নন্দনতত্ত্বের সঙ্গে মানিয়ে চলার ক্ষমতা মিথের আছে। বরং নৃতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞান মিথ সম্পর্কে আমাদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মিথ সম্পর্কে ব্যাখ্যাও জটিল হয়েছে। প্রত্যেকটি শাখার গবেষকরাই তাদের নিজস্ব তত্ত্বের আলোকে মিথকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে আমাদের বলার কথা এই যে মানবসমাজের গোড়ায় আদিম ধর্মীয় স্তর থেকে অবচেতন মনের আধুনিক অ
Comments
Post a Comment