Skip to main content

Posts

Showing posts from March, 2022

Fabricare receipt 01 08 2024

প্রিয় বোন

 প্রিয় বোন, রাজশাহীতে অনেক দিন হয়ে গেল। আমাদের বদলির চাকরি। কখন বদলি হয়ে যায় জানি না। তাই সম্ভব হলে একদিন সময় করে অফিসে এসে দেখা করে যেও। জানি তুমি ব্যস্ত। তবু এমনটাই অনুরোধ করলাম। আজ রাস্তার পাশে তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। অনেক দিন পর দেখা হলো বলতে হবে। অবশ্য সত্য বলতে কি আমি তোমাকে দেখিনি। তুমিই আমাকে দেখে সালাম দিলে। কিন্তু আমি তোমাকে প্রথমটায় চিনতে পারিনি। আমার চোখের সমস্যা আছে। পাওয়ার আরও বেড়েছে। আজকাল দূরে খুব একটা ভালো দেখতে পাই না। অবশ্য কাছের ব্যাপারেও একই সমস্যা। সবকিছুরই গতি নিম্নমুখী। কারণ আর কিছু নয়। বয়স বাড়ছে। আমার কাছে তোমার বিশেষ কোন আবেদন কখনো ছিলো না। এর কোন ব্যাখ্যাও নেই। তোমাকেও কখনও আমাকে নিয়ে তেমন একটা ভাবতে দেখিনি। তাহলে এই কিতাব লেখার প্রয়োজন পড়লো কেন? পড়লো এজন্যে যে তোমার হাত ধরে বরেন্দ্রকে চিনেছিলাম। সেই চেনা আমার জীবনকে বদলে দেয়। আমি আমার জীবনের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হই। আমি আজ যেটুকু তা যে পথে হেঁটে সেই পথটা তুমিই দেখিয়েছিলে। একটা অতি সাধারণ মেয়ে হয়েও তোমার অবদান তাই খাটো করে দেখবো না। আর একটা কথা বলে রাখি। এই বইয়ের নাম যেহেতু “বরেন্দ্রর মেয়ে” ত

নিজের সম্পর্কে

 নিজের সম্পর্কে কিছু কথা বলে নেওয়া দরকার। মূলতঃ আমি চাকরীজীবী। তবে লেখালেখি করি। এটা আমার সখও নয়। সুখও নয়। এক ধরনের অসুখ। না লিখে থাকতে পারি না। যদিও লেখার মান একেবারে যাচ্ছে তাই তবুও চালিয়ে যাচ্ছি। আশা যদি কোনদিন ভালো কিছু নয়। লেখা অগোছালোও। প্রায়ই ভাবের উদয় হলে লিখতে শুরু করি বটে তবে কর্মের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার জন্যে আবেগটা পুরোপুরি প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই নিহত হয়। আর এভাবেই অসমাপ্ত লেখাটির বাকী অংশটুকু কোনমতে এবং খাপছাড়াভাবে একটা নিরাবেগ সৌন্দর্যের মধ্যে দিয়ে শেষ করতে হয়। এসব ঝামেলার কারণেই হয়তো চাকরীজীবীদের মধ্যে আমি শিল্পচর্চাকারী মানুষের দেখা খুব একটা পাইনি। তাদের শিল্প ভাত আর দাঁতের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। রোজগারী মানুষের আবেগ থাকবে নেই। মাঝে মাঝে অবশ্য মনে হয় হাসন রাজার মতো হতে পারলে মন্দ হতো না। নদীতে বজরা ভাসতো। সুন্দরী রমনীরা নৃত্য-গীত পরিবেশন করতো। পাশে থাকতো সুরার পাত্র। আমি চুমুক দিতে দিতে ভাবের সাগরে ডুব দিতাম। শের শায়েরী লিখতাম। ভক্ত অনুরক্তরা না হোক আমরা অনুগত ভৃত্যরা অন্তত শুনে বলতো মারহাবা! মারহাবা! কিন্তু এসবের কিছুই হয় না। তুচ্ছ জীবন যার তার স্বপ্ন পূরণ হবে কোথা

মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে

 “কখনও ভাবিনি মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমারও মনে পড়ার মতো কেউ থাকবে। তারপর তুমি এলে জীবনে। আমি বরাবরই ভাবতাম আমার জীবনটা বাগানের ঝড়া পাতার মতোই অর্থহীন। তা সে শুষ্ক কিংবা ভেজা যাই হোক। কিন্তু আজ কেন জানি মনে হয় বেঁচে থাকার একটা কিছু মানে সব সময়ই থাকে। পৃথিবীর আর যাকে প্রয়োজন নেই তারই চলে যাওয়ার সময় আসে। তুমি আছ বলেই আজ খুব বাঁচতে ইচ্ছে করে।”

ভুলে যাওয়া

 “ভুলে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষগুলোই হয়তো জগতে সুখী হতে পারে। কিংবা হয়তো এমনটাও হতে পারে যে এদের হৃদয়টাই অন্যরকম একটা ধাতুতে গড়া যেখানে স্মৃতিরা কখনও শ্যাওলা হয়ে জমাট বাঁধে না। হয়তো এসবের কিছুই নয়। তাদের হৃদয়টা একটা ব্ল্যাকবোর্ড। সেখানে লিখে আবার মুছে ফেলা যায়। সত্যটা যাই হোক এদের সাথে যে-ই জড়ায় কষ্টটা কিন্তু তাকেই পেতে হয়।”

বরেন্দ্রর মেয়ে

বরেন্দ্রর মেয়ে তুমি দু’চোখে কাজল প্রেম নেই নেশা চোখে বুকে বিষফল আমি হাঁটি আনমনে তুমি ডাক তাই মনে আশা ভালোবাসা ফিরে ফিরে চাই বরেন্দ্রর মেয়ে তুমি হিসেবী দারুণ কন্ঠেতে গান নেই শুধু গুণগুণ।

চালাক মানুষগুলি

 “চালাক মানুষগুলিও সুখী হয়। তবে তা এতোটাই সাময়িক যে জীবনের বাকীটা সময় বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের আত্মপ্রতারণার মধ্য দিয়েই কেটে যায়। তারা নিজেরাও এটা বোঝে না। মনে মনে ভাবে তারা শুধু জিতেই যাচ্ছে। কিন্তু একটা সময় সবারই বোধোদয় হয়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তখন আর সময় থাকে না। থাকে শুধু আফসোস।”

লেখাকরাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ

 “পৃথিবীতে লেখাকরাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ। বাদশাহও লিখে ধন্য হন। বাবর তাই “বাবুরনামা” লেখেন। সৈনিকরাও লেখেন। এমনকি পুলিশও লেখে “আমি যখন পুলিশ ছিলাম”। লেখেন বিজ্ঞানী, দার্শনিক, এমনকি তুচ্ছ যে রাধুনী সেও লেখে। ব্রিটিশ রাজ পরিবারের খানসামা পল বারেল ডায়নাকে নিয়ে লিখেছিলেন, “এ রয়্যাল ডিউটি”। শেষ পর্যন্ত লেখে না কে? রাজনীতিবিদরাও লেখেন। গান্ধী লিখলেন, “মাই এক্সপেরিমেন্ট উইথ ট্রুথ”। ম্যান্ডেলা লিখলেন “লং ওয়াক টু ফ্রিডম।” কারন সমস্ত বুদ্ধিমান, জ্ঞানী কিংবা চতুর মানুষই জানে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে হলে শুধু কর্মই নয়, কিছু একটা লিখে রেখে যাওয়াও দরকার। কারণ এগুলো নিয়েই হয়তো কথা হবে। আজ বাবর নেই, তার সা¤্রাজ্যও নেই, কিন্তু আমার বিছানার উপর বালিশের পাশে কবেকার কোন স¤্রাটের লেখা এমনকি যার চেহারা মোবারকও আমি কখনও দেখিনি তার লেখা “বাবুরনামা”টা ঠিকই আছে। আপনারও লেখালেখি করাটা এতোটাই জরুরী যতোটা জরুরী পেটের গ্যাস বের করে দেওয়া। তাই লিখুন মনের কথা।”